যাকাত ঃ করুনার দান নয়, গরীবের হক আদায়।

লিখেছেন লিখেছেন অদৃশ্য কলম ০৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:৫৬:১৯ রাত

জাকাত ঃ করুনার দান নয়, গরীবের হক আদায়।

"জাকাত "

ইসলাম মানুষকে দুনিয়ায় শান্তি ও পরকালে মুক্তির

নির্দেশনা দিয়েছে। মানব জীবনের অন্যতম

প্রধান বিষয় হলো অর্থনীতি, ইসলাম এক্ষেত্রে

ও সর্বোত্তম ব্যবস্থা দিয়েছে। সেই ব্যবস্থার

নাম হলো জাকাত। জাকাত ইসলামী অর্থনীতির প্রাণ,

ইসলামী সমাজব্যবস্থা ও সুষ্ঠু অর্থনীতির

জীবনীশক্তি। পবিত্র কোরআনের শুরুতেই

হেদায়েতপ্রাপ্ত সফল মুত্তাকী গণের

পঞ্চস্ততির দ্বিতীয়টিই উল্লেখ করা হয়েছে

জাকাত। হাদিস শরীফে ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের

৩য় টি বলা হয়েছে জাকাত।

জাকাত অর্থ পবিত্রতা ও প্রবৃদ্ধি। যেহেতু জাকাত

প্রদানে সম্পদ পবিত্র হয় এবং বরকত হঢ তাই এর নাম

জাকাত। পরিভাষায় জাকাত হলো "নির্দিষ্ট পরিমান

সম্পদের মালিক হলে বিশেষ শর্তে নির্ধারিত খাতে

নির্ধারিত সম্পদ ব্যয় করা।"

জাকাত করুনার দান নয়, জাকাত হলো গরীবের পাওনা;

যা আল্লাহ ধনীর সম্পদের মধ্যে রেখেছেন।

যেহেতু পাওনাদারকে তার সম্পদ বুঝিয়ে দেওয়া,

সুতরাং তা সসম্মানে দেওয়াই বাঞ্চনীয়।

★★ ইসলামের বিধান অনুযায়ী সাড়ে সাত তুলা সোনা

বা সাড়ে বায়ান্ন তুলা রোপা অথবা এর সমপরিমাণ অর্থ

সম্পদের মালিক হলে এর চল্লিশ ভাগের এক ভাগ

অর্থাৎ শতকরা ২.৫% হরে জাকাত প্রদান করা ফরজ।

★★ জাকাত প্রদানের খাতঃ-

পবিত্র কোরআনের ঘোষনা অনুযায়ী মুলত ফকির,

মিসকিন, জাকাত সংগ্রহকারী কর্মী, অনুরক্ত ব্যক্তি,

কৃতদাস, ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদরত

মুজাহিদ ও বিপদগ্রস্থ মুসাফির। এ খাতগুলোর মধ্যে

যুগচাহিদা ও গুণাগুণ বিবেচনায় রেখে নিকটাত্মীয় ও

প্রতিবেশীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

★★ জাকাত প্রদানের উপকারিতাঃ-

পবিত্র কোরআনুল কারীমে ঘোষনা হয়েছে

"আল্লাহ সুদকে নিঃশেষ করে দেন, সাদাকাতকে

প্রবৃদ্ধি ঘটান ; আর আল্লাহ অপরাধী কাফেরদের

পছন্দ করেন না।"

হাদিস শরীফে এসেছে, ' দাতা আল্লাহর কাছে,

মানুষের কাছে, জান্নাতের কাছে; জাহান্নাম থেকে

অনেক দূরে। সাধারন দাতা কৃপণ আবেদ অপেক্ষা

আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়।

এছাড়া জাকাতের সামাজিক অনেক সুফল রয়েছে।

যেমনঃ-

★ জাকাত প্রদানে নগদ অর্থ হাত বদল হয়। এতে

সম্পদে গতিশীলতা আসে। যাতে প্রচুর লোক

ক্রয় ক্ষমতা অর্জন করে। নতুন চাহিদা বা ভোক্তা

সৃষ্টি হয়। ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, শিল্প-কারখানা

প্রতিষ্ঠা হয়, কর্মসংস্থান হয়। জনগনের

জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়।

★ সঠিক ভাবে জাকাত আদায় করলে সমাজে দারিদ্র্য

দূরীভূত হবে, অপরাধ প্রবনতা কমবে এবং আর্থ-

সামাজিক বিপর্যয় থেকে জাতি রক্ষা পাবে।

সর্বোপরি সুদের নাগপাশ থেকে মুসলমানরা রক্ষা

পাবে।

★ জাকাত আদায়ের মাধ্যমে খাই খাই মানসিকতার অবসান

হয়, দাতার তালিকায় নাম উঠে ও আত্মসম্মান সৃষ্টি হয়।

ধনী- গরীবের বিবেদ দূর হয়ে শ্রদ্ধাবোধ,

ভালবাসা- সম্পৃতি তৈরি হয়, সহমর্মিতা ও সামাজিক নিরাপত্তা

বলয় গঠিত হয়; এতে দাতা-গ্রহীতা উভয়ের আর্থ-

সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার হয়। সমাজ থেকে

কার্পণ্য, লোভ-মোহ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতাসহ

নানাবিধ দুষ্ট উপসর্গ দূরীভূত হয়।।

জাকাতের উদ্দেশ্য হলো দারিদ্র্য বিমোচন, তাই

এমনভাবে জাকাত দেওয়া উচিৎ, যাতে জাকাত গ্রহীতা

স্বাবলম্বী হতে পারে।।

বিষয়: বিবিধ

১৪৭৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

373971
০৫ জুলাই ২০১৬ রাত ০৩:৩৯
কুয়েত থেকে লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো
373977
০৫ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৫:০৩
শেখের পোলা লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাল লাগল। পবিত্র কোরআনের শুরুতে পঞ্চস্তুতির তৃতীয়টিতে জাকাতের নয় বরং আল্লাহ যাকে যা দিয়েছেন(নেসাব তখনও আসেনি) তা থেকে অভাবীদের জন্য খরচ করতে বলা হয়েছে। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File