বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৭ম পর্ব ( সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ)

লিখেছেন লিখেছেন তট রেখা ২৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:৩৫:৪০ রাত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

وَمَن يَعْشُ عَن ذِكْرِ الرَّحْمَنِ نُقَيِّضْ لَهُ شَيْطَانًا فَهُوَ لَهُ قَرِينٌ

যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী।

وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ

শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।

(সুরা যুখরুফঃ আয়াত ৩৬-৩৭)

৬ষ্ঠ পর্ব

৬ষ্ঠ পর্বের পর-----

যে মর্মর্স্পর্শী সন্ত্রাসী আক্রমণ, উর্দ্ধমুখী অপরাধের হার, ক্রমবর্ধ্মান সহিংসতা আর সংঘাত ফিল্ম মিডিয়া ও সরকারী রিপোর্টের মাধ্যমে প্রচার করা হয়, তা জনসাধারণের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন কঠোর পদেক্ষপের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন আদায় করে, যাতে করে সরকারী যন্ত্রসমূহ তাদের পর্যবেক্ষণের মাত্রা ব্যক্তিগত পর্যায় পর্যন্ত বিস্তার ঘটায়, রাস্ট্রীয় ব্যাবস্থা তখন স্বৈরাচারী রূপ লাভ করে। জনমত আরো একবার বিকৃত বা পরিবর্তন করে মেসন্সদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সহযোগী করা হয়। সকল নাগরিকের ব্যাক্তিগত তথ্যাবলী এখন ডাটাবেজে সংরক্ষন করার ব্যাবস্থা করা হয়েছে এবং তা প্রতিনিয়ত আপডেট করা হচ্ছে। একটি মাত্র প্লাস্টিক কার্ডে ব্যাঙ্কিং ডিটেইল, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদী সমন্বিত করার ব্যাবস্থা হচ্ছে, যাতে করে সকল ক্রয়-বিক্রয়, লেন-দেন এবং অন্যান্য তথ্য শুধুমাত্র একটি মাত্র বোতামের মাধ্যমে মনিটর করা সম্ভব হয়

১৯৯২ সালে ব্রিটিশ সুপ্রীম কোর্টের ভাইস চ্যান্সেলর নিকোলাস ব্রাউন মুল্কিন্সন হাইকোর্টকে বলেন, যদি কোনও ব্যাক্তির জন্য পুলিশি তথ্য, জমির খাজনা, সামাজিক সেবা, স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদী সংক্রান্ত তথ্য অথবা অন্যান্য সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য শুধু মাত্র একটি ফাইলে সন্নিবেশিত করা হয়, তাহলে ব্যাক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপণীয়তা মারাত্মক ভাবে ক্ষুণ্ণ হয়। তথাপিও ফ্রিমেসন্সরা সরকারের মাধ্যমে আপনার ব্যাপারে বিশাল তথ্যভান্ডার হস্তগত করেছে। তারা খুব সহজেই বলে দিতে পারে, কার সাথে আপনি টেলিফোনে কথা বলছেন, কোথায় কাজ করেন, কোথায় কেনা-কাটা করেন, কি খাদ্য খান, কি পরিধান করেন, আপনার মুল্য কত, আপনি কত উপার্জন করেন, আর এভাবে বলতে গেলে তালিকা বাড়তেই থাকবে। একটি মাত্র পরিচয় পত্র পরিপূর্ণ মনিটরিঙে সক্ষম এবং সকল সমাজে আপনার একটি মানসিক প্রতিচ্ছবি অংকন করতে পারে। সকল তথ্য যা তাদের পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। এখানে একটি গ্যাপ এখনো রয়ে গেছে, যা ফ্রিমেসন্সরা এখনো পূরণ করতে পারেনি, কারণ কাগুজে মুদ্রা দিয়ে লেনদেন সনাক্ত করা সম্ভব নয়। এর কারণেই কাগুজে মুদ্রা কে পরিপূর্ণ রূপে ইলেক্ট্রনিক মুদ্রায় প্রতিস্থাপনের কাজ চলছে । অন্য কথায় যে পদ্ধতি শুধু মাত্র কার্ড এর উপর নির্ভরশীল হবে। নানা রকম ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ডের প্রচলণ এখন বেড়েই চলেছে, স্মার্ট কার্ডের প্রচলণ আসছে। স্মার্ট কার্ডের মধ্যে একটি মিক্রো চিপ থাকে যা সকল লেন-দেন গণনাই করেনা তা সংরক্ষণও করতে পারে, শুধু তাই নয় এটা ক্রেডিট কার্ড, সামাজিক পাসস্পোর্ট, লাইব্রেরী কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্রাভেল কার্ড, ফোন কার্ড এবং অবশ্যই পরিচয় পত্র হিসাবে ব্যাবহার করা সম্ভব। এই ধারণা ফ্রান্সে শুরু হয়েছে যেখানে পরিচয় পত্রের ব্যাপারে ইতিমধ্যে কড়াকড়ি ব্যাবস্থা আরোপিত হয়েছে।

যদিও একটি পরিচয় পত্র একজন মানুষের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরবে, কিন্তু মানুষটির অবস্থান নির্ণয় করতে সক্ষম হবেনা। এটার জন্য একপ্রকার ট্র্যাকিং ডিভাইস দরকার হবে, যা যখন একজন ব্যাক্তি চলবে এবং পৃথিবীর যেখানেই সে থাকবে তা নির্ণয় করা সম্ভব হবে। এই যন্ত্রটি একোটি মাইক্রোচিপ হতে পারে যা ত্বকের ভেতর প্রবিষ্ট করে বসিয়ে দেয়া হবে, এই চিপটি এক প্রকার সিগনাল পাঠাবে যা কোনো এক প্রকার কৃত্রিম উপগ্রহ গ্রহণ করবে এবং মানুষটির অবস্থান নির্ণয় করে কোনো কেন্দ্রীয় সার্ভারে প্রেরণ করবে। এটা কল্প কাহিনীর মত মনে হলেও অবশ্যই সম্ভব। জিপিএস প্রযুক্তি ব্যাবহার করেই তা সম্ভব। এবং এর প্রক্রিয়া চলছে। ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুরে সার্স মহামারীর সময় আক্রান্তদের হাতে এক প্রকার ট্যাগ লাগিয়ে বাসায় বসে থাকতে বাধ্য করা হতো, বাসার বাইরে এলেই কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ তা বুঝতে পারত এবং তারা ব্যাবস্থা নিত। এ মুহুর্তে এ আই এস(AIS) এবং এল আর আই টি (LRIT) মাধ্যমে জাহাজকে ট্র্যাক করা হয়। পরবর্তিতে হয়ত এটা প্রত্যেক ব্যাক্তির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে। এ মুহুর্তে মোবাইল ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে ব্যাক্তির অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব। বর্তমানে যে ট্যাগ প্রচলিত আছে তা কয়েদীদের হাতে লাগিয়ে তাদের নয়ন্ত্রণ করা। পৃথিবীর সকল কে এই নিয়ন্ত্রণ ব্যাবস্থায় আনতে পারলে ফ্রি মেসন্সরা তাদের পরিকল্পণার পরবর্তী ধাপ সমগ্র বিশ্বকে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব্যাবহার করতে পারবে। আর যে কোনো মূল্যেই তারা তা অর্জন করতে চায়। বাংলাদেশে বর্তমানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন চলছে, তা এই পদ্ধতিরই একটি দিক।

৮ম পর্ব

বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় - ১ম পর্ব ( ছায়ার ভেতরে বসে)

বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়-২য় পর্ব ( রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন)

বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় -৩য় পর্ব ( মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ)

বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৪র্থ পর্ব ( সাহিত্য ও চলচ্চিত্র)

বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৫ম পর্ব ( মানবজাতির এলিয়েন তত্ত্ব)

বিঃদ্রঃ লেখাটি আগে ভিন্ন নামে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু সিরিজটি সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। নতুন অনেক পাঠকের জন্য তাই পুনঃপ্রকাশ করা হলো।

RELATED READINGS:

কামাল আতাতুর্ক কে ছিলেন- ইহুদী? ফ্রী-মেসন? - শেকড়ের সন্ধানে (পর্ব-৩)

বিষয়: বিবিধ

১৭২২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

367343
২৮ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৫:০২
শেখের পোলা লিখেছেন : সীম নিবন্ধ্ন এক সময় আত্মঘাতি হয়ে দেখা দেবে মনে হয়৷ ধন্যবাদ।
২৮ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৫:৫৭
304794
তট রেখা লিখেছেন : যাযাকাল্লাহ খায়রান।
367391
২৮ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:১৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে আর মানুষ মনে করে যে তারাই সৎপথে রয়েছে। মুমিনরা যতদিন শয়তানকে শত্রু হিসেবে গ্রহন না করবে ততদিন কল্যাণ লাভ করবে না। ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি ভালো লাগলো
২৮ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:২৬
304831
তট রেখা লিখেছেন : নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্য বলেছেন। যাযাকাল্লাহ খায়রান। Good Luck Rose Good Luck
367548
৩০ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০১:২৭
তট রেখা লিখেছেন : মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই আগামী ডিসেম্বর থেকে কেবল নিজেদের দেশে নয়, চাইলে বিশ্বের যেকোনো দেশের কম্পিউটার ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে পারবে। এর জন্য পৃথক কোনো অনুমতির প্রয়োজন পড়বে না।
বৃহস্পতিবার আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট দেশটির জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আনা সংবিধানের ৪১ ধারা সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দিয়ে বিষয়টি পাসের জন্য কংগ্রেসে পাঠিয়েছে। কংগ্রেস এটি যাচাই-বাছাই, সংশোধন কিংবা বাতিলের জন্য ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পাবে।
৪১ ধারা অনুযায়ী, কোনো অপরাধের জন্য কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইস জব্দ কিংবা ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের মাধ্যমে থাকা তথ্য সংগ্রহের জন্য সার্চ ওয়ারেন্টের আবেদন সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে করতে হবে। অর্থাৎ নিউইয়র্কের কারো কম্পিউটার হ্যাক করতে চাইলে এফবিআইকে নিউইয়র্কের আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
সংশোধনীতে এফবিআইকে যুক্তরাষ্ট্রসহ এর বাইরে যেকোনো দেশের কম্পিউটার ব্যবস্থা হ্যাকের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর জন্য পৃথকভাবে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আদালতের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে বলে ইতিমধ্যে সমালোচনাও শুরু হয়েছে। দ্য হ্যাকার নিউজ নামে একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, কেবল একটি ওয়ারেন্টের জোরে এফবিআইয়ের এজেন্টরা লাখ লাখ কম্পিউটার হ্যাক করে তথ্য সংগ্রহের অনুমতি পাবে। আর এর শিকার যারা হবে তারা অধিকাংশই সাইবার অপরাধী নয়।
প্রসঙ্গত, সান বার্নাদিনোতে বন্দুক হামলার ঘটনায় এফবিআই হামলাকারীদের আইফোনের লক খুলে দিতে অনুরোধ জানিয়েছিল অ্যাপলকে। কিন্তু অ্যাপল কর্তৃপক্ষ এফবিআইয়ের এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। পরে অবশ্য এফবিআই নিজেরাই তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এ লক খুলতে সক্ষম হয়েছিল
Click this link

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File