তাই স্বপ্ন দেখবো বলে আমি দু'চোখ পেতেছি
লিখেছেন লিখেছেন ভাঙা মিনার ২২ অক্টোবর, ২০১৫, ০১:০৩:২৩ রাত
আমরা একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের একটা সময় অতিক্রম করছি এখন। সময়টা কঠিন যাচ্ছে। এমন কঠিন সময় হয়ত যুগে যুগেই নির্দিষ্ট বিরতি পর পর আসে। যুগের বিচার করলে আমাদের চলে না। আজ থেকে মাত্র ১০০ বছর আগে এই পৃথিবীতেই ঘটে গিয়েছিলো নারকীয় বিশ্বযুদ্ধ। হানাহানি-খাদ্যমন্দা-ক্ষমতা দখলের লড়াইতে ডুবে ছিলো সমগ্র বিশ্ব। অনেকেই অনেক অর্জন করেছে, তারপর বছর বিশ যেতে না যেতেই আবার আরো বড় ভয়ংকর সময় -- সেই ক্ষমতা খাটানোর যুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা নাগাসাকিকে বিষাক্ত করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ প্রাণনাশ করে দিয়ে আমেরিকান জাতিগোষ্ঠী বিশ্বকে কব্জা করেছে আপন কৌশলে। অথচ তার দুইশ বছর আগেও ব্রিটিশ সূর্য ডুবতো না কোথাও। এমন আরো অজস্র চোখ দিয়ে দেখা যাবে "সময়"গুলো। আরেকটু উপরে উঠি? যখন সভ্যতাগুলো হারিয়ে গেলো। ফারাওদের মিশর, মেগাস্থিনিস, ব্যাবিলন, ইনকা, মায়া, পাল সাম্রাজ্য, সেনদের রাজত্ব, অটোমান এম্পায়ার -অমন শত শত সভ্যতা পাওয়া যাবে হয়ত যদি হিসেব করি এই সৃষ্টির শুরু থেকে। কিন্তু তাদের অমন হিসেব করে আমাদের লাভ নেই। সভ্যতা টেকে কয়েকশত বছর। আমরা বাঁচি খুব বেশি হলে অর্ধশত বছর।
আমরা বাস করছি বিদ্যুত সভ্যতায়। মাত্র দু'তিনশ বছর আগে উদ্ভাবিত বিদ্যুত দিয়ে গত পঞ্চাশ বছরে প্রযুক্তিতে উন্নত হয়েই মাটিতে আমাদের আর পা পড়েনা। আমরা বুর্জ আল আরব বানাই, আমরা বানাই পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, মনোহারি সিয়ার্স টাওয়ার, স্ট্যাচু অব লিবার্টি, আইফেল টাওয়ার। আমরা দম্ভে আর বড়ত্বে গলা ফুলিয়ে দিই। অথচ প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা ট্রেঞ্চে যখন কয়েকটা হিমালয় ডুবে যাবে শুনি -- মনে হয়না ওই উঁচু হিমালয়, আর অমন গভীর খানা-খন্দটা কে তৈরি করলো! প্রকৃতি নামের শব্দটা দিয়ে লেখকমহল চালিয়ে দেন অগভীর চিন্তার পাঠকদের মনকে বাঁকিয়ে দেবার জন্য -- আমরাও সন্তুষ্ট হই। কিন্তু অমন পিরামিড বানালেন যারা, আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর বা পিসার হেলানো মিনার যারা বানালেন -- তারা কোথায় চলে গেলেন? মরে গেলেন তো কেন আর কোন চিহ্নই রইলো না তাদের? কত বেশি দুর্বল সেই সভ্যতার এই ধারক ও বাহকদল -- কতনা ক্ষণস্থায়ী এই বিপুল দম্ভযজ্ঞ, সৃষ্টিযজ্ঞ আর ক্ষমতাযজ্ঞ!
বিষয়: বিবিধ
৯৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন