দান - প্রতিদানঃ ভারত বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন ওয়েলকামজুয়েল ২৭ মে, ২০১৮, ১২:২৭:৩২ রাত
বিগত নয় বছরে ভারতের জন্যে যা কিছু আওয়ামী লীগ করেছে, তাতে দেশের জন্যে কোন গিভ এন্ড টেকের ক্যাপিটাল তৈরি হয়নি। এ সবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের এবং শেখ হাসিনার সোশ্যাল ক্যাপিটাল তৈরি হয়েছে যার প্রতিদান আওয়ামী লীগ চাইবে, আগামী নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভারতের সহায়তায় ক্ষমতায় দখল রাখার মাধ্যমে।
ভারতের সকল সার্কেলে এখন বাংলাদেশে পররাষ্ট্র নীতির মূল উপলব্ধি হইলো, বাংলাদেশ মৌলবাদীতে ভরা এবং তারা মনে করে বাংলাদেশের মানুষের ন্যাচারাল ইন্সটিঙ্কট ভারত বিরোধিতা কিন্ত, এর মধ্যে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ ভারতের বন্ধু। তাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ এবং ইচ্ছা তাদের কাছে কোন গুরুত্ব রাখেনা।
যেহেতু সোশ্যাল ক্যাপিটাল শুধু মাত্র আওয়ামী লীগের তাই তাকে একটা অবৈধ নির্বাচনে পুনরায় বাংলাদেশে ক্ষমতায় বসালে ভারতের দায় শোধ হয়ে যাবে।
রোহিঙ্গা ইস্যু, পানি সমস্যা, ফারাক্কা, তিস্তা সহ কোন কিছুতেই কোন ধরনের রিটারনের বাধ্যবধকতা ভারতকে দিতে হবেনা, কারন, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে তার দায় শোধ হয়ে যাবে।
এইসব লেখা এখন রিস্কি, কারন এইটা একটা ইন্টারপ্রিটেশান। এইটার সরাসরি কোন প্রমান নেই। ফলে যে কেউ বলতে পারে, এই ধরনের ইন্টারপ্রিটেশানের মাধ্যমে আমি বায়াসের পরিচয় দিয়েছি।
আমার সেই রিস্ক টাকে দূর করার জন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা মারফত আমরা জানতে পারলাম, শেখ হাসিনা মোদিকে বলেছেন,
“ছেচল্লিশ বছর পরে হাসিনার বার্তা, তাঁরা যা দিয়েছেন, ভারত এ বার তার প্রতিদান দিক।“
সেই প্রতিদিন কি ?
“তাঁর সরকার উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের দেশছাড়া করেছে, ট্রানজিট দিয়েছে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বরাবর দিল্লির পাশে থেকেছে।
বাংলাদেশের নির্বাচনের বছরে এ বার তাই ভারতের সহযোগিতা চাই।“
হাসিনার বার্তা— “মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে সরাতে, বাংলাদেশকে ফের পাকিস্তান বানানোর চক্রান্ত চলছে। আওয়ামি লিগ ক্ষমতা হারালে পশ্চিমে আর পূবে— দু’দিকেই পাকিস্তান নিয়ে ঘর করতে হবে ভারতকে। তাই ভারতের উচিত বাংলাদেশের বর্তমান সরকারই যাতে ক্ষমতায় ফেরে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা।“
একদম যা যা ইন্টারপ্রিট করেছি, সেই গুলো নিজ মুখে শেখ হাসিনা বলেছেন বলে আনন্দবাজার পত্রিকা মারফত জানতে পারছি।
বিষয়টা চরম আশংকাজনক কারন, কুটনিতি পররাষ্ট্র নীতি উভয় জায়গাতেই ডিপ্লোমেসি শব্দের মিনিং টা হচ্ছে, খুললাম খুল্লা ভাবে নিজেকে উনমোচন না করে, ডিপ্লোমেটিক ভাবে ইন্টেন্ট টা প্রকাশ করা। কিন্ত সেই ডিপ্লোমেসিটাও আওয়ামী লীগ এখন রাখতেছেনা ।
একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি পাশের দেশের প্রধান মন্ত্রীকে গিয়ে বলেছে, আওয়ামী লীগ তোমার জন্যে অনেক করেছে এখন আগামী নির্বাচনে সেই রিটারন দিক।
সরাসরি বলে দিচ্ছে, দেশের জনগণ এখন আওয়ামী লীগকে যদি বেছে না নেয়, তবে এই দেশে আরো একটা পাকিস্তান হবে, ফলে ভারতকে যে করেই হোক আওয়ামী লীগকে টিকায় রাখতে হবে।
এই ধরনের মন্তব্য কি ধরনের জনপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, এই আহবান ভারত কিভাবে ইন্টারপ্রেট করতে পারে, তার কোন চিন্তা শেখ হাসিনাকে করতে হচ্ছেনা।
এই ধরনের ওপেন ইনভাইটেশান পেয়ে, ভারত এখন কি করবে, যদি একটা নিরাচনে আওয়ামী লীগ হেরে যায় ? কি কি ইন্টারভেনশান ভারত করতে পারে ?
অথবা আওয়ামী যেন যেন কোন মতে না হারে, তাতে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছাকে ম্যানিপুলেট করতে বা ইলেকশনকে ম্যানিপুলেট করতে ভারত কি কি করতে পারে ? কিসের ইনভাইটেশা জানায় আসলেন, শেখ হাসিনা ?
আমার মনে হয়না, আমি স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের কোন রাষ্ট্র নায়কের মুখে দেশের আভ্যন্ত্ররিন ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করতে এমন নির্লজ্জ আহবান এর আগে শুনেছিল। শেম।
জিয়া হাছান
বিষয়: বিবিধ
৭৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন