বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় - ৪র্থ পর্ব ( সাহিত্য ও চলচ্চিত্র )
লিখেছেন লিখেছেন তট রেখা ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ০৩:৫১:২০ দুপুর
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় - ১ম পর্ব ( ছায়ার ভেতরে বসে)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়-২য় পর্ব ( রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন)
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় -৩য় পর্ব ( মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ا بَنِي آدَمَ لاَ يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُم مِّنَ الْجَنَّةِ يَنزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْءَاتِهِمَا إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لاَ تَرَوْنَهُمْ إِنَّا جَعَلْنَا الشَّيَاطِينَ أَوْلِيَاء لِلَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ
অর্থঃ হে বনী-আদম শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে; যেমন সে তোমাদের পিতামাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে এমতাবস্থায় যে, তাদের পোশাক তাদের থেকে খুলিয়ে দিয়েছি-যাতে তাদেরকে লজ্জাস্থান দেখিয়ে দেয়। সে এবং তার দলবল তোমাদেরকে দেখে, যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখ না। আমি শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, , যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। সুরা আরাফঃ আয়াত নং-৭)
৩য় পর্বের পর-----
মোগলি খ্যাত বিখ্যাত উপন্যাস "The Jungle Book" সবারই জানা। এর রচয়িতা ঔপন্যাসিক রুডইয়ারড কিপ্লিং যিনিও এক জন ফ্রিমেসন্স "The Man Who Would One Day be King" নামে একটি বই লিখেছেন, যা পরবর্তীতে বৃহৎ বাজেটের হলিউড ছবিতে রূপান্তরিত হয়েছে, শ্রেষ্ঠাংশে সন কনেরি, মাইকেল কেন এবং সাইদ জাফরি অভিনয় করেছেন। এই বইটি হলো ২ জন সৈন্যের কাহিনী যারা ভারতের সীমান্তে একটি দেশে ভ্রমণ করতে যায়, এটা এমন এক দেশ, যেটার ব্যাপারে গুজব ছিল যে, দেশটি ধন-সম্পদে পূর্ণ ছিল এবং এক সময় আলেক্সান্ডার দ্যা গ্রেটের শাসনাধীনে ছিল। সেখানে যাওয়ার পর এই দুজন সেনা সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের দ্বারা ধৃত হন, যাদেরকে কাফির বলা হতো আর দেশের নাম কাফিরিস্তান। এই দুজনকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং হত্যা করার আগে মুহুর্তে এক জন সেনার গলায় একটি হার দৃষ্টি গোচর হয় যাখানে ফ্রিমেসন্স দের এক চোখের প্রতীক খোদাই করা ছিলো। কাফিরেরা তাকে দেবতা জ্ঞান করে শ্রদ্ধা জানাতে থাকে এবং তাদের উপর অমরত্বের স্বর্গীয় গুণাবলী আরোপ করে। এই মানুষ টি প্রথমে রাজা হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করে এবং পরবর্তী নতুন পাওয়া ক্ষমতার বলে নিজেকে সত্যিকারের ঈশ্বর মনে করে।
অন্য কোনও ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকে না হলেও, মুসলমানদের দৃষ্টিকোণ থেকে উপরোক্ত গল্প থেকে যে রূপক টি দৃষ্টি গোচর হয় তা খুবই কৌতুহলোদ্দীপক। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণিত অসংখ্য হাদীসে এক জন মানুষের বর্ণনা পাওয়া যায় যার একচোখ অন্ধ হবে, তিনি প্রথমে একজন শাসক হবেন এবং পরবর্তীতে নিজেকে আল্লাহ বলে ঘোষনা দেবেন, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অমরত্বের অধিকারী হবেন যাকে বলা হবে ভন্ড মসীহ ( মাসিহিদ্দাজ্জাল, আরবী ভাষায়)
অন্য আর একটি মুভি "Independence Day" যার কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৬ সালে মুক্তি প্রাপ্ত এই ছবিতে বিশ্ব সরকারের ধারণা শক্ত ভাবে প্রচার করা হয়েছে এবং এটি বক্স অফিসে অনেক রেকর্ড ভঙ্গ করেছে । এই ছবিটি তখন ইতিহাসের ৭ম ব্যাবসা সফল ছবির তালিকায় উঠে এসেছিল। ছবিটির কাহিনী হলো পৃথিবী ব্যাপী এলিয়েন আক্রমণ নিয়ে, কিন্তু গভীর ভাবে চিন্তা করলে মুভিটাতে সুক্ষ ভাবে মেসনিক মেসেজ দেয়া হয়েছে এবং ফ্রি-মেসন্সদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নই ছিল এ ছবিটির মূল উদ্দেশ্য। এ ছবিতে এরিয়া-৫১ নামে একটি সামরিক ঘাঁটি দেখানো হয়েছে, যেখান থেকে এলিয়েন দের বিরুদ্ধে একটি সামরিক আক্রমণ পরিচালনা করা হয়, যা পৃথিবী কে রক্ষা করে পৃথিবীর ভবিষ্যত সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এই স্থাপনার প্রবেশ পথে একটি পিরামিড আছে যার উপর খোদাই করা এক চোখের প্রতীক রয়েছে। এই ছবিতে দেখানো হয়েছে যুক্তরাস্ট্র এলিয়েনদের বিরুদ্ধে আক্রমণে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে আর এই আক্রমণের পরিকল্পণা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং নেতৃত্ব এক ব্যাক্তি দ্বারা সংঘটিত হয়। একজন সর্বময় নেতা। এই ছবিটি মুভি এবং টেলিভিশন মিডিয়াতে এলিয়েন, ইউ এফ ও এবং পৃথিবীর ওপর তাদের আক্রমণের উপর ছবি তৈরীর যে হিড়িক পড়েছে তারই একটা অংশ। এলিয়েন ইস্যুতে এই ছবি গুলো ক্রম বর্ধমান আতংক ও অস্থিরতার আগুনে ঘি ঢালছে। এটা ফ্রিমেসন্সদের অনেক গুলো উপকরণের একটি যার মাধ্যমে তারা তাদের বিশ্ব সরকার বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করছে। ফ্রিমেসন্সরা মানুষের মধ্যে নানা বিধ পন্থায় ভীতি ছড়াচ্ছে, যে তাদের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন আর এ কারণে আরো বড় সুরক্ষা দরকার। আর এটা বিশ্বব্যাপী একটি কোয়ালিশন সরকারের মাধ্যমে নিশ্চিত করা সম্ভব যা পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষের নানাবিধ প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখবে। আপনি চিন্তা করুন, আমরা যদি প্রকৃতই একটি এলিয়েন ফোর্সের হুমকির সম্মুখীন হয়, কত দ্রুত আমাদের ভেতরের সকল পার্থক্য ভুলে আমরা এক হয়ে যাব এলিয়েনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য, তবুও আপনাকে প্রশ্ন করি আমাদের মধ্যে কি এলিয়েন বাস করছেনা ?
প্রসংগ ক্রমে একটি কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন, রজার মুনরো নামক একজন শয়তানের পুজারীর সাক্ষাতকার থেকে জানা যায়, মানুষকে বিপথগামী করতে শয়তান ফ্রিমেসন্সদের মাধ্যমে তিনটি কৌশল প্রয়োগ করত সে গুলো হলোঃ
১। ফেরেশ্তা এবং শয়তানের অস্তিত্বে মানুষকে অবিশ্বাসী করা।
২। মানুষের মন নিয়ন্ত্রণ করা। সম্মোহণী বিদ্যা কে বিজ্ঞান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা। ( যদিও প্রকৃত পক্ষে তা শয়তানের কৌশল)
৩। বাইবেল কে না পুড়িয়ে তা ধংস করা।
বর্তমান কালে শয়তানের তিনটি পরিকল্পণা হলোঃ
১। ইউ এফ ও এবং এলিয়েনের অস্তিত্বকে বাস্তব বলে মানুষকে বিশ্বাস করানো
২। ইসলাম ধর্মের বিলুপ্ত সাধন করা
৩। নতুন বিশ্বব্যাবস্থা ( New world order) এবং নতুন ধর্মের প্রবর্তন করা।
সাক্ষাতকারে আরো একটি ব্যাপার জানা যায় যে, শয়তানের প্রত্যক্ষ নির্দেশে চার্লস ডারউইন “ Theory of species by means of natural selection” বইটি লিখেন এবং বিবর্তনবাদের মাধ্যমে স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বিকার করেন, যা একটি বৃহৎ গোষ্ঠি কে স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করতে উৎসাহিত করে।
বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধি বৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়- ৫ম পর্ব ( মানব জাতির এলিয়েন তত্ত্ব)
বিঃদ্রঃ লেখাটি আগে ভিন্ন নামে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু সিরিজটি সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। নতুন অনেক পাঠকের জন্য তাই পুনঃপ্রকাশ করা হলো।
RELATED READINGS:
কামাল আতাতুর্ক কে ছিলেন- ইহুদী? ফ্রী-মেসন? - শেকড়ের সন্ধানে (পর্ব-৩)
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন