আমাদের মিডিয়া এবং জিপিএ ফাইভ

লিখেছেন লিখেছেন রফিক খন্দকার ৩১ মে, ২০১৬, ০৩:০৮:৫০ রাত



সস্তা জনপ্রিয়তা আর একটা প্রমোশন কিংবা কিছু বেতন বাড়ানোর লোভে কিভাবে অন্যদের কে হেয় করে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করা যায় তা আবারো প্রমান করল মাছরাঙ্গার সেই প্রতিবেদক। কোটি টাকার ব্রান্ড প্রমোশনের জন্য হয়ত মাছরাঙা কর্তৃপক্ষ সেই প্রতিবেদক কে পুরুষ্কৃত করবে।কম জনপ্রিয় একটি টিভি চ্যানেল এই জি পি এ ফাইভ এর ভিডিওর সুবাদে বিশাল একটা ব্রান্ডিং করে ফেলেছে বিনা পয়সায়। এখন অনেকেই মাছরাঙা কে চিনতে পারছে, সেটা কি কম কিছু ?

দুঃখের বিষয় হল, প্রতিবেদক নিজেই কাগজে প্রশ্ন গুলো লিখে এনেছে আর সেটা দেখে প্রশ্ন করছে। তার মানে সে নিজেই মনে রাখতে পারে নাই তার নিজের লিখা প্রশ্নপত্র। এইসব প্রতিবেদকরা সমানে ক্যামেরার সামনে এ্যা এ্যা করে, নিজেরা স্ক্রিপ্ট লিখে তারপরেও ভুলভাল উচ্চারণ একই কথা বারবার বলে। সব ধরনের এডিটিং করার পরেও এসব থেকে যায়। যদিও তাদের যথেষ্ট ট্রেনিং করানো হয়।

সেখানে ক্যামেরার সামনে একটা মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়ারা কিভাবে সঠিক উত্তর দেবে? তারা কেউ ই ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অভ্যাস্ত না। ক্যামেরার সামনে অনেকেই নিজের নাম বলতে গিয়ে ভুল করে কিংবা বলতে পারেনা এমন হাজারো উদাহারন আছে।

অনেক গুলো প্রশ্ন এখন সামনে এসে গেল আমার--

প্রতিবেদন টি প্রকাশ হবার পর থেকেএই ছেলেমেয়ে গুলোর এখন মানষিক অবস্থা কি তা কি কেউ জানতে পেরেছে? তারা কি সমাজে এখন মুখ দেখাতে পারছে? তাদের পরিবার আত্মীয়স্বজনরা কি সমাজে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারছে? মাছরাঙ্গার কর্তৃপক্ষ এর কারো কি নুন্যতম বিবেক কিংবা সাংবাদিকতার জ্ঞান নেই। নিয়ম অনুযায়ী এসব ক্ষেত্রে মুখ দেখানো হয় না, অথবা ঝাপসা করে দেওয়া হয়। কিন্তু এমন ভাবে নিউজটি কেন প্রকাশ করা হল? আমি খুব মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করেছি শিক্ষক সমাজ এই ধরনের ভিডিও পছন্দ করছেন না। তারা এও আশংকা করেন যে, যদি ছেলেমেয়েগুলর কেউ লজ্জায় অপমানে আত্মহত্যা করে ফেলে তো এর দায় কি মাছরাঙা নেবে? একজন ধর্ষিতার ছবি দেখানো আর একজন লজ্জিতার ছবি দেখানোর মাঝে কি বা পার্থক্য আছে ? জানি এইগুলোর উত্তর দেবার কেউ নেই।

আর একটা বিষয় সেটা হল- প্রতিবেদক শুধুমাত্র যে গুলো ভুল হয়েছে সেইগুলো জোড়াতালি দিয়ে ভিডিও বানিয়েছে। যেগুলো সঠিক হয়েছে সেই গুলো কোথায়? অথবা পুরো ভিডিওটি কোথায়।

ভিডিওটি দেখে মনে হয়েছে মুস্তাফিজ যে কয়টি বলে মার খায় সে কয়টি বলের ভিডিও একসাথে দেখানো হচ্ছে, যেমনটা ক্রিকেট খেলায় দেখায়। কিন্তু যেই বল গুলিতে আউট সেইগুলো কই?

আমরা অনেকেই সিনেমা বানানোর ভিডিও ইউটিউবে দেখতে পছন্দ করি। সেখানে আমরা বিহাইন্ড দা সিন দেখে থাকি। হলিউড সুপারস্টার জ্যাকি চানের একটা ফাইটের সিনে কতবার ভুল করে কতবার মিস হয় সেটা মজা করেই দেখি। কিন্তু আসল সিনেমা কিন্তু এমন হয় না। তারপরেও লাখো মানুষ এইসব ভুল ত্রটির ভিডিও দেখতে পছন্দ করে।

যেমন পছন্দ করছে মাছরাঙ্গার সেই ভিডিওটি--

বিষয়: বিবিধ

১৩১২ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

370512
৩১ মে ২০১৬ রাত ০৩:৪১
রক্তলাল লিখেছেন : প্রতিবেদন ঠিক আছে। নাম পরিচয় দেখানো ঠিক হয়নি।
370514
৩১ মে ২০১৬ রাত ০৪:৫৫
পললব লিখেছেন : একটা পটকা ফুটলে দাড়িটুপিওয়ালাদের ধরে ধরে এনে মুসলিম মৌলবাদী সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে যখন অহরহ সচিত্র প্রতিবেদন টিভিতে প্রচার করা হয় তখন কোথায় থাকে সাংবাদিকদের নৈতিকতা??
370517
৩১ মে ২০১৬ সকাল ০৭:২০
শেখের পোলা লিখেছেন : লজ্জ্বা,মানবতা, নৈতিকতা বলে বাংলাদেশে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এখন সবার শুধুই চিন্তা আর প্রচেষ্টা হল চামচামী করে অন্যকে পিছনে ফেলা।
370521
৩১ মে ২০১৬ সকাল ০৯:৩১
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : রিপোর্টটি হয়তো অতিরঞ্জিত, তবে শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান হাল সত্যিই নাজুক।
370523
৩১ মে ২০১৬ সকাল ১০:৫৫
আরাফাত হোসাইন লিখেছেন : প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : রিপোর্টটি হয়তো অতিরঞ্জিত, তবে শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান হাল সত্যিই নাজুক। ‍সহমত
370533
৩১ মে ২০১৬ দুপুর ০১:২৫
রফিক খন্দকার লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ সবাইকে। আমার কাছে মনে হয় এইসব প্রতিবেদন শুধুমাত্র বাণিজ্যিক স্বার্থে তৈরি করা হয়। তাছাড়া এইটা একটা বিরাট ইস্যু বৈকি। মানুষের দৃষ্টি ফেরাতে দারুন কাজ দেবে--
370644
০১ জুন ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:০৪
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : মন্তব্যটি পোস্ট রিলেটেড নয়।
রমজান নিয়ে ব্লগীয় আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। অংশ নিতে পারেন আপনিও। বিস্তারিত জানতে-
Click this link

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File