ক্যারিয়ার ইজ গ্রেটার দ্যান মোরালিটি
লিখেছেন লিখেছেন শেখ জাহিদ ২৯ অক্টোবর, ২০১৬, ০৩:১২:৪৪ রাত
কাঁচের গ্লাস ঘেরা শো রুমে যেমন জামা কাপড় প্রদর্শন হয়, ঠিক তেমনই কিছু দেহ পসারনি বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিমায় তাদের দেহ প্রদর্শন করে। পথচারী পুরুষরা কাঁচের দেওয়ালের সামনে বা আশেপাশে ভিড় জমায়। কথা বলছে, বার বনিতাদের দিকে মুগ্ধ হয়ে চেয়ে আছে। কারো ইচ্ছা হলেই পাচ্ছে এবং যেয়ে দৈহিক চাহিদাও মিটিয়ে আসছে। ফ্রান্সে চিত্রায়িত হওয়া একটি মুভির দৃশ্যের কথা বলছিলাম।
দোকানে যখন কাঁচের জানালায় নারী পোশাকের বদলে খোদ নারীই প্রদর্শিত করা যায় আর তা প্রকাশ্য দিবালোকে কিংবা গোধূলির আঁধারে তখন এটা বলাই বাহুল্য যে নারী পণ্য হয়ে গেছে। এতো গেলো পশ্চিমা অতি সভ্য দেশে নারীর মূল্যায়ন। সেখানে নৈতিকতার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন ও গড়ে তোলা হয়েছে- যেমন chastity movement এর মানে হলো একজন পার্টনারের সাথেই দৈহিক সম্পর্ক করা।
খাওয়া যেমন মানুষের মৌলিক চাহিদা, ঠিক তেমনি দৈহিক চাহিদাও মানুষের এমনই একটি চাহিদা। কিন্তু খাবারের পরিমাণ কিংবা ধরণ যেমন আমরা বুদ্ধি দিয়ে ঠিক করে নিতে পারি, ঠিক তেমনি এই চাহিদাকেও নৈতিকতা আর মানসিক বিপ্লব দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তার জন্য নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি জীবন সঙ্গী বেছে নেওয়ার পদ্ধতিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। জীবন সঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সময় সীমা ও সহনশীল হওয়া জরুরি ।কারণ আমরা জানি বিয়ে করলেই অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ হয়ে যায়। যদিও ছেলেরা বহুগামি মানসিকতার, তথাপি নৈতিকতা রক্ষার নিমিত্তে বিয়ে করলে তখন সমাজ বাস্তবতা কিংবা মনবৃত্তিক আবেগের কারণে স্ত্রীকেই ভালোবাসে। এবং সংসারের দ্বায় দায়িত্বে জীবনের সত্যিকার ধারায় চলে আসার পর অনেক রমণীকে নিয়ে ভাবার খুব একটা সুযোগ থাকে না। সুতরাং, বিয়ে নৈতিকতার একটি সেইফ গার্ড।
আমাদের দেশে খুব সম্প্রতি ধর্ষণ প্রকাশ্য রাস্তায় নারীর বস্ত্রহরণের মতো ঘটনা ঘটেছে। এখানে এটা একটা বড় কারণ হতে পারে যে- এই সমাজে বিয়ে অনেক কঠিন। যার ফলে মানুষের মৌলিক চাহিদাকে বাঁধা গ্রস্থ করে। আবার ফ্রান্সের মতো কাঁচের জানালায় প্রদর্শন করা বার বনিতার মত এতাও নোংরা সংস্কৃতি আমাদের দেশে এখনো চালু হয়নি। একেবারে যে নয় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এসব আছে। কিন্তু আমাদের দেশে বৈধভাবে চাহিদা নিবারণ করার জন্য বিয়ে করতেও সেই ৩২ বছর পূর্ণ হয়ে যায় । এর আগে কী ছেলে বখে গেলো কিনা তা জানাটা পরিবারের জন্য নিতান্তই অযৌক্তিক কাজ।
তাহলে বলবেন- সারাদিন বিয়ে বিয়ে করলেই সমাধান হয়ে যাবে নাকি? ক্যারিয়ার গড়তে হবে না?
জী! আপনাদের ক্যারিয়ার কী নবী (সা.) এর চেয়েও মহান কিংবা বর্ণাঢ্য হবে? আর একটা মানুষ নৈতিকতা আর বাদ বাকি সামাজিক ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে ২৫ বছর পর্যন্ত শুদ্ধতা বজায় রেখে একা আছে। এরপরেও আরও ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে চাইলে সেই ছেলেটাই যদি কোন মেয়ের শাড়ির আঁচল ধরে টান দেয়, দ্বায় কি সমাজের একটুও থাকে না?
রীতিমতো প্রেম করা এক পরিচিত কাপলকে বলছিলাম বিয়ে করে করার জন্য। দুজনই দুজনের পারিবারিক সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলছিল- আমরা এটা মানি কিন্তু আমরা তো আর সমাজ বদলাতে পারবো না! তবে মানুষকে বোঝানো যায়। আর আমার বাবা যদি বলে তাহলে এমন ১০ টা প্রেমিক ছাড়তে পারবো!
তাহলে কেন এই অযথা মনের দেওয়া নেওয়া? শুধুই সময় অতিক্রম এবং ফুর্তি করাই তাহলে আজকালকের প্রেম ভালোবাসার গন্তব্য?
অগনিত ধর্ষণের ঘটনা আর বস্ত্রহরণের বীভৎস উল্লাসের পরেও যারা প্রকৃত কারণ বুঝতে পারছেন না, পারছেন না সমাজের কথিত ধারার বাহিরে আসতে , তাদের দিয়ে আর যাই হোক নৈতিক সমাজ গঠন অসম্ভব। আর এমন সমাজে পথে ঘাটে আপনি আমি কিংবা আপনার মা বোন লাঞ্ছিত হলে ও কিছুই করার থাকবে না। কারণ আমরাই এমন সমাজকে লালন করেছি । ক্যারিয়ার আর বস্তুবাদিতা আমাদের কাছে নৈতিকতার চেয়েও অনেক বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পুরুষদের বহুগামিতা মানসিকতার কারণেই হয়ত তাদেরকে ৪ টা পর্যন্ত বিয়ে করার অনুমতি রাখা হয়েছে (যদি সঠিকভাবে মেইনটেইন করতে পারবে বলে মনে করে ) ।
এখন ১ জন বউয়ের মাসে ৪-৭ দিন শরীর খারাপ থাকে । এর সাথে হয়ত আরও ৪-৭ দিন নানা ধানাই পানাই । কিন্তু সে তো ৩৬৫ দিন ভরণপোষন পাচ্ছেই , বিপরীতে ৯০- ১৫০ দিন কোন দ্বায়িত্বই পালন করতে হয় না । এই সময়টা মনোগামীরা কি করবে ?
একজন স্টাবলিশ পাত্রের কাছেই মেয়ের অভিভাবকেরা তাদের পাত্রীকে পাত্রস্থ করবে । স্টাবলিশ মানে একটা চাকরিতে ঢুকতে হবে যাতে স্ত্রীর এতদিন বাবার কাছ থেকে পেয়ে আসা লাক্সারীতে বিন্দুমাত্র কমতি না থাকে ।
সেরকম একটা বেস পেতে হলে মিনিমাম ৫ বছর হয়েছে চাকুরি করছে এমন পাত্র লাগবে , সেটা ৩০ ক্রস না করে হয় না ।
বিয়ে করে না হয় দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ করা গেল । বিয়ে পরবর্তী সময় কি দ্বীনের পথ অনুসরণ করে চলা যায় বা বিয়ের পর কি সংসার শরিয়ত মোতাবেক চলে ? বাংলাদেশী মুসলমান সমাজের জন্য এটার উত্তর হচ্ছে : বিয়ের পর কোন সংসারই শরিয়ত মতে চলে না । এখানে বেশরিয়তীভাবেই সবকিছু হয় এবং সেটা সহ্য করতে হয় শুধু মাত্র সংসারের তথাকথিত শান্তির জন্য ।
বিয়ে হয়ে গেছে একজনের শুধুই পাওয়ার জায়গা যেখানে ১ পয়সাও লোকসান হবার ভয় নেই ।
আর একজনের জন্য শুধু দিয়েই যাবে , বিনিময়ে প্রাপ্যের ১ আনাও চাইতে পারবে না । এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে সোজা ১৪ শিকের ভেতরে গুষ্টিশুদ্ধ।
ফলে দ্বীনের এই অর্ধাংশ পুরণের কাজ তার কাছে নেমে আসে দোজখের অনুশীলন হিসেবে। এতে বিয়ে তথা সংসারের প্রতি সে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে ।
এর চেয়ে তো মনে হয় পশ্চিমারাই ভাল থাকে ।
অন্তত সেখানে প্রতারণা নেই । নেই সন্মতিতে মিলিত হবার পরও রেপ কেসের প্যারা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন