যেভাবে হয়েছিলো কিলিং মিশন: মীরগঞ্জের কালো অধ্যায়ের রাতের নাম ০৭ ই আগস্ট।
লিখেছেন লিখেছেন শেখ জাহিদ ০৮ আগস্ট, ২০১৬, ০৮:০৬:৫৬ রাত
বাংলাদেশ নামক ভু-খন্ডের কালো অধ্যয়ের রাতের নাম ২৫ শে মার্চ, আর গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের কালো অধ্যায়ের রাতের নাম ০৭ ই আগস্ট। এই রাতের নিরব সাক্ষী হয়ে গেলেন মীরগঞ্জ বাজারের নিরীহ ব্যবসায়ী জনাব আলীম উদ্দীন মহাজন। অত্র এলাকার ছোট বড় কেউ তাহাকে চিনেন না বললে ভুল হবে, এবং কারো সাথে বন্ধু সুলভ আচরন করেন না বললে ও ভুল হবে। অত্যন্ত বিনয়ী এবং ধার্মিক একজন মানুষ আলীম উদ্দীন মহাজন, সততার সাথে ব্যবসা করে আসছেন দীর্ঘ ত্রিশ বছরের ও বেশী সময় ধরে। গত রাতের জঙ্গী নামক নামটকের নির্মমতার শিকার হয়ে এই বিনয়ী মানুষটিকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হলো, আফসোস আমরা বাকিরা সবাই নির্মমতার নিরব দর্শক। একজন নিরাপরাধ মানুষকে জঙ্গী বানানোর অপচেষ্টা এবং অবশেষে তাকে হত্যা, এই নারকের দৃশ্যগুলো আজকাল দুধের বাচ্চারা ও মেনে নিতে নারাজ। আজকে যাকে হত্যা করা হলো আলীম উদ্দীন মহাজন তিনিই তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী, ব্যবসার উপর তিনি নির্ভরশীল ছিলেন এবং ব্যবসার উপরই তার পরিবারের চাকা ঘুরতো। বউ বাচ্চা নিয়ে তো সমাজে তার ভালো একটা অবস্থান ছিলো।
কিন্তু আজ তাহার মৃত্যুতে তার পরিবারের চাকা কতটুকু সচল থাকবে সেউ প্রশ্নের উত্তর কে দিবে? অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যাত্রা শুরু করা এই পরিবারের দায়ভর কে গ্রহন করবে? উনার এগার জন মেয়ের আর্তনাদ কে শুনবে?
এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর কেউ দিবে না বা দিতে পারবে না, বরং হয়তো পুলিশের রিপোর্টে শুনতে পারবো বন্ধুক যুদ্ধে একজন জঙ্গী নিহত হয়েছে। একজন ধার্মিক সৎ মানুষকে শেষ পর্যন্ত জঙ্গী উপাধিতে ভুষিত হয়ে পরলোক গমন করতে হবে, এবং কিলিং মিশনের নায়কদেরকে প্রমোশন নামক আসনে ভুষিত করা হবে। অবশেষে আলীম উদ্দীন মহাজনের মেয়েদেরকে জঙ্গী আলীম উদ্দীনের মেয়ে পরিচয়ে বেচে থাকতে হবে।
যেভাবে হয়েছিলো কিলিং মিশন: আলীম উদ্দীন মহাজনের পারিবরিক সুত্রে জান যায়, মধ্যরাতে হটাৎ বাড়ির উঠানে এসে ডাকাডাকি শুরু করে পুলিশ, আলীম উদ্দীন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে জানতে চান কি সমস্যা? এবং বলেন সকালে আসেন এত রাতে কেন এসেছেন?
তখনই শুরু হয় পুলিশের অকথ্য ভাষা, আলীম উদ্দীন বাধ্য হয়ে বারন্দার গেইট খুলে দিলে শুরু হয় তল্লাশি নামক ভাংচুর অভিযান। এবং সাথে বোনাস হিসাবে আছে পুলিশের অমানবিক আচরন।
আলীম উদ্দীন সাহেব এমন অমানবিক আচরনের প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য টানা হেচড়া শুরু করে, জীবনের প্রথম এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি আলীম উদ্দীন সাহেব।
জনগনের বন্ধু পুলিশ বাহিনীর সামনেই ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে, জীবন প্রদীপ নিভে যায় আলীম উদ্দীন সাহেবের। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারি বাবাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন মেয়েরা। শোকের মাতাল হাওয়া বইছে তাহার বাড়িতে, বাবা হারা মেয়েদের ক্রন্দনে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে গেছে।
জানিনা কবে এই ক্রন্দনের সুর থামবে?
জানিনা কবে পুলিশ প্রশাসনের হিংস্র আচরন বন্ধ হবে?
এভাবে আর কত সন্তান বাবা হারা হবে?
আর কতদিন স্বাধীন বাংলার মানুষ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে হেঠে চলবে?
জাগো হে স্বধীনতাকামী বীর বাঙ্গালী!!
বিষয়: বিবিধ
১২৩৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন