একের পর এক ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে,
লিখেছেন লিখেছেন সানজিদ হোসেন ইরাজ ২৬ মার্চ, ২০১৬, ০১:৪২:৩০ দুপুর
কিছুদিন আগের পৌষমাসের চাঞ্চল্যকর ঘটনা,গ্রামের কৃষক বাবার সন্তান চেরাগের আলোতে অধর পরিশ্রম করে পড়ালেখা করে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিল।পড়ালেখায় সেই খুব মেধাবী ছিল,আল্লাহ যেন ঐশ্বরিক জ্ঞান দিয়েছিল,,বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কলেজ লাইফ শেষ করে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েছিল, ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে শুধু চান্স পেলে ত হবেনা,ঐখানে পড়ার জন্য প্রচুর টাকা পয়সা প্রয়োজন।গরীব কৃষক বাবার কাছে তেমন টাকা পয়সা ছিলনা,কৃষক বাবার কাছে ছিল প্রচুর স্বপ্ন,,ছেলে মানুষের মত মানুষ হবে,প্রচুর টাকা রোজগার করবে,আমি আর কৃষি কাজ করবনা।প্রফেসর, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টারের বাপ বলে ডাকবে সবাই আমাকে।
,
যাইহোক যতটুকু আর্থিক সম্বল ছিল,যেমনঃ ধান,পাট,গম এইগুলো বিক্রি করে ৬ হাজার সাতশ টাকা ছেলেকে দিয়েছিল। ছেলে ও বাবার কাছ থেকে কৌশলবিনিময় করে ঢাকা ইউনিভার্সিটির দিকে রওনা হল। ঢাকায় পৌছতে প্রায় তার ৬,৭ শ টাকা খরচ হয়ে গেল।
,
ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে একটা কাধেঁ ব্যাগ নিয়ে ছেলেটি প্রবেশ করল,ভার্সিটির ভর্তি ফিস দেওয়ার সময় জানতে পারল ভর্তি ফিস ১০০০ হাজার টাকা, ৬০০০ টাকা প্রদান করল আর ও বকেয়া রইল আর ও ৪০০০ টাকা। ছেলেটা এখন কি করবে?ছেলেটি ভাবল- বাবার কাছে ও যেতে পারবেনা,, বাবার শেষ সম্ভলটুকু আমাকে বিক্রি করে দিয়ে দিল,আর গ্রামে চলে গেলে আমার পড়ালেখা আর হবেনা। গ্রাম থেকে প্রথমবার ঢাকাতে আসল,কারো সাথে ও পরিচয় নাই,টিউশনি ও মিলল না।
,
পৌষ মাসের শীতে,সারাদিন সামান্য পাউরুটি আর পানি পান করে ছেলেটি দিন কাটাচ্ছিল,ভার্সিটি শেষে সবাই হোষ্টেল কিংবা ফ্লাটে চলে যেত,কিন্তু সেই নতুন আসছে,বড় ভাইদের সাথে ও কোন লিংক নাই,থাকার ও কোন ব্যবস্থা নেই,টাকা ও নাই,ভাল শীত দমনকারী কোন কাপড় ও নাই,
,
শুনেছি,, "পৌষের শীতে বাইরের কাক লরে" সারা দিনরাত ঠান্ডা বাতাশ, সেই ভার্সিটির কমন রোমটি অবস্থান নিয়েছিল,কমন রোমে অনেকেই রাত কাটাত এবং সবাই ছিল মাদকসেবন, নেশাখোর। সেই এক কোনায় পড়ে থাকত,ব্যাগের উপর মাথাটি রেখে,, ১ দিন ২ দিন,১ সপ্তাহ,১৫ দিন পর তার শরীর আস্তে আস্তে দূর্বল হয়ে যেতে লাগল,তার শরীর রক্তের শিরা উপশিরাগুলো বিকলাঙ্গ হয়ে যেতে লাগল,শরীর ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে,ঠান্ডায় রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে লাগল,১৭ দিনের মাথায় সেই মৃত্যুবরণ করল।
,
তার ঠিকানা খোজ করে,গ্রামের বাবার কাছে চিঠি পাঠাল,,এদিকে ভার্সিটির মধ্যে একটি উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেল,,সকল স্তরের সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী উপস্থিত হল, প্রিন্সিপালকে জিজ্ঞাস করা হলঃ আজ ১৫,১৬ দিন যাবত একটা ছেলে যে এই খোলা কমন রুমে শীতে কাতরাচ্ছে,আপনি কি একটু ও দেখেননি? আপনাদের সিকিউরিটি দপ্তরী কিংবা কার চোখে কি বিষয়টি পড়েনি।
প্রিন্সিপাল জবাবে বললঃ কমন রুমে হাজার হাজার ছেলে রাত জেগে থাকে ওরা ত মরেনা? এই ছেলেটার রোগ ছিল,এইটা ছিল রোগা ছেলে।
,
বাবা ১ দিন পর ছুটে এসে লাশটা গ্রামে নিয়ে গেলঃ বাবা কান্নাস্বরে বলেছিল প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে পাঠিয়েছিলাম কোর্ট,টাইওলা মানুষ হওয়ার জন্য কিন্তু অক্সফোর্ড থেকে বের হলি তুই লাশ হয়ে,আমার আশা আর পূরন হলনা,আমার ছেলের মৃত্যুর পিছেনে কারা দায় নাই,,আমার ছেলের মৃত্যুর পিছনে দায়ী,আমি কৃষক বাবা,আমি কেন টাকাওলা,ধনী হলাম না।
,
কৃষক বাবা এক মাস পর ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে এসে তার সকল সম্পদ বিক্রি করে টাকা দান করে দিলেন।তিনি বলেন,আমার ছেলের মত কারো যেন কমনরুমে মৃত্যু না হয়,সেইজন্য টাকাগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়েছি।আমার ছেলে নাই আমি টাকা দিয়ে কি করব?এই টাকার জন্য আমার দেশ বাছা মেধাবী ছেলেটাকে হারালাম।
,
কৃষক বাবা ভার্সিটিকে এগুলো টাকা দান করেনি পুরা জাতির গালেই জুতা মেরে দিল, আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা হ্যাক হল,এই টাকাগুলো দিয়ে কয়'শ ফ্রি হোষ্টেল বানানো যেত,কয়'শ গরীব ছেলে মেয়েকে ফ্রি ত পড়ার সুযোগ দিতে পারত।কয়েক হাজার গরীর মানুষদের অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থানের সুযোগ দিতে পারত,, আমি জানতে চাই আমার ফেবু একাউন্টের সামন্য পরিমান ও গোপনীয়তা কেউ না জানলে আমার একাউন্ট কিভাবে হ্যাক করবে?
,
আগের ঘটনাটি পরের আরেকটি ঘটনাতে চাপা পড়ে যাচ্ছে,বাংলাফেশ ব্যাংক হ্যাক হল,তাসকিন,সানি হ্যাক হল,তনু হ্যাক হল,, এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের লুটের কথা আমরা ভুলে গিয়েছি।প্রতিবাদ ,প্রতিরোধ ,বিক্ষোপ, মানববন্ধন, হল দুই দিন পর আবেগী জাতি আরেরকটি ঘটনার টেলার ছুড়ে সব ভুলে যায়।
,
বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুর হ্যাকারদের বিচার চাই না ব্যাংক চুরি সহযোগীকারীদের বিচার চাই,কোর্ড টাইওলাদের কিছু আসে আর যাবেনা এই টাকা হ্যাকে,,এই টাকা কোর্ট টাইওলা, ও সরকারের নয়,এই টাকা আমার,আপনার,খেটে খাওয়া শ্রমিকের,বিদ্যুৎ বিল,গ্যাসের বিল,রাস্তার বিল,বাৎসরিক খাজনা,বিদেশে মাথার ঘাম পায়ে পেলে ইনকাম করা টাকা।বিদেশের রাখাল বালকের টাকা।
,
কিন্তু আফসোস আবেগী জাতি আমাদের চেতনার টেলার কারনের আগের ঘটনাটি পরের ঘটনায় এভাবেই আমাদের আবেগের ভূবনে চাপা পড়ে যাচ্ছে। চলবেই এভাবেই ঘটনা,,,
বিষয়: বিবিধ
১১৩৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন