যিকিরঃ ফজিলত ও পদ্ধতি
লিখেছেন লিখেছেন তট রেখা ২০ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:০৬:৫৫ বিকাল
মুলঃ শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল জিবরীন
(ইংরেজী থেকে অনুদিত)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আল্লাহ বলেনঃ
فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُواْ لِي وَلاَ تَكْفُرُونِ
সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না।
(সুরা বাকারাঃ আয়াত নং-১৫২)
সকল মুসলিমেরই জানা প্রয়োজন যে, আল্লাহ আমাদের কল্যাণ দান করেন এবং যারা নিয়মিত আল্লাহর স্মরণে ব্যাস্ত রাখেন, আল্লাহ তাদের পুরস্কার দিয়ে প্রতিদান দেন। এবং যিকিরের মত এই মহৎ আমলে নিজেকে ব্যাস্ত রেখে একজন ব্যাক্তি অর্থহীন কথা-বার্তা থেকে বিরত রাখতে পারে এবং আখেরাতে ও এই দুনিয়াতে অধিক কল্যাণ অর্জন করতে পারে।
নিশ্চয়ই যিকিরের ফজিলতের ব্যাপারে কুরান মজীদের আয়াত ও হাদীসের সংখ্যা অনেক।
আল্লাহ বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا
মুমিনগণ তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর।
وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
এবং সকাল বিকাল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা কর।
( সুরা আহযাবঃ আয়াত নং- ৪১-৪২)
আল্লাহ আরো বলেনঃ
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।
(সুরা আর-রাদঃ আয়াত নং-২৮)
এবং নিম্নের হাদীসেঃ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، - وَاللَّفْظُ لِقُتَيْبَةَ - قَالاَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ حِينَ يَذْكُرُنِي إِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلإٍ هُمْ خَيْرٌ مِنْهُمْ وَإِنْ تَقَرَّبَ مِنِّي شِبْرًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً "
অর্থঃ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও যূহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ জাল্লা শানূহু বলেন, আমি আমার বান্দার কাছে তার ধারণা অনুযায়ী। যখন সে আমার যিকর করে তখন আমি তার সঙ্গে থাকি। বান্দা আমাকে একাকী স্বরণ করলে আমিও তাকে একাকী স্বরণ করি। আর যদি সে কোন মজলিসে আমার যিকর (স্বরণ) করে তাহলে আমি তাকে তাদের চাইতে উত্তম মজলিসে স্বরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে তাহলে আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই। যদি সে আমার দিকে হেঁটে আসে আমি তার দিকে অতি দ্রুত আসি।
(সহীহ মুসলিমঃ হাদিস নং- ৬৫৬১ ইঃফাঃ)
অপর একটি হাদীসে বলা হয়েছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَثَلُ الَّذِي يَذْكُرُ رَبَّهُ وَالَّذِي لاَ يَذْكُرُ مَثَلُ الْحَىِّ وَالْمَيِّتِ ".
অর্থঃ আবূ মূসা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে তার প্রতিপালকের যিকর করে, আর যে যিকর করে না, তাদের উপমা হলো জীবিত ও মৃত ব্যক্তি।
[সহীহ বুখারীঃ হাদীস নং- ৬৪০৭ তাঃ প্রঃ মুসলিম ৬/২৯, হাঃ ৭৭৯] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৮৫২)
জিকিরের আদব ও পদ্ধতির দিক থেকে এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, যিকির কারী ব্যাক্তির জিহবার সাথে সাথে অন্তরও পরিশুদ্ধ হবে। এমন যিকিরে লাভ নেই, যেখানে শুধু জিহবা দিয়ে যিকির করা হয় কিন্তু অন্তর এর থেকে দুরে থাকে, জিহবা দিয়ে যা বের হচ্ছে অন্তরে তা প্রতিধ্বনিত হয়না। এটাও আবশ্যক যে, যে ব্যাক্তি যিকির করছে, সে জানে যে সে তার দোয়াতে কি বলছে এবং সে কি চায়ছে।
আল্লাহ বলেনঃ
وَاذْكُر رَّبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعاً وَخِيفَةً وَدُونَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالآصَالِ وَلاَ تَكُن مِّنَ الْغَافِلِينَ
আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম; সকালে ও সন্ধ্যায়। আর বে-খবর থেকো না।
(সুরা আরাফঃ আয়াত-২০৫)
SIMILAR POSTS YOU MAY LIKE TO READ:
হিংসা বা ঈর্ষা জয়ের ৮টি উপায়
সালাত কি জীবনের পরিবর্তন আনে
আমাদের দশটি বিনষ্ট জিনিস
মদীনায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর দেয়া প্রথম খুৎবা
দশটি সময় যখন দোয়া কবুল হয়
বিষয়: বিবিধ
১১০৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রহস্যজনক ভাবে সামু ব্লগে এই পোস্ট দেয়ার পর ব্যান হয়ে গেলাম।
যাযাকাল্লাহ খায়রান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন