বাংলাদেশে ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলে কি অমুলিমরা নির্যাতিত হবে?
লিখেছেন লিখেছেন জয় সত্যম ১৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০৮:৫১:৪৪ রাত
বাংলাদেশে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরাে এবং তাদের মিডিয়া অমুসলিমদের বহুদিন ধরে এটা বুঝাতে চেয়েছে এমনকি বুঝাতেও পেরেছে যে বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম হলে মুসলমানরা তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করবে অনেকেই এটা বিশ্বাসও করেছে। তবে অমুসলিমরা (হিন্দু, বৌদ্ধ, খিস্টান বা অন্যান্যরা) যেটা ভেবেছে তার উল্টো ফল তারা পাচ্ছে অনেকটা বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকটি বছর আমরা কি দেখছি-
১. আওয়ামী নেতার নেতৃত্বে রামু বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা:
কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদরে বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধবসতিতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি যেমন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মিছিল থেকে শুরু হয়েছিল, তেমনি উখিয়ার কোর্টবাজারেও সহিংসতার শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের মিছিল থেকেই।ওই মিছিলে নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী ও উখিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী
২. ফেনীতে তুলশী রাণী দাস নামে এক অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মেরে গর্ভের শিশু হত্যার ঘটনায় যুবলীগের আট কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
৩. অনেক জায়গায় মন্দিরে আগুন দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পরেছিল ছাত্রলীগ
৪.অভয়নগরে চাপাতলা মালোপাড়ায় অগ্নিসংযোগ যেখানে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য রণজিৎ রায় নিজে বলেছেন, এ হামলার জন্য তার প্রতিপক্ষ বর্তমান জাতীয় সংসদের হুইপ আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ শেখ আব্দুল ওহাবের প্ররোচনা ও তার কর্মী-সমর্থকদের দ্বারা এ হামলার ঘটনা ঘটেছে ।
৫.২১ নবেম্বর ২০১৩ কালের কন্ঠের রিপোর্ট, বরিশালে মন্দির ও বাড়িতে আগুন দেয় ছাত্রলীগকর্মীরা!
৬. ২৫ নবেম্বর, ২০১৩ কালের কন্ঠের আরেকটি রিপোর্টে বলা হয়, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বরিশালের পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা এ সময় ওই বাড়িতে মনসা মন্দিরের নির্মাণাধীন মনসা প্রতিমা ভাঙচুর ও ২ নারীকে আহত করে বাড়িতে তিনটি সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়।
৭ বরিশাল : বরিশালের উজিরপুর উপজেলার পূর্ব হারতা সার্বজনীন পূজা মন্দিরে হামলা চালিয়ে গণেশ, কার্তিক ও অশুরসহ চারটি প্রতিমা এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর
ছাত্রলীগ নেতা ইয়ার হোসেনসহ ৭ জনকে গণধোলাই
৮. গাজীপুর-ঢাকা সড়কের পাশে লক্ষীপুর একালায় শেখ রেহানার স্বামী ড. সাদিক সিদ্দিকী দ্বারা জোর পূর্বক হিন্দুদের ৪ বিঘা জমি দখল। (দৈনিক দিনকাল, ২৭.০৭.২০০০)
৯. নারকীয় ভাবে প্রকাশ্যে বিশ্বজিৎ খুন।
১০.ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা চাঁদা না পেয়ে পাবনায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা।
১১.২৫ নভেম্বর, ২০১৩ বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকায় রতন ভৌমিকের বাড়িতে এই হামলা চালিয়ে মনসা মন্দিরের নির্মাণাধীন মনসা প্রতিমা ভাঙচুর করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। (কালের কন্ঠ, ২৫.১১.২০১৩)
তাদের এমন কার্যকলাপ থেমে নেই। দেশের ভিবিন্ন স্থানে নিজেদের দলের গুন্ডা বাহিনী দ্বারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার আর ভয় দেখিয়ে উস্কে দিছে সাপ্রদায়িক দাঙ্গার দিকে। এসব কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লেও নিশ্চুপ মিডিয়া। আজ পর্যন্ত কোনো মিডিয়া অথবা অন্য কেউ দেখাতে পারেনি বিরোধী দলের কেউ অথবা জামায়াত-শিবির এমন কাজ করেছে।
এই হচ্ছে আওয়ামীদের ধর্ম নিরপেক্ষতা আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত
তারপরও বাংলাদেশের অমুসলিমরা মনে করে আওয়ামী লীগই ভালো। কারণ, তারা মনে করে ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামীরাই যা ভোগাচ্ছে, ধার্মিক ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় আসলে কি দাড়াবে । তাদের এ ধারণা কারণ ইসলামের সঠিক শিক্ষা ও ইসলামী শাসনের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে অজ্ঞতার ফসল। ইসলাম কি বলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে অমুসলিমদেরকে নির্যাতন করতে ? ইসলাম কি বলে তাদের ধর্মীয় কাজে বাধা দিতে ?
না ।
তাহলে কী বলে ইসলাম?
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "মনে রেখো যদি কোন মুসলমান কোন অমুসলিম নাগরিকের উপর নিপীড়ন চালায় ,তাদের অধিকার খর্ব করে ,তার কোনবস্তু জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়, তাহলে কেয়ামতের দিন আমি আল্লাহর আদালতে তার বিরূদ্ধে অমুসলিম নাগরিকদের পক্ষ অবলম্বন করব ।"
(আবু দাউদ)
২.দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর রাঃ-এর খেলাফতকালে যখন মিসরের শাসনকর্তা হিসেবে হজরত আমর ইবনুল আ’স রাঃ দায়িত্ব পালন করছিলেন, সে সময় একদিন আলেকজান্দ্রিয়ার খ্রিষ্টান পল্লীতে হইচই পড়ে গেল। কেউ একজন যিশু খ্রিষ্টের প্রস্তর নির্মিত মূর্তির নাক ভেঙে ফেলেছে। খ্রিষ্টানরা ধরে নিল যে এটা মুসলমানদের কাজ। তারা উত্তেজিত হয়ে উঠল। খ্রিষ্টান বিশপ অভিযোগ নিয়ে এলেন আমর ইবনুল আ’স-এর কাছে। আমর শুনে অত্যন্ত দুঃখিত হলেন। তিনি ক্ষতিপূরণস্বরূপ মূর্তিটি নতুনভাবে তৈরি করে দিতে চাইলেন। কিন্তু খ্রিষ্টান নেতাদের প্রতিশোধ স্পৃহা ছিল অন্যরকম। তারা চাইল মুহাম্মদ সাঃ-এর মূর্তি তৈরি করে অনুরূপভাবে নাক ভেঙে দিতে। হজরত আমর কিছুক্ষণ নীরব থেকে খ্রিষ্টান বিশপকে বললেন, ‘আমার অনুরোধ, এ প্রস্তাব ছাড়া অন্য যেকোনো প্রস্তাব করুন আমি রাজি আছি। আমাদের যেকোনো একজনের নাক কেটে আমি আপনাদের দিতে প্রস্তুত, যার নাক আপনারা চান।’ খ্রিষ্টান নেতারা সবাই এ প্রস্তাবে সম্মত হলো। পরদিন খ্রিষ্টান ও মুসলমান বিরাট এক ময়দানে জমায়েত হলো। মিসরের শাসক সেনাপতি আমর রাঃ সবার সামনে হাজির হয়ে বিশপকে বললেন, ‘এ দেশ শাসনের দায়িত্ব আমার। যে অপমান আজ আপনাদের, তাতে আমার শাসনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। তাই তরবারি গ্রহণ করুন এবং আপনিই আমার নাসিকা ছেদন করুন।’ এ কথা বলেই বিশপকে একখানি তীক্ষ্ন ধারালো তরবারি হাতে দিলেন, জনতা স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, খ্রিষ্টানরা স্তম্ভিত। চারদিকে থমথমে ভাব। সে নীরবতায় নিঃশ্বাসের শব্দ করতেও যেন ভয় হয়। সহসা সেই নীরবতা ভঙ্গ করে একজন মুসলিম সৈন্য এগিয়ে এলো। চিৎকার করে বলল, ‘আমিই দোষী, সিপাহসালার কোনো অপরাধ নেই। আমিই মূর্তির নাক ভেঙেছি। এইত আমার হাতেই আছে। তবে মূর্তি ভাঙার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। মূর্তির মাথায় বসা একটি পাখির দিকে তীর নিক্ষেপ করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’ সৈন্যটি এগিয়ে এসে বিশপের তরবারির নিচে নাসিকা পেতে দিল। স্তম্ভিত বিশপ! নির্বাক সবাই। বিশপের অন্তরাত্মা রোমাঞ্চিত হয়ে উঠল। তরবারি ছুড়ে বিশপ বললেন, ‘ধন্য সেনাপতি, ধন্য হে বীর সৈনিক, আর ধন্য আপনাদের মুহাম্মদ সাঃ, যার মহান আদর্শে আপনাদের মতো মহৎ উদার নির্ভিক ও শক্তিমান ব্যক্তি গড়ে উঠেছে। যিশু খ্রিষ্টের প্রতিমূর্তিই অসম্মান করা হয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু তার চেয়েও অন্যায় হবে যদি অঙ্গহানি করি। সেই মহান ও আদর্শ নবীকেও আমার সালাম জানাই।’ পরধর্ম সহিষ্ণুতার এ জ্বলন্ত উদাহরণ আজো বিশ্ববাসীকে হতবাক করে। বাংলাদেশে ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলে কি অমুলিমরা নির্যাতিত হবে?
বাংলাদেশে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরাে এবং তাদের মিডিয়া অমুসলিমদের বহুদিন ধরে এটা বুঝাতে চেয়েছে এমনকি বুঝাতেও পেরেছে যে বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম হলে মুসলমানরা তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করবে অনেকেই এটা বিশ্বাসও করেছে। তবে অমুসলিমরা (হিন্দু, বৌদ্ধ, খিস্টান বা অন্যান্যরা) যেটা ভেবেছে তার উল্টো ফল তারা পাচ্ছে অনেকটা বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকটি বছর আমরা কি দেখছি-
১. আওয়ামী নেতার নেতৃত্বে রামু বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা:
কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদরে বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধবসতিতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি যেমন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মিছিল থেকে শুরু হয়েছিল, তেমনি উখিয়ার কোর্টবাজারেও সহিংসতার শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের মিছিল থেকেই।ওই মিছিলে নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী ও উখিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী
২. ফেনীতে তুলশী রাণী দাস নামে এক অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মেরে গর্ভের শিশু হত্যার ঘটনায় যুবলীগের আট কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
৩. অনেক জায়গায় মন্দিরে আগুন দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পরেছিল ছাত্রলীগ
৪.অভয়নগরে চাপাতলা মালোপাড়ায় অগ্নিসংযোগ যেখানে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য রণজিৎ রায় নিজে বলেছেন, এ হামলার জন্য তার প্রতিপক্ষ বর্তমান জাতীয় সংসদের হুইপ আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ শেখ আব্দুল ওহাবের প্ররোচনা ও তার কর্মী-সমর্থকদের দ্বারা এ হামলার ঘটনা ঘটেছে ।
৫.২১ নবেম্বর ২০১৩ কালের কন্ঠের রিপোর্ট, বরিশালে মন্দির ও বাড়িতে আগুন দেয় ছাত্রলীগকর্মীরা!
৬. ২৫ নবেম্বর, ২০১৩ কালের কন্ঠের আরেকটি রিপোর্টে বলা হয়, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বরিশালের পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা এ সময় ওই বাড়িতে মনসা মন্দিরের নির্মাণাধীন মনসা প্রতিমা ভাঙচুর ও ২ নারীকে আহত করে বাড়িতে তিনটি সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়।
৭ বরিশাল : বরিশালের উজিরপুর উপজেলার পূর্ব হারতা সার্বজনীন পূজা মন্দিরে হামলা চালিয়ে গণেশ, কার্তিক ও অশুরসহ চারটি প্রতিমা এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর
ছাত্রলীগ নেতা ইয়ার হোসেনসহ ৭ জনকে গণধোলাই
৮. গাজীপুর-ঢাকা সড়কের পাশে লক্ষীপুর একালায় শেখ রেহানার স্বামী ড. সাদিক সিদ্দিকী দ্বারা জোর পূর্বক হিন্দুদের ৪ বিঘা জমি দখল। (দৈনিক দিনকাল, ২৭.০৭.২০০০)
৯. নারকীয় ভাবে প্রকাশ্যে বিশ্বজিৎ খুন।
১০.ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা চাঁদা না পেয়ে পাবনায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা।
১১.২৫ নভেম্বর, ২০১৩ বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকায় রতন ভৌমিকের বাড়িতে এই হামলা চালিয়ে মনসা মন্দিরের নির্মাণাধীন মনসা প্রতিমা ভাঙচুর করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। (কালের কন্ঠ, ২৫.১১.২০১৩)
তাদের এমন কার্যকলাপ থেমে নেই। দেশের ভিবিন্ন স্থানে নিজেদের দলের গুন্ডা বাহিনী দ্বারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার আর ভয় দেখিয়ে উস্কে দিছে সাপ্রদায়িক দাঙ্গার দিকে। এসব কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লেও নিশ্চুপ মিডিয়া। আজ পর্যন্ত কোনো মিডিয়া অথবা অন্য কেউ দেখাতে পারেনি বিরোধী দলের কেউ অথবা জামায়াত-শিবির এমন কাজ করেছে।
এই হচ্ছে আওয়ামীদের ধর্ম নিরপেক্ষতা আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত
তারপরও বাংলাদেশের অমুসলিমরা মনে করে আওয়ামী লীগই ভালো। কারণ, তারা মনে করে ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামীরাই যা ভোগাচ্ছে, ধার্মিক ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় আসলে কি দাড়াবে । তাদের এ ধারণা কারণ ইসলামের সঠিক শিক্ষা ও ইসলামী শাসনের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে অজ্ঞতার ফসল। ইসলাম কি বলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে অমুসলিমদেরকে নির্যাতন করতে ? ইসলাম কি বলে তাদের ধর্মীয় কাজে বাধা দিতে ?
না ।
তাহলে কী বলে ইসলাম?
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "মনে রেখো যদি কোন মুসলমান কোন অমুসলিম নাগরিকের উপর নিপীড়ন চালায় ,তাদের অধিকার খর্ব করে ,তার কোনবস্তু জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়, তাহলে কেয়ামতের দিন আমি আল্লাহর আদালতে তার বিরূদ্ধে অমুসলিম নাগরিকদের পক্ষ অবলম্বন করব ।"
(আবু দাউদ)
২.দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর রাঃ-এর খেলাফতকালে যখন মিসরের শাসনকর্তা হিসেবে হজরত আমর ইবনুল আ’স রাঃ দায়িত্ব পালন করছিলেন, সে সময় একদিন আলেকজান্দ্রিয়ার খ্রিষ্টান পল্লীতে হইচই পড়ে গেল। কেউ একজন যিশু খ্রিষ্টের প্রস্তর নির্মিত মূর্তির নাক ভেঙে ফেলেছে। খ্রিষ্টানরা ধরে নিল যে এটা মুসলমানদের কাজ। তারা উত্তেজিত হয়ে উঠল। খ্রিষ্টান বিশপ অভিযোগ নিয়ে এলেন আমর ইবনুল আ’স-এর কাছে। আমর শুনে অত্যন্ত দুঃখিত হলেন। তিনি ক্ষতিপূরণস্বরূপ মূর্তিটি নতুনভাবে তৈরি করে দিতে চাইলেন। কিন্তু খ্রিষ্টান নেতাদের প্রতিশোধ স্পৃহা ছিল অন্যরকম। তারা চাইল মুহাম্মদ সাঃ-এর মূর্তি তৈরি করে অনুরূপভাবে নাক ভেঙে দিতে। হজরত আমর কিছুক্ষণ নীরব থেকে খ্রিষ্টান বিশপকে বললেন, ‘আমার অনুরোধ, এ প্রস্তাব ছাড়া অন্য যেকোনো প্রস্তাব করুন আমি রাজি আছি। আমাদের যেকোনো একজনের নাক কেটে আমি আপনাদের দিতে প্রস্তুত, যার নাক আপনারা চান।’ খ্রিষ্টান নেতারা সবাই এ প্রস্তাবে সম্মত হলো। পরদিন খ্রিষ্টান ও মুসলমান বিরাট এক ময়দানে জমায়েত হলো। মিসরের শাসক সেনাপতি আমর রাঃ সবার সামনে হাজির হয়ে বিশপকে বললেন, ‘এ দেশ শাসনের দায়িত্ব আমার। যে অপমান আজ আপনাদের, তাতে আমার শাসনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। তাই তরবারি গ্রহণ করুন এবং আপনিই আমার নাসিকা ছেদন করুন।’ এ কথা বলেই বিশপকে একখানি তীক্ষ্ন ধারালো তরবারি হাতে দিলেন, জনতা স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, খ্রিষ্টানরা স্তম্ভিত। চারদিকে থমথমে ভাব। সে নীরবতায় নিঃশ্বাসের শব্দ করতেও যেন ভয় হয়। সহসা সেই নীরবতা ভঙ্গ করে একজন মুসলিম সৈন্য এগিয়ে এলো। চিৎকার করে বলল, ‘আমিই দোষী, সিপাহসালার কোনো অপরাধ নেই। আমিই মূর্তির নাক ভেঙেছি। এইত আমার হাতেই আছে। তবে মূর্তি ভাঙার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। মূর্তির মাথায় বসা একটি পাখির দিকে তীর নিক্ষেপ করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’ সৈন্যটি এগিয়ে এসে বিশপের তরবারির নিচে নাসিকা পেতে দিল। স্তম্ভিত বিশপ! নির্বাক সবাই। বিশপের অন্তরাত্মা রোমাঞ্চিত হয়ে উঠল। তরবারি ছুড়ে বিশপ বললেন, ‘ধন্য সেনাপতি, ধন্য হে বীর সৈনিক, আর ধন্য আপনাদের মুহাম্মদ সাঃ, যার মহান আদর্শে আপনাদের মতো মহৎ উদার নির্ভিক ও শক্তিমান ব্যক্তি গড়ে উঠেছে। যিশু খ্রিষ্টের প্রতিমূর্তিই অসম্মান করা হয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু তার চেয়েও অন্যায় হবে যদি অঙ্গহানি করি। সেই মহান ও আদর্শ নবীকেও আমার সালাম জানাই।’ পরধর্ম সহিষ্ণুতার এ জ্বলন্ত উদাহরণ আজো বিশ্ববাসীকে হতবাক করে।
বিষয়: রাজনীতি
১১৫১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লেখাটা দুবার হয়ে গেছে৷ধন্যবাদ৷
মন্তব্য করতে লগইন করুন