প্রথম আলো আছে না ? বিরোধী দলের দরকার কি?
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান ২৩ আগস্ট, ২০১৫, ০৯:২৮:৩২ সকাল
সাংবাদিক ও সংবাদ সমালোচক পুলক বাবুর একটি আর্টিকেল ঢাকার একটি অনলাইন দৈনিকে আজ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি তাতে প্রথম আলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন। ভবিষ্যতে প্রথম আলো বন্ধ হয়ে যায় কি-না তা নিয়েও তিনি আশংকা ব্যক্ত করেছেন। তার ভাষ্যমতে সরকার নাকি বিভিন্ন প্রেসারের মাধ্যমে প্রথম আলোর বিজ্ঞাপন বন্ধের ব্যবস্থা করেছে। আজকের প্রথম আলোতে তো অনেক বিজ্ঞাপন দেখলাম, বাস্তবে এমন বলে মনে হলো না। যেহেতু এ ব্যাপারে আমার কাছে কোন তথ্য নেই, তাই এর সত্য মিথ্যা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। পুলক বাবুর আক্ষেপ প্রথম আলো তথাকথিত প্রগতিশীলতার নামে কেন ধর্মের সমালোচনা করে ক্ষমা চাইলো? আধুনিক, স্মার্ট, প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার অধিকারী, গণতন্ত্রমনা হতে হলে কি তবে ধর্ম বিরোধী হতে হবে? পুলক বাবু সম্ভবত তাই বোঝাতে চাইলেন। এটিও আমার আলোচনার বিষয় নয়, মূল বিষয় তিনি তার লেখার এক যায়গায় যে ভয়ংকর কথাটি লিখেছেন- ‘‘বিরোধীদল হীনতা কিংবা দুর্বল ও অকার্যকর বিরোধীদলের জায়গায় প্রথম আলো স্থান করে নিলে ক্ষতি কি?’’ চমৎকার একটি গণতান্ত্রিক সংজ্ঞা’’ তার মানে বিরোধী দল নেই, গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র চর্চার অধিকার নেই, গণতন্ত্রের বন্ধ জানালা খোলার কোন সম্ভাবনাও যখন দেখা যাচ্ছে না, তখন তিনি লিখলেন- বিরোধী দলের যায়গায় প্রথম আলো থাকলে ক্ষতি কি? পুলক বাবু প্রথম আলোর কিছু পরিচয় তুলে ধরেছেন, যেমন তিনি লিখেছেন ‘‘প্রথম আলো সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোকে পছন্দ করে না। ট্রেড ইউনিয়ন সহ্য করতে পারে না। দেশের বৃহত্তম সংবাদপত্র শিল্প প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নেই , এটা ভাবা যায়না। এরকম প্রতিষ্ঠান যখন অন্যদের অধিকারের কথা লেখে তখন ভন্ডামি মনে হয়। যে সংগঠন তারা পছন্দ করে না, সেই সংগঠন তাদের পক্ষে দাড়াবে কেন? তবুও দাড়াতে হবে। প্রথম আলো বহু সাংবাদিক-শ্রমিকের কর্মস্থল- রুটি রুজির ঠিকানা।’’ কিন্তু এতটুকুতে কি প্রথম আলোর পরিচয় সীমাবদ্ধ? ডযনি প্রথম আলোর কর্ণধর তার পরিচয় কি? পতিত সমাজতন্ত্রের ধারক ও বাহক বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা জনাব মতিউর রহমান, কমিউনিস্ট পার্টির এক সময়ের একমাত্র মূখপাত্র ‘সাপ্তাহিক একতার সম্পাদক ছিলেন জনাব মতিউর রহমান’ তিনি ভোরের কাগজ, বাংলাবাজার পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক দেশ পত্রিকায় জনাব মতিউর রহমানের একটি সাক্ষাৎকার পড়ছিলাম। সেখানে তিনি বলেছেন ‘‘ এক কেজি ব্যাঙ এক পাল্লায় মাপা যায়, কিন্তু দ্বিধাবিভক্ত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট নেতাদের এক মঞ্চে আনা যায় না- তাই রাজনীতি ছেরে সাংবাদিকতার মাধ্যমে কমিউনিজমের আদর্শ বাস্তবায়নের পথ বেছে নিয়েছি’’। এখান থেকেই বোঝা যায় প্রথম আলোর উদ্দেশ্য কি? প্রথম আলোর পরিচয় তারা ১/১১-র মঈন-ফখরের সেনা সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার কারিগর। যা প্রথম আলোর পক্ষ থেকে টেবিল চাপরিয়ে বলা হয়েছিল। ইতিপূর্বে প্রথম আলো আওয়ামীলীগের জন্য কি কি অবদান রেখেছে তার প্রথম আলোর সম্পাদক কয়েকদিন আগে কৃষিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক লেখায় তিনি লিখেছেন। আওয়ামীলীগের সব সময়ের বন্ধু, আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় আনতে যারা কারিগরি ভূমিকা পালন করে তারাই যদি বিরোধীদলহীন গণতন্ত্রহীন অবস্থায় বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে তবে আসলেই কি কোন ক্ষতি আছে?
বিষয়: বিবিধ
১২৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন