জীবনের গল্প (পূর্বে প্রকাশিত)
লিখেছেন লিখেছেন তট রেখা ২৬ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:২৫:৫৯ রাত
নিম্নোক্ত কাহিনীটি আরবী সংবাদ পত্র থেকে সংগৃহীত এক ব্যাক্তির জীবনের গল্প, উনি এটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান, যেন কেউ তার মত ভুল না করে। উনি তার নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি শুধু মানুষের জন্য সে শক্তিশালী উদাহরণ হতে চেয়েছেন। উনার জবানীতেই নিচের ঘটনা পড়ুনঃ
কলেজে পড়ার সময় আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব ছিল, অনেক মেয়েদের সাথেও আমার সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে একটি মেয়ের সাথে আমি অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলি, আর এভাবে ফুর্তি করেই আমার সময় কাটছিল যতক্ষণ পর্যন্ত আমি জানতে পারি, আমাদের এরূপ মেলা-মেশার ফল স্বরূপ মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। যখন এ ব্যাপারটি তার পরিবারের কাছে প্রকাশ পায়, মেয়েটির ভাই তখন আমাকে আক্রমণ করতে আসে। আমি তাকে বলি, “ আমি এই মেয়েটিকে চিনিইনা, সন্তান সম্ভবা হওয়ার কারন অন্য কোথাও খোঁজ কর”। আমি সেখান থেকে সরে আসি এবং ব্যাপারটি পুরোপুরি ভুলে যায়।
যেহেতু এ ব্যাপারে তাদের কাছে প্রত্যক্ষ কোনো প্রমাণ ছিলনা, তারা আর আমাকে বিরক্ত করেনি এবং আমিও ব্যাপারটি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি।
কয়েক বছর পরের কথা। আমি আমার বাড়ীতে প্রবেশ করে দেখতে পাই আমার মা অজ্ঞান অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। আমি তার চেতনা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি, কিন্তু চেতনা ফিরে পাওয়ার সাথে সাথে সে কান্না করে আবার অচেতন হয়ে যায়।
তিন বার এভাবে চেষ্টা করি এবং তাকে জিজ্ঞাসা করি, “মা তোমার কি হয়েছে?”
সে “ তোমার বোন” বলে চিৎকার করে উঠে, আবার বলে “ তোমার বোন পাশের বাড়ীর ছেলের দ্বারা প্রেগনেন্ট হয়েছে”
এরপর আমি প্রতিবেশী ছেলেটির কাছে যায় এবং তাকে মারতে উদ্যত হৈ, হঠাৎ সে এমন একটি কথা বলে, যা আমার বুকে তীরের মত বিঁধে।
আপনারা কি ভাবতে পারেন, সে কি বলেছে?
সে একই কথা বলেছে, যা আমি কয়েক বছর আগে কলেজের সেই মেয়েটি যার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল, তার ভাই কে বলেছিলাম !
সে বলল, আমি জানিনা কার দ্বারা তোমার বোন গর্ভবতী হয়েছে, এটি তোমার বোন কেই জিজ্ঞাসা কর।
সেখানেই শেষ, এ ঘটনার পর আমি ভয়ংকর মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়।
সময় চলে যায়, আমি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই। বাগদান এবং আকদ এর পরে আমরা বিয়ের প্রস্তুতি নেই । বিয়ের দিন আমার জন্য আরো চমক অপেক্ষা করছিল । আমার স্ত্রী আমাকে জানায়, বিয়ের পূর্বে তার অন্য কারো সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল, সে আমাকে বলে, “ আমাকে আশ্রয় দাও, আল্লাহ তোমাকে বিচার দিবসে আশ্রয় দেবেন”।
আমি তখন বলে উঠি, আল্লাহ যথেষ্ট হয়েছে, আমি এর বেশী আর কোনো শাস্তি বইতে পারছিনা ।
আমি আমার গৌরব কে চাপা দিয়ে, আমার স্ত্রীকে গ্রহণ করি। তার সাথে অনেক বছর সংসার করি। আল্লাহ আমাদের চাঁদের মত সুন্দর ফুট ফুটে একটি কণ্যা সন্তান দিয়েছেন
সে যখন ৬ বছরে পদার্পন করল, সে বাহির থেকে দ্রুত দৌড়ে ভেতরে প্রবেশ করে !
আমার হৃদস্পন্দন দ্রুততর হয়, আমি জানতে চেষ্টা করি, আমার আদরের মেয়ের কি হয়েছে।
তখন সে আমাদের বলে, বাড়ির দারোয়ান তাকে ধর্ষন করেছে।
প্রিয় পাঠক, যে মেয়েটিকে ( কলেজ বান্ধবী) দিয়ে এ কাহিনী শুরু তার একটি ভাই ছিল, যে তারজন্য কেঁদেছে।
সে জন্য আল্লাহ আমার বোনকেও একই অবস্থায় নিপতিত করলেন, আর আমি তার জন্য কাঁদলাম।
একদিন ঐ মেয়েটি তার স্বামীকে নিয়ে জীবন শুরু করবেন, সে জন্য আল্লাহ আমাকে আমার স্ত্রী দিয়ে পরীক্ষা করলেন।
এবং তার একজন পিতা ছিল, যার হৃদয় তার জন্য ভেঙ্গে গিয়েছিল, সুতরাং আল্লাহ আমাকে আমার কণ্যা দিয়ে আমাকে শাস্তি দিলেন।
“ আমলের ধরনের উপরেই পুরস্কার নির্ভর করে”
আমার ঐ বান্ধবীর সাথে যে ব্যবহার আমি করেছিলাম তার জন্য আমি কখনো বাস্তবিক তওবা করিনি, সে কারনেই আল্লাহ আমার নিকটজন ও প্রিয়জন দিয়ে আমাকে পরীক্ষা করলেন এবং শাস্তি দিলেন
“ হে আমাদের রব আমাদের গোপন ও প্রকাশ্য সকল পাপ সমূহ মার্জনা করুন” আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১১৮১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন