শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরন শুধু লোক দেখানোর জন্যই মাত্র!!
লিখেছেন লিখেছেন মুহাইমিনুর ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১০:১৭:৩৯ রাত
শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরন আর রমজান মাসে খেজুর-জিলাপি বিতরনের প্রোগ্রামগুলো নিছক লোক দেখানো মাত্রই।
---জনৈক সুশীল
জনৈক সুশীল আরো বলেছেন ...সিজনাল হিপোক্রেসি গুলো বন্ধ করে গরমকালে 'এক-গ্লাস-পানি' এবং বছরের কোনো এক সময় 'এক থালা ডাল ভাত' এর প্রোগ্রাম চালু করা যেতে পারে।
বলি কি!এ কেমন নির্দেশনা দিলেন তিনি!সিজনাল হিপোক্রেসি বন্ধ করে সিজনাল হিপোক্রেসি চালুর অভিনব পদ্ধতি শিখাচ্ছেন যেন!
শীতবস্ত্র বিতরনের সাথে ডাল ভাতের প্রোগ্রামের আকাশ-জমিন ফারাক...
যারা শীতবস্ত্র বিতরন করে হয়তবা তারা লোক দেখানো কাজ করে না।হয়তবা তারা শুধু মানুষের শীতের দিনগুলোতে দূর্ভোগের কথা চিন্তা করেই এই কাজ করে।
একটা শীতবস্ত্র দিয়ে একটা মানুষের পুরো শীতকালের শীত নিবারন হয়।প্রায় আড়াই থেকে তিন মাস একটা শীতবস্ত্র কাজে লাগে।আর এক প্লেট ডাল ভাত একটা মানুষের একবেলার ক্ষুধা নিবারন করবে।
তাহলে কোনটা ভালো।একবেলা না খেয়ে থাকা নাকি ৩ মাস তীব্র শীতে কাপড় ছাড়া শীত নিবারন করা?হয়তবা আপনার জন্য একবেলা না খেয়ে থাকাটাই বেশি কষ্টের!
একটা উদাহরন দেই...।চলছে শীতকাল। এদেশের বিল,হাওড় ও বাওড়গুলোতে দেখা মিলবে নানান প্রজাতির অতিথি পাখির।
যদিওবা ৬০% পাখি এদেশেরই। মাত্র ৪০% পাখি বাইরে থেকে আসে।
এমনি মৌসুমেতো কখনো পাখি দেখতে বের হোন না তাই যখন শীতকালে এতগুলো পাখি চোখের সামনে দেখেন তখন সবগুলোই অতিথি পাখি মনে হয়।আর তখনি বন্দুক হাতে ছুটেন পাখি মারতে।
অবস্থা ঠিক এরকমি।শীতকালে শীতবস্ত্রে ইভেন্ট বেশি হয়।আর তাই সেটা চোখে পড়ে।চোখে পড়ার সাথে সাথে চোখ ঈর্ষায় জ্বলে ওঠে।চেতনায় আঘাত লাগে।তখন বলে উঠেন শীতকালে "একটি কম্বলঃ এক খন্ড উষ্ণতা" এ জাতীয় প্রজেক্ট তো অনেক দেখা যায়...এসব সিজনাল হিপোক্রেসি।
বছরে এক সিজিনে পাখি দেখতে গিয়ে আমাদের যেমন দেশি পাখি চিনতে সমস্যা হয় তেমন বছরে শুধু একবার চোখখুলে ঘরের বাইরের মানুষের দিকে তাকালে ঠিক বুঝে উঠা কঠিন হয় যে কোন মানুষের কোনটা বেশি প্রয়োজন!
আমার জানা মতে বছরে শীতবস্ত্রে ইভেন্টের থেকে এক_থালি_ভাতের ইভেন্ট বেশি হয়।একটূ চোখ খুললেই দেখতে পাবেন।
পানির ইভেন্ট নিয়ে কিছু বলা দরকার।
আপনি হয়তবা ভুলে গেছেন বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ।
যে দেশের ৮৯% মানুষ এখনো বিশুদ্ধ পানি পান করে।
সেই দেশে এই ধরনের ইভেন্ট শোভা পায়না।তবে এটা ঢাকার করলে শোভা পাবে।
জনাব সুশীল হয়তবা আপনার চিন্তা শুধু ঢাকার আশপাশেই ঘুরাঘুরি করছে।কিন্তু ভুলে যাবেননা ঢাকার বাইরেও বাংলাদেশ আছে...।অবস্থাটা এরকম--
গোসুল করিব,সাতার কাটিবো,মাথা ভিজাইবো না,
সত্যকে জানিয়া বুঝিয়া স্বীকার করিব না।
সত্যি কথা বলতে কি একটা কাজ করতে গিয়ে কাউরো সাহায্য পান না আর নাই বা পান।নিন্দুক পাবেনই।তবে কাজটা শেষ করেন এই নিন্দুকরাই সবার প্রথমে আপনার কাছে ছুটে আসবে বাহবা দেয়ার ক্রেডিটটা নেয়ার জন্য।যুগে যুগে নিন্দুকরা ছিল আছে থাকবে।
আর বর্তমান সময়ের নিন্দুক হলো সুশীল সমাজ।হাতে গোনা কয়েকজনকে পাওয়া যাবে যাদেরকে প্রকৃত অর্থে সুশীল বলা যায়।আর বাকিদের নিন্দুকের দলেই দিলাম।এরা একরোখা...এরা ভালোকে ভালো আর খারাপকে খারাপ বলার যোগ্যতা হারায় ফেলছে।
শেষ করার আগে...শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর একটা লাইন মনে করায় দিই-"অতিকায় হস্তি লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে"।এই তেলাপোকা ড্রেনেও আছে টয়লেটেও আছে আবার ঘরের কোনাতেও আছে।দিনের আলোতেও একে দেখা যায় রাতেও দেখা যায়।এই দলটা থাকবেই।মলের মধ্যেও থাকবে মিষ্টির মধ্যেও থাকবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৩ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অন্য সময় শীত বস্র
দিয়ে কি কাম।
কিন্তু উনারা তো শুধু কথাই বলেন , কাজে লেগে তো যান না । না হলে বাংলাদেশ ৯ দিনে স্বাধীন হয়ে যেত । ৯ মাস লাগতো না ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন