চিঠি-১ (সত্য ঘটনা অবলম্বনে এক অনন্য ট্রাজেডি)

লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ২৯ মার্চ, ২০১৬, ০৯:৫০:৩১ সকাল

হাসান মেহমুদ, মধ্যাকৃতি ও ত্রিশোর্ধ বয়সের একজন শিক্ষক। ঘরের তালা খুলে জনশূন্য ঘরে প্রবেশ করল, তারপর কাপড় চোপড় খুলে জামা থেকে এক জোড়া ছোট্ট জুতা বের করে শিয়রের ধারে রাখল এবং বিভিন্ন কাপড়ের ছোট্ট পুটুলিটা বালিশের উপর রেখে তার উপর মাথা দিয়ে অবসন্ন দেহটা বিছানায় এলিয়ে দিল। তার চোখ দুটি সাক্ষ্য দিচ্ছে রাজ্যের দুঃখ, ব্যথা, যন্ত্রণা, হতাশা সেখানে বাসা বেধেছে। তার হৃদয়ে অপমান, লজ্বা ও অনুশোচনার ঝড় বইয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ নিশ্চল পরে থাকার পর তার দু’চোখ বেয়ে ঝর্নার ধারা ছুটল, অশ্রু বেয়ে কানে জমা হল, তা পরিস্কার করল। এভাবে উসখুস করতে করতে সহসা উচ্চস্বরে কেঁদে উঠল, তারপর আস্তে আস্তে উঠে খাতা কলম নিয়ে টেবিলে বসল। কিন্তু লিখতে গিয়ে আবার কাঁদল। এরপর শক্ত হয়ে বসে লিখা শুরু করল।

সন্তানের প্রতি।

মুনীরা, বাপ আমার। আমার সোনার প্রতিমা, তুমি কোথায় আছ মা, কেমন আছ, কার কাছে আছ, কিভাবে আছ-হায়! একটি বার যদি জানতে পারতাম। হায়! তোমার মুখ খানা একবার যদি দেখতে পারতাম, একটু কোলে নিতে পারতাম, একটু আদর একটু, শুধুই একটু.........। উহ যন্ত্রণা। বুকটা ফেটে যাচ্ছে, একটু ধর বাপ, একটু চেপে ধর, ভাল করে ধর, এই বাম পাশটায়, এখানে কলজেটা ফেটে রক্ত ঝরছে, অনেক রক্ত বাপ, অনেক রক্ত। মাগো অনেক কষ্ট আমার, অনেক কষ্ট। এ বুকটায় আগ্নেয়গিরির লাভা উদগিরন হচ্ছে। সম্ভবতঃ পৃথিবীতে আমিই একমাত্র হতভাগ্য বাপ, যে জীবিত থাকা সত্ত্বেও নিজের একমাত্র সন্তানকে দেখতে পারে না আর সন্তানও তাকে দেখতে পারে না। মাগো আমাদের বাপ সন্তানের মাঝে যারা বিচ্ছেদের প্রাচীর তুলে দিয়েছে তাদের আমি কোনদিন ক্ষমা করব না, কোনদিন না, মানব রচিত আদালতে ওদের বিচার না হলেও আল্লাহ্‌র আদালতে অবশ্যি হবে।

বাপ আমার, সেই যে দেড় বছর বয়সে তোমাকে দেখেছিলাম, তারপর কতটা বছর কেটে গেল, একটি বারের জন্যও তোমাকে দেখতে পারিনি। তোমাকে এক নজর দেখার জন্য আমার মনটা পাখির মত উড়ে বেড়ায়, আমি মানুষের দোয়ারে দোয়ারে ঘুরে বেড়াই। কত আজে বাজে মানুষের দোয়ারে ধর্না দিয়েছি, কত লোক ধরেছি যেন তারা তোমার খালুদের সাথে আলাপ করে তোমার সাথে আমার যোগাযোগ করে দিতে পারে। কিন্তু দাম্ভিক, অহংকারী তোমার খালুদের কাছে সবাই ব্যর্থ হয়েছে। সকলের সাথেই তারা দুর্ব্যবহার করেছে। কিন্তু আমার মন যে মানে না, তোমার জন্য আমি ঘুমুতে পারি না, একটু চোখ বুঝে এলেই তোমার সাথে খেলা করি, কোলে নিই, আদর করি। তুমি আমাকে আব্বু বলে ডাক। তোমার ডাক শুনলে আমার তন্দ্রা ভেঙ্গে যায়। তারপর শুরু হয় আমার তিতিক্ষার বিনিদ্র রজনী। কখনো বিছানায় শুয়ে গড়াগড়ি করি, এপাশ ওপাশ করি, কখনো পায়চারী করি, এভাবেই আমার রাত কেটে যায়। তারপর কলেজ করে এসে বিকাল থেকে রাত ১১/ ১২ টা পর্যন্ত তোমাকে পাবার আশায় মানুষের দোয়ারে দোয়ারে ঘুরি, লোক লাগাই, ব্যর্থ হই। তারপর আবার বাসায় ফিরে এসে শুরু হয় বিনিদ্র রজনীর অন্তর্দাহ। এভাবেই চলছে আমার জীবন।

অবশেষে সকল দিক থেকে ব্যর্থ হয়ে, অন্যদের পরামর্শে বুকে সাহস সঞ্চার করে আমি নিজেই গেলাম। যাবার আগে আমার আশংখা ছিল ওরা আমাকে অপমান করবে। যা ভেবে ছিলাম তাই হল। সম্ভবত ভদ্র সমাজে, শিক্ষিত সমাজে কোন মানুষ মানুষকে এতটা অপমান করে না, করতে পারে না। তোমার তো নানা নাই, তোমার সাতটি খালুই তোমার মায়ের অভিভাবক। ফলে দুলা ভাইরা অভিভাবক হলে যা হয় তাই হল, তোমার মায়ের সাথে আমার বিচ্ছেদ ঘটল। তোমার নানা থাকলে কখনোই এমন ঘটনা ঘটত না।

যাই হউক, আমি যখন তোমাকে নিয়ে আসার জন্য, অন্তত ন্যুনতম তোমাকে দেখতে দেয়ার দাবী তুলে তোমার বড় খালুর বাসায় গেলাম তখন মোবাইল যোগাযোগ করে তারা একত্র হল। তারপর বন্য হায়েনা যেভাবে শিকারকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে আক্রমণ করে ঠিক সেভাবেই তারা আমার উপর হামলে পড়ল। অবস্থার আঁচ পেয়ে আমি মাথা নিচু করে মুখে সেলাই দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। আমি বুঝতে পারছিলাম ওদের উদ্দেশ্য মারমুখী। আমি একটি কথা বললেই ওরা আমাকে রক্তাক্ত করবে অথবা মেরে ফেলবে। কাজেই আমি ঠাই দাঁড়িয়ে থাকলাম। তোমার কোন কোন খালু আমাকে বারবার ধাক্কা মারছে, যেন আমি কিছু একটা বলি তারপর তারা আমার উপর নেকড়ের মত ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে, কিন্তু আমি ছিলাম পাথর। বাপ আমার, ওদের গালাগালিতে আমার দেহটা কলজেটা পচে গেছে। কোন মানুষ এত অশ্লীল আর কদর্য ভাষায় গালি দিতে পারে তা না শুনলে কেউ বিশ্বাস করবে না। ওদের গালির একেকটা তীর আমার অন্তরটা এপোড় ওপোড় করে দিয়েছে। আমার হৃদয়টা হাজার লক্ষ ফোটো হয়ে রক্ত ঝরছে। মাগো, মানুষ ভাল কাজ করলে পিতা মাতার মুখ উজ্বল হয়, তাদের গৌরব বৃদ্ধি পায়। আর অপকর্ম করলে পিতা মাতার মুখ পোড়া যায়। এমনি একটা অপকর্ম আমি করেছি মা, সেই অপকর্মটি হল তোমার মাকে বিয়ে করা। ওদের বংশ আর বাহ্যিক ধর্ম কর্ম দেখে আমি ভুলে গিয়েছিলাম। বংশ আর বাহ্যিক চাকচিক্যের ভিতরে যে এত কদর্য, এত পুতিগন্ধ লুকিয়ে ছিল, হায় আমি যদি তা আগে টের পেতাম। বাপ আমার, তোমার মাকে বিয়ে করার মাসুল আমাকে ঝাড়ে বংশে দিতে হল। সে যেমন বাপ মা তুলে আমাকে গালি দিত ঠিক একই ভাবে আজ তারাও আমার মা বাপের নাম তুলে আমাকে গালি দিল। অথচ আমার বাবা ছিলেন বুজুর্গ মানুষ। কিন্তু তোমার মাকে বিয়ে করার মাসুল আমাকে চরম মূল্যে দিতে হচ্ছে। তোমার দাদা দাদুকেও গালি শুনতে হল।

অবশেষে ওদের গালি গালাজ আর উচ্চ কণ্ঠের চেচামেচিতে যখন আমার কলিজাটা ফেটে যাওয়ার উপক্রম, আমি বেহুশ হয়ে পড়ে যাওয়ার কাছাকাছি এমন সময় প্রতিবেশি একজন লোক এসে আমাকে রক্ষা করল “লোকটাকে একা পেয়ে আপনারা কী শুরু করেছেন, ওকে মেরে ফেলবেন নাকি” বলতে বলতে সে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল। তখন ওরা আমার জামা কাপড় ধরে টানা হেঁচড়া করছিল। আমি লোকটার সহায়তায় কোন রকমে ছুটে গিয়ে কাছেই একটি স্কুল-ফিল্ডে গিয়ে দাড়ালাম। তারপর লোকটির হাত ধরে অনেক কেঁদেছিলাম, অনেক। বারবার শুধু বলেছিলাম, আমি তো শুধু আমার মেয়েকে দেখতে এসেছিলাম, আমি কি আমার মেয়েকে দেখতে পাব না। আজ পাঁচটি বছর ধরে আমার সন্তানকে একটি বারের জন্যও দেখতে পারিনি, বেঁচে থেকে কী হবে, আমার তো মরাই ভাল।

বাপ আমার, আমি ইয়াতিম শিশুর মত অসহায় হয়ে কেঁদেছিলাম। তখন আমার কান্না দেখে লোকটিও অনেকক্ষণ কাঁদল। অবশেষে “আপনি চলে যান, এ সন্ত্রাসীদের বিচার আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ করতে পারবে না” বলতে বলতে দ্রুত চলে গেল। বাপ আমার, তারপর নৈরাশ্য, হতাশা আর রাজ্যের গ্লানী নিয়ে বাসায় ফিরে এসে তোমাকে লিখতে বসলাম। মাগো, এমনিভাবে অপমান লাঞ্চনায় তিক্ত হয়ে কতবার মনস্থির করেছি আর কারো কাছে যাব না, ভাগ্যে যা আছে তাই হবে, যা করার আল্লাহ্‌ করবে। আমার আত্মীয় স্বজন, পরিচিতরা সবাই আমাকে বোঝায়, শান্তনা দেয়, এত দুঃখ করার কী আছে, একদিন তোমার সন্তান তোমার কাছে আসবেই। কিন্তু আমার অবুঝ মন যে বুঝে না মা। কী করে বুঝবে? আমি যে বাপ, আমি যে জন্মদাতা। আমার সন্তান যে আমার দেহের অংশ। কোন মানুষ যদি হাত পা ছাড়া থাকতে না পারে তাহলে আমি সন্তান ছাড়া- যে আমার দেহের নির্যাস, আমার অস্বিত্বের প্রতিবিম্ব, তাকে ছাড়া আমি কিভাবে বাঁচব। বল মা, শুধু একটি বার বল, আমি কি করে বাঁচব।

মাগো আজকে বাসায় ফিরার সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আর কারো কাছে যাব না। কিন্তু আমি জানি, আমার তৃষিত আত্মা আমাকে নিস্পৃহ বসে থাকতে দিবে না। দুয়েকদিন পর আবার শুরু হবে মানুষের দোয়ারে দোয়ারে যাত্রা, সন্তান দর্শনের ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে বুভুক্ষু কুকুরের ন্যায় মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, হতে হবে তাদের করুণার পাত্র। এসব কথা থাক মা, আমার কান্নায় তোমাকে ভাগিদার করতে চাই না। আমি শুধু চাই, আমার হাসিটা তোমার হউক আর তোমার কান্নাটা আমার হউক।

মুনীরা, মা আমার, কেমন আছ মা, একটু জানার জন্য যে আমার মনটা ভীষণ উতলা হয়ে উঠেছে। বল না, শুধু একটি বার বল যে, তুই ভাল আছিস, আমার আত্নাটা শান্তি পাবে। আচ্ছা খাওয়া দাওয়া ঠিক মত করিস নাকি খেলাধুলা আর দুষ্টামি করে সময় কাটাস ? আচ্ছা দুধ কতটুকু খাস, এক কেজি নাকি আধা কেজি ? সাবধান ঠিকমত দুধ না খেলে কিন্তু মেধা ও শরীর গঠন হবে না। তোর মা রাত্রে ঘুমালে আর উঠত না। কাজেই দেড় বছর পর্যন্ত রাত্রি বেলা আমি উঠে দুধ গরম করে পিডারে ভরে তোকে খাওয়াতাম। তারপর তো তোকে আমি হারিয়ে ফেললাম। আচ্ছা তোর কয়টা জামা ? প্রতিদিন এক জামা পড়ে স্কুলে যাবি না, একেক দিন একেকটা জামা পরবি। আর কখনো ময়লা জামা পরবি না। তোর মা তো আগে থেকেই একটু বেহুশ মানুষ। অনেক সময় তোর মায়ের কাছে থেকে খাট থেকে নীচে পড়ে যেতে, তোর মার হুশ থাকত না, এমনকি পড়ে গেলে তাড়াতাড়ি তুলতেও পারত না। আমি দুর থেকে দৌড়ে এসে তুলে নিতাম এবং ঘুরা ঘুরি করে কান্না থামাতাম। এ জন্যই তোকে বলছি, তোর মায়ের উপর ভরসা না করে নিজের কাপড় চোপড় নিজেই একটু দেখে শুনে রাখিস মা। থাক সেসব অনেক কথা। আর আমার ভুল হয়ে গেছে, সে তো তোর মা, তোর জন্ম দাত্রী। কাজেই তার দোষ বর্ণনা করা আমার উচিত হয়নি। আচ্ছা বাপ, ঠিক মত পড়িস নাকি দুষ্টামি করে সময় নষ্ট করিস, স্কুলে ঠিকমত পড়া পাড়িস তো ? স্কুলের পড়াটা রাত্রেই মুখস্ত করে রাখবি। তারপর সকালে রিভাইজ দিয়ে স্কুলে যাবি খন। আর স্কুলে যাবার সময় প্রতিদিন টিফিন নিয়ে যাস তো নাকি ? সাবধান টিফিন নিয়ে যাবি।

আচ্ছা আরেকটা কথা, স্কুলের ছেলে মেয়েরা যখন দোকান থেকে এটা ওটা কিনে খায় তখন তুইও খাস তো? তোর হাতে কি টাকা থাকে? এমনকি কখনো হয়েছে যে, অন্যরা কিনে খাচ্ছে আর তুই টাকার অভাবে কিনতে পারিস নি, শুধু খাওয়ার অদম্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছোট্ট হৃদয়ের অব্যক্ত বেদনায় তৃষিত চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছিস বা কোন শিশু তার বাবার কোলে বসে বসে কিছু খাচ্ছে আর তা দেখে তোরও কি বাবার কোলে বসে বসে কিছু খাওয়ার আশা জেগেছে ? হায়! আমার অদৃষ্ট, কেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েনা, কেন মাটি ফাক হয় না। আমি তো জানি না আমার সন্তান আদৌ কিছু খেতে পাচ্ছে কিনা? আমি তো জানি না, যখন অন্যের সন্তান তৃপ্তি সহকারে কোন কিছু খাচ্ছে, আর আমার সন্তান তা দেখে দেখে অপ্রাপ্তির বেদনায় ছোট্ট বুকটা আকুলি বিকুলি করছে কি না ? হায়! আমি তো জানি না, আমার সন্তানের প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে কি না অথচ আমি মহা বিত্তবান না হলেও অন্তত সন্তানের প্রয়োজন পূরণ করার মত যথেষ্ট সামর্থ আমার রয়েছে। হায়! আমি কি করে আমার সন্তানের অবস্থা জানব, কেন আমি এত অসহায়! আল্লাহ্‌ কেন আমাকে এতটা অসহায় করল। আমার সন্তানের যদি প্রয়োজন পূরা না হয় তবে তা শুনার চেয়ে আমার মৃত্যু ভাল। আমি তো চাই আমার সন্তান থাকুক দুধে ভাতে। মা, মারে তুই চিন্তা করিস না মা। এই পৃথিবীর মহা সত্যের আসল সত্য হল পিতা, সন্তান ও তাদের রক্ত। মারে তুই সাত সমুদ্দুর তের নদীর ওপারে থাকলেও তোর রক্তের টানে তোর দেহের ঘ্রাণ শুকতে শুকতে আমি হাজির হয়ে যাব ইংশাআল্লাহ। বাপ আমার, তুমি যেখানেই থাক ভাল থাক, আমি আসছি। ইতি, তোমার হতভাগ্য বাবা।

বিষয়: বিবিধ

১৫১৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

364014
২৯ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০৩:৪৫
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আর কত জালা সোয়া যায়? ভালো লাগলো লেখাটি ধন্যবাদ আপনাকে
364147
৩০ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০১:০০
নকীব আরসালান২ লিখেছেন : ভাই, এটা কিন্তু কোন কবির কাব্য নয়। সম্পুর্ন সত্য ঘটনা। ধন্যবাদ আপনাকে।
376132
১১ আগস্ট ২০১৬ দুপুর ০১:১৪
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! ভালো লাগলো জাযাকুমুল্লাহ্

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File