বাংলাদেশে চাকরীর অভাব !!! আমাদের মেধা দিয়েই উন্নতির শেখরে বিশ্বের বড় বড় দেশ !!!

লিখেছেন লিখেছেন সিয়াম রিজভী ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:৫৪:৩৩ রাত

আপনার যখন পড়াশুনা প্রায় শেষের দিকে যেতে থাকবে তখন আপনি অবশ্যই চাইবেন ভাল একটা চাকরী পেতে।শুধু আপনি বললে ভুল হবে,আপনারা বা আমরা সবাই চাইব যাতে আমাদের একটা ভাল চাকরী এবং ভাল ক্যারিয়ার হয়।

.

আমাদের দেশে ভাল অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।যেখানে চাকরীর বেতন আমাদের সবার ডিমান্ড অনুযায়ী বেশি হয়।তাই সবারই নির্দিস্ট একটা লক্ষ থাকে সেইসব প্রতিষ্ঠানে জয়েন করা।কিন্তু সবার ক্ষেত্রে সেটা সম্ভবপর হয়ে উঠে না।

.

.

একটা ছোট্ট জিনিস বলি। ধরুন আপনি ভাল একটা ব্যাংকে চাকরী নিতে চান।সেখানে চাকরীর জন্য এপ্লাই করেছেন প্রায় ১০০০ জনেরও বেশি মানুষ।সেখান থেকে মাত্র ৩০ জনকে চাকরী দেয়া হবে তাদের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে।ধরুন,৩০ না ৫০ জনই নেয়া হবে।বাকি রইলো ৯৫০ জন।ইন্টারভিউয়ের সময় বা লিখিত পরিক্ষার মাধ্যমে বাচাই করে ৩০ জন সেরা মানুষকে কাজের জন্য নেয়া হবে।আপনি সেই ১০০০ জনের মধ্যে একজন ভাগ্যবান।কিন্তু ইন্টারভিউয়ের পরে বা পরীক্ষার পরে দেখা গেল উচ্চভাগ্যবান বা সেই ৫০ জনের মধ্যে আপনার নাম আসল না।আপনি তখন ধরেই নিলেন যে আপনার মেধা নেই বা আপনি তাদের থেকে খারাপ করেছেন।শুধু আপনি না আপনিসহ বাকি ৯৫০ জনেরও একই ধারনা হতে থাকবে।কিন্তু বাস্তবে তা নয়।হতে পারে পরীক্ষা বা ইন্টারভিউয়ের সময় আপনি হতাশ ছিলেন বা চিন্তিত ছিলেন যে কারনে সব কিছু জানার স্বত্তেও এলোমেলো হয়ে গেল।তার মানে এটা দাঁড়ায় না যে আপনি মেধাবী নন।অবশ্যই আপনি মেধাবী ছিলেন।মেধাবী না থাকলে সেই ১০০০ জনের মধ্যে আপনার প্লেস তৈরী হতো না।এক্ষেত্রে অনেকটাই আপনার ভাগ্যের উপরে নির্ভর করে।নিজেকে দোষারূপ করেও কোন লাভ নেই।যা হবার তা হয়ে গেছে।এবারে সেটাকে ভুলে যান।

.

.

.

প্রথমবারে বললাম চাকরী পাননি বা সেই ৫০ জনের মধ্যে আপনি নেই।এবারে ধরুন সেই পরীক্ষায় আপনি পাশ করেছেন। অর্থাৎ ভাল একটা ব্যাংকে আপনি চাকরী পেয়ে গেছেন।কত ভাগ্যবান আপনি!!! কিন্তু আপনি চাকরী পেলেও আপনার খুবই কাছের একটা বন্ধু চাকরীটা পায়নি।সে অনেক হতাশ হয়ে বসে রয়েছে।আপনি হয়ত তখন গর্ব বোধ করবেন।করারই কথা।কেননা,১০০০ জনের মধ্য থেকে ৩০ জন চাকরী পেয়েছে তার মধ্যে আপনি একজন।

.

.

অনেকদিন হলো আপনার সেই বন্ধুটির সাথে যোগাযোগ নেই।হঠাৎ ৩ বছর পরে আপনি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।তখন দেখছেন আপনার সেই অভাগা বন্ধুটি নিজের দামী গাড়ি হাকিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।যে কিনা সেদিন ব্যাংকে চাকরী না পাওয়ার জন্য আপনার সামনেই বসে হতাশ হচ্ছিলেন।

.

.

.

অনেক ক্ষেত্রেই এমনটা হয়।আপনি তার কাছে কৌতুহল নিয়ে গিয়ে হয়ত জানতে চাইবেন যে কিভাবে এত বড় মাপের মানুষ হলো সে? সে প্রতিউত্তরে হয়তবা বলবে বর্তমানে সে আমেরিকার নামকরা সফটওয়্যার কম্পানিতে চাকরী করেন।যেখানে আপনার স্যালারি ২৫ হাজার টাকা।সেখানে সে মাসে ইনকাম করছে ১লাখের ও বেশি টাকা।যে কিনা সেদিন ব্যাংকে চাকরী না পেয়ে হতাশ ছিল যেই ব্যাংকে আপনি বর্তমানে আছেন।

.

.

.

এবারে আসুন আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি সেটার দিকে। আমাদের দেশের চাকরীর জন্য এপ্লাই করা মানুষের তুলনায় চাকরী দেয়ার কোঠা খুবই নগন্য। তাই অনেক ক্ষেত্রে মেধাবীরাও হেরে যায়।আমাদের দেশে যেখানে চাকরীর জন্য এপ্লাইয়ের মানুষের সংখ্যা ১০০০ জন।সেখানে বেকারই থেকে যাচ্ছে ৯৫০ জন মানুষ।যা খুবই নগন্য।তারমানে কি এটা যে সেই ৯৫০ জন ফেলনা?অবশ্যই নয়।৯৫০ জন ফেলনা হলে ওই স্টেপে যেতে পারত না কখনোই।আমাদের দেশ আমাদের চাহিদা অনুযায়ী চাকরীর সুবিধা দিতে পারছেনা।যার কারনে বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

.

.

উক্ত ক্ষেত্রে আমেরিকা আমাদের দেশের সেই চাকরী না পাওয়া ৯৫০ জনের মধ্য থেকে আরো অনেক মানুষকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে সেখানে চাকরি দিচ্ছে।সেখানে আমাদের দেশের মানুষ নিজেদের মেধা খাটিয়ে দিন দিন উন্নত কিছু আবিস্কারের মাধ্যমে বা উদ্ভাবনের মাধ্যমে আমেরিকাকে রাতারাতি উপরে নিয়ে যাচ্ছে।তাদের দেশে চাকরী দেয়ার মত বা আত্মকর্মসংস্থান এর সুযোগ দিচ্ছে।যার দরুন আমাদের দেশের অধিক মেধাবীবানরাই সেখানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে।একারনেই আমাদের দেশের তুলনায় আমাদের দেশের মানুষদের মেধা,পরিশ্রম দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশ।আর প্রয়োজনীয় কোঠার অভাবে আমরা একস্থানেই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আটকে আছি।যা আমাদের উন্নতির ক্ষেত্রে একমাত্র বাধা। যদি আমাদের দেশ সেই ১০০০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৯০০ জনকেও কাজের সুযোগ-সুবিধা দিতে পারত তাহলে আমরা আজ পিছিয়ে থাকতাম না।আমাদের মেধা, পরিশ্রম দিয়ে অন্য দেশ নিজেদের উন্নতি করতে পারত না।আমরাই আমাদের উন্নতির পথে এগিয়ে আসতে পারতাম এবং গড়ে তুলতে পারতাম এক নতুন "বাংলাদেশ"।

.

.

.

সিয়াম রিজভী

বিষয়: বিবিধ

৯৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File