ফরজ নামাজের পর হাত তুলে মুনাজাত করা বিদয়াত !

লিখেছেন লিখেছেন নৌশাদ আল নোমানী ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৮:০৩:৩৩ রাত

ফরজ নামাজের পরে হাত তুলে মুনাজাত

করা বিদয়াত !

.

রাসূল সাঃ আনুমানিক ৩০হাজার

ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করেছেন !

.

কিন্তু এ বিরাট সংখ্যক নামাজের এক

ওয়াক্তের পরেও হাত তুলে মুনাজাতের

বর্ণনা নেই !

.

বিশুদ্ধ ছয়খানা হাদীস গ্রন্হেও এ

সম্পর্কে কোন অধ্যায় বা একটি

হাদীসও পাওয়া যায়নি !

.

এমনকি ফিকহের গ্রন্হগুলিতেও হাত

তুলে মুনাজাতের উল্লেখ পাওয়া

যায়নি !

.

কেবল নফল নামাজের পরে একাকি হাত

তুলে মুনাজাতের বর্ণনা হাদীসে আছে !

.

ফরজ নামাজের পরে হাত তুলে মুনাজাত

সম্পর্কে বিশ্ব বরণ্য আলেমদের

ফতোয়া দেখুনঃ

.

#ইবনে_তাইমিয়্যাহ_রহঃ_বলেনঃ

নামাজের পর ইমাম মুক্তাদির সম্মিলিত

হাত তুলে মুনাজাত করা বিদয়াত ।রাসূল

সাঃ এর যূগে এটা ছিল না ।

.

#ইবনে_কাইয়্যিম_রহঃ_বলেনঃ সালাম

ফেরানোর পর কেবলামুখী হয়ে

মুক্তাদিদের সাথে মিলে একত্রে দোয়া

করা রাসূল সাঃ এর সুন্নাতের

অন্তর্ভুক্ত নয় ।সহীহ বা হাসান কোন

সনদেই এর বর্ণনা পাওয়া যায়নি !

.

#আল_কামুস_গ্রন্হকার_বলেনঃ

নামাজের পর ইমাম সাহেবগনের

প্রচলিত নিয়মে যে দোয়া করেন , রাসূল

সাঃ এর পবিত্র অভ্যাস এ রকম ছিল

না ।এ বিষয়ে কোন হাদীস পাওয়া

যায়নি !

.

#আব্দুল_হাই_লাখনভী রহঃ_বলেনঃ

নামাজের পর হাত উঠিয়ে ইমাম সাহেবের

রাব্বানা রাব্বানা বলা আর

মুক্তাদীদের আমীন আমীন বলা রাসূল

সাঃ এর সময় ছিল না!

.

#মুফতী_আল্লামা_শাফী_রহঃ_বলেনঃ

ফরজ নামাজের পর সুন্নাত হচ্ছে ইমাম

ও মুক্তাদী সকলে একাকী হাদীস বর্ণিত

যিকর ও দোয়াগুলি পড়বে ।কিন্তু

লোকেরা সুন্নাত বিরোধী সম্মিলিত

দোয়া আবিষ্কার করে নিয়েছে ।

.

#সউদি_গ্রান্ড_মুফতী_শাইখ_বিন_

বায_রহঃ_বলেনঃ এ জাতীয় সম্মিলিত

দোয়া বিদয়াত !

.

বাংলাদেশের মুফতীয়ে অযম হাটহাজারী

মাদ্রাসার শাইখ ফয়জুল্লাহ রহঃ উক্ত

সম্মিলিত মুনাজাতের বিরুদ্ধে একাধিক

গ্রন্হ রচনা করে এর সুন্নাহ বিহির্ভূত

এবং বিদয়াত হওয়া সপ্রমানিত

করেছেন ।

.

বায়তুল্লাহ শরীফ এবং মসজিদে

নববীতে এই মুনাজাতের কোন অস্তিত্ব

নেই ।

.

তাই আমাদেরও উচিত আল্লাহর রাসূল

সাঃ যা করেণ নি ,তা না করা ।

.

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে

রাসূল সাঃ এর তরিকায় ইবাদাত করার

তাওফিক দান করুন ।

.

আমীন ।

বিষয়: বিবিধ

১৯৩০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

342410
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৩:৩৭
তায়িফ লিখেছেন : নামাযের পর দুআ কবূল হয়। এ সময় মেহেরবান রবের নিকট যেকোনো দুআ করা যায়। আরবিতে বা নিজ নিজ মাতৃভাষায় ইখলাস ও মনোযোগের সঙ্গে দুআ করা উচিত। এ সময় দুআ করা মুস্তাহাব, তবে তা নামাযের অংশ নয়।

১নং হাদীস

হায্‌রাত সালমান ফার্‌সী রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু হতে বর্ণিত,

ان اللہ حی کریم، یستحی ان یرفع الرجل الیہ یدیہ ان یردھما صِفراً خائِبیْن۔

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা দয়ালু, দাতা। যখন বান্দা তাঁর সামনে প্রার্থনার হাত প্রসারিত করে তখন তা শূন্য ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জ্বাবোধ করেন। (জামি’ তিরমিযী, ২/১৯৫)

২নং হাদীস

আবূ মুহাম্মাদ ইবনু আবি ইয়াহ্‌ইয়া রাহিমাহুল্লাহ্‌ বলেন,

رایت عبد اللہ بن الزبیر و رئیٰ رجلا رافعا یدیہ قبل ان یفرغ من صلاتہ، فلما فرغ منھا قال: ان رسول اللہ صلی اللہ علیہ و سلم لم یکن یرفع یدیہ حتی یفرغ من صلاتہ۔

আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু একজন নামাযীকে দেখলেন, সে নামায শেষ করার আগেই হাত তুলে দুআ করছে। তিনি তাকে বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায সমাপ্ত হওয়ার আগে হাত তুলে দুআ করতেন না। (মাজমাউয যাওয়াইদ, ১০/১৬৯)

৩নং হাদীস

হাযরাত সালমান রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু থেকে বর্ণিত,

قال رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم: ما رفع قوم اکفھم الی اللہ عز و جل یسئلونہ شیئا الا کان حقا علی اللہ ان یضع فی ایدیھم الذی سئلوا۔

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কিছু মানুষ হাত উঠিয়ে আল্লাহর কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করে তখন অবশ্যই আল্লাহ তাদের প্রার্থিত বিষয় দান করেন। (মাজমাউয যাওয়াইদ, ১০/১৬৯)

৪নং হাদীস

হাযরাত আবূ উমামাহ্‌ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু হতে বর্ণিত,

قیل لرسول اللہ صلی اللہ علیہ و سلم، ای الدعاء اسمع؟ قال: جوف اللیل الآخر، و دبر الصلوات المکتوبات

সাহাবীগণ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হুম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, কোন্‌ দুআ বেশি কবূল হয়? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শেষ রাতের দুআ ও ফরয নামাযের শেষের দুআ। (জামি’ তিরমিযী, ২/১৮৮)

উপরোক্ত চার হাদীসের মধ্যে

প্রথম হাদীস থেকে জানা যাচ্ছে, হাত তুলে দুআ করলে তা কবূলের সম্ভাবনা বেশি।

দ্বিতীয় হাদীস থেকে জানা যাচ্ছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের পর হাত তুলে দুআ করতেন।

তৃতীয় হাদীস থেকে জানা যাচ্ছে যে, কিছু মানুষ যখন আল্লাহর দরবারে দুআ করেন তখন তা কবূল হওয়ার অধিক সম্ভাবনা থাকে।

চতুর্থ হাদীস থেকে জানা যাচ্ছে যে, নামায শেষে দুআ কবূল হয়।

ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করার বিষয়ে দু’ ধরণের প্রান্তিকতা রয়েছে। কেউ একে নামাযের অংশ মনে করেন। আর কেউ একে নাজায়িয ও বিদআত বলেন। (অথচ দু'নো ধারণাই ভুল, এটা কেবল মুস্তাহাব আমল, যেমনটি শুরুতে বলা হয়েছে)

এখানে কতিপয় গাইরে মুকাল্লিদ (অর্থাৎ যারা মাযহাব মানেন না/আহলে হাদীস) আলিমের বক্তব্য উল্লেখ করা হলো,

১. হাফিয আব্দুল্লাহ রোপড়ী বলেন, ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করার যে প্রচলন রয়েছে তা সঠিক। (ফাতাওয়াতে আহলে হাদীস, ২/১৯০)

২. মিয়া নাজীর হোসাইন দেহলবী বলেন, চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রই জানেন যে, ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করা জায়িয ও মুস্তাহাব। যাইদ (যিনি এ দুআকে বিদআত বলেন) ভুল বলেন। (ফাতাওয়া নাজীরিয়্যাহ্‌, ১/৫৬৬)

৩. মাওলানা সানাউল্লাহ্‌ অমৃতসরী বলেন, কোনো কোনো রিওয়ায়াতে (বর্ণনায়) নামাযের পর হাত তুলে দুআ করার কথা রয়েছে। (ফাতাওয়া ছানাইয়্যাহ্‌, ১/৫২৭)

সূত্রঃ নবীজির নামায

লেখকঃ ড. শাইখ মুহাম্মাদ ইল্‌ইয়াস ফাইসাল মাদীনাহ্‌ মুনাওয়ারাহ্‌,

পৃষ্ঠা, ২০৬

অনুবাদকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ্‌,

পরিবেশনায়ঃ মাকতাবাতুল আশরাফ, ইসলামী টাওয়ার, ১১ বাংলা বাজার, ঢাকা-১১০০।
342438
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:৩৫
শেখের পোলা লিখেছেন : দোওয়াওতো একটি ইবাদত৷ একে নামজের অংশ মনে করা ভুল হতে পারে৷ যেহেতু পক্ষেও হাদীশ আছে সেখানে বেদায়াত বলা কি সঠিক? নবী সঃ কোনদিনই টাইলস বিছানো মসজীদে বা মইক্রোফোন সামনে নিয়ে নামাজ পড়াননি৷ আমাদের প্রায় বড় বড় মসজিদে এ গুলি ব্যবহার হচ্ছে৷ একেও কি বেদায়াত বলবেন?
342553
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:১৭
সামছুল লিখেছেন : লেখকের লেখা এবং ২ মন্তব্য আমার কাছে ভালো লেগেছে আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File