জেনে নিন কিছু মূল্যবান চাণক্য নীতি

লিখেছেন লিখেছেন রফিক খন্দকার ১৮ মে, ২০১৬, ১২:৫৬:১৯ রাত



চাণক্য (কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত নামেও পরিচিত) একজন প্রাচীন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা এবং ‘অর্থশাস্ত্র নামক’ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন।

চাণক্য (খ্রিস্টপূর্ব ৩৭০-২৮৩ অব্দ) রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে প্রাচীন ভারতের একজন দিকপাল ছিলেন এবং তাঁর তত্ত্বগুলি চিরায়ত অর্থনীতির বিকাশ লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তাঁর পাণ্ডিত্যের জন্য চাণক্যকে ভারতের মেকিয়াভেলি বলা হয়।

চাণক্যের রচনা গুপ্ত সাম্রাজ্যের শাসনের শেষ দিকে অবলুপ্ত হয় এবং ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে পুনরাবিষ্কৃত হয়। প্রাচীন তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতির অধ্যাপক চাণক্য পরবর্তীকালে মৌর্য্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের উত্থানে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেন। চাণক্য চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য ও তাঁর পুত্র বিন্দুসারের রাজ-উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আসুন জেনে নিই প্রাচীন ভারতের মহান কূটনীতিবিদ এবং তক্ষশিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আচার্য্য চাণক্যের কিছু অমর নীতি বাক্য:-

১. অপরের ভূল থেকে নিজে শিক্ষা নাও। কারণ, সবকিছু নিজের উপর প্রয়োগ করে শিখতে চাইলে তোমার আয়ু কম পড়বে।

২. কোনো ব্যক্তির খুব বেশী সহজ-সরল হওয়া উচিৎ নয়। কারণ, সোজা গাছ এবং সোজা মানুষদের প্রথমে কাটা হয়।

৩. যদি কোনো সাপ বিষধর নাও হয়, তবুও তার উচিৎ বিষধর হওয়ার ভান করা - যেন সে ইচ্ছা করলেই বিষাক্ত দংশন করতে পারে। একই ভাবে দুর্বল ব্যক্তিদেরও সবসময় নিজেদের দুর্বলতাগুলি লুকিয়ে রাখা উচিৎ।

৪. প্রত্যেক মিত্রতার পেছনে কোনো-না-কোনো স্বার্থ অবশ্যই থাকে। এটা একটা কটূ সত্য।

৫. কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার আগে সর্বদা নিজেকে এই তিনটি প্রশ্ন করবে- আমি এটা কেন করতে চলেছি? এর পরিনাম কী কী হতে পারে? আমার সফলতার সম্ভাবনা কতটা? যদি ঐ প্রশ্নগুলির সন্তোষজনক উত্তর পেয়ে যাও, তবেই কাজটা শুরু কর।

৬. একবার কোনো কাজ শুরু করার পর আর অসফল হওয়ার ভয় রাখবে না, এবং কাজ ছাড়বে না। যারা নিষ্ঠার সাথে কাজ করে তারাই সবচেয়ে সুখী।

৭. সবচেয়ে বড় গুরুমন্ত্র হল, নিজের গোপন বিষয় অপরকে জানাবে না। এটা তোমাকে ধ্বংস করে দেবে।

৮. কোনো কাজ আগামীকালের জন্য ফেলে রাখা উচিৎ নয়। পরমূহুর্তে কী ঘটতে চলেছে তা কে বলতে পারে?

৯. যা ঘটে গেছে তা ঘটে গেছে। যে সময় অতীত হয়েছে সেটা নিয়ে ভেবে অনুশোচনা করে সময় নষ্ট করা অর্থহীন। যদি তোমার দ্বারা কোনো ত্রুটি হয়ে থাকে, তবে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানকে শ্রেষ্ঠ করার চেষ্টা করা উচিৎ, যাতে ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত রাখা যায়।

১০. কোনো দূর্বল ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের সাথে শত্রুতা করা আরও বেশী বিপদের। কারণ, তারা এমন সময় এবং এমন জায়গায় আঘাত করতে পারে, যেটা আমরা কল্পনাও করিনি।

১১. অহংকারের মতো শত্রু নেই। সর্বদা নশ্বরতার কথা মনে রাখবে।

১২. একটি দোষ অনেক গুণকেও গ্রাস করে।

১৩. ইন্দ্রিয়কে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখ। ইন্দ্রিয়ের যে অধীন, তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়।

১৪. সর্বদা চুপচাপ এবং গুপ্তরূপে কাজ করা উচিৎ।

১৫. যে ব্যক্তি নিশ্চিতকে ছেড়ে অনিশ্চিতের দিকে ধাবিত হয়, তার উভয়ই নষ্ট হয়।

১৬. অতি সৌন্দর্য্যের জন্য সীতার হরণ হয়েছিল, অতি গর্বের কারণে রাবণের পতন হয়েছিল এবং অতি দানী হওয়ার জন্য বলিকে পাতালে যেতে হয়েছিল। সুতরাং ‘অতি’-কে সর্বদা ত্যাগ করা উচিৎ।

১৭. ভয়কে কেবল ততক্ষণ ভয় কর, যতক্ষণ সেটা তোমার থেকে দূরে আছে।

১৮. তোমার প্রতিবন্ধকতাকে তোমারই পক্ষে কাজে লাগাও।

১৯. যদি তুমি অবস্থাকে তোমার পক্ষে আনতে না পার, তবে শত্রুদের জন্য তা জটিল করে দাও।

২০. যদি তুমি শক্তিশালী হও, তবে শত্রুকে দেখাও যেন তুমি দুর্বল। আর যদি তুমি দুর্বল হও, তবে শত্রুকে দেখাও যেন তুমি শক্তিশালী।

[ইন্টারনেট অবলম্বনে]

বিষয়: বিবিধ

১৭৫৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

369456
১৮ মে ২০১৬ সকাল ০৫:৫২
সাদাচোখে লিখেছেন : Good enough; to derail one to the path of Kufar i.e. secularism.
369465
১৮ মে ২০১৬ সকাল ১০:১৫
হতভাগা লিখেছেন :
কারণ, সোজা গাছ এবং সোজা মানুষদের প্রথমে কাটা হয়।


০ অস্থির সত্য
369484
১৮ মে ২০১৬ দুপুর ০২:১৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এখনকার রাজনিতি দেখলে উনি মনে হয় আত্মহত্যা করতেন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File