টুডে ব্লগের সকল ব্লগার এবং ভিজিটর ভাই-বোন দাওয়াত দিচ্ছি, পরে কিন্তু অভিযোগ করতে পারবেননা।
লিখেছেন লিখেছেন বিশ্বাসী ভাই ০৭ আগস্ট, ২০১৫, ১১:২৬:৫৮ রাত
"আমি অবশ্যই প্রত্যেকটি জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি,যাতে করে (তাদের কাছে সে বলতে পারে) তোমরা এক আল্লাহ্ তাআলার ইবাদত করো এবং নাফরমান শক্তিসমূহকে বর্জন করো। -সূরা নাহল : ৩৬
পনেরো দিন ব্যাপী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর গনসংযোগ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আপনাদের সবাইকে দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তির জন্য এই আন্দোলনে শরীক হওয়ার দাওয়াত দিচ্ছি।
শুরুতেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর সংক্ষিপ্ত পিরিচিতি তুলে ধরলাম।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চিন্তা ও গবেষনার ক্ষেত্রে এক ব্যপক বিপ্লব
০১.ইসলামী জ্ঞান চর্চার এক নিখুঁত পরিকল্পনা
০২.উন্নত চরিত্র গঠনের এক মজবুত সংগঠন
০৩.জনসেবা ও সমাজ সংস্কারের এক বাস্তব কর্মসূচি
০৪.জনকল্যাণমুখী আদর্শ রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন
ইকামাতে দ্বীনের দায়িত্ব
আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কে মূলত যে কাজটি করার জন্য দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তা কুরআনের তিনটি সূরায় স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন :
"তিনিই সে মহান সত্তা (আল্লাহ) যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও আনুগত্যের একমাত্র সত্য বিধান (দ্বীনে হক) সহ পাঠিয়েছেন, যেন (রাসূল) তাকে (ঐ বিধানকে) আর সব বিধানের উপর বিজয়ী করেন।"
(সূরা আত্ তাওবা : ৩৩, সূরা আল ফাত্হ : ২৮, সূরা আস সাফ : ৯)
রাসূল (সা.) আল্লাহ্র দ্বীনকে কায়েম করেই এ দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, আইন, শাসন, বিচার, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তিনি আল্লাহ্র বিধানকে চালু করে প্রমাণ করেছে যে, ইসলামই দুনিয়ার জীবনে শান্ত্মির একমাত্র উপায়। তাই দ্বীন ইসলাম কায়েমের দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ কাজ। সাহাবায়ে কিরামও রাসূল (সা.)-এর সাথে এ দায়িত্বই পালন করেছেন। মুসলিম হিসেবে আমাদের সবারই এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা কর্তব্য। এ দায়িত্ব অবহেলা করে আল্লাহ্র সন্ত্মুষ্টি হাসিল করা কিছুতেই সম্ভব নয়।
জামায়াতবদ্ধ জীবনের গুরত্ব
ইসলাম কায়েমের এ মহান দায়িত্ব একা একা পালন করা নবীর পক্ষেও সম্ভব ছিল না। তাই যারাই নবীর প্রতি ঈমান এনেছেন তাদেরকেই সংঘবদ্ধ করে নবীগণ ইসলামী আন্দোলন করেছেন। যে সমাজে ইসলাম কায়েম নেই সেখানে ব্যক্তি জীবনেও পুরোপুরি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করা কঠিন। আর আল্লাহ্র দ্বীনকে সমাজ জীবনে কায়েম করার কাজ তো জামায়াতবদ্ধভাবে ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়।
নবী করীম (সা.) বলেছেন, মেষের পাল থেকে আলাদা একটি মেষকে যেমন নেকড়ে বাঘ সহজেই ধরে খায়, তেমনি জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন একজন মুসলিম সহজেই শয়তানের খপ্পরে পড়ে যায়। তাই
জামায়াতবদ্ধ জীবনই ঈমানের অনিবার্য দাবী।
জামায়াতে ইসলামী কোন ধরনের দল
জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত অর্থে শুধুমাত্র ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক দল নয়। ইসলামে ধর্মীয় জীবনের গুরম্নত্ব আছে বলেই জামায়াত ধর্মীয় দলের দায়িত্ব পালন করে। রাজনৈতিক শক্তি ছাড়া ইসলামী আইন চালু হতে পারে না বলেই জামায়াত রাজনৈতিক ময়দানে কাজ করে। সমাজ সেবা ও সামাজিক সংশোধনের জোর তাকিদ ইসলাম দিয়েছে বলেই জামায়াত সমাজ সেবা ও সমাজ সংস্কারে মনোযোগ দেয়। এ অর্থেই জামায়াতে ইসলামী একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন।
জামায়াতের বুনিয়াদী আকিদা-বিশ্বাস
০১.আল্লাহ্ তা'আলাই মানব জাতির একমাত্র রব, বিধানদাতা ও হুকুমকর্তা।
০২. কুরআন ও সুন্নাহ্ই মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।
০৩.মহানবীই (সা.) মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে অনুসরণযোগ্য আদর্শ নেতা।
০৪. ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই মুমিন জীবনের লক্ষ্য।
০৫. আল্লাহ্র সন্ত্মুষ্টি ও আখিরাতের মুক্তিই মুমিন জীবনের কাম্য।
জামায়াতে ইসলামীর সংগঠন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দীন ইসলাম কায়েম করতে চায় বলেই সংগঠনের মাধ্যমে যোগ্য লোক তৈরি করছে। ইসলামী সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার কায়েম করতে হলে এ বিরাট কাজের উপযোগী লোক যোগাড় করতেই হবে। এ লোক আসমান থেকে নাযিল হবে না, বা বিদেশ থেকেও আমদানী করা যাবে না। দাওয়াত ও সংগঠনের মাধ্যমে।
বিশ্বনবী (সা.) যেমন লোক যোগাড় করেছিলেন তেমনি জামায়াতে ইসলামী এ দেশের মানুষ থেকেই উপযুক্ত লোক তৈরি করছে।
জামায়াতের ৩ দফা দাওয়াত
কুরআন ও হাদীস থেকে জানা যায়, নবীগণ (আ.) মানুষকে এই বলে দাওয়াত দিয়েছিলেন :
"হে দেশবাসী, একমাত্র আল্লাহ্র দাসত্ব কর। তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন হুকুমকর্তা (ইলাহ্) নেই।"
(সূরা আল আ'রাফ)
শেষ নবীর এ দাওয়াত যারা কবুল করেছেন তারা সবাই এ ঘোষণা দিয়ে ইসলামে প্রবেশ করেছেন :
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্
"আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই, মুহাম্মাদ (সা.)
আল্লাহ্র রাসূল।"
জামায়াতে ইসলামী কালেমা তাইয়্যেবার এই ঘোষণাকে
তিন দফা দাওয়াত আকারে পেশ করছে :
১. দুনিয়ায় শান্ত্মি ও আখিরাতে মুক্তি পেতে হলে জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ্ তা'আলাকে একমাত্র ইলাহ্ (হুকুমকর্তা) ও মুহাম্মাদকে (সা.) একমাত্র আদর্শ নেতা মেনে নিন।
২. আপনি যদি সত্যি তা মেনে নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাস্তব জীবন থেকে ইসলামের বিপরীত চিন্ত্মা, কাজ ও অভ্যাস দূর করম্নন এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর বিরম্নদ্ধে কারো আনুগত্য না করার সিন্ধান্ত্ম নিন।
৩. এ দুটো নীতি অনুযায়ী খাঁটি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করতে চাইলে জামায়াতবদ্ধ হয়ে অসৎ লোকদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিন এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্ত্মরে ঈমানদার, আল্লাহভীরম্ন, সৎ ও যোগ্য লোকদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিন।
জামায়াতের ৪ দফা কর্মসূচি
১. দাওয়াতের মাধ্যমে চিন্ত্মার পরিশুদ্ধি ও পুনর্গঠনের কাজ :
জামায়াত কুরআন ও সুন্নাহর সঠিক শিক্ষাকে বলিষ্ঠ যুক্তির সাহায্যে তুলে ধরে জনগণের চিন্ত্মার বিকাশ সাধন করছে। তাদের মধ্যে ইসলামকে অনুসরণ ও কায়েম করার উৎসাহ ও মনোভাব জাগ্রত করছে।
২. সংগঠন ও প্রশিক্ষণের কাজ :
ইসলাম কায়েমের সংগ্রামে আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে সুসংগঠিত করে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার যোগ্য করে গড়ে তুলছে।
৩. সমাজ সংস্কার ও সেবার কাজ :
ইসলামী মূল্যবোধের ভিন্ডিতে সমাজের সংশোধন, নৈতিক পুনর্গঠন ও সমাজসেবামূলক কাজের মাধ্যমে জামায়াত সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধন করছে।
৪. সরকার সংশোধনের কাজ :
জামায়াত শাসন ব্যবস্থার সকল স্ত্মরে অযোগ্য ও অসৎ নেতৃত্বের বদলে আল্লাহভীরম্ন, সত ও যোগ্য নেতৃত্ব কায়েমের জন্য গণতান্ত্রিক পন্থায় চেষ্টা চালাচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর কর্মনীতি :
১.লোক তৈরির কর্মনীতি
ইসলামী সমাজের উপযোগী বলিষ্ঠ ঈমান ও চরিত্র সৃষ্টির জন্য ইসলামী আব্দোলনই একমাত্র উপায়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় কায়েমী স্বার্থের বিরম্নদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমেই উপযুক্ত লোক তৈরি হয়। তাই জামায়াত এ পন্থায়ই লোক তৈরি করছে। ত্যাগী ও নিঃস্বার্থ কর্মী এভাবেই তৈরি হয়ে থাকে।
২. সরকার গঠনের কর্মনীতি
হুজুগ, সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে জাতিগঠনমূলক ও সমাজ পরিবর্তনের কাজ হতে পারে না। তাই জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পথেই সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়। ইসলামী আদর্শ জোর করে জনগণের উপর চাপাবার বিষয় নয়। জনসমর্থন নিয়েই ইসলামের সত্যিকার বিজয় সম্ভব।
জামায়াতে ইসলামীর অবদান
১. বাংলা ভাষায় ইসলামী সাহিত্যের ব্যাপক প্রসার।
২. রাজনৈতিক অঙ্গনে শক্তিশালী ইসলামী ধারা সৃষ্টি ও জাতীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালনে গুরম্নত্বপূর্ণ অবদান।
৩. মাদরাসা ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত লোকদের যোগ্যতা বৃদ্ধি করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও জনগণের খেদমত করার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
৩. একদল নিষ্ঠাবান, সত ও যোগ্য লোক তৈরী করেছে এবং সততা ও স্বচ্ছতার দৃষ্টান্ত্ম স্থাপন করে যাচ্ছে।
ইসলামের বিজয়ের জন্য শর্ত
আল্লাহ্ তা'আলা সরাসরি শক্তি প্রয়োগ করে ইসলাম কায়েম করেন না। আল্লাহ্র খিলাফতের দায়িত্ব পালনের জন্য যারা চেষ্টা করে আল্লাহ্ এ কাজে তাদেরকেই সাহায্য করেন। আল্লাহ্র যমীনে আল্লাহ্রদ্বীন কায়েম করার যোগ্য লোক তৈরি হলে তিনি তাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেন।
- সূরা আন্ নূর : ৫৫
আপনি কি ইসলামের বিজয় চান?
আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহ্র দ্বীনকে বিজয়ী দেখতে চান। তাহলে আসুন জামায়াতে শামিল হোন। নিজেকে ঈমান, ইলম, আখলাক ও আমলে সজ্জিত করম্নন। এ উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামী যে কর্মনীতি গ্রহণ করেছে তা আপনাকে এ পথে এগিয়ে দেবে।
জামায়াতে শামিল হওয়ার জন্য
১. প্রথমে সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করম্নন।
২. ইসলামী জ্ঞান ও চরিত্র অর্জনের জন্য সাপ্তাহিক বৈঠকে নিয়মিত হাজির হোন।
৩. পবিত্র কুরআনের তাফসির, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য এবং পত্র -পত্রিকা ভাল করে পড়ুন।
৪. ইসলামের যতটুকু ইলম হাসিল হয় সে অনুযায়ী আমল করম্নন এবং বিবেকের বিরম্নদ্ধেত্র কোন কাজ না করার মজবুত সিদ্ধান্ত্ম নিন।
৫. যোগ্যতার সাথে দ্বীনী দায়িত্ব পালন করতে হলে জামায়াতের সদস্যপদ গ্রহণ করম্নন।
১.ইসলামী জ্ঞান চর্চার এক নিখুঁত পরিকল্পনা
০২.উন্নত চরিত্র গঠনের এক মজবুত সংগঠন
০৩.জনসেবা ও সমাজ সংস্কারের এক বাস্তব কর্মসূচি
০৪.জনকল্যাণমুখী আদর্শ রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন
ইকামাতে দ্বীনের দায়িত্ব
আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কে মূলত যে কাজটি করার জন্য দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তা কুরআনের তিনটি সূরায় স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন :
"তিনিই সে মহান সত্তা (আল্লাহ) যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও আনুগত্যের একমাত্র সত্য বিধান (দ্বীনে হক) সহ পাঠিয়েছেন, যেন (রাসূল) তাকে (ঐ বিধানকে) আর সব বিধানের উপর বিজয়ী করেন।"
(সূরা আত্ তাওবা : ৩৩, সূরা আল ফাত্হ : ২৮, সূরা আস সাফ : ৯)
রাসূল (সা.) আল্লাহ্র দ্বীনকে কায়েম করেই এ দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, আইন, শাসন, বিচার, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তিনি আল্লাহ্র বিধানকে চালু করে প্রমাণ করেছে যে, ইসলামই দুনিয়ার জীবনে শান্ত্মির একমাত্র উপায়। তাই দ্বীন ইসলাম কায়েমের দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ কাজ। সাহাবায়ে কিরামও রাসূল (সা.)-এর সাথে এ দায়িত্বই পালন করেছেন। মুসলিম হিসেবে আমাদের সবারই এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা কর্তব্য। এ দায়িত্ব অবহেলা করে আল্লাহ্র সন্ত্মুষ্টি হাসিল করা কিছুতেই সম্ভব নয়।
জামায়াতবদ্ধ জীবনের গুরম্নত্ব
ইসলাম কায়েমের এ মহান দায়িত্ব একা একা পালন করা নবীর পক্ষেও সম্ভব ছিল না। তাই যারাই নবীর প্রতি ঈমান এনেছেন তাদেরকেই সংঘবদ্ধ করে নবীগণ ইসলামী আন্দোলন করেছেন। যে সমাজে ইসলাম কায়েম নেই সেখানে ব্যক্তি জীবনেও পুরোপুরি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করা কঠিন। আর আল্লাহ্র দ্বীনকে সমাজ জীবনে কায়েম করার কাজ তো জামায়াতবদ্ধভাবে ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়।
নবী করীম (সা.) বলেছেন, মেষের পাল থেকে আলাদা একটি মেষকে যেমন নেকড়ে বাঘ সহজেই ধরে খায়, তেমনি জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন একজন মুসলিম সহজেই শয়তানের খপ্পরে পড়ে যায়। তাই
জামায়াতবদ্ধ জীবনই ঈমানের অনিবার্য দাবী।
জামায়াতে ইসলামী কোন ধরনের দল
জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত অর্থে শুধুমাত্র ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক দল নয়। ইসলামে ধর্মীয় জীবনের গুরম্নত্ব আছে বলেই জামায়াত ধর্মীয় দলের দায়িত্ব পালন করে। রাজনৈতিক শক্তি ছাড়া ইসলামী আইন চালু হতে পারে না বলেই জামায়াত রাজনৈতিক ময়দানে কাজ করে। সমাজ সেবা ও সামাজিক সংশোধনের জোর তাকিদ ইসলাম দিয়েছে বলেই জামায়াত সমাজ সেবা ও সমাজ সংস্কারে মনোযোগ দেয়। এ অর্থেই জামায়াতে ইসলামী একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন।
জামায়াতের বুনিয়াদী আকিদা-বিশ্বাস
০১.আল্লাহ্ তা'আলাই মানব জাতির একমাত্র রব, বিধানদাতা ও হুকুমকর্তা।
০২. কুরআন ও সুন্নাহ্ই মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।
০৩.মহানবীই (সা.) মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে অনুসরণযোগ্য আদর্শ নেতা।
০৪. ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই মুমিন জীবনের লক্ষ্য।
০৫. আল্লাহ্র সন্ত্মুষ্টি ও আখিরাতের মুক্তিই মুমিন জীবনের কাম্য।
জামায়াতে ইসলামীর সংগঠন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দীন ইসলাম কায়েম করতে চায় বলেই সংগঠনের মাধ্যমে যোগ্য লোক তৈরি করছে। ইসলামী সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার কায়েম করতে হলে এ বিরাট কাজের উপযোগী লোক যোগাড় করতেই হবে। এ লোক আসমান থেকে নাযিল হবে না, বা বিদেশ থেকেও আমদানী করা যাবে না। দাওয়াত ও সংগঠনের মাধ্যমে।
বিশ্বনবী (সা.) যেমন লোক যোগাড় করেছিলেন তেমনি জামায়াতে ইসলামী এ দেশের মানুষ থেকেই উপযুক্ত লোক তৈরি করছে।
জামায়াতের ৩ দফা দাওয়াত
কুরআন ও হাদীস থেকে জানা যায়, নবীগণ (আ.) মানুষকে এই বলে দাওয়াত দিয়েছিলেন :
"হে দেশবাসী, একমাত্র আল্লাহ্র দাসত্ব কর। তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন হুকুমকর্তা (ইলাহ্) নেই।"
(সূরা আল আ'রাফ)
শেষ নবীর এ দাওয়াত যারা কবুল করেছেন তারা সবাই এ ঘোষণা দিয়ে ইসলামে প্রবেশ করেছেন :
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্
"আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই, মুহাম্মাদ (সা.)
আল্লাহ্র রাসূল।"
জামায়াতে ইসলামী কালেমা তাইয়্যেবার এই ঘোষণাকে
তিন দফা দাওয়াত আকারে পেশ করছে :
১. দুনিয়ায় শান্ত্মি ও আখিরাতে মুক্তি পেতে হলে জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ্ তা'আলাকে একমাত্র ইলাহ্ (হুকুমকর্তা) ও মুহাম্মাদকে (সা.) একমাত্র আদর্শ নেতা মেনে নিন।
২. আপনি যদি সত্যি তা মেনে নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাস্তব জীবন থেকে ইসলামের বিপরীত চিন্ত্মা, কাজ ও অভ্যাস দূর করম্নন এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর বিরম্নদ্ধে কারো আনুগত্য না করার সিন্ধান্ত্ম নিন।
৩. এ দুটো নীতি অনুযায়ী খাঁটি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করতে চাইলে জামায়াতবদ্ধ হয়ে অসৎ লোকদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিন এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্ত্মরে ঈমানদার, আল্লাহভীরম্ন, সৎ ও যোগ্য লোকদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিন।
জামায়াতের ৪ দফা কর্মসূচি
১. দাওয়াতের মাধ্যমে চিন্ত্মার পরিশুদ্ধি ও পুনর্গঠনের কাজ :
জামায়াত কুরআন ও সুন্নাহর সঠিক শিক্ষাকে বলিষ্ঠ যুক্তির সাহায্যে তুলে ধরে জনগণের চিন্ত্মার বিকাশ সাধন করছে। তাদের মধ্যে ইসলামকে অনুসরণ ও কায়েম করার উৎসাহ ও মনোভাব জাগ্রত করছে।
২. সংগঠন ও প্রশিক্ষণের কাজ :
ইসলাম কায়েমের সংগ্রামে আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে সুসংগঠিত করে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার যোগ্য করে গড়ে তুলছে।
৩. সমাজ সংস্কার ও সেবার কাজ :
ইসলামী মূল্যবোধের ভিন্ডিতে সমাজের সংশোধন, নৈতিক পুনর্গঠন ও সমাজসেবামূলক কাজের মাধ্যমে জামায়াত সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধন করছে।
৪. সরকার সংশোধনের কাজ :
জামায়াত শাসন ব্যবস্থার সকল স্ত্মরে অযোগ্য ও অসৎ নেতৃত্বের বদলে আল্লাহভীরম্ন, সত ও যোগ্য নেতৃত্ব কায়েমের জন্য গণতান্ত্রিক পন্থায় চেষ্টা চালাচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর কর্মনীতি :
১.লোক তৈরির কর্মনীতি
ইসলামী সমাজের উপযোগী বলিষ্ঠ ঈমান ও চরিত্র সৃষ্টির জন্য ইসলামী আব্দোলনই একমাত্র উপায়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় কায়েমী স্বার্থের বিরম্নদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমেই উপযুক্ত লোক তৈরি হয়। তাই জামায়াত এ পন্থায়ই লোক তৈরি করছে। ত্যাগী ও নিঃস্বার্থ কর্মী এভাবেই তৈরি হয়ে থাকে।
২. সরকার গঠনের কর্মনীতি
হুজুগ, সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে জাতিগঠনমূলক ও সমাজ পরিবর্তনের কাজ হতে পারে না। তাই জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পথেই সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়। ইসলামী আদর্শ জোর করে জনগণের উপর চাপাবার বিষয় নয়। জনসমর্থন নিয়েই ইসলামের সত্যিকার বিজয় সম্ভব।
জামায়াতে ইসলামীর অবদান
১. বাংলা ভাষায় ইসলামী সাহিত্যের ব্যাপক প্রসার।
২. রাজনৈতিক অঙ্গনে শক্তিশালী ইসলামী ধারা সৃষ্টি ও জাতীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালনে গুরম্নত্বপূর্ণ অবদান।
৩. মাদরাসা ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত লোকদের যোগ্যতা বৃদ্ধি করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও জনগণের খেদমত করার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
৩. একদল নিষ্ঠাবান, সত ও যোগ্য লোক তৈরী করেছে এবং সততা ও স্বচ্ছতার দৃষ্টান্ত্ম স্থাপন করে যাচ্ছে।
ইসলামের বিজয়ের জন্য শর্ত
আল্লাহ্ তা'আলা সরাসরি শক্তি প্রয়োগ করে ইসলাম কায়েম করেন না। আল্লাহ্র খিলাফতের দায়িত্ব পালনের জন্য যারা চেষ্টা করে আল্লাহ্ এ কাজে তাদেরকেই সাহায্য করেন। আল্লাহ্র যমীনে আল্লাহ্রদ্বীন কায়েম করার যোগ্য লোক তৈরি হলে তিনি তাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেন।
- সূরা আন্ নূর : ৫৫
আপনি কি ইসলামের বিজয় চান?
আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহ্র দ্বীনকে বিজয়ী দেখতে চান। তাহলে আসুন জামায়াতে শামিল হোন। নিজেকে ঈমান, ইলম, আখলাক ও আমলে সজ্জিত করম্নন। এ উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামী যে কর্মনীতি গ্রহণ করেছে তা আপনাকে এ পথে এগিয়ে দেবে।
জামায়াতে শামিল হওয়ার জন্য
১. প্রথমে সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করম্নন।
২. ইসলামী জ্ঞান ও চরিত্র অর্জনের জন্য সাপ্তাহিক বৈঠকে নিয়মিত হাজির হোন।
৩. পবিত্র কুরআনের তাফসির, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য এবং পত্র -পত্রিকা ভাল করে পড়ুন।
৪. ইসলামের যতটুকু ইলম হাসিল হয় সে অনুযায়ী আমল করম্নন এবং বিবেকের বিরম্নদ্ধেত্র কোন কাজ না করার মজবুত সিদ্ধান্ত্ম নিন।
৫. যোগ্যতার সাথে দ্বীনী দায়িত্ব পালন করতে হলে জামায়াতের সদস্যপদ গ্রহণ করুন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর ওয়েবসাইট
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১২২৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন