শুভ্রতাই মাদুলি

লিখেছেন লিখেছেন অনাহুত অনুভূতি ১৭ আগস্ট, ২০১৫, ০৩:২৬:৩৬ রাত

প্রিয় মাদুলি,

পার্কে অনেক বসেছি,চলনা আজ একটু

যানযট লাগানো রাস্তায় হাটি,

সিএনজি-অটোরিকক্সার ফাকে

ফাকে,খুব দ্রুত হাটব,ফাকা জায়গায়

ধীরে।

পার্কের বাদাম ওয়ালারা অনেক ব্যস্ত

হয়েছে,চল ফুটপাতে বসা পাঁচ টাকা

দামের ভাপা পিঠা খাই,

চলনা রাস্তার পাশে চলন্ত অবস্থায়

গাড়ী দেখে হঠাৎ থমকে

দাড়াই।............

-এই থামবা তুমি?

-কেন?খুব বাজে লিখলাম?

-চল।

-মানে কি?চলে যাবা কেন?

-যাব বললাম কই?উঠ আগে।

-উফফ।পাগলিটা বসতেও দিবে না।

কোথায় যাবা?

-তুমি কোন সিগারেট খাও?

-হাহাহাহা।কেন?ওই কম্পানিকে ব্যান

করবা?

-উফফ।বল না?

-গোল্ড লীফ।কেন তুমিও খাবা নাকি?

-হুম।।পাগল হইছ!

-নাহ।আগের মতই পাগলি।

রাস্তায় হকারের কাছ থেকে ২টা

গোল্ড লীফ কিনে একটা শুভ্রর হাতে

দিয়ে।নিপুন ভাবে সিগারেট

জ্বালালো মাদুলি।শুভ্র অবাক হয়ে

চেয়ে আছে মাদুলির ঠোট যুগলের

দিকে।এযেন সাক্ষাত মায়াপরীর

ভিমরতি।

-জানো শুভ্র।কাল বাবা খাবার

টেবিলে বসে অজানা এক প্রতিজ্ঞার

কথা জানালো।

-কী?

হাটা মধ্যে হঠাৎ শুভ্রের হাত চেপে

ধরল এক বিষাদ মাখানো হাশি দিয়ে।

শুভ্র হৃদ স্পন্দন কে দমানোর চেষ্ঠা করল।

-আমার দাদু মারা জাওয়ার পর নাকি

বাবার চাচারা অনেক নির্যাতন করত।

দাদুর বিশাল সম্পদ ছিল।বাবা ছিলেন

তার একমাত্র ওয়ারিশ।বাবার তখন বয়স

ছিল ১১বছর।এসব নির্যাতন সহ্য না করতে

পেরে উনি পালিয়ে যান।স্টেশনের

পাশে বসে বসে কান্না করছিলেন।একজন

ব্যক্তি তখন বাবাকে নিয়ে যান।

নিজের ছেলের মতই দেখতেন।উনারও

একটি ছেলে ছিল।যাকে আমি বাবার

বন্ধু হিসেবে জানি।তোমাকে যে

বলেছিলাম আলফাজ আংকেল।আলফাজ

আংকেল আর বাবা একসাথেই পড়ালেখা

করেছিলেন।কোনো বৈষম্য হতে দেন

নি আলফাজ আংকেলের বাবা।বাবা যখন

পড়ালেখা শেষ করে চাকুরী পান তখন

আংকেল এর ফুফুতো বোন মানে আমার

মায়ের সাথে বাবার বিয়ে হয়।তখন

আল্ফাজ আংকেলের একটা ছেলেও ছিল।

আমার জন্ম হয়ার পর আলফাজ আংকেল।উনার

ছেলে মানে রাফি ভাইয়ার সাথে

আমার বিয়ে ঠিক করেন।কথা ছিল।

আমাদের পড়াশোনা শেষ হলে বিয়ে

হবে।আমার ফাইনাল সেমিস্টারের আর

দুই মাস বাকি।তাই বাবা আমাকে

জানোটা জরুরী মনে করে কাল রাতে

ব্যপারটা আমাকে এবং সবাইকে

জানান।

-বিয়ের তারিখ ফিক্স হয়েছে?

শুভ্র মাদুলিকে হাসানোর জন্য কথাটা

বলছিল।কিন্তু তা যে বিপরীত হবে তা

ভাবেনি।মাদুলি সিগারেটটাতে

প্রথম কয়েকটা টানই দিয়েছিল।

সিগারেটটা পুড়তে পুড়তে আংগুলে স্পর্শ

করা মাত্রই চিৎকার দিয়ে উঠল।

-আহহ

-কি...কি..কি হয়েছে?

বলেই শুভ্র আংগুল দুটোর গোড়া মুখে পুড়ে

নিল।"জ্বিলা সেড়েছে?"

-হুম।ছাড় এটা কিছুই না।

-হুম।।।

অনেক্ষন স্তব্ধ হয়ে হাটছিল দুজন।হঠাৎ

শুভ্র কি ভেবে ডাক দিল।

-মাদুলি!

-বল

-চলনা মুভি দেখে আসি?

-শুভ্র শুধু শুধু ফাজলামো করনা।আচ্ছা

বলতো এখন আমি কি করতে পারি?

-বিয়ে করে ফেল?

-কাকে?

-শোনো তুমি একটা মেচিউড মেয়ে।

বাস্তবতা স্বীকার করার বয়স হয়েছে।

তুমি তোমার বাবার কথা ভেবে দেখ।

আলফাজ আংকেলরা তোমাদের জন্য কতটুকু

করেছে।আজ তুমি দেশের একটা

রিনোউন্ড ভার্সিটির ছাত্রী।কিন্তু

তোমার বাবার লাইফটা ভাবো

অন্যের উপর ছিলেন।তুমি আমাকে নিয়ে

ভেবনা।আমি ঠিক সামলে নেব

নিজেকে।রাফি আমার খুব বন্ধুসুলভ মানুষ

আমি চাকরী করলেও কাজের ফাকে

তোমাকে দেখে যাব।

কথা বলতে বলতে কখন জানি রাস্তার

মধে চলে এসেছিল দুজন।হাইওয়েতে ছুটে

আসা একটি বাস তাদের দুজনকে ছুড়ে

ফেলে দেয় আবার ফুটপাতের দিকে।

দুটো শরীর দুমরে-মোচড়ে আটোসাটো

হয়ে পরে আছে ফুটপাতের দিকে।সাথে

সাথে মানুষ জন জড়ো হয়ে নিয়ে যায়

হাসপাতালের দিকে।শরীর দূটো

আলাদা হতেই শুভ্র চিতকার করে

বলে।"মাদুলি চিন্তা করো না! আমি

দেখা করব।"

বিষয়: সাহিত্য

৯৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File