উত্তম ইবাদাত

লিখেছেন লিখেছেন বিশ্বাসী ভাই ০৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:৪২:৩৭ রাত

আল্লাহ পবিত্র কুরআন শরীফে বলেছেন

সূরা আয যারিয়াত-৫৬. وَما خَلَقتُ الجِنَّ وَالإِنسَ إِلّا لِيَعبُدونِ

“আমি জিন ও মানুবজাতিকে কেবল আমারই ইবাদাত ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি”। সূরা আয যারিয়াত-৫৬

মানুষ ও জিন কে সৃষ্টিই করা হয়েছে শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য অন্য কারো গোলামীর জন্য নয়।

ইবাদাত অর্থ কি?

ইবাদাত শব্দের মানে বন্দেগী করা, আনুগত্য করা , গোলামী করা। অর্থাৎ আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তা পুরাপুরি মেনে চলার নামই ইবাদাত।

নবী-রাসূলগণ আল্লাহর যে ইবাদাত করেছেন।

আল্লাহ পবিত্র কুরআন শরীফে বলেছেন

شَرَعَ لَكُم مِنَ الدّينِ ما وَصّىٰ بِهِ نوحًا وَالَّذي أَوحَينا إِلَيكَ وَما وَصَّينا بِهِ إِبراهيمَ

সূরা আশ শুরা-১৩- وَموسىٰ وَعيسىٰ ۖ أَن أَقيمُوا الدّينَ وَلا تَتَفَرَّقوا فيهِ ۚ

তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের ঐ সব নিয়ম কানুনই ঠিক করে দিয়েছেন, যার হুকুম তিনি নুহ কে দিয়েছিলেন ও যা আমি (হে নবী) এখন আপনার কাছে ওহী করে পাঠিয়েছ এবং যা ইবরাহীম মূসা ও ঈসা কে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে তোমরা দ্বীন কে কায়েম কর এবং এ বিষয়ে মতবিরোধ করোনা। সূরা আশ শুরা-১৩

উপরোক্ত আয়াত থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে আল্লাহ নবী-রাসূলদের পাঠিয়েছেন দ্বীন কায়েম করার জন্য। অর্থাৎ নবী-রাসূলদের একমাত্র ইবাদাত ছিল আল্লাহর দেয়া দ্বীন কায়েম করা।

সূরা সফ-৯ هُوَ الَّذي أَرسَلَ رَسولَهُ بِالهُدىٰ وَدينِ الحَقِّ لِيُظهِرَهُ عَلَى الدّينِ كُلِّهِ وَلَو كَرِهَ المُشرِكونَ

তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তার রাসূলকে হিদায়াত ও দ্বীনে হক দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি এ দ্বীন কে অন্য সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করেন, চাই তা মুশরিকদের কাছে যতই অসহনীয় হক না কেন। সূরা সফ-৯

অর্থাৎ যারা আল্লাহর দাসত্বের সাথে অন্যদের দাসত্বও করে থাকে এবং আল্লাহর দ্বীনের সাথে অন্য সব দ্বীন ও বিধানকে সংমিশ্রিত করে, শুধু এক আল্লাহর আনুগত্য ও হিদায়াতের ওপর গোটা জীবনব্যবস্থা কায়েম হোক তারা তা চায় না ৷ যারা ইচ্ছামত যে কোন প্রভু ও উপাস্যের দাসত্ব করতে সংকল্পাবদ্ধ এবং যে কোন দর্শন ও মতবাদের ওপর নিজেদের আকীদা-বিশ্বাস, নৈতিকতা এবং তাহযীব তামুদ্দুনের ভিত্তিস্থাপন করতে প্রস্তুত এমনসব লোকের বিরোধিতার মুখেও বলা হচ্ছে যে, তাদের সাথে আপোষ করার জন্য আল্লাহর রসূলকে পাঠানো হয়নি ৷ বরং তাকে পাঠানো হয়েছে এ জন্য যে, তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে যে হিদায়াত ও জীবনব্যবস্থা এনেছেন তাকে গোটা জীবনের সব দিক ও বিভাগের ওপর বিজয়ী করে দেবেন ৷ অবস্থা যাই হোক না কেন, তাঁকে এ কাজ করতেই হবে ৷ কাফের ও মুশরিকরা তা মেনে নিক আর না নিক।

রাসূল (স) তার জীবদ্দশায় আল্লাহর দেয়া দ্বীন কে কায়েম করে অন্য সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করে গেছেন।

এই আয়াত থেকেও স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে রাসূল (স) এর ইবাদাত ছিল আল্লাহর দেয়া দ্বীন কে কায়েম করে অন্য সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করা।

দ্বীন কি?

আল্লাহ পবিত্র কুরআন শরীফে বলেছেন

সূরা আলে ইমরান ১৯ إِنَّ الدّينَ عِندَ اللَّهِ الإِسلامُ

“নিশ্চয় ইসলাম আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন –জীবনবিধান”৷ সূরা আলে ইমরান ১৯

অর্থাৎ আল্লাহর কাছে মানুষের জন্য একটি মাত্র জীবন ব্যবস্থা ও একটি মাত্র জীবন বিধান সঠিক ও নির্ভুল বলে গৃহীত৷ সেটি হচ্ছে, মানুষ আল্লাহকে নিজের মালিক ও মাবুদ বলে স্বীকার করে নেবে এবং তাঁর ইবাদাত, বন্দেগী ও দাসত্বের মধ্যে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সোপর্দ করে দেবে৷ আর তাঁর বন্দেগী করার পদ্ধতি নিজের আবিষ্কার করবে না৷ বরং তিনি নিজের নবী-রসূলগণের মাধ্যমে যে হিদায়াত ও বিধান পাঠিয়েছেন কোন প্রকার কমবেশী না করে তার অনুসরণ করবে৷ এই চিন্তা ও কর্মপদ্ধতির নাম ''ইসলাম" আর বিশ্ব-জাহানের স্রষ্টার ও প্রভুর নিজের সৃষ্টিকূল ও প্রজা সাধারনের জন্য ইসলাম ছাড়া অন্য কোন কর্মপদ্ধতির বৈধতার স্বীকৃতি না দেয়াও পুরোপুরি ন্যায়সংগত৷ মানুষ তার নির্বুদ্ধিতার কারণে নাস্তিক্যবাদ থেকে নিয়ে শিরক ও মূর্তিপূজা পর্যন্ত যে কোন মতবাদ ও যে কোন পদ্ধতির অনুসরণ করা নিজের জন্য বৈধ মনে করতে পারে কিন্তু বিশ্ব-জাহানের প্রভুর দৃষ্টিতেএগুলো নিছক বিদ্রোহ ছাড়া আর কিছুই নয়৷

উপরোক্ত আলোচনায় স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ করাই সবচাইতে উত্তম ইবাদাত ।

তাই আসুন আমরা সবাই আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার দাওয়াত দেই এবং বলি....

১. দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তি পেতে হলে জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ্‌ তা'আলাকে একমাত্র ইলাহ্‌ (হুকুমকর্তা) ও মুহাম্মাদকে (সা.) একমাত্র আদর্শ নেতা মেনে নিন।

২. আপনি যদি সত্যি তা মেনে নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাস্তব জীবন থেকে ইসলামের বিপরীত চিন্তা, কাজ ও অভ্যাস দূর করুন এবং আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর বিরুদ্ধে কারো আনুগত্য না করার সিন্ধান্ত নিন।

৩. এ দুটো নীতি অনুযায়ী খাঁটি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করতে চাইলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অসৎ লোকদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিন এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে ঈমানদার, আল্লাহভীরু, সৎ ও যোগ্য লোকদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিন।

বিষয়: বিবিধ

১১১৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

364637
০৪ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১১:৪৩
কুয়েত থেকে লিখেছেন : মাশা'আল্লাহ খুবই ভালো লাগলো লেখাটি অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
০৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৪৮
302519
বিশ্বাসী ভাই লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ। জাঝাকাল্লাহু খয়রান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File