বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- শেষ পর্ব ( ষড়যন্ত্র চলছেই)
লিখেছেন লিখেছেন তট রেখা ০২ মে, ২০১৬, ০৬:০৯:১৭ সকাল
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ثُمَّ نُنَجِّي رُسُلَنَا وَالَّذِينَ آمَنُواْ كَذَلِكَ حَقًّا عَلَيْنَا نُنجِ الْمُؤْمِنِينَ
অতঃপর আমি বাঁচিয়ে নেই নিজের রসূলগণকে এবং তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে এমনিভাবে। ঈমানদারদের বাঁচিয়ে নেয়া আমার দায়িত্বও বটে। ( সুরা ইউনুসঃ আয়াত ১০৩)
১০ম পর্ব
১০ম পর্বের পর-----
১ম বিশ্ব যুদ্ধের সময় মেসোনিক সরকার গুলো ইসলামী খিলাফত এবং এর সকল অঞ্চল গুলো ধ্বংস করে করায়ত্ব করে। ঐ অঞ্চল গুলোর মধ্যে বর্তমান ইরাককে ব্রিটিশদের অধীনে দেয়া হয় এবং বর্তমান সীমানা ইরান-ইরাক যুদ্ধের মাধ্যমে পুণর্নির্ধারিত হয়। ইরাকের স্বাধীনতার পর ইউ এস এ বিশুদ্ধ ইসলাম পন্থিদের উত্থানের ভয়ে পরোক্ষ ভাবে এর কর্তৃত্ব গ্রহন করে। C I A ক্ষমতারোহনের জন্য বাথ পার্টিকে সহায়তা করে, তারা সাদ্দাম হোসেনকে ইরাকের নেতা নির্বাচন করে, সে মেসোনিক রাস্ট্রগুলোর জন্য একজন মিত্র রূপে আবির্ভুত হয়। পরবর্তীতে কুয়েত যখন তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে, এটা ইরাকের অর্থনীতির জন্য ক্ষতির কারণ হিসাবে দেখা দেয়। কুয়েতকে হুমকি দেয়া হয়, কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করে, পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ইরাকী সৈন্যরা কুয়েতের সীমানায় জড়ো হয়। ফ্রি-মেসোনিক মিডিয়া, যা প্রকৃত পক্ষে আমেরিকান মিডিয়া ব্যাপারটাকে আকস্মিক এবং ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে প্রচার করে।
যা ই হোক এটা প্রকাশ পায় যে, কুয়েতে আমেরিকার রাস্ট্রদুত এবং সি আই এ ইরাকের কুয়েত আক্রমণের ব্যাপারে পুর্ব থেকেই জানতেন। উপসাগরীয় যুদ্ধের পর সাদ্দাম জীবিতই থাকেন এবং কুয়েত আবার স্বাধীন হয়, আর তাই প্রশ্ন জাগে উপসাগরীয় যুদ্ধ ফ্রি-মেসনদের কোন স্বার্থকে রক্ষা করতে সংঘটিত হয়। মেসোনিক পশ্চাত্য অনেক আগেই অনুধাবন করেছে যে, তেলের উপর নিয়ন্ত্রন তাদের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো তাদের সড়ক পরিবহনের উপর নির্ভরতা, যদিও এমন প্রযুক্তি তাদের আছে বিশাল জন সমষ্টির জন্য তারা বৈদ্যুতিক পরবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। সব সময় এমন উদ্যোগের উপর ভেট দেয়া হয়েছে। এর কারণ হলো তেল থেকে অর্জিত সম্পদ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অর্থনীতির পতন হবে, আর মধ্য প্রাচ্যের অর্থনিতির পতন হলে, সাদ্দাম হোসেনের মত পুতুল সরকার গুলোর দ্বারা যেমন ফ্রী-মেসনদের উদ্দেশ্য সাধিত হচ্ছিল, তা ব্যাহত হবে। পাশ্চাত্য মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হবে। সম্পদের এ রূপ বিভাজন এবং মেকি নেতৃত্ব না থাকলে কোনো কিছুই বিশুদ্ধ ইসলামিক আন্দোলনকে প্রতিহত করতে পারবেনা। দারিদ্র মানুষের মধ্যে একতা আনয়ন করে, আর মুসলিমদের একতা দাজ্জালের পুরোগামীদের জন্য সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, সাদ্দাম অনুধাবন করতে পারেন যে, তিনি মেসনদের পুতুল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছেন, তিনি তাদের থেকে সরে আসেন আর তাদের বাদ্যের তালে তালে নাচতে অস্বীকৃতি জানান, আর তাই ২০০৩ সালে ইরাক দ্বিতীয় বারের মত আক্রান্ত হয়, সাদ্দাম ক্ষমতাচ্যুত হন এবং পরবর্তীতে মেসনসদের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যু দন্ডে দন্ডিত হন।
শিয়া-সুন্নী বিভক্তিকরণের মাধ্যমে ইরাকে নতুন খেলা শুরু হয়। আরব-বসন্তের মাধ্যমে মেসন্সরা তাদের পরিকল্পণার পরবর্তীধাপে অগ্রসর হন। আর তাই ইরাক- সিরিয়ায় আজ রক্তের হোলি খেলা চলছে। এর মাঝেও ইসলাম পন্থিদের উত্থান ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। এই বিশৃংখল পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকে তা দেখার বিষয়।
উপসাগরীয় যুদ্ধ নানাভাবে পাশ্চাত্যকে এক্ত্রিত করে আর মুসলিম বিশ্বকে বিভক্ত করেছে , আর তা পাশ্চাত্যেরে নানা রকম অস্ত্রের পরীক্ষাগার হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্ত পাশ্চাত্যের বড় সাফল্য মধ্য প্রাচ্যের বুকে আমেরিকান সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে।
দাজ্জাল ইসলামী ভুমির হৃদপিন্ডে একটি বড় অবস্থান তৈরী করতে সমর্থ হয়েছে এবং মুসলমানদের পবিত্র ভুমিকে শক্ত কব্জায় নিয়েছে। যদিও তারা চক্রান্ত করে আর আল্লাহও কৌশল করেন, আর আল্লাহ হলো শ্রেষ্ঠ কৌশলী। চূড়ান্ত বিজয় অবশ্যই মুসলমানদের জন্য।
(সমাপ্ত)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় - ১ম পর্ব ( ছায়ার ভেতরে বসে)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়-২য় পর্ব ( রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় -৩য় পর্ব ( মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৪র্থ পর্ব ( সাহিত্য ও চলচ্চিত্র)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৫ম পর্ব ( মানবজাতির এলিয়েন তত্ত্ব)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় - ৬ষ্ঠ পর্ব (বৈশ্বিক নিরাপত্তা বাহিনী)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৭ম পর্ব ( সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৮ম পর্ব ( অর্থনীতি ও জনসংখ্যা)
বিশ্ব কিভবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৯ম পর্ব ( পুরনো শত্রু নতুন রূপে)
বিঃদ্রঃ লেখাটি আগে ভিন্ন নামে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু সিরিজটি সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। নতুন অনেক পাঠকের জন্য তাই পুনঃপ্রকাশ করা হলো।
RELATED READINGS:
কামাল আতাতুর্ক কে ছিলেন- ইহুদী? ফ্রী-মেসন? - শেকড়ের সন্ধানে (পর্ব-৩)
বিষয়: বিবিধ
১৭০১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সামনে কি আর এ জাতিয় কোন লিখা লিখবেন ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন