PARADOX
লিখেছেন লিখেছেন প্রক্সিমা ২৫ মে, ২০১৬, ০৬:২৬:৩১ সন্ধ্যা
ICT 'র উপর ১৪ দিনের ট্রেনিং শেষ হলো ।যথারীতি গতকাল ছিল সমাপনী অনুষ্টান ।ট্রেনিং চলাকালিন সময় TTC র হোষ্টেলেই ছিলাম ।প্রশিক্ষনটি ছিল চমত্কার ।দিনগুলো কিভাবে চলে গেলো ঠিক ই পেলাম না ।এই ১৪ দিনের অনেক স্মৃতী আছে ।তার মধ্যে তিনটি বিষয় ও আমার ভাবনা শেয়ার না করে পারলাম না ।
১.অনুষ্টান শুরু হল পবিত্র কোর আন তেলয়াতের মাধ্যমে ।তেলয়াত ছিল অসাধারন ।অডিটোরিয়ামের সবাই মুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন ।
যথারীতি কোর আন তেলওয়াত শেষেই ঘোষনা হলো গীতা পাঠের ।একজন গীতা পাঠ করলেন ।এমন অনেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি যেখানে কোরআন পাঠের পর গীতা পাঠ করানো হয় ।
যে কাজটি BTV তে নিয়মীত করা হয়ে থাকে ।বেশ ভালো ! আমার পশ্ন কেন শুধুই গীতা পাঠ ? আমার জানা মতে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র এবং প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে বেদ ।কেন কোন অনুষ্টানে বেদ থেকে পাঠ করানো হয় না ? সুকৌশলে হিন্দু ছেলে মেয়েদেরকে বেদ থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ! কেন জানেন ?
বেদ পড়লে সকল গোমড় ফাঁষ হয়ে যাবে ।আঘাত লাগবে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় পূন্য কর্মে কারন বেদে এর মধ্যেই আছে 'ন তস্যি প্রতিমা আস্তি' যার অর্থ 'ঈশ্বরের কোন মূর্তি নেই '। আরো আছে যারা 'অসম্ভুতি' র পূজা করবে তারা অন্ধকার বা নরকে প্রবেশ করবে এখানে অসম্ভুতি মানে জড় বস্তু ।আর এই যুগে এই মূর্তি পূজাই হচ্ছে হিন্দুদের প্রধান আরাধনা ।
হিন্দু মেয়েরা কিছু ধর্ম কর্ম করে থাকে কিন্তু ছেলেরা বছরে একবার দূর্গা পূজার সময় পাগলু ড্যান্স এবং বাংলা মদ খেয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাদের দায় শোধ করে ফেলে যদিও মূর্তি পুজা এবং মদ পান দুটিই হিন্দু ধর্মমতে হারাম ।
২.অনুষ্টানের বিভিন্ন পর্যায় বিভিন্ন ব্যাক্তিত্ব বক্তব্য রাখছিলেন এক পর্যায় সময় হলো প্রধান অতিথি সাহেবের তিনি ছিলেন জেলা প্রশাসক ।অনেক দরদ এবং আবেগ মাখা কন্ঠে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ।বক্তব্যের মূল Theme ছিল দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তার সাথে শিক্ষাও কিন্তু সেই সাথে নৈতিকতা র অভাব আমাদের সকল অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে ।নৈতিকতার এতই অভাব যে সবাই যার যার নিয়ে ব্যস্ত ।এই বিষয়ের উপরই তিনি সমস্ত বক্তব্য রাখলেন ।উনার কন্ঠে ভেসে উঠছিলো শুধুই আফসোস এবং হতাশা ।
আমার কাছে উনার বক্তব্য যেন মনে হচ্ছিলো কোটি হৃদয়ের আকুলতা ।
আমার কথা : ধুতরা গাছ লাগিয়ে যেমন সেখান থেকে মিষ্টি আম আশা করা যায় না তেমনি ধর্মকে ছুটিতে পাঠিয়ে নৈতিকতা আশা করা যায় না কারন একমাত্র ধর্ম ই নৈতিকতার প্রসূতী ।আমাদের বর্তমান সময়ে দুই ভাবে নৈতিকতা আশা করা হয় এক ধর্ম দুই নাস্তিক্যবাদ ।চেষ্টা চলছে ২য় টির মাধ্যমে নৈতিকতা অর্জনের ।এখানেই আমাদের পরাজয় কারন ২য় টির জন্য কারো কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা থাকে না । নৈতিকতা অর্জনের একমাত্র পথ প্রথমটি মানে ধর্ম কারন সেখানে রয়েছে আমাদের প্রতিটি কর্মের জন্য একজনের কাছে দায়বদ্ধতা ।আর বর্তমান সময়ে ধর্মকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন ভাবে যেমন উচ্চ শিক্ষায় ধর্ম শিক্ষা Optional. যে সময় টিতে একজন মানুষের নৈতিকতা ও চরিত্র সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকে ঠিক সেই সময় তাকে ধর্মহীন করা হচ্ছে !
আবার মাধ্যমিক পর্যায়ে ধর্ম মাত্র ১০০ নম্বরের একটি পত্র এবং সবচেয়ে অবহেলিত বিষয়ের একটি ,সপ্তাহে ক্লাস মাত্র ২বা ৩ দিন ।নেই কোন ব্যাবহারিক তাই এস এস সি পাশ করেও অনেক শিক্ষার্থী ঠিকমত অযু ও করতে পারে না ।আবারো বলছি ধুতরা গাছ থেকে আম কামনা করা বোকামী !উদাহরন আরো আছে কিন্তু পোষ্ট বড় হয়ে যাবে এজন্য .....!
নৈতিক শিক্ষা যদি এতই দরকার হয় তাহলে আধুনিক শিক্ষার সাথে ধর্ম শিক্ষা কে বাধ্যতামূলক এবং বিষয় নির্বাচন অবশ্যই নূনতম অর্ধেক অর্ধেক করতে হবে ।
৩. পরের ঘটনাটি গত শুক্রবারের বয়ান শেষে ইমাম সাহেব খুতবা পাঠ শুরু করলেন ।এসময় মসজিদে প্রবেশ করলেন উক্ত TT কলেজের কোঅডিনেটর সাহেব যার নামের আগে একটি ডক্টরেট ডিগ্রিও রয়েছে এমনিতেই বুঝতে পারছেন কত শিক্ষত এবং ক্ষমতাবান মানুষ ।Opening day তে তার বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম এত তথ্যসমৃদ্ধ বক্তব্য সত্যিই মুগ্ধ হতে বাধ্য ।এই লোকটিই যখন জুময়ার নামাজের জন্য মসজিদে প্রবেশ করলেন তখন ইমাম সাহেব খুতবা পাঠ করছিলেন ।কো অডিনেটর সাহেব মসজিদে প্রবেশ করেই পাশের লোকটির সাথে কথা বলা শুরু করলেন ।চলছে খুতবা ,সাথে সাথে উনার কথা ।মূহুর্তেই এত বড় মাপের একজন মানুষ পরিনত হয়ে গেলেন বিরক্তিকর একটি বস্তুতে ।তাদের কথা থামছেই না ।প্রায় প্রত্যেক মুসল্লি ই তাদের দিকে তাকাচ্ছিলেন কিন্তু কোন ভাবেই উনারা বুঝতে পারছেন না ।আল্লাহ এই লোকটিকে এত সম্মান দিলেন এত মেধা, জ্ঞান, দান করলেন কিন্তু তিনি আজ পর্যন্তও জানেন না খুতবার সময় কথা বলা নিষেধ । এজন্যই ডঃ মূহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেছিলেন যে 'যার কোরআনের জ্ঞান নেই সে যত বড় ডিগ্রিধারীই হোক ,সে মূর্খ ।'
বিষয়: বিবিধ
১২৭০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণটা বেশ ভালো লাগলো!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন