****কাহারো সাথে শক্তিতে পারিয়া উঠিতে অক্ষম হইলে তাহার চুলা ভাঙিগয়া ফেলুন!!*****
লিখেছেন লিখেছেন প্রক্সিমা ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ১১:১১:৪৬ সকাল
টিউশনির কল্যাণে একটি বাচ্চাকে পড়াইবার দায়িত্ব আসিয়া পড়িল আমার ঘাড়ে।
প্রতিদিনের মত সেদিন পড়াইবার উদ্দেশ্য এ ঐ গৃহে প্রবেশ করিবার সময় খেয়াল করিলাম ---গৃহ অভ্যন্তরে কিছু একটা ঘটিয়াছে,,,,
অভ্যন্তরে প্রবেশ করিতেই বুঝিলাম বাড়ির মালিক --আংকেল এবং আন্টি হিটলারের অসমাপ্ত কার্জ অর্থাৎ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধাইয়া ফেলিয়াছেন।
কেহ কাউকে ছাড় দিতে রাজি হইল না। আমার আকস্মিক উপসস্থিতি টের পাইয়া আন্টি তার রণে ভঙ্গ দিলেন ।
মনে করিলাম এবার বুঝি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা হইবে,,,,,
না!!! তাহা হইল না!
আন্টির এমন নিরবতা দেখিয়া আংকেল তার পূর্ণ সুযোগ এর সৎ ব্যাবহার করিতে উদ্ধত হইলেন।
উহা পর্যবেক্ষন করিয়া আন্টি আর গৃহের অন্দরে থাকিতে পারিলেন না, অগ্নিমূর্তি ধারন করিয়া সন্মুখভাগে অগ্রসর হইতে থাকিলেন,,,,,
আমার বুঝিতে বাকি রহিল না---- আন্টি এবার অলিখিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করিয়া ফেলিবেন ,,,,
আবারো লাগিয়া গেল সুমিষ্ট শব্দ বোমা নিক্ষেপের প্রতিযোগিতা,,,,,
গালাগালি যাহাতে হাতাহাতিতে রুপ না নেয় তার জন্য আমি তাহাদের মাঝখানে আম্পায়ারের ভূমিকা পালন করিতে প্রস্তুত হইলাম।
চেষ্টা চলিতেছিল প্রানপ্রন শান্তি প্রতিষ্ঠার।
এক সময় আমার মনে হইতে লাগিল উভয় পক্ষই আমাকে 'আলিম দার' মনে করিতেছেন।
অবস্থা সুবিধার না দেখিয়া,,,, যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করিয়া, ছাত্রের অধ্যয়ন কক্ষে প্রবেশ করিয়া তাহাকে পুস্তক বাহির করিতে আদেশ করিলাম,,,
মৃতমন লইয়া সে আদেশ পালনে অগ্রসর হইল,,,,,
বেশিক্ষন পড়াইতে পারিলাম না।
ছাত্রের অধ্যায়ন কক্ষ থেকে বাহির হইয়া দেখিলাম যুদ্ধ climax এ পৌছাইয়া গিয়াছে। উভয়ের কণ্ঠশক্তি প্রয়োগের ধরন শুনিয়া মনে হইতেছিল,,,,,
একজন যেন অপর জন থেকে কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করিতেছেন,
যাহার কারনে একজনের কথা অন্য জনের কর্ণে পৌছাতেছে না ,,,,,
নিরব দর্শকের মত থমকে দাড়াইলাম উঠানে,,,,
এরই মাঝে আংকেল তার পূর্ন শক্তি ব্যয় করিয়াও যখন আন্টির সাথে পারিয়া উঠিতে ব্যার্থ হইল,
ঠিক তখনি ঘটিল ঘটনার মূল কান্ডটি,,,,,,,,
যাহার জন্য পাঠকদেরকে এতদূর টানিয়া আনিলাম,,,,,,
আংকেল সর্বশক্তি ব্যয় করিয়া উঠান হইতে আন্টির দিকে একটা ম্যারাথন দৌড় মারিলেন,,,,,
বুঝিলাম এইবার আন্টির আর রক্ষা হইবে না। উঠানের সব দর্শককে অবাক করিয়া আংকেল দৌড়াইয়া বারান্দায় রক্ষিত -------
আন্টির নিজ হস্তে প্রস্তুতকৃত মাটির চুলা (গ্রামে বৃষ্টির দিনে ব্যাবহার করা হয় portable চুলা) ধরিয়া উঠানে নিয়া আসিলেন।
এর পর তিনি 'আলিফ লায়লার' দৈত্তের মত চুলাটিকে মহাকাশ পানে সজোরে নিক্ষেপ করিলেন,,,,
অভিকর্ষ বলের টানে উহা ভূমিতে নামিয়া
বিভিন্ন ধরনের বহু জ্যামিতিক আকার ধারণ করিল।
উক্ত কান্ড পর্যবেক্ষণ করিয়া আন্টিসহ বাড়িটিতে হঠাত শানশুন নিরবতা নামিয়া আসিল,,,,
বুঝিলাম উহা কালবৈশাখীর পূর্বাভাস।
আর বিলম্ব করিতে মন চাহিল না, ছুটিলাম অন্য ছাত্রের গৃহ পানে,,,,,
পরদিন আবার সেই বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া উঠানে আন্টির স্মৃতি বিজড়িত সেই চুলার খন্ড-বিখন্ড অসহায় অংশ পড়িয়া থাকতে দেখিলাম,,,,
বাড়ীতে শুধু আংকেল একা,,,,,
তিনি শুধু আমাকে বলিলেন ''বাবা, বাবুতো নানার বাড়ি চলিয়া গিয়াছে, তুমি ২/৪ দিন পর থাকে আস,,,,,,''
উক্ত কথা শুনিয়া আমি প্রস্থান করিলাম।
তার কিছুদিন পর গিয়ে আন্টিকে বাসায় দেখিয়া বুঝিতে পারিলাম উভয়ের মধ্যে মিমাংসা হইয়াছে, তবে কিভাবে হইয়াছে তাহা জানা যায় নাই।
তবে গুজব রহিয়াছে বহু বিফল সংলাপের পর আন্টিকে নিজগৃহে ফিরাইয়া আনিতে আংকেল, আন্টির হস্ত-পদ ধরিতে বাধ্য হইয়াছিলেন।
মোরাল অফ দা স্টোরি: Hotspot এর যুগে Wi-Fi বন্ধ করা বোকামি!!
Imo/whatsapp এর যুগে skype বন্ধ করা মূর্খতা!!
বিষয়: রাজনীতি
৭৯৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন