দেশীয় বুদ্ধিজিবীদের কিছু একপেশে দৃস্টিভংগী ও আমার ভাবনা-
লিখেছেন লিখেছেন রফিক খন্দকার ১৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০৭:৪৩:৫০ সন্ধ্যা
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তির উথান বা আস্ফালন হচ্ছে একান্ত বাংলাদেশের নিজশ্ব সমস্যা, বৈশ্বিক নয়।
আবার জঙ্গিবাদ হচ্ছে বৈশ্বিক সমস্যা শুধু বাংলাদেশের একার নয়। তবে বাংলাদেশেও সীমিত আকারে হলেও জঙ্গি সমস্যা আছে বলেই মনে করা হয়। বাংলাদেশ যেহেতু বিশ্বের একটা দেশ তাই জঙ্গিবাদের ভুত এ দেশেও থাকা অবাক করার মত কিছু না।
এই দুটো জিনিস কে একসাথে গুলিয়ে ফেললে আসল সমস্যাই আড়ালে চলে যায়। বুদ্ধি বিক্রি করে জিবিকা নিরবাহ করা মানুষগুলো প্রায়ই এই তফাত টা ভুলে গিয়ে অথবা সজ্ঞানে আড়াল করে নানা রকম বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে থাকেন। তাদের এই বক্তব্য বিবৃতি পেছনে কিছু উদ্দেশ্য বিধেয় থাকে।তারা নিজেরা বিশ্বাস করেন যে তারা যেভাবে সমাজটাকে চান সমাজ টা যেন সেভাবেই পরিচালিত হয়। তারা সমাজের শ খানেক অথবা হাজার খানেক মানুষের মনের কথা পড়েই এমন ধরনের আশা করেন। এই শ খানেক অথবা হাজার খানেক মানুষ হচ্ছে মহামানব টাইপের। তাদের চাওয়ার উপরে জাতীর ভাগ্য বলুন আর সমাজ ব্যাবস্থা সবই নির্ধারণ হবে। এরাই হচ্ছে বিজ্ঞান লেখক, মুক্তমনা , প্রগতিশীল নানা নামে খ্যাত। এরা যেমন ভাবে চায় তেমন ভাবেই সমাজ কে হতে হবে।
আচ্ছা, এখন কথা হচ্ছে এই হাজার খানেক মানুষ কি এটা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে? বাকি ১৫ কোটি মানুষের মুখের কথা কি এই হাজার খানেক মানুষের মুখ দিয়েই বেরোয়? ১৫ কোটি মানুষ যে স্বপ্ন দেখে সেটাই কি এই হাজার খানেক মানুষের স্বপ্ন? ১৫ কোটি মানুষ যে লাইফস্টাইল চায় এটা কি এই হাজার খানেক মানুষের লাইফস্টাইল?
উত্তর একটাই, না না এবং কোন মতেই না। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে একটা জিনিস কিছুতেই মাথায় আসে না, আপনারা গুটিকয় মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছা তাদের চেতনা কেন পুরো জাতীর উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন? পুরো জাতি কি এই চেতনা গ্রহণ লালন পালন করতে আগ্রহী? না।
আপনারা আরেকটা জিনিস খুব কৌশলে বার বার এপ্লাই করছেন, আপনারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি কে উসকে দিচ্ছেন। ধর্ম বিশ্বাসী মানুষ আর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দুইটাকে আলাদা করে তাদেরকে মুখমুখি দাড় করিয়ে দিচ্ছেন। তারা যেন যুদ্ধে নামে। আপনারা কি মনে করেন যারা এই দেশ স্বাধীন করেছিল, যারা মুক্তি যুদ্ধের পক্ষে তারা ধর্ম মানেন না? তারা সবাই তথাকথিত মুক্তমনাদের দলে? তারা দেশ স্বাধীন করেছিল কি ধর্মের জন্য না বৈষম্যের জন্য? বৈষম্য থেকে থেকে মুক্ত হলে কি মানুষ ধর্মহীন হয়ে যায়?
এসব বলে কোন লাভ হবে না, আপনারা সাধারন মানুষের কাছে কোনদিন পৌছাতে পারবেন না। এক্ষেত্রে রাজনীতিবিদরাই সেরা। তার সাধারন মানুষের অনুভুতি কম বেশি বোঝে।
আজ সরা বিশ্বে বাংলাদেশের যুদ্ধপরাধী রা ইস্লামিস্ট অথবা ইসলামি নেতা হিসেবে খ্যাত। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই মানবতা বিরোধী অপরাধীদের ইসলামি নেতা হিসাবে বলে। এর দায় কার?
আপনারা কি করেছিলেন এত বছর? আপনারা যাদের অপরাধী বলেন তাদেরকে সারা বিশ্ব নেতা বলে। তাদের বিচার করতে গেলে নানা বাধা আসে? এখানে কে ভুলের মধ্যে আছে? সারা বিশ্ব না আপনারা? সারা দুনিয়ার কাছে এই সত্য টা আপনারা প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন নি কেন। বিশ্বের সবাই কি কানা না অন্ধ? আপনাদের উচিত ছিল না এই বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে, আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতে। পেরেছেন ? ভোগবাদী মানুষেরা পারে না।
আজ পত্রিকায় দেখলাম নিহত ব্লগার অভিজিতের বাবা অজয় রায় বলেন, ‘মৌলবাদীরা ধর্মের নাম ব্যবহার করে মুক্তমনাদের একের পর এক আঘাত করছে। এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষ যে নিষ্ক্রিয়, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে -------------)
আপনি যদি বুঝেই থাকেন সাধারন মানুষ নিষ্ক্রিয় তো ভাল কথা। সাধারন মানুষের অনুভুতিকে আপনার সম্মান দেখানো উচিত। মানুষ এইগুলো পছন্দ করে না। আপনার ব্যাক্তিগত বিশ্বাস আপনি লালন করুন পালন করুন কোন সমস্যা নেই।
মনে রাখবেন, আপনাদের মত বুদ্ধিজীবিদের ভোট একটাই, আর সাধারন দাড়ি টুপিওয়ালা একজন মানুষের ভোট একটাই। আপনার যদি এই দেশে নিজের মত পথ নিয়ে বাচার অধিকার থাকে তবে ওই দাড়ি টুপিওয়ালা মানুষটিরও আছে। এই দেশে আস্তিক নাস্তিক সবাই সমান অধিকার নিয়েই বাচবে। দাড়ি টুপিওয়ালা মানুষ গুলকে ঢালাও জঙ্গি বা মৌলবাদী বলা কারো জন্য শোভা পায় না।
শুধু অন্যের মতামত আর বিশ্বাস কে শ্রদ্ধা করতে হবে, আঘাত নয়।
বিষয়: বিবিধ
১০৪৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন