রিমান্ড এখন বিরোধী মত নির্মুলে সরকারের হাতিয়ার
লিখেছেন লিখেছেন আবুমুনিবা ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:০৫:০৭ রাত
ছোট্র বেলার আমার একটি উক্তি দিয়ে আজকের লেখা শুরু করলাম। ছোট্র বেলায় কারো সাথে ঝগড়া লেগে যখন না পারতাম তখন বলতাম “আগামীকাল আমার বাড়ির পাশ দিয়ে যাইস তাহলে তোকে মজা দেখাব।”
বর্তমানে সরকার যেভাবে বিচার বিভাগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে তাতে বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থার প্রতি গণমানুষের আস্থা একেবারে শুন্যের কোঠায় বলাই চলে। বর্ষাকালে পানি যেভাবে সহজলভ্য হয় এবং তা মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। ঠিক তেমন বাংলাদেশে এখন সবচাইতে সহজলভ্য হচ্ছে রিমান্ড নামক বিরোধী মত নিধনের প্রধান হাতিয়ার।
একটি গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের কাজের আলোচনা-সমালোচনা হতেই পারে। আর সরকারের উচিত সে সব সমালোচনাগুলোকে পর্যবেক্ষনে রেখে সামনে চলার পরিকল্পনা। এমনকি তা সরকারের ভবিষ্যত পথচলায় গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখতে পারে।
কিন্তু এখন হয়েছে তার উল্টো। যে কোন ব্যক্তি বা যে কোন মিডিয়া সরকারের কাজের সমালোচনা করলেই সেই ব্যক্তি অথবা সেই প্রতিষ্ঠানের আর রক্ষা নেই। তার বিরুদ্ধে পুর্বে কোন থানাতে একটি জিডি পর্যন্ত না থাকলেও তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে কোর্টে নিয়ে ১০-২০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। আর বিচারকগনও তাদের বিবেক শক্তিকে কাজে না লাগিয়ে একতরফা রিমান্ড মন্জুর করেন। পুলিশ ১০ দিনের আবেদন করলে কম করে হলেও ৩দিন মিলবেই আর কখনো তা ৮-১০ পর্যন্ত গড়ায়। এভাবে পর্যায়ক্রমে ১০-১৫ বার পর্যন্ত রিমান্ডে নিয়ে সেই ব্যক্তির জীবনকে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়া হয়। এভাবে বহু নিরপরাধ লোক জালিম শাসকের রোষানলে পড়ে তাদের মুল্যবান জীবনকে হারিয়ে ফেলে।
অর্থ্যাৎ রিমান্ডটা এখন এমন সহজলভ্য পণ্যে পরিণত হয়েছে যে চাইলেই পাওয়া যায়। এ ভাবে বিচারের পূর্বেই অথবা সেই ব্যক্তি দোষী বা নির্দোষ প্রমানের পূর্বেই তার জীবনকে নিঃশেষ করে দেওয়া হয়। এটা এখন বিরোধী মত দমনে জালিম শাসকের মূল অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে জনমতের ভিত্তিতে বিরোধীদের সাথে কুলিয়ে উঠতে না পারলেও প্রশাসন ও বিচার বিভাগ আছেনা তার মাধ্যমেই তোদেরকে শায়েস্তা করব।
বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের এ ধরনের স্বেচ্চাচারিতা কবে নাগাদ দুর হবে তা বলা দুরুহ। আমরা আশা করব বিচারগণ তাদের রিমান্ডের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পূর্বে তাদের বিবেককে আরও বেশী ণ্যায়ের ভিত্তিতে জাগরিত করবেন।
বিষয়: বিবিধ
৮৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন