।। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আমরা এই সময়ে।।
লিখেছেন লিখেছেন জাহাঙ্গীর ফারুক ০৬ আগস্ট, ২০১৫, ০৫:৩৩:২২ বিকাল
প্রত্যেক নির্যাতিত মানুষের অধিকার আছে তার উপর অত্যাচার নিপীড়ন হত্যা ধর্ষণ এর মত জঘন্য অপরাদের বিচার চাওয়ার ও বিচার পাওয়ার। তার স্বাশত এই অধিকারের প্রতি আমার অকুণ্ঠ সমর্থন রইবে যে কোন অবস্থাতেই। আবার যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হল তার আইনগত, যুক্তিসঙ্গত সব সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
সময় কাল- ৭১, জাতীয় স্বাধিনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকাময় অস্থির অরাজকতার মহুত্তে আপাত দখলদার পাক বাহিনী, তার প্রশাসন ও তার এদেশীয় সমর্থকদের তাণ্ডবে মানুষ যখন দিকবেদিক ছুটছে, জাতি যখন একটা ভয়াবহ যুদ্ধে লিপ্ত, অপর পক্ষে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রানপন জীবনযুদ্ধে লিপ্ত, সেই ঘোর অমানিশায় অগুনিত খুন, হত্যা, ধর্ষণ, রাহাজানি এর মত অমানবিক অপরাধ ঘটেছে। জাতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তি তথকালিন সরকার ও মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা এসব নিয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এটা নিয়ে জাতীয় ঐক্যমতের একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারত আরও অনেক আগেই।
দুঃখজনক ভাবে সেটা দীর্ঘ ৪০ বছরে ও সম্ভব হয়নি। একটা গোষ্ঠী এটাকে পুজি করে সব সময় ক্ষমতার রাজনীতি করেছে। ৭১-এর বিভীষিকাময় সেই সময়ের চাক্ষুষ সাক্ষি খুব কম ঘটনায় ছিল। কারন একটা পলায়নপর সমাজে জীবন বাঁচাতে যখন সবাই দৌড়ায়, তখন চাক্ষুষ সাক্ষি থাকা দুস্কর। শুনা কথা- অমুকের কাছে শুনেছি তমুক এই কাজ করেছে, পত্রিকায় উঠেছে এই রকম সাক্ষের উপর ভর করে ফাঁসির মত ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট আমার মনে হয় দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের জাতীয় বিচারালয়ের অনেক গৌরবোজ্জ্বল ভুমিকা, যাথার্থ্য ভারসাম্য পূর্ণ, যৌক্তিক রায় দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে বারবার। দুজনের সাক্ষে গরমিল হলে যেখানে দিনে দুপুরে খুনের মামলার আসামীরা পার পেয়ে যাবার দৃষ্টান্ত রয়েছে ভুরি ভুরি, সেখানে ঝাপসা সাক্ষের উপর ভর করে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া গ্রহন যোগ্য হতে পারে না কিছুতেই। কারন আপনার দণ্ডে একবার ভুল করে কারো প্রান গেলে তাকে কেউই ফিরিয়ে দিতে পারবে না। আইনের শ্বাশত বাণী - হাজার অপরাধী পার পেয়ে যেতে পারে আইনের ফাঁক গলে, কিন্তু নিরপরাধ কেউ যেন দণ্ড না পায় কিছুতেই। আজ অন্য কারো উপর এই শাস্তি হচ্ছে বলে বগল দাবাচ্ছেন, মিষ্টি বিলাচ্ছেন, ভুলে যাবে না আইনের অপব্যবহারের ফলে এক দিন আপনার উপর এমন দণ্ড নেমে আসতে পারে।
“একজনের ভাই মরেছিল- ভাই বড় বেশি জারেজার, প্রতিবেশী কিছুতেই শান্তনা দিতে না পেরে জিজ্ঞাসা করল এত বেশি কান্নার হেতু। বলল সেই ভাই- ভাই মরেছে দুঃখ নাই। দুঃখ আজরাইল যে বাড়ি চিনে ফেলেছে ।" এটা সবার মনে রাখার দরকার। একবার আইনের অপব্যবহার করে বিচারালয়কে ভুল ভাবে পরিচালন শুরু হলে এর থেকে কেউই নিস্তার পাবেন না। আজ শাশুড়ির, কেল কিন্তু বৌয়ের।
আজ ঝুকি নিয়ে কথা বলতে হয়। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছিল বহুপাক্ষিক । সেটা যুদ্ধকালীন, যা বিশ্বে একেবারেই বিরল নয়। এখন শান্তিকালিন সময়ে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রযন্ত্র–শাসক গোষ্ঠী দ্বারা প্রকাশ্যে দিবালোকে হত্যা গুম নির্যাতনের মত জগন্য মানবতা বিরোধী জগন্য অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। এমন কি মায়ের গর্ভের শিশু ও নিরাপদ নয়, তাকে পৃথিবীতে এসেই ১৪তা শিলাইয়ের মুখে পড়তে হয়। এই সরকার গনতান্ত্রিক কি অগনত্রান্ত্রিক সরকার সে পথে নাই বা গেলাম। বর্তমানের মানবতা হননের বিচার কে করবে ? নাকি বিচার চাইলে গুম হয়ে যেতে হবে ? ভুলে গেলে চলবে না - আমাদের মহান জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়ে ছিল অগণতান্ত্রিক স্বৈরশক্তির বিরুদ্ধে, ন্যায় পরায়নতার স্বপক্ষে। আইনের শ্বাসন, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য যে যুদ্ধ তাহাই মহানযুদ্ধ। আসুন সেই মুক্তিযুদ্ধকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অভিধায় অভিষিক্ত করি আমরা আমাদের পরমাত্মার কথা উচচারনের মাধ্যমে। গনতন্ত্র, জাতীয় স্বাধীনতা আর ন্যাপরায়নাতার পক্ষে অবস্থান নেই। নিচক তোষামোদিতে্নয়। এটা আমাদের জাতীয় মর্যাদা ও স্বাধীনতার রক্ষাকবজ ও বটে।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন