*** মাদানী সাহেব কী চাচ্ছেন ???***
লিখেছেন লিখেছেন প্রক্সিমা ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:১৪:৫১ রাত
বেলাল, আমার দুই বছরের জুনিয়র ।
অনেক চঞ্চল এবং বাড়ী আমাদের ঠিক পাশের গ্রামে ।
কিছুদিন একই প্রতিস্ঠানে চাকুরিরত থাকার কারনে একটি বন্ধুত্বপূর্ন সমপর্ক গড়ে ওঠে ওর সাথে।যথেস্ট সম্মান করে । কাজের ফাঁকে অনেক গল্প করতাম দুজন ।পারিবারিক অনেক সমস্যার কথা শেয়ার করতো ।ইসলামী বিষয়গুলোর প্রতি প্রচন্ড সিরিয়াস এমনকি ঢাকায় 'ইনোসেন্স অফ মুসলিম' বিরোধী মিছিলে অংশগ্রহন করেছিলো ।
এক সময় বুঝতে পারলাম সে প্রচন্ড ভাবে লীগ সমর্থক ।ওকে বোঝানোর চেস্টা করতাম সেকুলার রাজনীতি ইসলামে শিদ্ধ নয় ।আরও চেস্টা করলাম ইসলামী রাজনীতির গুরুত্ব ।সে চরমভাবে জামায়াত বিরোধী হওয়ায় মানতে চাইতো না ।সে বলতো ইসলাম নিজের মধ্যে এর মধ্যে রাজনীতি কেন ? আবার বোঝাতাম ইসলামে জামায়াত বদ্ধতার গুরুত্ব ।বলতাম তোমাকে জামায়াত করতে হবে না সেকুলার ছেড়ে যে কোন ইসলামী দলকে সমর্থন কর ।অনেক ভাবনায় পরে যেত পরের দিন এসে বলতো আচ্ছা ভাইয়া আমি যদি নামাজ, রোজা ঠিক ঠাক করি এবং দাওয়ার কাজটি ব্যাক্তিগতভাবে করি তাহলে কি হবে না ?
বলতাম তোমাকে আগে সেকুলার থেকে ফিরে আসতেই হবে যা বাধ্যতামূলক ।ওকে অনেকটাই হতাশ মনে হলো ।কিছুদিন পর আবার কথা হলো বুঝতে পারলাম ও কিছুটা হলেও সেকুলারিজম ও ইসলামের উপর পরাশোনা করেছে ।তাই সেদিন অনেকক্ষন আলোচনা শেষে বিরক্তির স্বরে বলেই ফেললো ভাইয়া কোন দলের রাজনীতিই করবো না !আমি এ ভেবে আনন্দিত হলাম যে অন্তত ওর মনে সেকুলারিজমের প্রতি ঘৃনা ধরাতে পেরেছি ।
তারপর সে ঢাকায় একটি কলেজে অনার্সে ভর্তি হয় ।অনেক দিন পর পর বাড়ীতে আসে ।আসলেই ফোন দেয় আমিও যাই সারা বিকেল বেড়াত বেড়াতে গল্প করতাম ।এখন ও আরো চঞ্চল হয়েছে পোশাক ও কথায় আরো এডভাঞ্চ ।কিছুদিন আগে ও বাড়ীতে এসেই ফোন দিলো যথারিতি বৈকাল ভ্রমন শুরু হলো ।ওর বর্তমান রাজনৈতিক চিন্তাধারা এখন কোন পর্যায়ে তা জানার জন্য আমি নিজে থেকেই রাজনৈতিক প্রসংগ তুললাম ।
এর পর যা ঘটলো তা সম্পূর্ন আমার জন্য হতাশা জনক ।আমি কথা তুলতেই ও যেনো হাতে কি পেয়ে গেলো ।ও আমাকে বললো ভাইয়া মতিউর রাহমান মাদানীর লেকচার শুনেছেন ?
অনেক তো সাঈদীর প্রশংসা করেন ,রাজাকারটা সারা জীবন যা ওয়াজ করছে সব বানোয়াট ।আপনার পেনড্রাইভটা দিয়েন লেকচারটা বাড়ী গিয়ে দেখে চিন্তা করুন এরা কত খারাপ ! ও আরেকটা কথা মাদানি আরো বলেছেন ,কোন শাসক যতক্ষন পর্যন্ত সরাসরি আল্লাহকে অস্বীকার না করবে তার বিরোধীতা করা যাবে না ।বুঝতে আর কষ্ট হলো না যে ওর পেছনে ব্যায় করা আমার সমস্ত প্রচেস্টাই শেষ হয়ে গেছে !
মাদানী সাহেবের লেকচার যেন ওকে অনেক বড় কষ্ট থেকে মুক্তি দিয়েছে ।ও এবছর স্থানীয় ছাত্রলীগের কমিটি নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছিলো এবং এ নিয়ে সে বেজায় গর্বীত !
এবার আসি আসল কথায় ,আহলে হাদিস আন্দোলনের ভাইদের অনেক ভালো লাগে অনেক কারনে । বিশেষ করে তাদের শিরিক বিদাত বিরোধীতা, যা তাদের আন্দোলন ছাড়া এ পর্যায়ে নিয়ে আসা অসম্ভব ছিল ।কিন্তু কিছু ব্যাপারে তাদের বারাবারি সমর্থন যোগ্য নয় ।মাদানী সাহেব ও আহলে হাদিসের অন্যন্য ভাইদের দাওয়ার ধরনে আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে ।আপনি হতবাক না হয়ে পারবেন না যদি তার সাঈদী বিরোধী লেকচারটি দেখেন ।আমি বলছি না যে সাঈদী সাহেবের ভুল নেই ।আমার মতে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর চেয়ে বেশী সমালোচনা হজম করার শক্তি আর কোন দলের নেই ,তারা সমালোচনাকে প্রমোট করে ।
কিন্তু একি style এর দাওয়া !
যেখানে তিনি সাঈদী সাহেবের ভুলগুলো ব্যাখ্যা করছেন এবং পাশাপাশি সাঈদি সাহেবের সেই ভিডিউ ফুটেজ গুলো দেখিয়ে দিচ্ছেন ।
বিশ্বর অন্যকোন দায়ী এমন করেছেন ?
কি মারাত্বক ! মাদানী সাহেব কি কখোনো ভেবে দেখেছেন যে সাঈদী সাহেব কোন সময় থেকে তার দাওয়া মিশন শুরু করেছেন এবং মাদানী সাহেব কোন সময় থেকে শুরু করলেন ?
উনি তো এমন এক যুগে তার দাওয়া শুরু করেছেন যখন তিনি টিভি সেটের সামনে এসি স্টুডিও তে বসে কাজ করছেন ।
এমন এক সময়ে তিনি কাজ করছেন যখন মাত্র কয়েকটি আঙ্গুলের চাপেই কোরান হাদিস সহ যাবতীয় তথ্য তার চোখের সামনে হাজির হয়ে যাচ্ছে ।
মাদানী সাহেব কি একবারো চিন্তা করলেন না যে উনি যে তথ্যগুলো কয়েকটি আঙ্গুলের চাপেই পেয়ে যাচ্ছেন তা সংগ্রহ করতে সাঈদী ও তার সমসাময়িক দায়ীদের কতটুকো কষ্ট ও পরিশ্রম করতে হয়েছে ?
দাওয়া দিতে গিয়ে সাইদী সাহেব হয়তো কিছু দূর্বল তথ্য গ্রহন করেছেন যা সম্পূর্নই অনিচ্ছাকৃত ।তিনি বাংলায় ইসলামের কঠিনতম দিন গুলোতে মানুষগুলোকে আলো দেখিয়েছেন ।শত শত জাহান্নামগামী মুশরীকদেরকে আল্লাহ সঠিক পথে এনেছেন তার মাধ্যমে ।
মাদানী সাহেবের লেকচারটি বিভ্রান্তিকর এবং আক্রমনাত্বক ।তিনি নিজের জ্ঞানকে জাহির করার জন্যই সাঈদী সাহেবকে ছোট করেছেন ।
উনার লেকচার বেলাল এর মত হাজার তরুনকে ইসলামের মূল স্পিরিট থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ।
বিষয়: রাজনীতি
১৬১০ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি শুনেছি, যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মাঞ্জুরে এলাহি স্যার, ইব্রাহীম স্যার,আবদুররাজ্জাক, ডা. জাকির নায়েক, আরও অনেক উস্তাজ আছে যারা বেদায়াতিদের বিরুদ্ধে কোরআন ও সহী হাদীস দিয়ে জিহাদকরে যাচ্ছেন।তাদেরকে আল্লাহ রহম করুন ।
কিন্তু এই লোকটার লেকচারগুলি দেখেশুনে মনে হয়েছে সে মসুলমাদের উপর খুব ক্ষেপ্যা, যেমন ক্ষেপ্যা ইহুদি ও 'র' চালিত মিড়িয়া গুলি।
বড়ি লেংগুয়েজও হিংসুক টাইবের। মুসলমানদের ভিতর বিদ্ধেষ ছড়ানো মতিউর রহমান জনপ্রিয় জনন্দিত সাঈদীকে কলংকিত করার আপ্রান প্রচেষ্টা যথেষ্ট সন্দেহ জনক
ইন্ডিয়ার মুর্শিদাবাদের মতি. সাহেব ওদের চালিত মিড়িয়া কিনা খোঁজ করে বের করা দরকার। কারন সে উম্মাহতে বিভ্রান্তি চড়াতে কিছুটা সফল হয়েছে।
মতিউর রহমান সাহেব টাকার বিনিময়ে সউদিতে এসি ওয়ালা রুমে বসে বিদ্বেষপুর্ন খবর প্রচার করিতেছে। সউদি আলেমদেরকে মতি. সাহেবের ব্যপারে রিপোর্ট করন।
আপনার পোস্টের জন্য জাযাকাল্লাহ খায়ের।
ভাই ভিডিওটির লিংটি একটু দিন। দেখা দরাকার এত বড় কথা!
ধন্যবাদ
যে লোক পরামর্শ কোনটা আর গীবত কোনটা সে টুকু জ্ঞান রাখেনা তাঁর জন্য আল্লাহর হেদায়ত কামনা ছাড়া আর কি বা করতে পারি। তবে এই হিংসুক টাইবের ইন্ডিয়ান মৌল্লাটা শিরিকের বিরুদ্ধে আপোষহীন।সেই জন্য তাঁর একটা ধন্যবাদ পাওয়া উচিত।
তিনি রসুল (সা) কে গীবতকারী(!) বলার কে?
আপানি একটু কষ্ট হলেও তার ভিডিওটি দিন নিজের চোখে দেখি আর নিজের কানে শুনি তিনি কে বলেছেন। আমার নিচের কমেন্টসে রিপ্লাই দিয়েন।
যাগগে ইসলামের খাতিরে হাদিয়া দেওয়াও সুন্নাত। কিন্তু শুধু মাওলানা সাঈদী কেন, কোন দল ও মতকেই ছাড়েন নি, সবাইকে হয়তো বেদাতী, নতুবা শিরকি, নতুবা ফিরকায়ে বাতেলা বলে ফতোয়া দিচ্ছেন।
আমি বিশ্বাস করি, মানুষ বলতেই ভুলকারী, তাই তার ভূলগুলো সংশোধনের নিয়্যাতে সুন্দর ভাষায় আহবান করা যেতে যাবে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ সুন্দর মার্জিত ভাষা ও হেকমতের সাথে মানুষকে সঠিক পথে আহবান করো।
মাওলানা মাদানী সাহেব এর বলা এবং বাচন ভঙ্গি এমন যে, একমাত্র তিনিই হকের উপর আছেন, বাকি সবাই বাতিল, বিদাআতী, শিরকি ইত্যাদী। এমন ভাবে কি ইসলামের দাওয়াহ চলে?
ওনার মতে তাবলীগ জামাত মুসলিম নয়, ইলিয়াসী ধর্ম।
ওলামায়ে দেওবন্দ শিরকি, হানাফি মাযহাব শিরকি, বিদাতি। হাজী ইমদাদ উল্যাহ মুহাজিরে মক্বীর এক বই থেকে রেফারেন্স দিলেন, ওলামায়ে দেওবন্দ নাকি শিরকি আকিদায় ভরপুর।
আমার চৌদ্দ গোষ্ঠী ওলামায়ে দেওবন্দের সাথে সম্পৃক্ত, অথচ আমি জিবনেও এমন কথা শুনিন।
যাই হোক, আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুক।
আমি যা দেওবন্দে দেখেছি – শাইখ মুখলেস বিন আরশাদ দেওবান্দি মাদানী।
অথবা এখানে দেখুন:
https://www.youtube.com/watch?v=PxMBL9-6GME&list=PLJVUjc-XelvjQf18ZSEiAjyJSRXxnlPsm
ম্যাসেজ পৈছানো কাজ তাই পৈছালাম। আল্লাহ দেওবান্দের আকাবীরদের ভুলকে স্বীকার করার ও তওবা করার তাওফিক দিন এই দুআ করি।
এই লেকচার দাতা নিজেই দেওবান্দের ছাত্র। বাংলাদেশী কওমী নয়, ভারতের দেওবান্দ।
তিনি আমার পীরসাহেব চরমোনাইয়ের ও অনেক ভুল ধরেছেন। আমার পীরের ভুল আমি মানতে পারি না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন