যে কারণে ধর্মনিরপেক্ষ, বামপন্থি সবাই জামায়াতে ইসলামিকে তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি বিপদজনক মনে করে
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ আনোয়ার হুসাইন ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৮:৪১:০১ রাত
বাংলাদেশ অঞ্চলে
জামায়াতে ইসলামী ১৯৫০ সাল
থেকে সাংগঠনিকভাবে কাজের
সূচনা করে এবং ১৯৫৬ সালে
মাওলানা মওদুদীর প্রথম সফরের পর
এখানে জামায়াতের সাংগঠনিক
কাঠামো গড়ে ওঠে। ১৯৫৩ সালে
নেজামে ইসলাম পার্টি গঠিত হয়।
জামায়াতে ইসলামী ও নেজামে
ইসলাম পার্টিই এদেশের সবচেয়ে
পুরনো ইসলামী দল। আশির দশক
থেকে আরও কতক ইসলামী দল
ময়দানে সক্রিয় রয়েছে।
দেশের ইসলামবিরোধী শক্তি,
ধর্মনিরপেক্ষ, বামপন্থি সবাই
জামায়াতে ইসলামিকে তাদের
জন্য সবচেয়ে বেশি বিপদজনক মনে
করে। জামায়াতের অগ্রগতি
ঠেকানোর উদ্দেশ্যে তারা
পরিকল্পিতভাবে বিদেশে এর
বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামি
চারদলীয়জোট সরকারে শরীক
থাকায় তারা দেশে ও বিদেশে
মৌলবাদী, জঙ্গীবাদী, ও
তালেবানী সরকার বলে এ
সরকারকে উৎখাতের জন্য সর্বাত্মক
প্রচেষ্টা চালায়।
:
প্রধানমন্ত্রীর ওপর এই বলে চাপ
সৃষ্টি করা হচ্ছিল যে, মৌলবাদী ও
তালেবানী সরকারের দুর্নাম
থেকে বাঁচতে হলে মন্ত্রীসভা
থেকে জামায়াতকে বের করে
দিতে হবে। জামায়াতের কারণে
চারদলীয়জোট সরকার দুনিয়ায়
নিন্দিত হচ্ছে বলে বিএনপিকে
প্রভাবিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত
রয়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন
থাকাকালে আমেরিকার
প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ঢাকা
এসেছিলেন। তখন তথ্য মন্ত্রণালয়
থেকে ইংরেজি ভাষায় রচিত
একটি পুস্তিকায় বলা হয়,
বাংলাদেশে মৌলবাদী
সন্ত্রাসী শক্তি এতটা আতঙ্কের
সৃষ্টি করে যে, সে কারণে
প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন সাভার
স্মৃতিসৌধে যাওয়ার কর্মসূচী
পর্যন্ত বাতিল করে দেন।
:
ধর্মনিরপেক্ষ, ভারতপন্থি ও
ইসলবিরোধি সকল পত্রিকা একমাত্র
জামায়াতে ইসলামিকেই সকল
জঙ্গীবাদী শক্তির পৃষ্ঠপোষক বলে
জোর প্রচারণা চালাচ্ছে।
কাদিয়ানীদের আস্তানায় যত
হামলা হয়েছে সেগুলোর জন্য
জামায়াতকে দায়ী করা হয়।
তারা জামায়াতের উপর এত
ক্ষ্যাপা কেন? আর অন্য কোনো
ইসলামি দলের বিরুদ্ধে তারা এমন
খরগহস্ত নয় কেন?
:
জামায়াতকে নিয়ে তাদের এত
মাথাব্যথার কারণ কী?
বাংলাদেশ জামায়াতে
ইসলামির অবস্থান সম্পর্কে তো
তারা সম্যক অবহিত। তারা
দেখতেই পাচ্ছে যে-
১। বাংলাদেশ জামায়াতের
গণভিত্তি আছে।
২। নির্বাচনে এককভাবে
প্রতিদ্বন্দিতা করেও ১৯৯১ সালে
এ দলটি ১৮টি আসনে বিজয় লাভ
করেছিল।
৩। সারা দেশে উপজেলা ও
ইউনিয়ন পর্যায়েও জামায়াতের
সংগঠন সম্প্রসারিত।
৪। ইসলামি রাষ্ট্র পরিচালনার
উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামি
ক্যাডারভিত্তিক লোক তৈরি
করায় সর্বস্তরেই মযবুত সংগঠন
রয়েছে।
৫। আধুনিক শিক্ষিত মহলে ইসলামকে
নিছক একটি ধর্ম মনে করা হতো। গত
৫০ বছরে জামায়াতে ইসলামির
প্রচেষ্টায় ইসলাম যে একটি
পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান (Complete code
of life) এ ধারণা ক্রমেই প্রসার লাভ
করছে।
৬। জামায়াতের প্রচেষ্টায় ইসলাম
সম্পর্কে আধুনিক শিক্ষিতদের
উপযোগী আকর্ষণীয় ও যুক্তিপূর্ণ
বিশাল সাহিত্যভান্ডার সৃষ্টি
হয়েছে; যার ফলে রাজনৈতিক,
অর্থনৈতিক, দিকসহ ইসলাম সম্পর্কে
সুস্পষ্ট জ্ঞান লাভ করা মারুষের
পক্ষে সহজসাধ্য হয়েছে।
৭। মাওলানা মওদুদীর রচিত
কুরআনের তাফসীর 'তাফহীমুল কুরআন'
শিক্ষিত মহলে বিরাট প্রভাব
বিস্তার করে চলেছে।
৮। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষকদের মাঝেও ইসলাম সম্পর্কে
সঠিক ধারণা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৯। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ও
অন্যান্য পেশার লোকেরা তাদের
পেশাগত সংগঠনের মাধ্যমে
ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার
উদ্দেশ্যে নিজেদের মন-মগজ-
চরিত্রকে গড়ে তোলার প্রেরণা
পাচ্ছে।
১০। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের
বিরাট সংখ্যক ছাত্র
নিজেদেরকে ইসলামি জ্ঞান ও
চরিত্রে সমৃদ্ধ করেছে। ধর্মনিরপেক্ষ
ও সন্ত্রাসী ছাত্রসংগঠনগুলোর
হাতে এদের শতাধিক নেতা-কর্মী
নিহত হওয়া সত্ত্বেও তারা
ময়দানে টিকে আছে। নতুন
প্রজন্মের আধুনিক শিক্ষিতদেরকে
এত বিরাট সংখ্যায় ইসলামি
সমাজব্যবস্থা কায়েমের উদ্দেশ্যে
জান কুরবান করার জন্য প্রস্তুত হতে
দেখে ইসলামের দুশমনদের মাথা
ঠিক থাকার কথা নয়।
:
ইসলামি শক্তির এ উত্থানে
ইসলামবিরোধীদের আতঙ্কিত
হওয়াই স্বাভাবিক। জামায়াতে
ইসলামি ও ইসলামি ছাত্রশিবির
ছাড়া অন্য কোন ইসলামি
সংগঠনের বিরুদ্ধে তাদেরকে
সামান্যতম সক্রিয় হতেও দেখা
যায় না। যদি তারা আর কোন
ইসলামি সংগঠনের মধ্য ঐ জাতীয়
আতঙ্কের সম্ভাবনা দেখতে পায়
তাহলে অবশ্যই সেগুলোর বিরুদ্ধেও
তেমনি সক্রিয় হয়ে উঠবে। এর
দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ইসলামের
দুশমনরা বাংলাদেশে ইসলামি
শক্তি হিসেবে জামায়াতে
ইসলামিকেই তাদের জন্য হুমকির
কারণ মনে করে।
বিষয়: বিবিধ
১২৬৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জামায়াত যদি ৭১ এ তাদের অবস্থানের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতো তাহলে কি খুব ক্ষতি হয়ে যেত তাদের জন্য ?
এতে জামায়াতীদের লাভ হত এবং বাটে পড়ে যেত আওয়ামী লীগ ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন