ক্রসফায়ারঃ উত্তরটা খুব সহজভাবে জঠিল

লিখেছেন লিখেছেন ওয়েলকামজুয়েল ০৫ জুন, ২০১৮, ১১:১০:৪৪ সকাল

ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার বা বন্দুকযুদ্ধে সত্যি সত্যিই কেউ মারা গেলে তার দোষ পুলিশকে বা সংশ্লিস্ট অন্য কোন বাহিনীকে দেয়া যাবেনা। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে যাতে দায়ী না করা যায় তার ব্যবস্থা প্রচলিত আইনে এবং সংবিধানে রাখা আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ‘বন্দুকযুদ্ধ, এনকাউন্টার, বা ক্রসফায়ার’ এর কথিত ঘটনা যদি সত্য না হয়, তাহলে?

তাহলে? তাহলে’র উত্তরটা খুব সহজভাবে জঠিল। তাহলে, প্রশ্নটা ততটা আইনের না, যতটা ঘটনার। এখন কোনটা বন্দুকযুদ্ধ আর কোনটা নয় এটা নির্ধারনের পথ কি? কি আবার, তদন্ত! তো তদন্তটা করবেন কে?

কে আবার? সবারটা যারা করেন, জনগনের সেবায় যারা নিবেদিত সেই পুলিশ!

বন্দুকযুদ্ধে মরবার জন্য যে মানুষটা শিয়রে একটা ভাঙা বন্দুক, তিন বোতল ফেনসিডিল অথবা এক পোটলা ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে শুয়ে পড়লো এবং পুলিশ বা সংশ্লিস্ট অফিস, প্রাথমিক তদন্ত শেষে যে প্রমাণ পেলো এই ভাঙা বন্দুকওয়ালা বা তার অদৃশ্য সহযোগীরা পুলিশের উপর প্রচন্ড আক্রমন করেছিলো, সে প্রমাণ আজ পর্যন্ত ভুল হয়নি। ম্যাজিষ্ট্রেট তদন্ত করেও এর কোন ব্যাতিক্রম কখনো পায়নি।

এক অবিশ্বাসী মহিলা তার স্বামীর এমন মৃত্যু নিয়ে একটি মামলা করতে চেয়েছিলেন । খুব সঙ্গত কারনেই পুলিশ এই ‘মিথ্যা’ মামলাটি রেকর্ড করেনি। এ মহিলার জন্য আইনের রাস্তা খোলাই ছিলো। সে চাইলেই আদালতে মামলা করতে পারতো কিন্তু এলাকার সরকারদলীয় গণ্য-মান্য লোকজন এরকম একজন অবিশ্বাসীকে তো এলাকায় থাকতে দিতে পারেনা! তাই সে এলাকা থেকে ন্যায়বিচারের স্বার্থেই বিতাড়িত হলো। সে বিতাড়িত বলে কোর্টে মামলা করতে পারেনি, এটা তো আইনের দোষ না! কিন্তু বেয়ারা মহিলাটি হাইকোর্টে এসে একটি রীট পিটিশন দায়ের করলে হাইকোর্ট পুলিশকে তার মামলাটি রেকর্ড করার নির্দেশ দেয়। হাইকোর্ট বল্লেইতো হয়না, রাষ্ট্রপক্ষ আছে না? তারা আপীলেট ডিভিশনে যেয়ে দেখালেন হাইকোর্ট কোন রুলনিশি জারী না করেই সরাসরি নির্দেশ দেয়ায় আইনের (শাসনের)ব্যত্যয় হয়েছে।

তাইতো! আপীলেট ডিভিশনও দেখলেন, ব্যত্যয় হয়েছে । তাই তারা মতামত দিলেন, রুল না দিয়ে হাইকোর্ট ঠিক কাজ করেনি। মহিলা আবার আসলেন হাইকোর্টে, চাইলেন ঠিক আছে ব্যত্যয়ের দরকার নাই, রুলসহই নির্দেশনা দেয় হোক। হাইকোর্ট দেখলেন, শুনলেন, মামলার বিবরণটি তন্নতন্ন করে পড়লেন, আগের আদেশ-আপীলেট ডিভিশনের আদেশ, তাও দেখলেন। সব শুনে আদালত যখন একটি রুলসহ নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন তখন রাষ্ট্রপক্ষ দেখাতে সক্ষম হলেন যে পিটিশনটিতে এ কথাটি স্পষ্টভাবে লিখা নাই কেন তিনি এলাকার কোর্টে মামলা করতে পারেননি।

তাইতো! ঠিকমতো লিখা হয়নি। সবার দয়ার শরীর! সবাই রাজী হয়েছে পুণরায় পিটিশনটি ঠিকভাবে লিখে আনা পর্যন্ত শুনাণী মুলতবী।

এটা কোন গল্প নয়, এটা গত ২৩ বা ২৪ তারিখের হাইকোর্টের একটি মামলার বিবরণ। এটুকু পথ পাড়ি দিতে কতটা সময় আর কতটা বল লাগে বুঝতে পারেন?

তো!!! আইনের শাসন সম্পর্কে এখনো কোন সন্দেহ আছে আপনাদের? কিংবা ক্রসফায়ার যে ক্রসফায়ার, এ বিষয়ে?

বিষয়: বিবিধ

৭৯৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385475
০৫ জুন ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:১৮
হতভাগা লিখেছেন : ঐ মহিলা কি জীবিত আছেন ?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File