আল-হাদিসের আরশিতে ফিরকাবাজি- ৪
লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১৮ জুন, ২০১৬, ০২:১০:২৫ রাত
প্রশ্ন হল, রাসুল (সাঃ) কী এ যুগের আলেমদের অপকর্ম সম্পর্কে জানতেন না ? জানলে তিনি কী ব্যবস্থা করে গেছেন ? হাঁ, রাসুল (সাঃ) অবশ্যি জানতেন, আর জানতেন বলেই তিনি তাদেরকে আশাররুল উলামা হিসাবে আখ্যা দিয়ে গেছেন এবং উম্মাহকে তাদের সম্পর্কে সতর্ক করে গেছেন। এ সম্পর্কে “আল-হাদিসের কাঠগড়ায় বিভক্তিবাদ” নামে আলাদা একটি গ্রন্থ রচনার আশা আছে, সেখানে হাদিসের আলোকে ফিরকাগুলির ব্যাখ্যা দেয়া হবে। এখানে শুধু কয়েকটি হাদিসের অনুবাদ দেয়া হল।
মুসনাদে আহমদে এসেছে,
عن أَبِي عَامِرٍ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ لُحَيٍّ قَالَ: حَجَجْنَا مَعَ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا مَكَّةَ قَامَ حِينَ صَلَّى [صَلَاةَ] الظُّهْرِ فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: "إنَّ أهْلَ الْكَتَابَيْنِ افْتَرَقُوا فِي دِينِهِمْ عَلَى ثنتيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، وإنَّ هذِهِ الأمَّةَ سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثَلاثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً -يَعْنِي الْأَهْوَاءَ-كُلُّهَا فِي النَّار إِلَّا وَاحِدَةٌ، وَهِيَ الْجَمَاعَةُ، وَإِنَّهُ سَيَخْرُجُ فِي أُمَّتِي أَقْوَامٌ تُجَارى بِهِمْ تِلْكَ الأهْواء، كَمَا يَتَجَارى الكَلبُ بصَاحِبِهِ، لَا يَبْقَى مِنْهُ عِرْقٌ وَلا مَفْصِلٌ إِلَّا دَخَلَهُ. واللهِ -يَا مَعْشَر العَربِ-لَئِنْ لَمْ تَقُومُوا بِمَا جَاءَ بِهِ نَبِيُّكُمْ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَغَيْرُكم مِن النَّاسِ أحْرَى أَلَّا يَقُومَ بِهِ".
– অর্থাৎ হযরত মোয়াবিয়া (রাঃ) হজ্বের উদ্দেশ্যে মক্বায় আগমন করেন। যহুরের নামাজের পর তিনি দাঁড়িয়ে বলেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, আহলে কিতাব তাদের ধর্মের ব্যাপারে মতভেদ সৃষ্টি করে ৭২ ফিরকায় বিভক্ত হয়ে গেছে। আর আমার উম্মত ৭৩ ফিরকায় বিভক্ত হবে। অর্থাৎ সবাই প্রবৃত্তির বশীভুত হয়ে পড়বে। তাদের একটি দল ব্যতীত সবাই জাহান্নামী হবে। আর সেই দলটি হল জামাত।(অর্থাৎ যারা নিজেরা ঐক্যের উপর থাকবে এবং অন্যদেরও রাখার চেষ্টা করবে)। আমার উম্মতের মধ্যে এমন লোকও হবে যাদের শিরায় শিরায় কুপ্রবৃত্তি এমনভাবে প্রবেশ করবে যেমন কুকুরে কাটা ব্যক্তির শিরায় শিরায় বিষক্রিয়া পৌছে যায়। হে আরববাসীগণ। তোমরাই যদি তোমাদের নবীর দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত না থাক, তাহলে অন্যরা তো আরো দূরে সরে পড়বে।
ব্যাখ্যাঃ- ফিরকা সংক্রান্ত উক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, একমাত্র নাজাত প্রাপ্ত দল তারাই-যারা আমরে বিল মা’রুপ ও নেহি আনিল মুনকার-এর আওতায় নিজেরা ফিরকা বিভক্তি না করে ঐক্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং অন্যদেরও রাখার চেষ্টা কর। কাজেই হাদীসের আলোকে বুঝা যাচ্ছে, মুসলমানদের বিভিন্ন ফিরকা যেমন শিয়া, সুন্নী, বেরেলভী, দেওবন্দী, তাবলীগী, জামাতী, সালাফী ইত্যাদি প্রতিটি ফিরকা নিজেদেরকে নাজি বা নাজাত প্রাপ্ত দল মনে করে আর অন্যদেরকে ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করে- তাদের এ দাবী ভ্রান্ত। হাদীসের মধ্যেই এর জবাব নিহিত আছে। কারণ অত্র হাদীসে ফিরকাবাজি ও বিভক্তিকে জাহান্নামের কারণ দর্শানো হয়েছে।কাজেই যারা ফিরকাবাজি করবে না বরং ঐক্যের চেষ্টা করবে, বিভক্তিতে বাধা দিবে তারাই মুক্তি প্রাপ্ত দল হিসাবে গণ্য হবে। সুতরাং আমরে বিল মারুফ ওয়া নেহি আনিল মুনকার এর আওতায় মুসলমানদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে-উম্মাহকে ঐক্যের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখা, বিভক্তিতে বাধা প্রদান করা, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা।
سيأتي زمان على أمتي لا يبقى من القرآن إلا رسمه،و لا من الاسلام إلا اسمه يسمون به،و هم أبعد الناس منه، مساجدهم عامرة،وهي خراب من الهدى،فقهاء ذلك الزمان شر فقهاء تحت ظل السماء،منهم خرجت الفتنة،و إليهم تعود] صدق محمد رسول الله صلى الله عليه وأله وسلم – খুব শীঘ্রই আমার উম্মতের উপর এমন যমানা আসছে, তখন কোরআন বলতে শুধু অক্ষর থাকবে, ইসলামের শুধু নাম থাকবে-সেই নামে তারা নামকরণ করবে-পরিচিত হবে অথচ তারা ইসলাম থেকে বহুদূরে সরে যাবে। তাদের মসজিদসমূহ কারুকার্যমন্ডিত হবে বা লোকে লোকারণ্য হবে কিন্তু তা হবে হেদায়েতশুন্য। সে সময়ের আলেম-ফকীহরা হবে আকাশের ছায়ার নিচে নিকৃষ্টতম আলেম, তাদের থেকেই ফিতনার সূত্রপাত হবে আর এর পরিণতি তাদের দিকেই ফিরে আসবে।
[وكذلك قال محمد رسول الله صلى الله عليه وأله وسلم عن المُسلمين اليوم وعُلماءهم:
يأتي على الناس زمان بطونهم آلهتهم ونساؤهم قبلتهم ، ودنانيرهم دينهم ، وشرفهم متاعهم ، لا يبقى من الايمان إلا اسمه ، ومن الاسلام إلا رسمه ، ولا من القرآن إلا درسه ، مساجدهم معمورة ، وقلوبهم خراب من الهدى ، علماؤهم أشر خلق الله على وجه الأرض . حينئذ ابتلاهم الله بأربع خصال : جور من السلطان ، وقحط من الزمان ، وظلم من الولاة والحكام ، فتعجب الصحابة وقالوا : يا رسول الله أيعبدون الأصنام ؟ قال : نعم ، كل درهم عندهم صنم] صدق مُحمد رسول الله صلى الله عليه واله وسلم.—রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, মানুষের উপর এমন যুগ আসছে, তখন পেট হবে তাদের ইলাহ, নারীরা হবে তাদের কেবলা, অর্থ সম্পদ হবে তাদের ধর্ম, দাম্ভিকতা-অহংকার হবে তাদের পন্য। ঈমানের শুধু নামটাই থাকবে, ইসলামের শুধু রুসুম-রেওয়াজ থাকবে, কোরআনের শুধু পঠন-পাঠন থাকবে(অনুশাসন থাকবে না)। তাদের মসজিদ হবে কারুকার্যময়-লোকে লোকারণ্য কিন্তু অন্তর হবে হেদায়েত শুন্য। তাদের আলেমরা হবে ভূপৃষ্ঠে খোদার নিকৃষ্টতর প্রাণী। সে সময়ে আল্লাহ তা’লা চারটি বিষয়ে তাদেরকে শাস্তি দিবেন, শাসকের অত্যাচার, কালের কড়াল গ্রাস, নেতা-নেত্রি ও বিচারকদের জুলুম। তখন সাহাবায়ে কেরাম হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল ! তখন কী মানুষ মূর্তিপূজা করবে? উত্তরে রাসূল (সাঃ) বললেন, হ্যাঁ প্রত্যেক দিরহাম হবে তাদের মূর্তি অর্থাৎ তারা ধন সম্পদের পূজা করবে।
وقال مُحمد رسول الله صلى الله عليه وأله وسلم عن أمة اليوم وعُلماءهم:
يأتي على الناس زمان وجوههم وجوه الآدميين ، وقلوبهم قلوب الشياطين ، كأمثال الذئاب الضواري ،سفّاكون للدماء ، لا يتناهون عن منكر فعلوه ، إن تابعتهم إرتابوك ، وإن حدثتهم كذّبوك ، وإِن تواريت عنهم اغتابوك ، السُّنة فيهم بدعة ، والبدعة فيهم سُنة ،والحليم بينهم غادر ، والغادر بينهم حليم ، والمؤمن فيما بينهم مستضعف ،والفاسق فيما بينهم مشرّف ، صبيانهم عارم ، ونساؤهم شاطر ، وشيخهم لا يأمربالمعروف ولا ينهى عن المنكر ، الالتجاء إليهم خزي ، والاعتزاز بهم ذل ،وطلب ما في أيديهم فقر ، فعند ذلك يحرمهم الله قطر السماء في أوانه ، وينزّله في غير أوانه ، يسلط عليهم شرارهم فيسومونهم سوء العذاب] صدق مُحمد رسول الله صلى الله عليه وأله وسلم. – মানুষ এমন সময়কালে উপনিত হবে, তখন তাদের চেহারা হবে মানুষের কিন্তু অন্তর হবে শয়তানের, তারা ক্ষুধার্থ নেকড়ের ন্যায় রক্তপাত ঘটাবে। তারা সবাই খারাপ কাজ করবে কিন্তু পরস্পরকে বাধা দিবে না। তুমি তাদের অনুসরণ করলে সন্দেহ করবে, কথা বললে মিথ্যাবাদী গণ্য করবে, তুমি তাদের চোখের আড়াল হলে গীবত করবে। তাদের কাছে বিদাত সুন্নাত আর সুন্নাত বিদাত হিসাবে পালিত হবে। ভদ্র তাদের কাছে গাদ্দার বা প্রতারক আর গাদ্দার শিষ্টাচারি বা ভদ্র বলে গণ্য হবে। মুমীন তাদের কাছে দুর্বল আর ফাসিক সম্ভ্রান্ত বলে গণ্য হবে। তাদের সন্তানরা হবে রুঢ় সীমালঙ্ঘনকারী বা পিতা মাতাকে কষ্ট প্রদানকারী, নারীরা হবে ধুর্ত ছলনাময়ী। তাদের মুরুব্বীরা ভালকাজের আদেশ করবে না খারাপ কাজে বাধা দিবে না। বিনয় তাদের কাছে নীচতা আর সম্মান হেয়তা বলে গণ্য হবে। তাদের হস্তগত কিছু কামনা করা ভিক্ষা গণ্য করবে। সে সময় আল্লাহ তা’লা তাদের উপর আকাশের বৃষ্টি (রহমত) হারাম করে দিবেন, অসময়ে তা প্রেরন করবেন। তখন নিকৃষ্টরা তাদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে এবং তাদেরকে কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাবে।
37144 - أَبُو الْأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ سَعْدٍ، قَالَ: قَالَ حُذَيْفَةُ: «مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَارَقَ الْإِسْلَامَ»
37154 - أَبُو الْأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ حُذَيْفَةَ، قَالَ: قَالَ حُذَيْفَةُ: «مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا خَلَعَ رِبْقَةَ الْإِسْلَامِ مِنْ عُنُقِهِ»
হুযায়ফা (রাঃ) বলেছেন : যে জামাত (ঐক্য) থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে যাবে সে ইসলাম থেকে বেরিয়ে গেল। তিনি আরো বলেন, যে জামাত (ঐক্য) থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে গেল সে তার গর্দান থেকে ইসলামের জাল খুলে ফেলল।
37155 - وَكِيعٌ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مَرْثَدٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَمِّي أَبُو صَادِقٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ: «الْأَئِمَّةُ مِنْ قُرَيْشٍ , وَمَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَقَدْ نَزَعَ رِبْقَةَ الْإِسْلَامِ مِنْ عُنُقِهِ»
হযরত আলী (রা) বলেন, নেতৃত্ব কুরাইশদের জন্য, যে জামাত (ঐক্য) থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে গেল সে তার গর্দান থেকে ইসলামের জাল খুলে ফেলল।
37158 - غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَحْمَرَ أَوِ ابْنَ أَحْمَرَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَخْطُبُ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ: «مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَمَاتَ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً»
ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি জুমার খুৎবায় বলেন, যে জামাত থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলি যুগের মৃত্যুর ন্যায়।
37174 - غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ وَاقِدِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَاهُ، يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ: " وَيْحَكُمْ , أَوْ قَالَ: وَيْلَكُمْ , لَا تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ "
ইবনে উমর (রাঃ) নবী করীম (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন- নবী (সাঃ) বিদায় হজ্বে বলেন, হায় ধ্বংস তোমাদের জন্য আমার পরে তোমরা কুফুরীতে ফিরে যেয়ো না এভাবে যে, একে অন্যের গর্দান মারা শুরু করবে।
37206 - أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ أَنْبَأَنَا هِلَالُ بْنُ خَبَّابٍ أَبُو الْعَلَاءِ، قَالَ: سَأَلْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ , قُلْتُ: يَا أَبَا عَبْدِ اللَّهِ , مَا عَلَامَةُ هَلَاكِ النَّاسِ؟ قَالَ: إِذَا هَلَكَ عُلَمَاؤُهُمْ "
আবুল আলা সায়িদ ইবনে যুবাইরকে প্রশ্ন করেন, এই মানব মন্ডলি মানে উম্মতে মুহাম্মদির ধ্বংসের আলামত কি? যখন তাদের আলেম সমাজ ধ্বংস হবে অর্থাৎ গুমরাহ হয়ে যাবে তখন উম্মতও ধ্বংস হয়ে যাবে।
37220 - يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا تَوَجَّهَ الْمُسْلِمَانِ بِسَيْفَيْهِمَا فَقَتَلَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ فَهُمَا فِي النَّارِ» , قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ , هَذَا الْقَاتِلُ , فَمَا بَالُ الْمَقْتُولِ؟ قَالَ: «إِنَّهُ أَرَادَ قَتْلَ صَاحِبِهِ»
রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, যখন দুই জন মুসলমান তলোয়ার নিয়ে একে অন্যের মুখোমুখি হয়ে একজন অপর জনকে হত্যা করে তখন তারা উভয়ই জাহান্নামী। সাহাবাগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, হত্যাকারী তো বুঝলাম কিন্তু নিহিত ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে কেন? উত্তরে রাসূল (সাঃ) বললেন, সেও তো তার প্রতিপক্ষকে হত্যার ইচ্ছা পোষণ করেছিল। অর্থাৎ কোন মুসলমানকে হত্যার ইচ্ছা করাও কুফুরী, জাহান্নামের কারণ।
37243 - يَحْيَى بْنُ آدَمَ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا غَيْلَانُ بْنُ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي قَيْسِ بْنِ رَبَاحٍ الْقَيْسِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «مَنْ تَرَكَ الطَّاعَةَ وَفَارَقَ الْجَمَاعَةَ فَمَاتَ فَمِيتَةٌ جَاهِلِيَّةٌ , وَمَنْ خَرَجَ تَحْتَ رَايَةٍ عِمِّيَّةٍ يَغْضَبُ لِعَصَبَتِهِ أَوْ يَنْصُرُ عَصَبَتَهُ أَوْ يَدْعُو إِلَى عَصَبَتِهِ فَقُتِلَ فَقِتْلَةٌ جَاهِلِيَّةٌ , وَمَنْ خَرَجَ عَلَى أُمَّتِي يَضْرِبُ بَرَّهَا وَفَاجِرَهَا لَا يَتَحَاشَى مِنْ مُؤْمِنِهَا وَلَا يَفِي لِذِي عَهْدٍ فَلَيْسَ مِنِّي وَلَسْتُ مِنْهُ»
আবূ হুরাইরা (রাঃ) নবী করীম (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, যে আমীরের আনুগত্য ত্যাগ করবে এবং মুসলিম জামাত (ঐক্য) থেকে পৃথক হয়ে যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়্যাতের মৃত্যু। যে ব্যক্তি মুসলিম জাতীয় পতাকার ছায়া থেকে বেরিয়ে যাবে স্বজাতির প্রতি বিদ্বেষ বশতঃ অথবা স্ব গোত্রকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে বা গোত্রবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য। এ অবস্থায় মারা গেলে তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়্যাতের মরণ। যে ব্যক্তি আমার উম্মতের বিরুদ্ধে বেরিয়ে ভাল মন্দ সবাইকে মারতে থাকে, মুমিনের অনিষ্ট থেকে দূরে থাকে না, অঙ্গিকার রক্ষা করে না, আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই, তার সাথেও আমার কোন সম্পর্ক নেই।
মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা
[ص:338] عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: قَامَ فِينَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: " وَالَّذِي لَا إِلَهَ غَيْرُهُ، لَا يَحِلُّ دَمُ رَجُلٍ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ إِلَّا ثَلَاثَةُ نَفَرٍ: التَّارِكُ الْإِسْلَامَ الْمُفَارِقُ لِلْجَمَاعَةِ، أَوِ الْجَمَاعَةَ، وَالثَّيِّبُ الزَّانِي، وَالنَّفْسُ بِالنَّفْسِ " قَالَ الْأَعْمَشُ: فَحَدَّثْتُ بِهِ إِبْرَاهِيمَ فَحَدَّثَنِي عَنِ الْأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، بِمِثْلِهِ رَوَاهُ مُسْلِمٌ فِي
আব্দুল্লাহ বলেন রাসূল (সাঃ) খুৎবা দিতে আমাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন, যিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নাই সেই আল্লাহ্র শপত যে ব্যক্তি আল্লাহ্র একত্ববাদ ও আমার রিসালাত সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবে এমন ব্যক্তির রক্তপাত কখনোই জায়েয নয়। তবে তিন অবস্থায় জায়েয আছে, ১। ইসলাম পরিত্যাগ করে জামাত থেকে পৃথক হয়ে গেলে। ২। বিবাহিত যিনাকারী। ৩। হত্যার কিসাস বা প্রতিশোধ হিসাবে।
الصَّحِيحِ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ বায়হাকি
16821 - أَخْبَرَنَا أَبُو سَعِيدِ بْنُ أَبِي عَمْرٍو، ثنا أَبُو الْعَبَّاسِ الْأَصَمُّ، ثنا بَحْرُ بْنُ نَصْرٍ، ثنا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، وَدَاوُدُ بْنُ قَيْسٍ، وَهِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، ح وَأَخْبَرَنَا أَبُو زَكَرِيَّا بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ الْحَسَنِ، قَالَا: ثنا أَبُو الْعَبَّاسِ مُحَمَّدُ بْنُ يَعْقُوبَ، أنبأ الرَّبِيعُ، أنبأ الشَّافِعِيُّ، أنبأ مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " مَنْ غَيَّرَ دِينَهُ فَاضْرِبُوا عُنُقَهُ "
রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, যে স্বীয় দ্বীন পরিবর্তন করল তার গর্দান মেরে দাও। এখানে গায়্যারা-এর দু’টি অর্থ হতে পারে ১। ইসলাম ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যাওয়া, ২। দ্বীনের মধ্যে পরিবর্তন করে বিদাত সৃষ্টি করে বিভিন্ন ফেরকায় বিভক্ত হয়ে যাওয়া। যেমন বর্তমান ফেরকাগুলি।
7077 - حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي وَاقِدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا، يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ
রাসূল (সাঃ) বলেন, তোমরা আমার পরে একে অন্যের গর্দান মেরে পুনরায় কুফুরীতে ফিরে যেও না। অর্থাৎ মুসলমানদের পরস্পর ঝগড়া বিবাদ কুফুরী যা ফিরকাগুলি করছে।
বিষয়: রাজনীতি
১১৪১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন