আবার উর্দু নিয়া কাইজ্যা
লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ০৪ জুন, ২০১৬, ১২:৩০:০২ দুপুর
আগে সংবাদটি পড়ুন তারপর আমার ব্যাখ্যাটা দেখুন।
স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫ তম শাহাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সহস্রাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির উপস্থিতে মঙ্গলবার পূর্ব লন্ডনের রয়েল রিজেন্সী অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনা সভা। যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের পরিচালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ ওয়াসিম, শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস প্রসুখ।
আলোচনা সভায় বলা হয়, ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে উর্দু নাম নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল হতে পারেনা। উর্দু নাম নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারেনা।
এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের আওয়ামী উর্দু শব্দ। এই উর্দু নাম ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। জনগণের রায়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনে রেফারেন্ডাম দিয়ে জনমত যাচাই করা হবে। জনগণের রায় পেলে উর্দু নামের রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হবে।
সভায় বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানও চোরের দল চাটার দল বলে আওয়ামী লীগকে ১৯৭৫ সালে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। (সংবাদ শেষ)।
এখানে আমার দুটি আলোচ্য বিষয়। আমাদের নেতৃবৃন্দের মূর্খতা ও তাদের দায়িত্ব।
জাতীয় নেতৃবৃন্দের মূর্খতাঃ
অজ্ঞতা এক জিনিস মূর্খতা আরেক জিনিস। সবাই সব ভাষায় ও বিষয়ে বিজ্ঞ হবে এটা যৌক্তিক কথা নয়। কিন্তু যারা জাতিকে নেতৃত্ব দেন, জাতির পরিচালক তাদের জন্য অন্তত জাতীয়ভাবে ব্যবহৃত কিছু পরিভাষা, কিছু নামের সম্যক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। না থাকলে অন্তত মন্তব্য না করে নীরব থাকাই উত্তম। কিন্তু তারা একের পর এক নিজেদের অজ্ঞতা জাহির করে চলেছেন।
যেমন তারেক জিয়া ভাই বলেছেন আওয়ামী উর্দু শব্দ, অথচ এটা প্রসিদ্ধ আরবী শব্দ। উসুলে ফিকহ শাস্ত্রের বিখ্যাত দুটি পরিভাষা হলো আম(আদ্যক্ষর আইন) ও খাস। খাস অর্থ নির্দিস্ট, নির্ধারিত। আর আম অর্থ ব্যাপক, সাধারণ, সার্বজনিন, কমন, জন ইত্যাদি। বাংলা ভাষায়ও এর ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। যেমনঃ আম-জনতা, আম- পাবলিক, আম-মানুষ ইত্যাদি। এই আম শব্দের বহুবচন আওয়াম্ম, এর থেকে আওয়াম-এর সাথে আরবী রীতি অনুযায়ী ইয়ায়ে নিসবতি (সম্পৃক্ত করনের ইয়া বা দীর্ঘ ঈ-কার) যুক্ত করে হয়েছে আওয়ামী, অর্থ জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ত এমন। সুতরাং আওয়ামী লীগ অর্থ জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ত লীগ বা সঙ্ঘ বা দল। হ্যাঁ আরবী ফারসি ও সংস্কৃতের জগাখিচুড়ি উর্দু ভাষায়ও এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তাই বলে এটি উর্দুর নিজস্ব সম্পদ নয়। যেমনঃ ইমাম, রোযা, আদালত, ইনসাফ, কারখানা ইত্যাদি শব্দ বাংলা ভাষায়ও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু গ্রামার এগুলিকে বিদেশী শব্দ বলে চিহ্নিত করেছে।
আবার জয় ভাই ও তার সতীর্থরা বললেন, জিন্দাবাদ উর্দু শব্দ এটি বলা যাবে না। বাংলাদেশ চিরজীবি হউক বলতে হবে। অথচ এটি ফার্সি শব্দ। এ মুহুর্তে আমার হাতে কোন ফারসি গ্রামার বা ডিকশনারি নেই বিধায় শব্দটির বিশ্লেষণে অনুমানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ভুল হতে পারে, কারো জানা থাকলে মন্তব্য কলামে সংশোধন করে দিয়েন। ফারসি ক্রিয়ামূল যিদান (জন্ম নেয়া) এর অনুজ্ঞা হল যিনদ। আর ফারসিতে অনুজ্ঞার শেষে হা যুক্ত করলে কর্মবাচক বিশেষ্য হয়ে যায়। সুতরাং যিনদাহ (যা দিয়ে জীম দিয়ে নয়) মানে যাকে জন্ম দেয়া হয়েছে, জীবন দেয়া হয়েছে, এক কথায় জীবিত। যিন্দাহ থেকে যিন্দেগি, ফারসি শব্দের শেষে ইয়া বা দীর্ঘ ঈ- কার যুক্ত হলে হ সর্বদা গ হয়ে যায়। আর বাদ ফারসি শব্দ, এ ক্রিয়াটি দোয়া ও আশির্বাদের জন্য ব্যবহৃত হয়। অর্থ আরবীতে কুন, ইংরেজিতে মে, বি, বাংলায় হউক, থাকুক, হও ইত্যাদি। সুতরাং জিন্দাবাদ (মূলত যিন্দাবাদ হবে) অর্থ হল চিরঞ্জিব হউক বা থাকুক। কাজেই এটি ফার্সি শব্দ, উর্দু শব্দ নয়।
আবার শাহবাগ আন্দোলনের সময় এক টকশোতে দেখলাম আগের দিন এক ব্লগার বলল, মাদরাসা একটি ফার্সি শব্দ। পরের দিন আর টি ভি-এর সঞ্চালক ঢাকা ভার্সিটির শিক্ষক রুবায়্যেত ফেরদৌসও একই ঘোষণা দিয়ে দিলেন। এটা দুঃখের বিষয়। যদিও সব ভাষার শব্দ সকলের জানা শর্ত নয় কিন্তু ঢাকা ভার্সিটির একজন শিক্ষকের জন্য অন্তত এটুকু কমন সেন্স থাকা উচিত যা একজন অশিক্ষিত মানুষেরও থাকে। কারণ মাদরাসা শব্দটি শুনে একজন নিরক্ষর লোকও বলবে এটা তো কেমন আরবী আরবী শুনা যায়। কারণ বাংলা ভাষায় ম আদ্যক্ষর বিশিষ্ট আরবি শব্দের বহুল প্রচলন দেখা যায়। আরবী ভাষায় তিন প্রকারের বিশেষ্য ম আদ্যক্ষর দিয়ে গঠিত হয়। যেমন কর্তৃ ও কর্ম বাচক বিশেষ্য এবং অধিকরণ তথা স্থানাধিকরণ ও কালাধিকরণ। এখন ম বা মীমটি যদি পেশ বা হ্রস্ব উ-কার দিয়ে হয় তাহলে এগুলি কর্তৃ ও কর্মবাচক বিশেষ্য। যেমন মুয়াজ্জিন,মুকাররম, মুশাররফ, মুশফিক, মুরীদ, মুকাদ্দস, মুযাফফর ইত্যাদি। আর যদি ম-বা মীমটি আকার (যবর) দিয়ে হয় তাহলে বুঝতে হবে এটা অধিকরণ। যেমনঃ মাসজিদ (সিজদাস্থল), মাক্তব (লিখার স্থল), মাদরাসা (দরসস্থল), মাজলিস (জলসা বা বৈঠকস্থল) ইত্যাদি।
আবার আমাদের জাতীয় মাতাজি খালেদা জিয়া রেগে গিয়ে এক মহিলা পুলিশকে বললেন, গোপালি আমরা ক্ষমতায় গেলে গোপালগঞ্জ থাকবে না। আর এটা নিয়ে তখন দেশে কুরুক্ষেত্র কান্ড ঘটে গেল। অথচ তিনি কত সুন্দর এবং যৌক্তিক কথা বলেছেন। কারণ গোপালগঞ্জ শব্দটি সম্ভবত ষষ্টি তৎপুরুষ সমাস। এর সমস্যমান পদগুলি হচ্ছে গো+পাল+গঞ্জ=গরুর+পালের+জনপদ। অথবা গোপাল+গঞ্জ=গোপালদের মানে হিন্দুদের+জনপদ অর্থাৎ ঐ জেলাটিতে যারা থাকেন তারা সবাই গরুর পাল, একটাও মানুষ নাই। অথবা তারা সবাই হিন্দু, একটাও মুসলমান নাই। কাজেই পরবর্তি বাক যুদ্ধের সময় তো আমাদের মাতাজির বুদ্ধিমত্তার সাথে বলা উচিত ছিল, আরে শুন মূর্খ বাঙালি, তোমাদের ঐ বিশ্রি নামটা বদলায়ে সুন্দর নাম রাখার জন্য আমি এ কথা বলেছি। আজ থেকে গোপালগঞ্জের নাম হল নবীগঞ্জ, শরীফগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, মদীনানগর, ইত্যাদি। কিন্তু তিনি এ বুদ্ধিটুকুরও পরিচয় দিতে পারলেন না।
জাতীয় নেতৃবৃন্দের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ
আমাদের দেশের রাষ্ট্রচালক ও রাজনীতিবিদদের কর্মকান্ড ও বক্তব্য দেখে মনে হয়, দেশটি যেন সুখের স্বর্গে ভাসছে। এখানে কোন সমস্যা নাই, কিছু করনীয় নাই, উন্নয়ন অগ্রগতির দরকার নাই বিধায় তাদেরও কোন কাজ নাই। কাজ যেহেতু নাই তাই সময় ব্যয় করার জন্য একেকটা চেতনার জন্ম দেন, বিভিন্ন চেতনার বেলুন ফুলিয়ে একে অন্যের মাথায় ফুটানোর খেলায় মত্ত হয়ে থাকেন। কোন যুগে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ হয়েছে, স্বীকৃতি হয়েছে, রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু এখনো সেই যুদ্ধের ধ্বজা ধরে বিষোদগার চলছেই চলছে। তাতে পাকিস্তানের ক্ষতিটা কি হচ্ছে? এতই যখন শত্রুতা তাহলে বোমা মেরে উড়িয়ে দাও, পাকিস্তানের অস্তিত্ব মুছে ফেল, কূটনৈতিক সম্পর্ক ত্যাগ কর, দুতাবাস উঠিয়ে দাও। তা না করে বা করতে না পেরে শুধু কাগুজে বাঘের মত দাঁত খিঁচিয়ে রাখলে লাভটা কি, হাওয়াই চেতনার বাণিজ্য ? আরে মিয়াঁ, তুমি উর্দু শব্দ রাখবা কি না রাখবা এতে তাদের কি আসে যায়। ওদের যা কিছু সব মাটি কেটে বিমানে ভরে পাঠিয়ে দাও ওদের দেশে, তারপর দেখ কার কি ক্ষতিটা হয় না হয়।
পাকিস্তানের কিছুই আসে যায় না। কিন্তু বাংলাদেশের ? এই সব চেতনার বিষবাস্প ছড়িয়ে ভাঙ্গন-বিভক্তি, হিংসা-হানাহানি উস্কে দেয়া হয়। ফলশ্রুতিতে কিছু দিন পর পর রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। রক্ত গঙ্গা বইয়ে যায়। মানব দেহ পোড়ার গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে উঠে। ইয়াতিম বিধ্বার রক্তাশ্রুতে জমিন বিষাক্ত হয়ে উঠে। জন সাধারণের জান-মাল, বাড়ি-ঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য, গাড়ি-ঘোড়া পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। কৃষক শ্রেণীর মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যাচ্ছে দরিদ্র শ্রেণী মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। ইভটিজিংয়ের বিষাক্ত থাবায় নারী আজ নিলকণ্ঠ। দেশ দুর্নীতিতে চিরস্থায়ী বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান। কাজেই ভাওতাবাজি অনেক হয়েছে আর নয়। আমরা সাধারণ মানুষ চারটা ডাল ভাত খেয়ে একটু আরামে ঘুমাতে চাই। কাজেই আমাদের রাষ্ট্রচালক ও রাজনীতিবিদদের প্রতি আবেদন, এই সব বিভিন্ন চেতনার বুলি বাদ দিয়ে দেশের জন্য, জন সাধারণের জন্য, মানুষের জন্য, মানবতার জন্য কিছু করুন।
আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, আমরা অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। কাজেই টিকে থাকার লক্ষে ও জাতীয় স্বার্থে আমরা সাত দফা দাবী পেশ করছি। যারা আমাদের দাবী পূরণে এগিয়ে আসবে আমরা তদেরকেই ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠাব। আমাদের দাবী-
১। মুসলিম জাতীয় অধিকারঃ মুসলিম জাতির বৃহত্তর কল্যাণের লক্ষে মুসলিম জাতিসংঘ/আফ্রেশিয় ইউনিয়ন/ খিলাফত বা এ জাতীয় কোন সংস্থা সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। এ সংস্থা হবে যুক্তরাষ্ট্রীয়-ফেডারেল সরকারের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন। মুসলিম দেশগুলি এর অধিনে প্রদেশের ন্যায় গণ্য হবে। এ সংস্থার কাজ হবে ত্রিব্ব, মানে তিন ব, মানে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও বিশ্ব নেতৃত্বে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা। ইউরোপিয় ইউনিয়নের ন্যায় সকল দেশে একই শিক্ষা, আইন, ভিসাহীন উন্মুক্ত কর্মক্ষেত্র প্রবর্তিত হবে ইত্যাদি।
২। নাগরিক অধিকারঃ রাষ্ট্রের সকল নাগরিক সরকারের পোষ্য। কাজেই সক্ষমদের দেশে অথবা বিদেশে সরকারি খরচে কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। অক্ষম-প্রলেতারিয়েত-মুস্তাদআফদের সরকারি ভাতায় প্রতিপালন করতে হবে। মুস্তাদআফ হল ইয়াতিম, বিধবা, বয়োবৃদ্ধ, সকল প্রকার প্রতিবন্ধি ও হিজড়া। সর্বোপরি সকল ছিন্নমূলের পুনর্বাসন করতে হবে। আর্থিক উৎস হবে-
ক। বিদেশে পাচার হওয়া সকল অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে। আয় বহির্ভুত সকল সম্পদ ফেরত/বাজেয়াপ্ত হবে। খ। যাকাত, কিন্তু যাকাতে সংকুলন না হলে বিত্তশালীদের সম্পদ থেকে এক দশমাংশ বা এক পঞ্চমাংশ উসুল করতে হবে।
৩। বিচারঃ ইংরেজ প্রবর্তিত গাজাখুরি বিচার ব্যবস্থা বাতিল করে ইসলামী দিয়ত বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। তাহলে উপার্জনক্ষম নিহত ব্যক্তির পরিবার ও ধর্ষিতা মেয়েরা টিকে থাকার ও বেঁচে থাকার অবলম্বন পাবে।
৪। চিকিৎসাঃ প্রত্যেক উপজেলায় নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক পৃথক মানসম্পন্ন আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে। প্রত্যেক ইউনিয়নে স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। প্রত্যেক হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য আলাদা বিভাগ থাকতে হবে।
৫। নারী অধিকারঃ নারীর শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্র আলাদা করতে হবে, তবে পঞ্চাশোর্ধ নারী পুরুষ ইন্টারসেঞ্জ হতে পারবে। বৃদ্ধা ও ১৬ বছরের কম বয়স্কা দরিদ্র মেয়েদের ভাতা দিতে হবে। ইভটিজিং, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিচার ও ক্ষতিপূরণ উভয়টির বিধান রাখতে হবে।
৬। কৃষক শ্রমিক অধিকারঃ কৃষি খাতে সম্পূর্ণ জ্বালানি ফ্রী করে দিতে হবে। শ্রমিকের উদ্বৃত্ত মূল্য তত্বের যৌক্তিক সমাধান করতে হবে।
৭। শিক্ষাঃ আফগান থেকে আরাকান পর্যন্ত সকল মাদরাসায় আরবী মাধ্যমে জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল শাখা পাঠ্যভুক্ত করতে হবে।
ইংশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই সাত দফা আন্দোলনের বিস্তারিত আসছে। যারা আমাদের দাবী পূরণের অঙ্গিকার করবে আমরা তাদের সাথেই থাকব।
বিষয়: বিবিধ
১৬১৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর হ্যা..(সত্য ঘটনা অবলম্বনে)আবার বিরতী দিলেন কেন...চালিয়ে যান ভালই তো লাগতেছিল।
মাদ্রাসার সভাপতি শের-এ-বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক ও মাদ্রাসার সেক্রেটারী খোদ মাওলানা আবুল কাসেম।
তারা করণীয় জানতে চাইলে আমার পিতা দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়ে দিলেন যে, এলাকার নাম হবে “কাসেমাবাদ”। রাসুল (সঃ) এর ছেলে কাসেমের নাম যোগে রাসুল (সঃ) এর নাম হয়েছিল আবুল কাসেম। মাদ্রাসার সভাপতি ও সেক্রেটারীর নামও সে বরকতে আবুল কাসেম রাখা হয়েছে। তাই, হরিসোনার নতুন নাম হবে “কাসেমাবাদ”।
হিন্দু জমিদারদের অনুগত প্রজা শের-এ-বাংলা ও তার বন্ধু পড়ল বিপদে। জমিদার বাবুদের বিরুদ্ধাচরণ তখনও তাদের মানস পৃষ্ঠে প্রায় অকল্পনীয় ছিল। তখনও ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান হয়নি। ব্রিটিশ হিন্দু আঁতাতের জমিদারী প্রথা তখনও হিন্দু মুসলিম প্রজাদের মুক্তির চিন্তাকে আড়ষ্ট করে রেখেছিল।
যে কথা, সে কাজ। আমার পিতা তার ছাত্র ও এলাকার মুক্তিকামী মুসলিম ভক্তবৃন্দকে দিয়ে হাট-বাজারে ও গ্রামে-গঞ্জে ঢোল শহরত করে ঘোষণা করিয়েছিল যে, এলাকাও আর হরিসোনা নয়, আর মাদ্রাসাও হরিসোনা মাদ্রাসা নয়। বরং, এখন থেকে এলাকার নাম কাসেমাবাদ এবং মাদ্রাসার নাম কাসেমাবাদ মাদ্রাসা।
এর প্রতিক্রিয়া ও প্রত্যুত্তরে হিন্দু জমিদার ও তাদের পোষ্যরা মাঠে নেমেছিল এ নতুন নামকরণ ঠেকাতে। তারাও পাল্টা প্রচারে নেমেছিল। তারা প্রচার চালিয়েছিল যে হরিসোনা হরিসোনা-ই থাকবে।
তখন বরিশালে যাতায়াতের প্রধান বাহনই ছিল নৌকা। স্টিমার থেকে নেমে কোথাও যেতে হলে নৌকা ব্যতীত গত্যন্তর ছিল না। নৌকার মাঝিরা জমিদার বাবুদের দাসতুল্য প্রজা। তাই জমিদারদের পাইক-পেয়াদারা ঢোল পিটিয়েছিল যে এ “ভিনদেশী” মাওলানাকে নৌকার মাঝিরা যেন তাদের নৌকায় বহন না করে।
অপরদিকে এ তেজী মাওলানাও দমা ও পরাজিত হওয়ার পাত্র ছিল না। স্টিমার থেকে নেমেই সঙ্গীদের নিয়ে হাঁক ছাড়ল “কে যাবে কাসেমাবাদ?”। মাঝিরা জমিদারদের শিখানো উত্তর দিল, “আমরা কাসেমাবাদ নামে কোন জায়গা চিনিনা”। তখন স্টিমার ঘাট থেকে গন্তব্যের ভাড়া ছিল পঁচিশ পয়সা। মাওলানার বাপ-দাদা অভাবগ্রস্ত ছিল না। বর্তমানের মত মাদ্রাসা মসজিদ প্রতিষ্ঠাতাদের পেশা ও জীবিকা ছিল না। বেতন দিয়ে বউ, ছেলে-মেয়ে পুষতোনা।
পঁচিশ পয়সার স্থলে হাঁকা হল, “কে যাবে কাসেমাবাদ পাঁচ টাকা ভাড়া?”। চার আনার স্থলে পাঁচ টাকা সবাইকে কাসেমাবাদ চিনিয়ে দিল। আমার পিতা তার সঙ্গী-সাগরেদদের নিয়ে নৌকায় চড়ে মুহুর্মুহু স্লোগান দিয়ে হরিসোনাকে কাসেমাবাদ বানিয়ে ছাড়ল।
রমাদানের প্রস্তুতি নিয়ে চলছে ব্লগ আয়োজন। ২ জুন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৬ পর্বের ব্লগ আয়োজনের ১ম পর্ব। অংশ নিতে পারেন আপনিও। নিজে জানুন, অন্যকে জানান। বিস্তারিত জানতে-
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন