সাইয়েদ কুতুব বিশ্বের ইসলামী আন্দোলনের নির্যাতিত নেতাদের মধ্যে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
লিখেছেন লিখেছেন সানজিদ হোসেন ইরাজ ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০২:০১:৩৩ রাত
ফাসিঁর মঞ্চ আজ নতুন নয়।যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ফাসিঁতে ঝুলিয়েছে সৈরচারী সরকার।মিশরের ব্রাদারহুর্ডের উপর নির্মম অত্যাচার আর বিভীষিকাময় জুডিশিয়াল হত্যায় গোটা বিশ্ব কেদেঁছে।
,
মিশরের নাসের সরকার একটি বানোয়াট হত্যার ষড়যন্ত্র করে ব্রাদারহুডকে তথা ১৯২৮ সালের প্রতিষ্টিত হাসান আল বান্নার বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামি ছাত্র সংঘটন ইখওয়ানুল মুসলেমিন দলটিকে বেয়াইনী ঘোষনা দিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা শুরু করে। নেতাদের মধ্যে সাইয়েদ কুতুবও ছিলেন।
সাইয়েদ কুতুবের সংক্ষিপ্ত বিভীষিকাময় নির্যাতনের কাহিনী শুনুনঃ
গ্রেফতার করার পর তাকে বিভিন্ন জেলে রাখা হত। গ্রেফতার হওয়ার পর তার শরীরে সবসময় জ্বর থাকত। গ্রেফতার হওয়ার পর তার হাতে,পায়ে ডান্টা বেরী আর শিকল পড়ানো হয়,শুধু তাই নয়,এক জেল থেকে অপর জেলে স্থানান্তর করার সময় তাকে হেটেঁ যেতে বাধ্য করা হয়।পথে কয়েকবার বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে যেতেন।
হুশ ফিরে এলে তিনি বলতেনঃ আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
,
জেলে ঢোকার সাথে সাথে কুতুবকে মারপিট শুরু করে দিতেন,দুই তিন জনে। এমনকি দুই,তিন,চার ঘন্টা পর্যন্ত এক লাগাতে এই নির্যাতন চালাতেন। তারপর একটি প্রশিক্ষিত কুকুরকে লেলিয়ে দিতেন,তার উপরে,কুকুরটি তাকে কামড়ে ধরে জেলার আঙ্গিনায় টেনে নিয়ে বেড়াত।
,
এ প্রাথমিক অভ্যর্থনা করার পর তাকে একদিন একটানা সাত ঘন্টা জেরা করে,, কুতুবের এসব নির্যাতনের ক্ষমতা ছিলনা,কিন্তু ঈমানের জোরে পাষাণ
বলে উচ্চারিত হতঃ আল্লাহু আঁকবার, ওয়া লিল্লাহ হামদ!
একসময় তারপর হৃদপিন্ড,বক্ষপীড়া দূর্বলতা দেখা দেয় সারা দেহের জোড়ায়,জোড়ায় ব্যাথা ইত্যাদি রোগে কাতর হয়ে পড়েন,তবুও তার গায়ে আগুনের ছেকঁ,কুকুরের কামড়,ও পুলিশের নির্মম নির্যাতন চলতে থাকে,
তার শরীরে গরম পানি এবং পরক্ষণে ঠাণ্ডা পানি
ঢালা হত। লাতি,কিল,ঘুষি,তাপ্পর,অশ্লীল গালাগালি ছিল,নিত্যনতুন ব্যাপার।
,
১৯৫৫ সালের ১৩ জুলাই, গণআদালতের বিচারে তাকে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। অসুস্থতার করুন তিনি আদালতে হাজির হতে পারেননি।
তার এক বছর কারাভোগের পর নাসের সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয় যে, তিনি সংবাদপত্রের মাধ্যমে ক্ষমার আবেদন করলে তাকে মুক্তি দেয়া যেতে পারে। মর্দে মুমিন এ প্রস্তাবের যে জবাব দিয়েছিলেন, তা ইতিহাসের পাতায় অম্লান হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন : ‘আমি এ প্রস্তাব শুনে অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হচ্ছি যে, মজলুমকে জালিমের নিকট ক্ষমার আবেদন জানাতে বলা হচ্ছে। আল্লাহর কসম! যদি ক্ষমা প্রার্থনার কয়েকটি শব্দ আমাকে ফাঁসি থেকেও রেহাই দিতে পারে, তবু আমি এরূপ শব্দ উচ্চারণ করতে রাজি নই। আমি আল্লাহর দরবারে এমন অবস্থায় হাজির হতে চাই যে, আমি তাঁর প্রতি এবং তিনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট।’
,
পরবর্তীকালে তাকে যতবার ক্ষমা প্রার্থনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে ততবারই তিনি একই কথা বলেছেন : ‘যদি আমাকে যথার্থই অপরাধের জন্য কারারুদ্ধ করা হয়ে থাকে, তাহলে আমি এতে সন্তুষ্ট আছি। আর যদি বাতিল শক্তি আমাকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে থাকে, তাহলে আমি কিছুতেই বাতিলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করব না।’
১৯৬৪ সালের মাঝামাঝি ইরাকের প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম আরিফ মিসর যান। তিনি সাইয়েদ কুতুবের মুক্তির সুপারিশ করায় কর্নেল নাসের তাকে মুক্তি দিয়ে তারই বাসভবনে অন্তরীণা করেন।
,
এক বছর যেতে না যেতেই তাকে আবার বলপূর্বক ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। অথচ তিনি তখনও পুলিশের কড়া পাহারাধীন ছিলেন। শুধু তিনি নন, তার ভাই মুহাম্মাদ কুতুব, বোন হামিদা কুতুব ও আমিনা কুতুবসহ বিশ হাজারেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদের মধ্যে প্রায় সাতশ’ ছিলেন মহিলা।
,
১৯৬৫ সালে কর্নেল নাসের মস্কো সফরে থাকাকালীন এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেন যে, ইখওয়ানুল মুসলিমিন তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। আর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সারা মিসরে ইখওয়ান নেতা ও কর্মীদের ব্যাপক ধরপকড় শুরু হয়। ১৯৬৪-র ২৬ মার্চ জারিকৃত একটি নতুন আইনের বলে প্রেসিডেন্টকে যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার, তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ প্রভৃতি দণ্ডবিধির অধিকার প্রদান করা হয়। তার জন্য কোনো আদালতে প্রেসিডেন্টের গৃহীত পদক্ষেপের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা যাবে না বলেও ঘোষণা করা হয়।
,
কিছুকাল পর বিশেষ সামরিক আদালতে তাদের বিচার শুরু হয়। প্রথমত ঘোষণা করা হয় যে, টেলিভিশনে ওই বিচারানুষ্ঠানের দৃশ্য প্রচার করা হবে। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অপরাধ স্বীকার করতে অস্বীকার এবং তাদের প্রতি দৈহিক নির্যাতনের বিবরণ প্রকাশ করায় টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়। তারপর রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচার চলতে থাকে। আসামিদের পক্ষে কোনো উকিল ছিল না।
,
অন্য দেশ থেকে আইনজীবীরা আসামি পক্ষ সমর্থনের আবেদন করেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। ফরাসি বার অ্যাসোসিয়েশনের ভূতপূর্ব সভাপতি উইলিয়াম থরপ (ঞযড়ত্ঢ়) ও মরোক্কোর দু’জন আইনজীবী আসামি পক্ষ সমর্থনের জন্য রীতিমত আবেদন করেন। কিন্তু তা নামঞ্জুর করা হয়। সুদানের দু’জন আইনজীবী কায়রো পৌঁছে তথাকার বার অ্যাসোসিয়েশনে নাম রেজিস্ট্রি করে আদালতে হাজির হন। পুলিশ তাদের আদালত থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দেয় এবং মিসর ত্যাগ করতে বাধ্য করে।
,
সাইয়েদ কুতুব ও অন্য আসামিরা ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনালের সামনে প্রকাশ করেন যে, অপরাধ স্বীকার করার জন্য তাদের ওপর অমানুষিক দৈহিক নির্যাতন চালানো হয়। ট্রাইব্যুনালের সভাপতি আসামিদের কোনো কথার গুরুত্ব দেইননি বরংচ তাদের প্রতিটি প্রশ্নের জবাবে নির্যাতন চালানো হয়।
,
ইংরেজি ১৯৬৬ সালের আগস্ট মাসে সাইয়েদ কুতুব ও তার দু’জন সঙ্গীকে সামরিক ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ শোনানো হয়। সারা দুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু ১৯৬৬ সালের ২৫ আগস্ট তাদের ফাসিতেঁ ঝুলানো হয়।
,
আজকে জামায়াত ইসলামীর যেই নেতাদের অন্যায়ভাবে খুন করে জালিম সরকার হাসতেছেঃ কুরআনের জালিমদের জন্য স্পষ্ট ঘোষণা :
‘অভিযোগ তো হচ্ছে তাদের ওপর, যারা মানুষদের ওপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীর বুকে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহের আচরণ করে বেড়ায়; এমন (ধরনের জালেম) লোকদের জন্যই রয়েছে কঠোর আজাব।’ (সূরা আশ শুরা : ৪২)
,
যেখানে সাইয়েদ কুতুব, হাসান আল বান্না,কামরুজ্জামান,নিজামী,কাদের মোল্লা,আলী আহসান মুজাহিদরা জালিমের কাছে মাথা নত করেনি,সেখানে তার উত্তরসূরি কাসেম আলী কেন জালিমের কাছে মাথা নত করবে??মাথা নত করবেনা,এই জালিম সরকারের কাছে, ভি,চিহ্ন দিয়ে চলে যাবেন,শাহাদাতের অমৃতরস ভোগ করার জন্য।
,
মজলুমের ফয়সালা হয় আসমানে,জমিনে নয়- শহীদ নিজামী
,
ফাসিঁর রশিকে ভয় করে আমি ইসলামী আন্দোলনে আসিনি- মুজাহিদ।
এই রায়,আমার ফাসির রায় নয়,এই রায় আমার ঈমানের পরীক্ষা-শহীদ কাদের মোল্লা।
আমি ভীত নয়,আমার হত্যাকারীদের বিচার হবে কেয়ামতে- শহীদ কাদের মোল্লা।
দেখা হবে জান্নাতে ইনশাআল্লাহ -শহীদ কাদের মোল্লা ।
নবুয়তের পথ বন্ধ থাকলেও শাহাদাতের পথ খোলা রয়েছে-শহীদ কাদের মোল্লা।
সরকার কাদের মোল্লাকে বিচারের নামে ঠান্ডা মাথায় খুন করতেছে- টবি ক্যাডমান।
আজীবন শহীদি মৃত্যু কামনা করছি-শহীদ কাদের মোল্লা।
,
আমার কর্মীরা যেমন আমার রক্তকে ইসলাম প্রতিষ্টিত করার কাজে লাগায়-শহীদ কাদের মোল্লা।
,
যেই নিজামী আর কামরুজ্জামানের জন্য চিৎকার করে করে কেদেঁছিল তুরুষ্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান,,,, আমরা,নিজামী আর কামরুজ্জামানকে হারায়নি,বিশ্বের দুইজন মেধাবী ব্যাক্তিকে হারিয়েছি - এরদোগান।
,
যখন তুমি দেখবে,জেলের কুঠুরিগুলো সাজানো,ফাসিঁর মঞ্চ তোমার জন্য প্রস্তুত,তখন তুমি জেনো,তোমার দেওয়া দাওয়াতই ফলফসূ হচ্ছে -শহীদ হাসান আল বান্না।
,
মাবূদ আমাকেও শহীদি মরন দিও!! আমকেও কবুল করে নিও,তোমার দ্বীনের তরে,ঠিক আমার প্রিয় নেতাদের মত।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সময় বদলাবেl
একদিন হাসিনাও থাকবেনাl
আমরাও থাকবনাl
হাশরের মাঠে মাবুদে এলাহীর হাতে হাসিনা এবং তার পান্ডাদের বিচারের দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় থাকলামl
আমাদেরই ট্যাক্সে পোষা পুলিশ আর ৱ্যাব আজ আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেl
আমরা তোমাদের ছাড়বোনাl
কিন্তু হ্যাঁ,দিনের পর রাত হবে, তখন সকল কর্মকান্ডের হিসাব নেওয়া হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন