আগ্নেয়গিরির উদগিরণ- ২

লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১০ জুন, ২০১৬, ১২:২৬:১০ দুপুর

কাঁদো উম্মাহ কাঁদোঃ-

শতাব্দি জঙ্গম এইখানে নোঙ্গর ফেলো। মহাকাল তোমার চক্র থামাও। দিবাকর তুমি কৃষ্ণপিণ্ড হয়ে যাও। যামিনী তুমি নিরন্তর হও। বায়ু মণ্ডল ধুম্রধুমে রূপান্তরিত হও। মহাকাশ তুমি ফেটে পড়। পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হও। এটা মহাসত্যের মহামৃত্যু। এটা মহাবিশ্বের মহাগাদ্দারি। এটা মহাদায়িত্বের মহাখিয়ানত। যে আলেম সমাজ ইসলামের রক্ষক তারাই ইসলামের ভক্ষক (ধ্বংসকারী)। যারা আল্লাহ্‌ ও রাসূলের খলীফা তারাই তাদের চূড়ান্ত শক্র। পারলৌকিক কল্যাণের আশায় মানুষ যে আলেম সমাজের শরনাপন্ন হয় সেই আলেমরাই আমাদেরকে জান্নাতের কথা বলে জাহান্নামের ঘাট উৎরে দিচ্ছে। তাদের দ্বারস্ত হলেই তারা আমাদেরকে নিজ নিজ ফিরকায় বিভক্ত করে, পরস্পরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়ে মুসলিম থেকে কাফেরে রূপান্তরিত করে দিচ্ছে এবং নিজেদের সাথে সাথে আমাদেরকেও জাহান্নামের পথে ঠেলে দিচ্ছে।

হায়, যারা ইসলাম ও মুসলিমের রক্ষক তারাই ভক্ষক, তারাই ধ্বংসকারী। হায়, কোথায় আমাদের আশ্রয়স্থল, কে আমাদের পথ দেখাবে? আজ আমাদের পথ প্রদর্শক মুরুব্বিরাই আমাদেরকে বিভক্ত করে ভাই ভাইয়ের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়ে কুকুরে পরিণত করে আমাদের ইহকাল ও পরকাল নষ্ট করে দিচ্ছে। কাঁদো মুসলিম কাঁদো, কাঁদো উম্মাহ কাঁদো।

যখনই মুসলিম পরিবারে কোন শিশু জন্ম নেয় তখনি বিভক্তিবাদি আলেম নামধারী ঐসব আযাযিলের খলীফারা বত্রিশ দাঁত কেলিয়ে ডাকতে থাকে, এসো আমাদের ভুবনে এসো, এখানে সুলভে বেহেস্তের টিকেট পাওয়া যায়। একদম খাটি আদি আসল টিকেট, ডাইরেক্ট মদিনা থেকে পার্সেল করা। তারপর ছেলেটি যখন কোন ফেরকায় যেমন ধরা যাক-দেওবন্দি ফেরকায় (মাদরাসায়) ঢোকে, তখন তাকে বলা হয় বেহেস্তে যাবার একটি মাত্র সিরাতে মুস্তাকীম-সহজ-সরল পথ। আর সেটি হচ্ছে তোমাকে ইহুদী-খৃষ্টানের বিরুদ্ধে কিছুই করতে হবে না, ইসলামের সৌন্দর্য প্রচার করতে হবে না, ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা, বিচার ব্যাবস্থা, খিলাফত ইত্যাদি সম্পর্কে কিছুই বলা দরকার নাই, তাহলে দাজ্জালি বিশ্বব্যবস্থা হুমকির মুখে পরবে। তোমাকে শুধুমাত্র জামাতী, তরীকতী, বেরেলভী, সালাফীদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। তারপর ষোলটি বছর তাকে প্রশিক্ষন দেয়ানো হয়। যখন সে বেরিয়ে আসে তখন তাকে দেখতে আলেম মনে হলেও প্রকৃত পক্ষে সে শয়তানের প্রতিনিধি। কারণ সে ইহুদী, খৃষ্টান ও মুশরিকদের সাথে আপস করতে রাজী, মরতে রাজী কিন্তু জামাতী, তরীকতি ইত্যাদিদের সাথে আপোস করা তার সাধ্যের অতীত, তার রক্ত ও স্বভাব প্রকৃতি বিরুদ্ধ। সে যতদিন দুনিয়াতে বেঁচে থাকে ততদিন মুসলিম জাতির মুক্তি, উন্নতি ইসলামের প্রচার-প্রসার ইত্যাদি নিয়ে মাথা ঘামায় না, তার জীবনের লক্ষ একটাই থাকে, কিভাবে প্রতিপক্ষ ফেরকাগুলিকে কাফের, মুশরেক, মুরতাদ সাব্যস্থ করা যায় এবং ভুপৃষ্ট থেকে তাদের অস্তিত্ব নাসইয়াম মানসিয়্যা করে দেয়া যায়।

এভাবে ইসলাম যে মুসলমান ভাইয়ের সাথে সহোদর ভাইয়ের মত সম্পর্ক রাখা ফরজ করেছে- তা লঙ্ঘন করে সে ইহুদী খৃষ্টান ও শয়তানের অবৈতনিক ভাড়াটে গুন্ডা হিসাবে ব্যবহৃত হয় এবং ইসলাম ও মুসলিম ধ্বংসের রাজপথ তৈরী করে দেয়। এমনিভাবে মুসলিম হিসাবে জন্ম নেয়া শিশুটি ফেরবাবাজির যাতাকলে পড়ে ইসলাম ও মুসলিম ধ্বংসের আড়কাঠি হিসাবে ব্যবহৃত হল, আল্লাহ্‌ ও রাসূলের শত্রু হল, স্বজাতি-বিদ্ধেষের কারণে মানবতার দুশমন হল। সবচেয়ে বড় কথা তার ইহকাল ও পরকাল ধ্বংস হল অথচ সে টেরও পেল না।

ঠিক একইভাবে, জামাত শিবিরে প্রবেশ করলে তাকে বলা হয়-বেহেস্তে যেতে হলে তাবলীগী, তরীকতি ইত্যাদিদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। আর তাকে সেই উপযোগি প্রশিক্ষন দেয়া হয়। তাবলীগে ঢুকলে তাকে বলা হয় জিহাদ, খিলাফত রাজনীতি এসব আবার কি, এসবের খেতা পুড়, বেহেস্তে যাবার একমাত্র সহজ তরীকা হচ্ছে জামাতীদের কাফের, মুশরিক প্রমাণ করতে পারলেই ডাইরেক্ট বেহেস্ত।

তরীকতি ফেরকায় গেলে তারা গায়, বানাইয়্যা নুর নবী দেখাইলেন আপনা ছবি/ সেই নবীজির চরণ বিনে নাইগো পরিত্রাণ। আহাদে আহমদ বানাইয়ে, মিমকা পদ মাঝে দিয়ে/ খেলিতেছেন পাক বারী হইয়া বেনিশান। বস্তুত খৃষ্টীয় বৈরাগ্যবাদ, শিয়াবাদ, ব্রাহ্মণ্যবাদ ও ইবনুল আরাবির ওয়াহদাতুল ওজুদবাদের মিক্সিড ছুফীবাদিরা অন্যদেরকে মুসলমান মনে করে না।

আবার সালাফীজমে ঢুকলে তারা বলে হানাফী ও সুফীবাদীদের যত বেশি গালাগালি করবে তত দ্রুত বেহেস্তের কাছাকাছি পৌঁছতে পারবে। এমনিভাবে যারা মুসলমান হিসাবে জন্ম নিল-ফিরকাবাজ আলেমরা তাদেরকে বিভিন্ন ফেরকায় ইসলামের নামে টেনে টেনে নিয়ে অমুসলিম-কাফেরে পরিণত করল। ইহকাল- পরকাল উভয়টাই নষ্ট করল। কারণ কোরান হাদিস দ্বারা প্রমাণিত ফেরকবাজরা মুসলিম থাকে না। বস্তুত প্রত্যেকটা ফেরকা শয়তানের ঘাটি, যেগুলো ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংসের কারখানা এবং জাহান্নামের ঠিকানা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজেই ফেরকাবাজীর অবসান ঘটাতে হবে।

বিষয়: রাজনীতি

১০৮৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

375122
২৩ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০৩:০০
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : অতিরঞ্জিত হয়ে গেছে বেশ।
375123
২৩ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০৩:০২
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আপনার নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই। মনে হচ্ছে নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে গিয়ে সবাইকে একই দোষে দোষী বানিয়ে দিয়েছেন। অভিযোগগুলি সকলের বেলায় সত্য নয়। যেটি সত্য বলে জানেন, সেটিই প্রচার করে যান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File