আল্লাহর দ্বীনের কাজকে কি আমরা বোঝা মনে করছি ?

লিখেছেন লিখেছেন প্রক্সিমা ১৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:০১:১৮ রাত

আমাদের মসজিদে ম্যানেজিং কমেটিতে আমার দায়িত্ব থাকায় প্রতিমাসে মসজিদ পরিচালনায় চাঁদা তুলতে হয় ।

এই চাঁদা তুলতে গিয়ে যে সকল কমন ডায়লগের সন্মুখিন হই

>>এই তো সেদিন মসজিদের টাকা নিয়ে গেলে আবার....

>>তোমার কাকা বাড়ীতে নাই কাল এসো....

মাসে মসজিদের জন্য মাত্র ২০ থেকে ৪০ টাকার জন্য শুনতে হয় এমন অনেক কথা ।এবং ঘুরতে হয় ৩-৪ দিন ।

এমনও রেকর্ড আছে ৮ মাস পর্যন্ত বাকী রেখেছে ।

অথচ তাদের বাড়ীর ডিস সংযোগের বীল ১৫০ থেকে ২০০ টাকা স্ট্যান্ডবাই দিয়ে দেয় কোন কোন সময়তো নতুন সংযোগ নেওয়ার সময় ৩ মাসের বীল প্রি পেইড করতে হয় ।

মান্থলি এই চাঁদা চাওয়ার সাথে সাথে অনেকের মুখটা বাংলা ৫ এর মত হয়ে যায় যেন তার সাথে কত দিনের শত্রুতা !!

অনেকে তো এমনও সন্দেহের তীর ছুড়ে মারে যেন আমরা এ টাকা আত্মসাত্‍ করছি ।

ভুক্তভোগী ছাড়া এ সমস্যা বোঝানে কঠিন ।

শুধু যারা এমন দায়িত্বে আছেন তারাই বুঝবেন ।

অনেক সময় ব্যাস্ত থাকার কারনে চাঁদা তুলতে সমস্যা হয় তাই ছোটগ্রুপের চাদা তুলতে বলি প্রথমে স্বীকার করে তারপর আজ না কাল কাল না পরশু এভাবে .....আসলে তো আমাদের বোঝা উচিত্‍ উনারা তো আমাদের চেয়ে বেশি ব্যাস্ত ......

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মহিলারা মসজিদকে মনে করছে পুরুষদের প্রতিষ্টান আর তরুনেরা মনে করছে এটা বৃদ্ধদের প্রতিষ্টান ।

তাহলে কী আল্লাহর দ্বীনের কাজকে আমরা বোঝা মনে করছি ?

এক সময়ের কথা মনে পরে যায় যখন মসজীদটি বিল্ডিংয়ে রুপান্তর করা হলো তখন অনেক ছোট ছিলাম ।

এমটি /মোশারফ ভাই একজন অফিসার মানুষ যার প্রচেষ্টায় এত সুন্দর একটি মসজিদ প্রতিষ্টা সম্ভব হয়েছিলো ।

মসজিদ বিল্ডিং করার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন তাই তিনি বাজারে দোকানদারদের কাছে হাত পেতেছিলেন ।এত সম্মানি একজন মানুষ আল্লাহর ঘরের জন্য সবার কাছে হাত পেতেছেন এমনকি উনার কলিগদের কাছেও ।বাজারে চাঁদা তোলার সময় আমরা উনার পিছনে পিছনে ঘুরতামা আমাদের সমবয়সী প্রায় সবাই । এ কাজে সময় দেওয়াতে নিজেদেরকে সৌভাগ্যবান মনে করতাম ।

একসময় টাকা ম্যেনেজ হয়ে গেলো ।বিল্ডিং নির্মানের জন্য চলে আসলো ইট ,বালি, রড, সিমেন্ট ।যোগাযোগ ব্যাবস্থা খারাপ হওয়ায় উপকরনগুলো মসজিদের নির্দিষ্ট যায়গা থেকে অনেকটা দূরে নামানো হয়েছিলো ।সবকিছুই আনতে হবে মাথায় করে ।

আজ সত্যিই অবাক লাগে সেদিনের কথা মনে হলে ।

অল্প সময়ের মধ্যে স্থানটি ঈদের মত উত্‍সবে পরিনত হলো । আমাদের গ্রামের সবার স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহনে মূহুর্তেই সমস্ত মালামাল পৌছে গেলো নির্দিষ্ট স্থানে ।

যথা সময়ে নির্মিত হলো এলাকার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর মসজিদ ।

একটা সময় ছিলো যখন মসজিদের আজান শোনা মাত্র টেলিভিশন অফ করে দেওয়া হতো রিমোট না থাকায় কষ্ট করে গীয়ে সবাই নীজ গরজেই টিভি অফ করতো আজানের সম্মানে ,আর আজ রিমোট থাকা সত্বেও আজানের শব্দের সাথে সাথে সমান তালে চলে কিরন মালার থিম সং ।

এমনিভাবে আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হওয়া ইসালামী চেতনা কী আর ফিরে আসবে ?

বিষয়: বিবিধ

১০৮৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378709
১৫ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০১:১৭
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ / পিলাচ

১৫ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১০:২৯
313702
প্রক্সিমা লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ ।
378710
১৫ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৭:২৫
হতভাগা লিখেছেন : মাসজিদের জন্য দান/চাঁদা জুম্মার নামাজের খুতবার আগে এবং অন্য ওয়াক্তের ফরজ নামাজের পর কালেক্ট করা হয় ।

বাসায় যারা থাকে সাধারণত তাদের কাছে মাসজিদের চেয়ে টেলিভিশনই প্রিয়।
378711
১৫ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ১০:০১
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : চরম বাস্তব সত্যটি তুলে ধরেছেন। আর যারা টাকা পয়সার দায়িত্বে থাকেন তারা যতই সততার পরিচয় দেন না কেন, মানুষের তীর্যক দৃষ্টি ও বাক্য তাদের হজম করতে হয়।
378715
১৫ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:১১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মসজিদের জন্য টাকা পয়সা যত সুন্দরভাবেই খরচ করুন কিছু লোক প্রশ্ন করবেই। তবে এই চাঁদা না উঠিয়ে মসজিদের স্থায়ি আয়ের জন্য কিছু করা উচিত। যেমন মসজিদ সংলগ্ন দোকান ঘর কিংবা মসজিদ এর নামে স্থায়ি আমানত ব্যাংকে রাখা।
378724
১৫ অক্টোবর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:১৬
সন্ধাতারা লিখেছেন : Salam. Valuable experience!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File