টাকা যার শিক্ষা তার ঃ এ কেমন বৈষম্য ?

লিখেছেন লিখেছেন অনির্বাণ আবরার ০৬ জুলাই, ২০১৫, ১২:৫১:১৬ রাত

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ৭.৫%

কর আরোপ করা হয়েছে আমরা

সবাই জানি। প্রথম যখন

শুনেছিলাম ব্যাপারটা তখনই

বেশ অদ্ভুত লেগেছিল।

আপনার ঘরে চাল নাই কিন্তু

কাপড়, আসবাবসহ অনেক কিছু

আছে। আপনি যদি চাল কেনার

জন্য ঘরের এক মাত্র ভাত

রান্না করার পাতিলটাই

বেঁচে দেন তাহলে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়? আমাদের

অবস্থা হচ্ছে তাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের

২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের

বাজেট ৪২৫ কোটি ৪০ লাখ

টাকা। (সূত্রঃ দৈনিক প্রথম

আলো) বর্তমানে ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৩৫০০। একজন শিক্ষার্থীর ৪ বছরের

গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতে,

জনগণের ট্যাক্সের কতো টাকা

খরচ হচ্ছে? উত্তরঃ একজন শিক্ষার্থীর

পিছনে বছরে খরচ হচ্ছে

১২৬৯৮৫ টাকা। তাহলে ৪

বছরে খরচ হচ্ছে ৫০৭৯৪০

টাকা।

এটা ঢাকা ইউনিভার্সিটির

হিসেব। এবার প্রাইভেট

মেডিকেলের হিসেবে। বাবার

পকেটের ২০ লক্ষ টাকা করচ

করে একজন ছেলে ডাক্তার হয়ে

অনারারী চিকিত্সক হিসেবে বছরের পর বছর ফ্রী চিকিত্সা

দিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য

ক্যাডারে বিসিএস এ চান্স

পাওয়ার হারও লাস্ট কয়েক

বছরে বেসরোকারী

মেডিকেলের ছাত্রদের বেশী। এতো খরচ করে পড়ালেখা করে

এই জীবন কোনো পাবলিক

ভার্সিটির ছাত্র বেছে নিবে

কিনা আমার জানা নেই।

বাংলাদেশে যেখানে

ডাক্তার সংকট রয়েছে সেখানে 'টাকা যার পড়া

লেখা তার্ִ মার্কা অদ্ভুত

সিস্টেম কি যগ্যতা সম্পন্ন

নতুন ডাক্তার বানাতে সক্ষম

হবে কি না সংশয় থেকে যায়।

এই সিস্টেমের আড়ালে চাপা পড়ে যাবে মেধাবীরা।

কেননা রাষ্ট্রযন্ত্র অক্ষম

থেকে যাবে মেধাবী ডাক্তার

বানাতে। চিকিত্সা তথা

সমগ্র শিক্ষা ব্যাবস্থা ধ্বংস

করতে এই সিস্টেমই যথেষ্ট। ৯২ এর বেসরকারী

বিশ্ববিদ্যালয় আইনে স্পষ্ট

বলা ছিল বেসরকারী

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হবে

একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।

মজার ছিল ব্যাপারটা। মনে পড়লে এখনো হাসি পায়।

রাষ্ট্র যখন আমার মৌলিক

সুবিধা আমাকে দিতে ব্যার্থ

হয় তখন কতিপয় ব্যাবসায়ীরা

রাষ্ট্রের জন্য চ্যারেটি

প্রতিষ্ঠান খুলবে ! তাদের কাজ হলো ব্যাবসা করা। যদি

ব্যাবসার মাধ্যমে রাষ্ট্রেন

উপকার হয় কিনা সেটা

খ্যেয়াল রাখতে পারে। এই

ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের লজ্জা

পাওয়া উচিত। কেননা তারা ব্যার্থ হয়েছে মৌলিক

অহিকার পুরণ করতে। আর যারা

এই কাজটি টাকার বিনিময়ে

করে দিচ্ছে তাদের

সহযোগিতা করা। কিন্তু তা না

বরং উল্টা। একই আইনের সংশোধনী আসে ৯৮ এ। এরপর

২০১০ এ যখন যুক্ত হয় ২.৫%

ভ্যাটের বোঝা। এরপর শিক্ষা

নগ্ন থাবার শিকার হলো এই

২০১৫ তে। যোগ হলো ৭.৫%

ভ্যাট। কিন্তু কেন ? যেখানে শিক্ষা তো আমাদের মৌলিক

অধিকার, রাষ্ট্র ফ্রী তে

পড়ানোর কথা সেখানে এখন তো

দেখি রাষ্ট্র নিজেই ব্যাবসা

শুরু করেছে। চ্যারেটি

প্রতিষ্ঠান খোলার ভুত উবে গিয়েছে দেখ্ছি। আমি ফাঁকিবাজ ছাত্রদের

একজন। আমার চিন্তা হলো,

মানুষের মৌলিক চাহিদা

গুলোর সিরিয়ালে শিক্ষার

অবস্থান যেহেতু ৫ নাম্বারে

সেহেতু পড়ালেখা পরে আগে খাওয়াআ-দাওয়া ইত্যাদি।

আমার ধারণা সরকারও এই

ফাঁকিবাজদের নীতিতে

বিশ্বাসী হয়ে উঠছেন। যদি

এমনটা হয় তবে দেশ মেধাশুন্য

জাতিতে পরিণত হবে অতি শীঘ্রই।

বিষয়: বিবিধ

৯০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File