অনন্য আফ্রিদি........যে কৃতিত্ব শুধুই আফ্রিদির
লিখেছেন লিখেছেন মিষ্টি স্বপ্ন আরিফ খান ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১১:৩৪:৩৪ সকাল
...
০৪ অক্টোবর, ১৯৯৬। কেনিয়ার নাইরোবি স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ব্যাট হাতে নামলেন মায়াবি চেহারার সুদর্শন এক যুবক। কিন্তু সেই মায়াবি চেহারার তরুণ যে ব্যাট হাতে কত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে তা হারে হারে টের পেলেন শ্রীলঙ্কান বোলাররা। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে ১১ ছক্কা আর ৬টি চারে নাম উঠালেন ইতিহাসে। ৩৭ বলে সেঞ্চুরি করে শহীদ আফ্রিদি গড়লেন নতুন ইতিহাস। প্রথম ব্যাট হাতে নেমে কেউ এমন বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পারেন তা দূরতম কল্পনাতেও ছিলো না দর্শকদের।
রেকর্ডটি আগে ছিলো শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান সনথ জয়সুরিয়ার। তিনি করেছিলেন ৪৮ বলে সেঞ্চুরি। সেদিন মাঠেই জয়সুরিয়া দেখেছিলেন কিভাবে তার রেডর্ক গুড়িয়ে দিচ্ছে এক তরুণ। সেই ব্যাটিং ঝড়ের ভুক্তভোগী ছিলেন তিনি নিজেও। দশ ওভার বল করে দিয়েছিলেন ৯৪ রান! পাকিস্তান ম্যাচটি জিতেছিলো ৮২ রানে। প্রথম ব্যাটিং করলেও সেটি ছিলো আফ্রিদির ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচ। এর আগের ম্যাচে কেনিয়ার বিপক্ষে তার অভিষেক হলেও সেই ম্যাচে ব্যাটিং করা সুযোগ পাননি আফ্রিদি।
আফ্রিদির সেই রেকর্ড অক্ষত ছিলো ২০১৪ সাল পর্যন্ত। টানা সতেরো বছর লেগেছে কারো সেই রেকর্ড ভাঙতে। এখন টি-টোয়েন্টির প্রভাবে সব ফরম্যাটের ক্রিকেটেই মাঠে চার-ছক্কার বন্য বয়ে যায়। কিন্তু ওই যুগে অনেকেই মনে করতেন আফ্রিদির রেকর্ড ভাঙ্গা সম্ভব নয়।
অথচ আফ্রিদিকে দলে নেয়া হয়েছিলো লেগস্পিনার হিসেবে, মোস্তাক আহমেদের বিকল্প হিসেবে। আর নির্বাচকদের সেই আস্থার প্রতিদান দিলেন টেস্ট অভিষেকে। ঠিক দুই বছর পর আরেক অক্টোবরে টেস্ট অভিষেক করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। প্রথম ইনিংসেই স্টিভ ওয়াহ, মার্ক ওয়াহসহ ৫ অসি ব্যাটসম্যনাকে সাজঘরে ফিরিয়ে কৃতিত্ব দেখান অভিষেকেই ৫ উইকেট নেয়ার। ম্যাচটি ড্র হয়েছিলো।
২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নামেন আফ্রিদি। টেস্ট ও ওয়ানডের মতো এই ফরম্যাটেও তার শুরুটা হয়েছিলো দুর্দান্ত। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ বলে ২৮ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে নিজে জিতে নেন ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার।
সম্প্রতি আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে টি-টেন লিগ নামে দশ ওভারের ক্রিকেটের একটি টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টেও নিজের প্রথম তিন বলেই হ্যাট্রিক করেছেন শহীদ আফ্রিদি। গত ১৪ ডিসেম্বর টুর্নামেন্টে পাখতুনসের হয়ে প্রথম ম্যাচে বল হাতে নিয়েই পরপর তিন বলে মারাঠা এরাবিয়ান্সের রাইলি রুশো, ডোয়াইন ব্রাভো ও বীরেন্দ্র শেবাগকে আউট করেন তিনি। বলগুলো ছিলো আফ্রিদির প্রথম ওভারের প্রথম তিনটি বল। টি-টেন ক্রিকেট এখনো আইসিসির স্বীকৃতি পায়নি,তাই রেকর্ড বইয়ে হয়তো লেখা থাকবে না তার এই হ্যাট্রিক কৃতিত্ব। কিন্তু ভক্তদের মন থেকে মুছে যাবে না কখনোই এমন মধুর স্মৃতি।
ক্রিকেটের সব ফরম্যাটেই এমন দুর্দান্ত সূচনা করা একমাত্র ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি এখানেই অনন্য।
বিষয়: বিবিধ
৭৬৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন