শাদ্দাদ ও তার বেহেশত
লিখেছেন লিখেছেন নাবিক ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:১০:৫৮ বিকাল
.
সমাজে "শাদ্দাদের বেহেশত" শিরোনামে বিভিন্ন ধরনের কিসসা কাহিনী প্রচলিত আছে।
.
কেউ কেউ কিস্সাটি এভাবে বর্ণনা করেন,
শাদ্দাদ বিশাল রাজত্ব ও ধন-সম্পদের মালিক ছিলো। তার কওমের নবী তাকে দাওয়াত দিলে সে বলে,ঈমানের বদলে কী মিলবে? নবী বললেন,জান্নাত। তখন সে ঔদ্ধত্য দেখিয়ে নিজেই জান্নাত বানাতে শুরু করে দেয়।
.
৩০০ বছর ধরে সে তার জান্নাত নির্মাণ করে; তাতে বিভিন্ন ফলের গাছ লাগায়। প্রাসাদ বানায়,নহর খনন করে ইত্যাদি। এরপর সে যখন সৈন্য-সামন্ত নিয়ে তার বানানো বেহেশতের দিকে রওনা হয়। এক দিন এক রাতের রাস্তা বাকি থাকতেই আল্লাহ তাকে তার সৈন্য-সামন্তসহ ধ্বংস করে দেন।
.
কেউ বলে, জান্নাত দেখতে যাওয়ার পথে শাদ্দাদ একটি সুন্দর হরিণ দেখতে পায়। হরিণটি শিকার করতে গিয়ে সে একটু দূরে চলে যায়। এ মুহূর্তে মালাকুল মাউত হাযির হয় এবং তার রূহ কবয করে। সে তার বানানো জান্নাত নিজেও দেখতে পারে না।
.
কেউ বলে,সে তার বানানো বেহেশতে প্রবেশ করার জন্য যখন এক পা দিল,তখন দ্বিতীয় পা রাখার আগেই মালাকুল মাউত তার রূহ কবয করে ফেলে ইত্যাদি ইত্যাদি।
কারো কারো মুখে এ-ও শোনা যায়,এরপর আল্লাহ তাআলা তার ঐ জান্নাত যমিনে ধ্বসিয়ে দেন; মাটির সাথে মিশিয়ে দেন। বালুর মধ্যে যে অংশ চিকচিক করে,তা শাদ্দাদের বানানো বেহেশতের ধ্বংসাবশেষ।
.
এ ছাড়াও শাদ্দাদের বেহেশত কেন্দ্রিক আরো অনেক কথা সমাজে প্রচলিত আছে। সে বেহেশত কীভাবে বানালো, কতজন শ্রমিক লেগেছে, এর দেয়াল কিসের ছিল, ফটক কিসের ছিল, মেঝে কিসের ছিল, ইত্যাদি।
কিন্তু শাদ্দাদের বেহেশত বানানোর এই কাহিনী একেবারেই অবাস্তব ও কাল্পনিক; নির্ভরযোগ্য কোনো দলীল দ্বারা তা প্রমাণিত নয়। যারা এটি উল্লেখ করেছেন তারা ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে তা এনেছেন। এজন্যই ইমাম ইবনে কাসীর ও আল্লামা ইবনে খালদুনসহ আরো অনেকেই এ কিসসাকে অবাস্তব ও কাল্পনিক বলে অভিহিত করেছেন।
.
সূত্রঃ তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/৮০২-৮০৩;মুকাদ্দামাতু ইবনে খালদূন ১/১৭;আলইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূআত ফী কুতুবিত তাফসীর ২৮২-২৮৪
¤¤কালেক্টেড
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৮ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সনদে ঈস্রাইলীগুলোতে আজগুবি গালগল্পে পরিপূর্ণ। ইয়াহুদী নাসারাসহ আহলে কিতাবী আলেম পন্ডিতরা স্ব স্ব জাতির হেদায়তের নির্দেশনা তথা আল্লাহর দেয়া কিতাবগুলোতে বিকৃত করে সংযোজন এবং বিযোজন ঘটিয়ে রদবদল করার কারণে ইস্রাইলী বর্ণনাগুলোতে এসব আজাইরা কিচ্ছা কাহিনী স্থান পেয়েছে। সম্ভভত এসব কারণেই সর্বশেষ ও চুড়ান্ত নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাল্লাহ আলাইহী ওয়াসাল্লামের উপর নাজিলকৃত আসমানী কিতাব পবিত্র কোরআন মহান আল্লাহ তায়ালা রদবদলের হাত থেকে রক্ষা করে হেফাজতের দায়িত্ব নিজেই নিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ইংগিত রয়েছে লৌহে মাহফুজে পবিত্র কোরআনের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। শাদ্দাদ নামক আল্লাহকে অশ্বীকারকারী কোন কাফের শক্তিধর ব্যক্তি ছিল কিনা আল্লাহই ভাল জানেন।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আপনার নাম নাবিক কেন ব্লগে কোন সমুদ্রে শিপ চালাচ্ছেন
মন্তব্য করতে লগইন করুন