চিঠি- ৬ (সত্য ঘটনা অবলম্বনে এক অনন্য ট্রাজেডি)

লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১৪ মে, ২০১৬, ১০:৩৭:১৭ সকাল

তিন দিন ব্যাপি মেলা শুরু হয়েছে। শিশুরা তাদের পিতা মাতার সাথে মেলায় যাচ্ছে আর নিজ নিজ পছন্দানুযায়ী বাশি, বেলুন, খেলনা গাড়ি, উড়ো জাহাজ ইত্যাদি হরেক রকম খেলনা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে জিলেপি, খুরমা, পিঠা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার আঞ্চলিক ও দেশীয় মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার কিনে নিয়ে যাচ্ছে। মেলা উপলক্ষে এলাকায় উৎসব পড়ে গেছে। শিশু, বুড়ো, জোয়ান নারী পুরুষ সবাই আনন্দে মেতে উঠেছে। সবাই শিশুদের নিয়ে দুয়েক বার করে মেলা থেকে ঘুরে আসছে। আর এটা ওটা কিনে আনছে। এলাকার কিশোররা বিভিন্ন জায়গায় লাউড স্পীকারে গান বাজাচ্ছে, আনন্দ স্ফুর্তি করছে। এলাকার উপর দিয়ে আনন্দ উৎসবের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। মুনীরা স্কুল থেকে তাড়াতাড়ি এসে ব্যাগটা ঘরে রেখেই দৌড়ে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়াল। তাকে মেলায় নিয়ে যাবার বা কোন কিছু কিনে দেয়ার মত কেউ নেই। তার মা তো আগেই বলেছে মেলায় যাবে না, মেলায় গেলে গুনাহ হয়। তাই তার একমাত্র আশা তার আব্বু আসবে আর তাকে কোলে করে মেলায় নিয়ে যাবে। সে মনে মনে হিসাব কষে রেখেছে মেলায় গিয়ে কি কি কিনবে। তাদের স্কুলের সবাই বলা বলি করছে কে কি কিনবে। সামিরা বলেছে, সে স্কুল থেকে গিয়েই আর দেরি করবে না, খাবেও না, সরাসরি তার আম্মুকে নিয়ে মেলায় চলে যাবে। তারপর সবার আগে সেই গাড়িটা কিনবে যাতে ব্যাটারি ভরলেই তাতে চড়ে যেখানে খুশি সেখানে যাওয়া যায়। কাল থেকে সেই গাড়িতে চড়েই সে স্কুলে আসবে, আর হেটে আসবে না। তারপর একটা একটা করে বাকী জিনিস কিনবে। তার কথা শুনে মাহিম বলেছে সে গাড়ি কিনবে না, সে কিনবে একটা হাতি। সেই হাতির মধ্যে ব্যাটারি ভরলেই এত্তো বড় হয়ে যাবে। তারপর সে হাতির পিঠে চড়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবে, হাতির পিঠে দাঁড়িয়ে আম, জাম, লিচু, কলা ইত্যাদি পেড়ে খাবে। আর এখন থেকে সে আর তার মায়ের সাথে হেটে হেটে স্কুলে আসবে না, হাতির পিঠে চড়ে আসবে। তারপর মীযান বলল, সে আগে কিনবে একটা খেলনা বন্ধুক। স্কুল থেকে গিয়ে প্রতিদিন সে এটা দিয়ে পাখি শিকার করবে। তারপর কিছু পাখি খাবে, অন্য কোন তরকারি খাবে না, শুধু পাখির গোশত দিয়ে ভাত খাবে। আর কিছু পাখি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে সারাদিন দোকান থেকে কিনে কিনে দই খাবে, কারণ দই তার কাছে খুব মজা। ওর আম্মুর কাছে আর টাকা চাইবে না। প্রতিদিন টাকা চাইলে খালি বকে। শাকিরা বলেছে, সে আগে কিনবে মাটির হাড়ি পাতিল। সে গুলোতে সে একাই রান্না করে একাই খাবে, ওর বাবা মার সাথে আর খাবে না। এভাবে সবাই কত্তো কত্তো জিনিস কিনার কথা বলেছে। কত্তো খাবার কিনবে বলেছে। তাই মুনিরাও ভেবে রেখেছে কি কি কিনবে।

রাস্তা দিয়ে শিশুরা মা বাবার কোলে চড়ে বা তাদের হাত ধরে খেলনা হাতে যাচ্ছে। কেউ বাশি ফুকছে, কেউ বেলুন উড়াচ্ছে, কেউ ঘুড়ি নিয়ে যাচ্ছে, কেউ খেলনা বন্ধুকের গুলি ছুঁড়ছে। কেউ জিলাপি বা অন্য কিছু খেতে খেতে যাচ্ছে। কেউ মুনীরার দিকে অপাংক্তেয় চোখে তাকিয়ে দেখছে, পরিচিতরা বলছে, মুনীরা তুমি এখনো মেলায় যাও নি। এই যে দেখ আমি কত কিছু কিনে নিয়ে এসেছি বলে তাদের খেলনা ও মিষ্টি জাতীয় খাদ্যগুলি দেখিয়ে তার ব্যাথাতুর হৃদয়ে আগুন দিয়ে চলে যাচ্ছে। মুনীরা ঠায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার অতৃপ্ত ও তৃষিত দুটি চোখ মেলে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে আর তার ছোট্ট হৃদয়টি ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাচ্ছে, সে তার মনের গভীর অন্ধকারতম কোণে আশার প্রদিপ জ্বালিয়ে রেখেছে, তার আব্বু আসবে, তাকে কোলে নিয়ে মেলায় যাবে। সেখানে গিয়ে প্রথমেই সে রং পেন্সিলের একটা বক্স কিনবে। তাদের ক্লাসের ছাত্রদের কত সুন্দর সুন্দর বক্স আছে, তারা সেগুলি দিয়ে হরেক রঙের কত সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকে। তার একটি রং পেন্সিলের বক্স থাকলে সেও ভাল ভাল ছবি আঁকতে পারবে। তারপর দোকানে যত্তো গুলি খাতা-কলম আছে সবগুলি কিনে ফেলবে। কারণ তার যে খাতা থাকলে কলম থাকে না, কলম থাকলে খাতা থাকে না। তারপর যাবে খেলনার দোকানে। সেখানে যত্তো খেলনা আছে সবগুলি কিনবে, একটা বিদেশী লেগুসেট কিনবে। দুইটা পুতুল কিনবে, একটা ছেলে একটা মেয়ে, এদের বিয়ে দিবে। আর বিয়ের মধ্যে সবাইকে দাওয়াত করবে। ধুলি ভাত খেতে দিবে, অনেক আনন্দ করবে, তবে সবার আগে সে রিকশাটা কিনবে, তাতে ব্যাটারি ভরে রিকশায় চড়ে স্কুলে যাবে, আর কখনো হেটে যাবে না। এগুলি কিনে তারপর যাবে মিষ্টি বাজারে। যত্তো প্রকারের মিষ্টি আছে সবগুলি কিনে বাসায় আসবে। তারপর আশে পাশের বাসায় যারা তাকে খেতে দিত তাদের সবাইকে জিলাপি, মিষ্টি খুরমা ইত্যাদি দিবে, আর যারা তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে খেত কিন্তু দিত না, তাদেরকে সে কিচ্ছু দিবে না। তখন তারা হাত বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলবে, মুনীরা একটু দাও, একটু দাও, আর এভাবেই শিশুটি তার অতৃপ্ত হৃদয়ের বাসনাগুলি কল্পনার জালে পূরণ করছিল।

কিন্তু- মুনীরা খাবে” তখনই তার চমক ভাঙ্গল যখন পাশের বাসার সুজন জিলাপির ঠোঙ্গা নিয়ে খেতে খেতে একটা জিলেপি বাড়িয়ে দিয়ে বলল- খাবে? কিন্তু যখনই সে হাসি মুখে হাত বাড়াল তখন দুষ্ট ছেলেটি ফিক করে হেসে দিয়ে জিলাপির টুকরাটি তার মুখে পোড়ে হাসতে হাসতে চলে গেল। অব্যক্ত বেদনায় মেয়েটির চোখে জল এসে গেল। সেই দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশুটি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল, পথের উপর অপলক দৃষ্টি রাখল, একটু এদিক সেদিক গেল না, কারণ তার আশংখা তার বাবা যদি এসেও পথ ভুলে চলে যায়-বাসা না চিনে। এ জন্যই সে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। আবার সে চিন্তা করে, সে তার বাবাকে চিনবে কেমনে, তার বাবাই বা তাকে চিনবে কেমনে? সে তো শুনেছে দেড় বছর বয়সের পর থেকে আর বাবা মেয়ের দেখা নাই। সে ভীষণ চিন্তা করে আর ভাবে তার দিকে যে লোকটি তাকাবে এবং এগিয়ে আসবে, তাকে সে জিজ্ঞেস করবে, আপনার মেয়ের নাম কি মুনিরা। যদি লোকটি হাঁ বলে তখনি সে আব্বু বলে তার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়বে। তারপর বাসায় গিয়ে বাবার কোলে বসে খাবে। কিন্তু সে হাতে তুলে খাবে না , বাপ তাকে খাইয়ে দিবে।

তারপর মেলায় গিয়ে একে একে যত খেলনা যত মিঠাই আছে সব কিনবে। কিন্তু তার আব্বু যদি বলে আম্মু আর কিনতে হবে না, আর টাকা নাই। তখন সে গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে আর বলবে, তুমি এতদিন আসনি কেন এখন আমাকে সব কিনে দিতে হবে। নইলে আমি তোমার সাথে কথা বলব না। এইভাবে একটা অবোধ শিশু তার বাবার পথের পানে তাকিয়ে তাকিয়ে কল্পনার জাল বুনতে থাকে।

দিনমান দিবাকর একটি নিষ্পাপ শিশুর অন্তহীন বেদনা আর অব্যক্ত হাহাকারের লজ্বায় রক্তিম হয়ে অস্তাচলে গা ঢাকা দিল, চারিদিকে অন্ধকার নেমে এল। প্রকৃতির অন্ধকারের চেয়ে গাঢ়তর অন্ধকার নেমে এসে তার ছোট্ট হৃদয়টি বিষিয়ে তুলল। তবে কি আব্বু আসবে না। নৈরাশ্যের অন্ধকার ভেদ করে দুটি চোখ বিস্ফারিত করে পথের দূর দূর প্রান্তে তার দৃষ্টি হাতরে ফিরে, বাবাকে খুজে মরে। কিন্তু কুহকীনি আশা বার বার বাসা ভাঙ্গে। অন্ধকার আরো ঘনীভূত হল, মুনীরা মুনিরা বলে মা ঘর থেকে ডাকছে। মনের গভীরে ঝড়ের তাণ্ডব বইছে, কণ্ঠনালীতে ফেনায়িত হয়ে উঠা কান্নায় চোখ মুছতে মুছতে শিশুটি আস্তে আস্তে ঘরের দিকে পা বাড়াল।

রাত্রে ও সকালে যতক্ষণ সে বই নিয়ে বসে থাকল ততক্ষণ তার দৃষ্টি বইয়ের প্রতি নিবদ্ধ থাকল বটে কিন্তু তার মনোযোগ পড়ে থাকল বাইরে দরজার উপর। কখন বাইরে বা দরজায় একটু শব্দ হয়, তার বাবা এসে হঠাৎ হাজির হয়ে যায়। বাবাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সে সর্বদা প্রস্তুত হয়ে থাকল। কিন্তু না, তার বাবা এলো না। বিষণ্ণ মনে রাস্তায় মানুষের মাঝে তার বাবার খোঁজে দুটি চোখ সতর্ক রেখে সে স্কুলে গেল। সেখানে ছাত্রদের প্রত্যেকের কাছে মেলার বিভিন্ন জিনিস দেখতে পেল, তাদের প্রত্যেকেই মেলার মিঠাই জাতীয় জিনিস টিফিনের জন্য বক্সে করে নিয়ে এসেছে। আর সকলেই কত আলাপ করেছে। কেউ বলেছে সে এত খেলনা কিনেছে যে, তার আব্বু ঠেলাগাড়ি দিয়ে সেগুলি বাড়িতে নিয়ে গেছে। কেউ বলেছে এক বস্তা খেলনা কিনেছে। কেউ বলেছে সে বাজারের সব মিঠাই কিনে রিকশা করে বাড়ি নিয়ে গেছে। আরো কত্তো আলাপ হয়েছে। এসব শুনে এবং দেখে মুনীরা প্রত্যেকের জিনিস আগ্রহি চোখে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখল আর সেগুলো কিনার জন্য তার বাসনা প্রবল হয়ে উঠল।

স্কুল ছুটি হতেই তাড়াতাড়ি বাসায় গিয়ে ব্যাগটা রেখেই দৌড়ে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়াল। তার বিশ্বাস আজ তার আব্বু আসবেই। কারণ মেলা যে প্রায় শেষ, শুধু কাল দিনটা বাকী আছে। ছোট্ট শিশু পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকে তার বাবার অপেক্ষায়। পথ দিয়ে চলে যায় সজ্জিত পিশাচ নারী- নর, অভিশপ্ত এ পৃথিবী, পাথরের ঘর, মৃত্যু কারাগার। এখানে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। কেউ কারো প্রতি ফিরে তাকায় না। ছোট্ট শিশু দাঁড়িয়ে থাকে পথের ধারে। অপরিচিতরা চকিত দৃষ্টি ফেলে চলে যায়। পরিচিতরা ফিরেও তাকায় না। একটু এগিয়ে আসে না, তার ব্যাথা বুঝে না, জিজ্ঞেস করে না বাবু কিছু কিনবে, কিছু খাবে? পাথরের পৃথিবীতে সবাই পাথরের মানুষ। দেহাভ্যন্তরে হৃদয় নায়, সেখানে পাথর বসানো। আর পাথর থেকে কখনো মনুষ্যত্ব ও মমত্ববোধ বেরোয় না। মানুষ সব উদ্ভ্রান্তের মত ছোটে চলছে। ছোট্ট শিশু রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকের মুখের দিকে তাকায়, তার দিকে কেউ এগিয়ে আসে কি না। তাকে আব্বু বলে কোলে তুলে নেয় কিনা। কিন্তু না কেউ আসে না। শিশুটির ভিতরে আগ্নেয়গিরির লাভা উথলে উঠেছে। রাজ্যের নৈরাশ্য আর হতাশা তার ছোট্ট মুখ খানি মলিন করে দিয়েছে।

মধ্যাহ্ন সূর্য পৃথিবীর বুকে একটি শিশুর অসহায়ত্ব দেখার যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে দ্রুত পশ্চিমে সরে গেল এবং লজ্বায় আত্মগোপন করল। সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত নেমেছে। মা অনেকক্ষণ ধরে ডাকছে, কিন্তু সে কথাও বলে না, ঘরেও যায় না। আজ সে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সে তার আব্বুকে চায় তার সাথে মেলায় যাবে। অবশেষে পর্দানশীল মা অপরাগ হয়ে বোরখা পরে মেয়েকে নিতে এল। কিন্তু সে যাবে না, তার আব্বুর সাথে মেলায় যাবে। মা তাকে টেনে কোলে তুলে নিল। কিন্তু তখন আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ঘটল। সে হাত পা ছুড়তে ছুড়তে বলতে লাগল আমি যাব না, আব্বুর কাছে যাব, মেলায় যাব, আমাকে আব্বুর কাছে নিয়ে চল ইত্যাদি বলতে বলতে ভীষণ কান্নাকাটি শুরু করল, আর হাত পা ছুড়তে লাগল। সে ঘর থেকে ছোটে আসতে চাইল, মা তাকে একটা থাপ্পড় দিল, সে মায়ের মুখ খামচে দিল, মায়ের মাথায় রাগ উঠে গেল, ভীষণ ভাবে মারতে লাগল। শিশুটিরও আজ ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেছে, সে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার ছোট্ট হাতে মাকে কিল মারতে লাগল। কামড় বসিয়ে দিল। তাতে কর্মক্লান্ত ও পরিশ্লান্ত মা দিকবিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে মেয়েটিকে কিল ঘুষি মারল, তারপর হাতের কাছে যা পেল তা দিয়েই পিটাল। বাচ্চাটি মারের চোটে বিষম কান্নার গমকে দম বন্ধ হয়ে ধরাস করে মাটিতে পড়ে গেল। তা দেখে মাও হায় আল্লাহ্‌! হায় আমার কপাল বলে মাটির উপর গড়িয়ে পড়ল। ক্ষণকাল মুনীরার কোন শব্দ নেই, বুঝা যাচ্ছে না বেঁচে আছে না নাকি মারা গেছে। কয়েক মিনিট পর সে বিকট শব্দে কেঁদে উঠল। আর ঘরময় গড়াগড়ি দিতে দিতে অন্তহীন যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তীক্ষ্ণস্বরে কাঁদতে লাগল। তার মা মাটির উপর পরে চেচিয়ে কাঁদছে আর নিজেকে ও নিজের ভাগ্যকে অভিসম্পাত করছে। তাদের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে কোলের মেয়েটিও কাঁদছে। ছোট্ট রুমটিতে কান্নার রোল পরে গেল। মুনীরা অনেকক্ষণ কান্নার পর ক্লান্ত হয়ে মাটিতে পড়ে থাকল। কিছুক্ষণ কান্নার গমকে হেঁচকি কাটল। তারপর নিথর হয়ে পরে থাকল। অবশেষে ঘুমিয়ে পড়ল। কিছুক্ষন পর তার মা- আম্মু উঠ’ বলে টেনে কোলে নিতে চাইল। কিন্তু সে ঝটকা দিয়ে মায়ের হাত ছাড়িয়ে আস্তে আস্তে উঠে গিয়ে অন্ধকার বারান্দায় দাঁড়াল। তার জ্বালাময় দৃষ্টি অন্ধকার ভেদ করে তার বাবাকে খুজে পেতে চায়। বাবার প্রতি তার প্রচন্ড ক্রোধ জেগে উঠেছে। সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে বাবাকে পেলে সে কি কি গালি দিবে। পায়ে মশার কামড়ে সে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে মাটিতে বসে পড়ল। আবার মেলা ও বাবার কথা স্বরণ হওয়ায় ফুফিয়ে কাঁদতে লাগল। অনেকক্ষণ পর তার মা এসে হাত ধরে চল আম্মু বলতেই সে ঝটকা দিয়ে মায়ের হাত ছাড়িয়ে ঘরে ঢুকল এবং খাতা কলম নিয়ে বাবার উদ্দেশ্যে চিঠি লিখতে বসল।

বিষয়: বিবিধ

১৩৭০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

376497
২০ আগস্ট ২০১৬ দুপুর ০২:৩৬
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! পিলাচ পিলাচ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File