৬১ টি মতবিরোধ মাসয়ালা সত্যই কি ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর?

লিখেছেন লিখেছেন আলিম হায়দার চৌধুরী অনিক ০৯ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:০৯:৪০ রাত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

(পরম করুণাময় আল্লাহ সুবানুওয়াতায়ালার নামে শুরু করছি)

অসংখ্য দুরুদ ও সালাম পেশ করছি হযরত মুহাম্মদ (সঃ)এর ওপর,এবং তাঁর সাহাবাদের প্রতি।

পবিত্র মহাগ্রন্থ আল কোরাআন হচ্ছে মহান আল্লাহর পাঠানো কিতাব যা এখনো অবিকৃত অবস্থায় আছে ,যা নাযিল হয়েছিলো রাসুল সঃ এর ওপর মানব জাতির মুক্তির জন্যে

যা আল্লাহ পাক নিজেই স্বীকৃতি দিয়েছেন।

আল্লাহপাক পবিত্র কুরাআনের সুরা বাকারাহ ১ থেকে ২ নং আয়াতে বলেছেন,

“আলিফ লাম মীম।এটা এমন এক কিতাব,যার মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই,এটি হছে আল্লাহভীরুদের জন্যে পথ

প্রদশক।

প্রতিটি মুসলিম এর এই আয়াত মনে রাখা জরুরী।

কোন মুসলিম যদি এই কথা বিশ্বাস না করে তার ঈমান এর ত্রুটি প্রকাশ পাবে,কোনভাবেই এই কুরাআনের অবমাননা যাতে না হয় সে দিকে খুব যত্নসহকারে খেয়াল রাখতে হবে।

আমাদের মুসলিমদের মাঝে এখন (আমি আমার দেশের কথা বলি)

মাযহাব আবার মাযহাব বলতে আমাদের দেশে হানাফী মাযহাবই অধিক গ্রহণযোগ্য।এই হানাফী মাযহাব এর সবথেকে বিশুদ্ধ কিতাব হচ্ছে (আল হিদায়া ও কুদুরী),হানাফি মাযহাবের অনুসারীদের কাছে।

হানাফী মাযহাবের কিতাব আল হিদায়া স্বম্বন্ধে প্রথম যেই মন্তব্য শুনে আমার মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়, তার ঊল্লেখ করছি

(নিশ্চিতভাবে হিদায়া কিতাবখানা নিরভুল ভাবে কুরাআনের মত।নিশ্চয় এই কিতাবখানা তার আগের রচিত শারীয়াতের সকল গ্রহ্নরাজীকে রহিত বা বাতিল করে দিয়েছে।)

রেফারেন্সঃ {হিদায়া মুকাদ্দামা, আখিরাইন ৩য় পৃষ্ঠা,হিদায়া ৩য় খন্ড ২য় ভলিউম ৪ পৃষ্ঠা আরবী,মাদ্রাসার ফাজিল ক্লাসের পাঠ্য হিদায়া ভূমিকা ৬ পৃষ্ঠা,আরাফাত পাব্লিকেশন্স}

একটু খেয়াল করে দেখুন এখানে উল্লেখ করেছে কোনো ভুল নেই এবং কুরানের মত,আবার তার আগের সব কিতাব কে রহিত করে ফেলেছে।

চিন্তা করে দেখুন কত বড় পরিমাণ দুঃসাহসিক কথা, আল্লাহর কিতাব এর মত ,আবার সব গ্রন্থকে রহিত করেছে,আমরা সবাই জানি কুরাআন হচ্ছে হিদায়ার আগের কিতাব ।তাহলে কি কুরাআন কেও রহিত করে ফেলেছে আল হিদায়া? নাউজুবিল্লাহ।

আমার এক ভাই আমাকে বলেছিলেন শুধুমাত্র হিদায়াতেই আছে ৬১ টি মত বিরোধ মাসয়ালা।

তিনি আমাকে ১৩ টি মত বিরোধ মাসয়ালার ব্যাপারে আবিহিত করেন ।

তখন আমি এই ব্যাপারে জানার জন্যে আগ্রহী হয়ে উঠি।

সেই ৬১ টি মত বিরোধ মাসয়ালাই আমার লেখায় আনার চেষ্টা করেছি।

ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর খুব কাছের দুই বিখ্যাত ছাত্র ছিলেন ইমাম আবু ইউসুফ এবং ইমাম মুহাম্মদ। এই দুই ছাত্রের সাথে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর শারিয়াতের অনেক বিষয়ে ছিলো মত বিরোধ ।

নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো যা হিদায়া ও কুদুরীতে প্রকাশ পেয়েছে।

০১

যে কোনো ভাষায় সালাতের (ক্বিরাআত) তিলাওয়াত করলে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে উত্তম যদিও সে আরবী ভাষা জানে।কিন্তু আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদ এর নিকট তা নাযায়িজ। (হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১০২ নং পৃঃ)

০২ত

সালাতে রুকু থেকে উঠে রাব্বানা লাকাল হামদ বলা ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে নাজায়িজ ।কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদ এর নিকট জায়িজ। (হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১০৬ নং পৃঃ

)

০৩

সালাতের ভিতর ঘায়ের পট্টি খুলে গেলে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে সালাত নষ্ট হয়ে যায়।কিন্ত ।কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদ এর নিকট সালাত নষ্ট হয় না ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড১৩০ নং পৃঃ)

০৪

কুয়ার ভিতর ইঁদুর পড়ে মারা গেলে ঐ কূয়ার পানি দ্বারা ওযু করে সালাত আদায় করলে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে সালাত হবে কিন্তু ছাত্রদের মতে হবে না। (হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৪৩ নং পৃঃ)

০৫

রোগ মুক্তির জন্য হারাম জানোয়ার এর প্রস্রাব পান ক্রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মত হারাম তবে আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ এর মত হালাল।

(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৪২ নং পৃঃ)

০৬

নবিজের মদের দ্বারা ওযু করা ইমাম আবু হাইফা রহঃ এর মতে জায়িয কিন্তু মুহাম্মদের নিকট নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৪৮ নং পৃঃ)

০৭

ঠাণ্ডার ভয় হলে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করা ইমাম আবু হানিফা এর মতে জায়িয কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদের মতে নাযায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৪৯ নং পৃঃ)

০৮

কুরাআনে যেসব মেয়েদের বিবাহ করা হারাম ইমাম আবু হানিফা এর মত অনুসারে কেউ তাদের বিবাহ করলে বা যৌন চাহিদা মিটালে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে কোনো হদ বা শাস্তির দরকার নেই ।কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদের মতে হদ বা শাস্তির দিতে হবে ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৫১৬ ন পৃঃ)

০৯

কোন ব্যক্তি যদি কোনো স্ত্রীর ম্লদ্বারে যৌন চাহিদা মিটায় তবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে কোনো কাফফারা দ্দিতে হবে না ।কিন্তু মুহাম্মদের মতে দিতে হবে।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড৫১৬ নং পৃঃ)

১০

ইমাম সাহেব যদি কুরাআন হাতে নিয়ে সালাতের ক্বিরাত তিলাওয়াত করে তবে ইমাম আবু হানিফা এর মতে সালাত নষ্ট হয়ে যাবে।তবে ইমাম আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদের মতে সালাত নষ্ট হবে না।

(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১৩৭ পৃঃ)

১১

যদি নফল সালাত আট রাকাআত এক সালামে আদায় করে তবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে তা জায়িজ হবে ।কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের এর মতে চার রাকাত এর বেশি আদায় জায়িজ হবে না।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১৪৭ পৃঃ)

১২

কোনো ব্যক্তি দাড়িঁয়ে সালাত আদায় আরম্ভ করলে যদি কোন কারণ ছাড়াই বসে সালাত আদায় ক রে তবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে সালাত হয়ে যাবে ।কিন্তু আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদের হবে না।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১৫০ পৃঃ)

১৩

খেজুর ভিজানো পানি যাতে ফেনা ধরে গেছে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে জায়িজ।কিন্তু ইমাম মুহাম্মদের মতে নাজায়িজ।(হিদায়ার ১২৯৯ হিজরী মোস্তাফায়ী ছাপা ১ম খন্ড ৩০ পৃঃ)

১৪

খেজুর ভিজানো পানি যাতে ফেনা ধরে গেছে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে হালাল ।কিন্তু আবু ইউসুফ এর মতে হালাল নয়।(হিদায়ার ১২৯৯ হিজরী মোস্তাফায়ী ছাপা ১ম খন্ড ৩০ পৃঃ)

১৫

ইমাম আবু হানিফা এর মতে তায়াম্মুম এর নিয়ত ক রা ফরয।কিন্তু যুফরের মতে ফরয নয়।(হিদায়ার ১২৯৯ হিজরী মোস্তাফায়ী ছাপা ১ম খন্ড ৩৪ পৃঃ)

১৬

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে ছায়া দ্বিগুন হওয়ার পর হতে আসরের সালাতের সময় আরম্ভ হয়।কিন্তু আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মদ এর মত একগুন হওয়ার পর হতেই আসরের সময় আরম্ভ হয়।(হিদায়ার ১২৯৯ হিজরী মোস্তাফায়ী ছাপা ১ম খন্ড ৩৪ পৃঃ)

১৭

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে সালাতে সিজদার সময় নাক বা কপাল যে কোন একটি মাটিতে ঠেকালেই সালাত জায়িজ হবে ।কিন্তু ইমাম মুহাম্মদের মত নাক ও কপাল ঊভয়ই ঠেকাতে হবে ।(হিদায়ার ১২৯৯ হিজরী মোস্তাফায়ী ছাপা ১ম খন্ড ৯০ পৃঃ)

১৮

শারাব পানকারি মুখের দুর্গন্ধ বিদুরিত হওয়ার পর সে যদি স্বীকার করে যে আমি শারাব পান করেছি, তাহলে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে তার প্রতি হদ জারী করা ওয়াজিব হবে না ।কিন্তু মুহাম্মদ এর মতে হবে ।(হিদায়ার ১২৯৯ হিজরী মোস্তাফায়ী ছাপা ১ম খন্ড ৫০৭ পৃWinking

১৯

মদ খোর মুখের বাজে গন্ধ দুরীভুত হওয়ার পর সাক্ষ দ্বয় যদি বলে হ্যাঁ সে মদ পান করেছে তাহলে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে তার ইপ র শাস্তি জারি ক রা ওয়াজিব হবে না।কিন্তু মুহাম্মদের মতে হবে।(হিদায়ার ১২৯৯ হিজরী মোস্তাফায়ী ছাপা ১ম খন্ড ৫০৭ পৃঃ)

২০

ইবনু আব্বাস রাঃ , রাসুল (সঃ) ঘোড়ার মাংস কে হালাল বলেছেন,কিন্তু ইমাম আবু হানিফা রহঃ মাকরুহ মনে করেন।কিন্তু মুহাম্মদ ব লেন ,আমি ইমাম আআবু হানিফা রহঃ এর এ ক থাটি মানিনা,কারণ বহূ হাদীসে উল্লেখ আছে ঘোড়ার মাংস হালাল।((কিতাবুল আসারঃ ইমাম মুহাম্মদ)

২১

মোজার উপর মাসাহ করা ইমাম আবু হানিফা রহঃ এবং আবু ইউসুফ এর মতে নাজায়িজ।কিন্তু মুহাম্মদের নিকট জায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৬১ পৃ)

২২

একটি স্ত্রী লোকের পেটে দুটি সন্তান হলে একটি সন্তান হওয়ার ৪০ দিন পরে দ্বিতীয় স ন্তান হ লে ইমাম আবু হানিফা ও আবু ইউসুফ এর মতে নিফাসের ইদ্দত প্রথম ছেলে হতে ধরতে হবে ।কিন্তু মুহাম্মদের মতে ২য় স ন্তান হ তে নিফাসের ইদ্দত ধরতে হবে।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৭০ পৃ)

২৩

সিরকা দ্বারা পবিত্রতা হাসিল ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও ইমাম আবু ইউসুফ এর মতে জায়িজ,কিন্তু মুহাম্মদের মতে নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৭০ পৃ)

২৪

হারাম জানোয়ার এর প্রস্রাব এক চতুরথাংস কাপড়ে লাগলে ঐ কাপড়ের সালাত আদায় ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ মুহাম্মদের মতে জায়িজ,কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ এর মতে আধ হাত প্রস্রাব লাগলে জায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৭৫ পৃ)

২৫

হাতের তালু পরিমাণ নাপাক লাগিয়ে সালাত আদায় করা ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও আবু ইউসুফ এর মোতাবেক জায়িজ।কিন্তু মুহাম্মদের নিকট নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৭৭ পৃ)

২৬

এক চতুথাংশ রান খুলে সালাত আদায় ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের মত হল জায়িজ।কিন্তু আবু ইউসুফের নিকট নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশ রাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৯৩ পৃ)

২৭

তাকবির তাহরিমায় আল্লাহু আকবার না বলে সুবানাল্লাহ আর রাহমান ব লে সালাত আদায় আরম্ভ ক রা ইমাম আবু হানিফা ও মুহাম্মদের মতে নাজায়িজ,কিন্তু আবু ইউসুফের নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১০১ পৃ)

২৮

ফারষী ভাষায় তাক বীর ব লে সালাত আদায় ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও আবু ইউসুফ এর মতে জায়িজ।কিন্ত মুহাম্মদের নিকট নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশ রাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১০১ পৃ)

২৯

রুকু সিজদায় হতে উঠে দেরী ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের নিক ট এর মতে ফারয নয় কিন্তু আবু ইউসুফের নিকট ফারয।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১০৭ পৃ)

৩০

সালাতের মধ্যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বললে ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের মতে সালাত নষ্ট হয়ে যায়।

কিন্তু আবু ইউসুফের নিকট সালাত নষ্ট হয় না।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১৩৭ পৃ)

৩১

দাঁড়ি খিলাল ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের নিক ট জায়িজ, কিন্তু আবু ইউসুফের নিকট সুন্নাত।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ১৯ পৃ)

৩২

ব্যবহার করা পানি দ্বারা নাপাকী পরিষ্কার করা ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মত জায়িজ কিন্তু মুহাম্মদের নিকট নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৩৯ পৃ)

৩৩

ছাগল যদি কুয়ার ভিতর প্রস্রাব করে তবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও আবু ইউসুফের মত সেই কুয়ার পানি ছেঁচে ফেলতে হবে কিন্তু মুহাম্মদের মত হবে না।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৪২ পৃ)

৩৪

পাথর ইট দ্বারা তায়াম্মুম ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও আবু ইউসুফের মতে নাজায়িজ।কিন্তু মুহাম্মদের নিকট জায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৫১ পৃ)

৩৫

অন্য উপাসনার ব্যক্তি যদি ইসলাম গ্রহণ করার জন্য তায়াম্মুম করে ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের মত জায়িজ ।কিন্তু আবু ইউসুফের মত নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৫২ পৃ)

৩৬

ওযু করে সালাত শুরু করে যদি ওযু নষ্ট হয়ে যায় তবে ওযু না করে তাহাম্মুম ক রে সালাত আদায় ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের এর মত জায়িজ কিন্তু আবুই ইউসুফের এর মত নাজায়িজ।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৫৪ পৃ)

৩৭

ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের মতে তায়াম্মুম ক রে সালাত আদায় ক রার প র যদি পানি পাওয়া যায় তবে আবার ওযু ক রতে হবে।কিন্তু আবু ইউসুফের মত হবে না।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ৫৫ পৃ)

৩৮

ফাজরের দু রাকাত সুন্নাত যদি বাদ পড়ে যায় তবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মত সে সুন্নাত আর আদায় ক রতে হবে না।কিন্তু মুহাম্মদের মত সে সুন্নাত দুপুরের আগে পুরণ ক্রতে হবে।(হিদায়ার ১৪০১ হিজরী আশরাফী হিন্দ ছাপা ১ম খন্ড ২১৯ পৃ)

৩৯

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মত ছায়ায়ে আস্লী ব্যতীত প্রত্যেক জিনিসের ছায়া তার দ্বিগুন হলেই যুহ রের ওয়াক্ত শেষ হয় কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের মত প্রত্যেক জিনিসের ছায়া তার সমান হলেই যুহরের ওয়াক্ত শেষ হয়।((আরবী,উরদু, ও বাংলা, কুদুরী ১ম খন্ড ৩০ পৃঃ,অনুবাদকঃমাওলানা রিদওয়ানুল হক ইসলামাবাদী এম এম এম এফ আর এস গোল্ড মেডেলিস্ট)

৪০

সুযাস্তের প র আকাশের লালিমা দূর হয়ে গেলে আকাশ প্রান্তে যে সাদা আভা দেখা যায় ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মত উহাই শফক ।কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের লালিমাকেই শফক বলা হয়।শফক বিদূরিত হলেই ইশা সালাতের ওয়াক্ত আরম্ভ হয়। (ঐ ৩১পৃঃ)

৪১

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে সালাতের জন্য কিরাতের নিম্নতম পরিমাণ এতটুকু কুরানের আয়াত হওয়া চাই যাকে অন্তত কুরানের আয়াত বলা যায় ।কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের মত ছোট তিন আয়াত বা বড় এক আয়াতের কম হলে চলবে না।(ঐ ৪৩ পৃঃ)

৪২

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে বৃদ্ধা নারীদের জন্য ফাজর, ইশা, মাগরীব সালাতের জামায়াতে যেতে কোনো ক্ষতি নেই ।কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের বৃদ্ধা রমণীদের জন্য স্ক্ল সালাতে জামায়াতে যাওয়া দুরস্ত আছে।(ঐ ৪৫ পৃঃ)

৪৩

যদি সালাতে নিদ্রা আসে এবং সে নিদ্রিত অবস্থায় স্বপ্ন দোষ হয় বা ফাজরের সালাত আদায় ক রা অবস্থায় সুরয উদয় হয়ে গেছে অথবা পট্টির উপর মাসাহ করা ছিলো কিন্তু এখন পট্টি পড়ে গেছে বা সে ইস্তিহাযা রোগী ছিলো কিন্তু ভালো হ ইয়ে গেছে এ সকল অবস্থায় সালাত নষ্ট হয়ে যাবে।কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের মতে সালাত নষ্ট হবে না।(ঐ ৪৮ পৃঃ)

৪৪

যে কোনো অবস্থায় ণৌকায় বসে বসে সালাত আদায় ক রা ইমাম আবু হানিফা রহঃ মত জায়িজ।কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের নিকট বিনা কারণে জায়িজ নেই।(ঐ ৬৪ পৃঃ)

৪৫

জুমুয়ার সালাত আদায় করার মনস্থ ক রে সালাত আদায় ক রার জন্যে যাত্রা ক রলে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মত যুহ রের সালাত বাতিল হয়ে যায়,কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের এর মত সে ইমামের যোগ না দেওয়া অব্দি তার যুহ রের সালাত বাতিল হবে না।(ঐ ৬৭ পৃঃ)

৪৬

ঈদুল ফিতরের ঈদ্গাহে উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করতে হয় না কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের এর মতে পাঠ করতে হবে।(ঐ ৬৯ পৃঃ)

৪৭

সুরুজ গ্রহণের সালাতে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে কিরাত ম নে ম নে তিলাওয়াত ক রতে হ বে কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের ক্বিরাতের উচ্চস্বরে তিলাওয়াত করতে হবে ।(ঐ ৭২ পৃঃ)

৪৮

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে ইস্তিকার সালাতে জামায়াতে আদায় করলে চলবে না।ইস্তিকার সালাত একা একা আদায় করতে হবে ,কিন্তু আবু ইউসুফ অ মুহাম্মদের নিকট ইমাম সাহেব সকলকে নিয়ে জামায়াতে দুই রাকাত আদায় করবে।(ঐ ৭৩ পৃঃ)

৪৯

কোনো নাপাকী ব্যক্তি শহীদ হলে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে তাকে গোসল ক রাতে হবে । তেমনিভাবে নাবালিগ শহীদ হলেও গোসল করতে হবে।কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের নিকট গোসল করতে হবে না।(ঐ ৮২পৃঃ)

৫০

ইমাম আবু হানিফা এর ম তে =চল্লিশের উপ রে ষাট অ ব দি আনুপাতিক হারে যাকাত দিতে হবে কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের মত হলো যাকাত দিতে হবে না।(ঐ ৯০ পৃঃ)

৫১

ইমাম আআবু হানিফা রহঃ এর মতে শুধু পুরুষ জাতীয় ঘোড়ার যাকাত দিতে হয় না কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ এর মত ঘোড়ার যাকাত দিতে হয় না।(ঐ ৯২ পৃঃ

)

৫২

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে দু”শত দিরহামের উপর চল্লিশের কম হলে অতিরিক্ত রৌপের যাকাত দিতে হবে না,কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের মতে দু’শত এর বেশী হলে তার যাকাত ঠিক সে হারেই হিসেব করে দিতে হবে।(ঐ ৯৪ পৃঃ)

৫৩

যমীনে উত্তপ্নন ফসল বেশী হোক এবং তা নদী বা ঝরণার পানি কিংবা বৃষ্টির পানিতে উতপ্নন হোক ও ফল কম হোক বা বেশী হোক তার দশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের মতে অন্তত পাঁচ অস ক উদ্ধৃত না হলে দশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে না।(ঐ ৯৭ পৃঃ)

৫৪

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে সোনার দাম ধ রে রৌপের সাথে যোগ ক রতে হবে যাতে নিসাব পূরন হয়।কিন্তু সাহেবাইনের মতে সোনার দাম ধ রে নিসাব পুরণ ক রার জন্য রৌপের সাথে যোগ করা চলবে না।(ঐ ৯৭ পৃঃ )

৫৫

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে স্ত্রী স্বামীকে যাকাত দিতে পারবে না কিন্তু সাহেবাইনের মতে স্ত্রী স্বামীকে যাকাতের মাল দিতে পারবে।(ঐ ১০০ পৃঃ)

৫৬

ইমাম আবু হানিফার মতে বিনা ওয রে মসজিদের বাহিরে এক ঘন্টা থাকলে ইতিক্বাফ নষ্ট হয়ে যাবে কিন্তু সাহেবাইনের মতে আধ বা ছয় ঘন্টার বেশি থাকলে ইতিক্বাফ নষ্ট হবে বা হবে না।(ঐ ১১৩ পৃঃ)

৫৭

দুইজনে একজন কে একটি ঘর দান করলে তা জায়িজ হবে।আর যদি একজন দুজন কে একটি ঘর দান করে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে তা জায়িজ কিন্তু সাহেবাইনের মতে নাজায়িজ।(ঐ ১৪৯ পৃঃ)

৫৮

ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে বিবাহের ব্যাপারে কাউকে কসম দেওয়া যাবে না কিন্তু সাহেবাইনের মতে যাবে।(ঐ ১৪৯ পৃঃ)

৫৯

যদি আইয়্যামিন এর স্থলে আল আইয়্যিম বলে তাহলে ইমাম আবু হানইফা রহঃ এর মতে দশ দিন হবে কিন্তুসাহেবাইনের মতে সাত দিন হবে।(ঐ ১৩৮ পৃWinking

৬০

ইমাম আবু হানিফা রহঃ ও মুহাম্মদের মতে পুরুষ এর মুত্রনালীতে ঔষধ দিলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে কিন্তু আবু ইউসুফের মতে হবে না।(ঐ ১০৮ পৃঃ

)

৬১

তাকবিরের বদলে আল্লাহু আজাল্লা বা আল্লাহু আযম বা আর রাহ মানু আক বার বললে ইমাম আবু হানিফা ও মুহাম্মদের মতে সালাত শুদ্ধ হবে কিন্তু আবু ইউসুফ এর মতে আল্লাহু আকবর ব্যতীত অন্য কিছু বলা যাবে না।(ঐ ৩৭ পৃঃ)

বেশীরভাগ আলেম ওলামাদের মতে ইমাম আবু হানীফা তাবেয়ীন ছিলেন একজন তাবেঈনের পহ্ম এ কি এই ধ রনের মাসয়ালা দেয়া সম্ভব? অনেকগুলি মাসয়ালা কুরাআন এবং

হাদীসের বিপরীত?

তাহলে কি এটা ধারণা করা যায় না যে এই হিদায়া ও কুদুরীতে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর যেসব মাসয়ালার উল্লেখ করেছেন তা ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর নয়?

যা আজও তাঁর মাযহাবের নামে চালু রেখেছে কিছু ......।।

আল্লাহ আমাদের কুরাআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে

সুন্নাহ মোতাবেক চলার তৌফিক দান করুক,আমীন...।।

(আল্লাহ সুবানুওয়াতায়ালা যদি তৌফিক দেন তাহলে এই সব মাসালার সঠিক রেফারেন্স নিয়ে লেখার ইচ্ছা আছে)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

বিষয়: বিবিধ

২৩০৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

345113
০৯ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৩:২৩
খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ লিখেছেন : আপনি শুধু ৬১ টি দেখালেন? এত কম?
মতবিরোধ থাকা আপনার কাছে গ্রহযোগ্য নয়। আপনি হানাফি হতেই পারেন না ধন্যবাদ আপনাকে। তবে
আপনি আহলে হাদিস যদি হয়ে থাকেন তাহলে আহলে হাদিসের প্রসিদ্ধ ওলামাদের মধ্যে আমি যদি ৬২ আথবা তার চেয়েও বেশি মতবিরোধ দেখাতে পারি তাহলে আপনি আবার নতুন করে কোন দলে যাবেন?
উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন আশা করি।
ফেকাহ মেনে চললে মতবিরোধ হয়। তাই আপনি হাদিস মেনে চলেন। তাও সহীহ হাদিস। ধন্যবাদ আপনাকে। আমি যদি সহীহ হাদিসের মধ্যে বা সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মতবিরোধ দেখাতে পারি তাহলে আপনি কোন দলে যাবেন? আশা করি উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।
০৯ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ০৯:১৫
286365
আলিম হায়দার চৌধুরী অনিক লিখেছেন : Ami nije k hanfi dabi kori naiii...apni ekhane bolechen fikh er kotha,fikh j sudhu rai er mooto hobe seta kibhabe bollen,sahib hadith er alone fikh sastro ache seta ki janen,apni bollen ami kin dike jabo,obossoi ami softer dikei fire jabo allah o rasul sm er pothe,,inshallah,sahabader moot parthoko ache ekhn prosno holo sahaba ra ki ski n ek amol korechen
345153
০৯ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ১২:২০
আবু জান্নাত লিখেছেন : ভাইয়া, মাযহাবী ও হানাফী মাযহাবীদের অনেক মাসআলা পড়লাম। এখন কথা হল কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে উল্যেখিত ৬১টি মাসআলাম সঠিক সমাধান কি হবে? জানতে চাই।
যদি জানাতে পারেন, শুকরিয়া জানাবো, কৃতজ্ঞ থাকবো।
অপেক্ষায় রইলাম..........

০৯ অক্টোবর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৬
286408
আলিম হায়দার চৌধুরী অনিক লিখেছেন : জি ভাই আমার ইচ্চা আছে
আল্লাহ তৌফিক দিলে সেটার চেষ্ঠা করবো জানানোর ইনশাল্লাহ
আর সেই ইচ্ছাটার কথা কিন্তু আমি আমার লেখার শেষে উল্লেখ করেছি।

এই মতবিরোধগুলো বের করতে আমার এক মাসেরও বেশী সময় লেগেছে
আর সবগুলোর সঠিক রেফারেন্স কি হবে তা বের করতে অবশ্যই দেরী হতে পারে।
১০ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:৩৭
286482
আবু জান্নাত লিখেছেন : অপেক্ষায় রইলাম..........
345162
০৯ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০৩:৫১
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : আপনাকে প্রশ্ন করা হয়েছে:
আমি যদি সহীহ হাদিসের মধ্যে বা সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মতবিরোধ দেখাতে পারি তাহলে আপনি কোন দলে যাবেন?

উত্তর একদম সহজ: ফারুদ্দু ইলাল্লাহী ওয়ার রসুল।

আমার পীরের মুরিদ হতে চাইলে আমার পোস্ট পড়ুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File