Rose Good Luck সুলাইমান আ. এর যিয়াফতঃ বাস্তব নাকি শুধুই মিথ? Rose Good Luck

লিখেছেন লিখেছেন আবাবীল ১১ আগস্ট, ২০১৫, ১১:২৬:০৭ সকাল



লোকমুখে প্রসিদ্ধ, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহকে বললেন, ইয়া আল্লাহ আমি সকল সৃষ্টিজীবকে এক বছর খাওয়াতে চাই। আল্লাহ বললেন, হে সুলাইমান তুমি তা পারবে না। তখন সুলাইমান আলাইহিস সালাম বললেন, আল্লাহ! তাহলে এক সপ্তাহ। আল্লাহ বললেন, তুমি তাও পারবে না। সুলাইমান আলাইহিস সালাম বললেন, তাহলে একদিন। আল্লাহ বললেন, হে সুলাইমান তুমি তাও পারবে না। একপর্যায়ে আল্লাহ এক দিনের অনুমতি দিলেন।

সুলাইমান আলাইহিস সালাম জিন ও মানুষকে হুকুম করলেন, পৃথিবীতে যত প্রকার খাদ্য শস্য আছে এবং হালাল যত প্রকার প্রাণী আছে সব হাযির কর। তারা তা করল। এরপর বিশাল বিশাল ডেগ তৈরী করা হল এবং রান্না করা হল।

তারপর বাতাসকে আদেশ করা হল, সে যেন খাদ্যের উপর দিয়ে সদা প্রবাহিত হতে থাকে যাতে খাবার নষ্ট না হয়। তারপর খাবারগুলো সুবিস্তৃত যমিনে রাখা হল। যে যমিনে খাবার রাখা হল তার দৈর্ঘ্য ছিল দুই মাসের পথ। খাবার প্রস্ত্তত শেষ হলে আল্লাহ বললেন, হে সুলাইমান! কোন্ প্রাণী দিয়ে শুরু করবে? সুলাইমান আ. বললেন, সমুদ্রের প্রাণী দিয়ে। তখন আল্লাহ সাগরের একটি বড় মাছকে বললেন, যাও সুলাইমানের যিয়াফত খেয়ে এস।

তখন মাছটি সমুদ্র থেকে মাথা উঠিয়ে বললো, হে (আল্লাহর নবী) সুলাইমান, আপনি নাকি যিয়াফতের ব্যবস্থা করেছেন? তিনি বললেন, হাঁ, এইতো খাবার প্রস্ত্তত, তুমি শুরু কর। তখন সে খাওয়া শুরু করল এবং খেতে খেতে খাবারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পৌছে গেল। সব খাবার শেষ করে ফেলল। তারপর বলল, আমাকে আরো খাবার দিন, আমি এখনও তৃপ্ত হইনি। তখন সুলাইমান আলাইহিস সালাম বললেন, তুমি সব খাবার খেয়ে ফেলেছ তাও তোমার পেট ভরেনি। তখন মাছ বলল, মেজবান কি মেহমানের সাথে এভাবে কথা বলে? হে (আল্লাহর নবী) সুলাইমান! শুনে রাখুন, আমার রব আমাকে প্রতিদিন এর তিন গুণ খাবার দেন। আজ আপনার কারণে আমাকে কম খেতে হল। এ কথা শুনে সুলাইমান আ. সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন...।

এ ঘটনাটি একেবারেই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। হাদীস, তাফসীর বা ইতিহাসের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থে এর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। তাছাড়া এ ঘটনার মাঝে এমন কিছু বিষয় আছে যা নিজেই প্রমাণ করে যে, ঘটনাটি সত্য নয়।

১. একজন নবী এমন উদ্ভট ও অযৌক্তিক আবদার করবেন তা হতে পারে না। এর অর্থ দাড়ায় আল্লাহর মাখলুক সম্পর্কে তার ন্যূনতম ধারণা নেই। একজন নবীর শানে এ রকম ধারণা করা সমীচীন নয়।

২. আল্লাহ নিষেধ করার পরও একজন নবী এরকম আবদার করতে থাকবেন। আর আল্লাহও তাকে এমন অযৌক্তিক বিষয়ের অনুমতি দিয়ে দিবেন তা কীভাবে হয়?

৩. পৃথিবীর সকল প্রাণীই কি রান্না করা খাবার খায়? মাছ কি রান্না করা খাবার খায়?

৪. ঘটনায় বলা হয়েছে, খাবার যে যমীনে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে তার দৈর্ঘ্য দুই মাসের পথ। মাছটি কি দুই মাসের পথ মুহূর্তেই অতিক্রম করে ফেলল? বা এত দীর্ঘ পথ জলের প্রাণী স্থলে থাকল কীভাবে?

৪. যে মাছের পেটে এত খাবার সংকুলান হয় সে মাছটি কত বড়!

৫.শুধু বাতাস প্রবাহিত হওয়াই কি পাক করা খাদ্য নষ্ট না হওয়ার জন্য যথেষ্ট? এ ধরনের আরো অযৌক্তিক কথা এ কিচ্ছায় রয়েছে। যা এ ঘটনা মিথ্যা হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এমন ঘটনা বর্ণনা করা যেমন বৈধ নয় তেমনি বিশ্বাস করাও মূর্খতা ছাড়া কিছু নয়।

কোনো প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াই শোনা কথা বলা থেকে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

বিষয়: বিবিধ

১৮৩০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

335107
১১ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১১:৩৫
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : জিয়াফত-মারফত -এগুলো প্রচলন বিদআদীতের থেকে শুরু যার অধিকাংশই উদ্ভট,বানোয়াট এবং মিথ্যা।
এ ধরনের আরো অনেক ভুয়া কাহিনী আছে যা আমরা গিলছি.. ধন্যবাদ।
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৩৫
277244
আবাবীল লিখেছেন : হ্যা ঠিক, ধন্যবাদ আপনাকেও।
335115
১১ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহ খাইর
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৩৬
277245
আবাবীল লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাই
335125
১১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
নৈশ শিকারী লিখেছেন : ভালো লাগলো
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৩৭
277246
আবাবীল লিখেছেন : ধন্যবাদ
335126
১১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪
আহমদ মুসা লিখেছেন : তাওরাত, ইঞ্জিল, যবুর প্রভূতি আসমানী কিতাবগুলো যেসব জাতির উপর নাজিল হয়েছিল তারা আল্লাহর সেই সমস্ত কিতাবগুলোতে বিকৃত করে নিজেরদের তৈরী মনগড়া আয়াত ডুকিয়ে দেয়। বিশেষ করে বনী ইস্রাইলের ধর্মীয় পন্ডিতরাই এসব বিকৃতির পেছনে ভূমিকা রেখেছিল বেশী। আল্লাহর নবী হযরত সোলাইমান (আ) এর ব্যাপারে যেসব অযৌক্তিক কথাবার্তা চালু রয়েছে সে সবের বেশীর ভাগই বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে এসমস্ত তথ্যগুলো সনদে ইসরাইলী থেকেই বিবৃত করা হয়েছে। বনি ইস্রাইলী ধর্মীয় নেতাদের রচিত কিতাবগুলোতেই এসব উদ্ভট কাহিনীর কথা বেশী রয়েছে। মুসলিম স্কলারদের লেখাতেও এসব কথাগুলোর রেফারেন্স দেখতে পাওয়া যায়।
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৩৮
277247
আবাবীল লিখেছেন : চমতকার মন্তব্যটির জন্য শুকরিয়া।
335128
১১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯
নাবিক লিখেছেন : তাবলেগী ভাইদের মুখে এই কাহিনী বেশি শুনা যায়।
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৩৮
277248
আবাবীল লিখেছেন : হুম ধন্যবাদ
335143
১১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০১:৫৫
হতভাগা লিখেছেন : পবিত্র ক্বুরআনে আল্লাহ তা'য়ালা সুলাইমান (আঃ) এর কাহিনী বর্ণনা করেছেন । এই ঘটনা সত্য হলে তা ক্বুরআনে থাকার কথা ছিল - আল্লাহর সাথে যেহেতু কথোপকথন হয়েছিল ।

পীর -আউলিয়ার মুরিদেরা এসব কথা বিশ্বাস করবে ।
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৩৯
277249
আবাবীল লিখেছেন : একদম ঠিক, অনেক ধন্যবাদ।
335145
১১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০১:৫৭
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৪০
277250
আবাবীল লিখেছেন : আপনাকেও
335170
১১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০৩:৪৭
ফরিদুল ইসলাম তুষার লিখেছেন : এগুলো হল মা'আরেফাতের কথা। আর মানেই বানানো গল্প।
১২ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৫:৪১
277251
আবাবীল লিখেছেন : হুম বানানো গল্প, ধন্যবাদ আপনাকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File