প্রকাশ্যে বৃদ্ধের চুল কাটলেন যুবলীগ নেতার ভাই

লিখেছেন লিখেছেন ফাতেমা চৌধুরী আমেরিকা ১২ আগস্ট, ২০১৫, ০৬:১১:২৯ সন্ধ্যা



পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চাঁদা না পেয়ে প্রকাশ্যে বাজারে এক বৃদ্ধের চুল কেটে অপদস্থ করেছেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার ভাই। এ ঘটনায় মামলা হলেও সক্রিয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ।

নিজের রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও ভাই ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হওয়ায় এলাকায় তিনি প্রভাবশালী। মঠবাড়িয়ার আলোচিত এ প্রভাবশালীর নাম লিটু মুন্সী। বাড়ি ধানিসাফা ইউনিয়নে।

এই ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মুন্সী তার ভাই। তাই তিনি যা ইচ্ছা হয় করেন। এলাকায় কেউ টু শব্দ করে না নানা অনাচারের মুখেও। প্রশাসনও নিশ্চুপ।

গত ৫ আগস্ট সাফা বাজারে ডেকে নিয়ে আব্দুল খালেক হাওলাদার (৭০) নামে সাবেক এক সেনা সদস্যকে লিটু মুন্সী চুল কেটে মাথায় ক্রস চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন। লোকজন দিয়ে মারধরের পাশাপাশি নানাভাবে নাজেহাল করেছেন বলে অভিযোগ মিলেছে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সাফা বাজারে লিটু মুন্সীর প্রসাধনী সামগ্রীর দোকান রয়েছে। সেখানেই ডেকে নিয়ে সাবেক সেনা সদস্য আব্দুল খালেক হাওলাদারকে অপদস্থ করা হয়। বাজারের লোকজন সবকিছু দেখলেও প্রতিবাদ করেনি। মারধর করলেও যেন জানে মেরে ফেলা না হয়— এ রকম অনুরোধ করেছে কয়েকজন।

ঘটনার শিকার খালেক হাওলাদার বলেন, ‘আমার স্ত্রী ফরিদা বেগমকে ফোন করে লিটু তার দোকানে দেখা করতে বলেছিল। খবর পেয়ে দেখা করতে গেলে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা চায়। প্রশ্ন করতেই লিটু বলে, তোর ছেলে বিদেশ থাকে, তাই টাকা দিবি। ছেলেকে ধার করে বিদেশে পাঠাইছি, তাই টাকা দিতে পারব না জানালেই মারধর শুরু করে। তার কিল-ঘুষিতে মাটিতে পড়ে যাই। তখন কয়েকজন ধরে দোকানের পেছনে নেয় এবং বাজার ভর্তি লোকের সামনে জোর করে ক্রস চিহ্নের মতো করে মাথার চুল কেটে দেয়।

তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমার বড় ছেলে ও স্ত্রী ছুটে গেলে তাদেরও মারধর করে লিটু। থানায় গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে চায়নি। পরে বরিশাল র্যা ব-৮ অফিস থেকে থানায় জানালে পুলিশ মামলা নেয়। এখন লিটুর লোকজন মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।’

খালেক হাওলাদারের ছেলে রিপন হাওলাদার বলেন, ‘বাবাকে বাজারভর্তি লোকের সামনে এভাবে অত্যাচার করল। এখন হুমকি দিচ্ছে পাল্টা মামলা করার, চোখ তুলে নেওয়ার। ওদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’

ধানিসাফা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক মিয়া বলেন, ‘ঘটনা সত্য কিন্তু তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকায় কেউ কিছু বলতে পারে না। বৃদ্ধ লোকটার ওপর নির্যাতনের ঘটনায় খারাপ লেগেছে। মামলা যখন হয়েছে, আইন এর বিচার করবে।’

লিটু মুন্সীর ভাই ধানিসাফা ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মুন্সী বলেন, ‘খালেক হাওলাদার ওঝা। সে এলাকার কয়েকজন নারীকে ঝাড়ফুঁক দিয়ে প্রতারণা করেছে। সে কারণে আমার ভাই তাকে মেরেছে। কিন্তু এভাবে তার আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি।’

মামলা তদন্তের অগ্রগতি ও আসামি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে মঠবাড়িয়া থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। তবে এ বিষয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ‘মামলা যখন হয়েছে আসামিও গ্রেপ্তার হবে।’

rtnn

বিষয়: বিবিধ

১১৪৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

335466
১২ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১৫
চোথাবাজ লিখেছেন : At Wits' End At Wits' End At Wits' End Thinking? Thinking? Frustrated Frustrated
335468
১২ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১৫
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : এ ঘটনার নিন্দা জানাই..
335483
১২ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৪৯
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ঘটনাটি পড়ে খুব খারাফ লাগলো, নিন্দা জানানোর ও ভাষা জানা নাই। ধন্যবাদ আপনাকে
335487
১২ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৫
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : তাহলে নাপিতের কাজটাও ছাত্রলীগ যুবলীগ নিয়ে নিলো? Surprised
335492
১২ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৭
আবু জান্নাত লিখেছেন : ওরা মানুষ নয়, আওয়ামীলীগ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File