আগামীর পৃথিবী ইসলামের পৃথিবী!

লিখেছেন লিখেছেন অপ্রিয় মানুষ ০৪ জুলাই, ২০১৫, ০১:১৯:৩৪ দুপুর

পৃথিবীতে এখন শতকরা ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ জন তরুণ- যুবকI এরাই আগামীর পৃথিবী গড়ার কারিগর। জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে যাদের বয়স ১৪-৩০ তারাই তরুণ। যাদের বয়স ২৫-৪০ এর মধ্যে তারাই যুবক। আজ গোটা সমাজের সকল বিপদই যেন তরুণ-যুবকদের তাড়া করছে। অজানা এক আতঙ্ক আর উদ্বিগ্নতা তরুণ-যুবকদের উপর ভর করেছে। অপসংস্কৃতির কালো থাবা, ইন্টারনেট প্রযুক্তির অভিশাপ, ড্রাগের মরণ কামড় যেন গোটা জাতি, সভ্যতা, সমাজকে অক্টোপাশের মতো আটকে ফেলেছে। নৈতিকতা মুক্ত উন্নতি যেন তরুণ-যুবকদের অশান্তি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। মায়ের জাতি নারীকে ব্যবহার করেছে পণ্য হিসেবে। ধর্মীয় শৃঙ্খলমুক্ত শিক্ষিত যুবক তরুণ যেন হিংস্র, অসভ্য আর ইতর প্রাণীর স্বরূপ। কিন্তু সকল বাধা উপেক্ষা করেও বিশ্বব্যাপী শাশ্বত বিধান ইসলামের দিকেই ঝুঁকছে তরুণ-যুবকরা।

ইসলাম আজকের আধুনিক জাহিলিয়াতকে মোকাবেলা করছে প্রতিনিয়ত। ইসলামের প্রগতিশীলতা পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান স্থান, কাল পরিবেশ অনুযায়ীই বৈজ্ঞানিক ও যৌক্তিক। ৭৫০ খৃ. থেকে ১৭০০ খৃ. পর্যন্ত প্রায় এক হাজার বছর পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস; আচরণ ও কর্মধারার নিয়ন্ত্রণ করেছে ইসলামী জীবন বিধান। ১৭৫০ খৃ:. থেকে ২০০০ পর্যন্ত মুসলমানগণ শিক্ষা ও জ্ঞান বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়ার কারণে পৃথিবীর নেতৃত্বের আসন থেকে ছিটকে পড়ে।

আধুনিক পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে আগামীদিনের জীবন আদর্শ হিসেবে ইসলামের পূর্ণতা, বাস্তবতা, প্রগতিশীলতা নির্ভুলতা এবং প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে সঙ্গতিপৃর্ণ জীবন বিধান হিসেবে এর কোনো বিকল্প নেই? এটাই আজ সারা পৃথিবীর স্কলার পণ্ডিতদের ধারণা। আজকের পৃথিবীব্যাপী ইসলামের মূল চালিকা শক্তির উৎস হচ্ছে ছাত্র-যুব আন্দোলন। তাই বিরোধীদের সকল পরিকল্পনা যুবক-তরুণদের উত্থানরোধে ব্যয়িত। এক্ষেত্রে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন, অপপ্রচার, বিভেদ, বিভ্রান্তি, অনৈক্য, আর নৈতিক চরিত্র ধ্বংসের সকল আয়োজন চলছে প্রতিনিয়ত। শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদী চিন্তা দিয়ে ঢেকে ফেলা হচ্ছে তরুণদের কোমলমতি মন-মানষিকতাকে। ইসলামের পুনঃজাগরণের ক্ষেত্রে মুসলমান যুব সমাজের ভূমিকা অনন্য। বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম নয়। অনুমান করা যায় একবিংশ শতাব্দীতে যুবক-তরুণদের স্রোত আরো বেড়ে যাবে।

কিন্তু পাশ্চাত্য আজ তাদের সকল শক্তি নিয়োগ করেছে ইসলামের বিরুদ্ধে। তবুও হাসান আল বান্না, সাইয়্যেদ কুতুব কর্তৃক মিসরীয় মুসলিম ব্রাদারহুডের সংগঠন গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে নাড়া দিয়েছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নকে সবাই মিলে স্বৈরাচারী, নির্লজ্জ এবং অগণতান্ত্রিক কায়দায় উৎখাত করতেও দ্বিধা করেনি। প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সর্বোচ্চ শক্তির প্রয়োগ মুসলিম তরুণীরা যেভাবে মোকাবেলা করছে তাতে মনে হয়, লাল রক্তের সিঁড়ি আবার বিজয় আনতে বেশি সময় নেবে না।

সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদূদী’র জামায়াতে ইসলামী নাড়া দিয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশসহ প্রাচ্য-পাশ্চাত্য এবং বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনকে। ফলে দিশেহারা ভারতসহ পশ্চিমারা। ভারত ইসলামের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। বাংলাদেশে সেই নির্লজ্জ, জঘন্য, অবৈধ ও কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত মহড়া এখন প্রকাশ্য। এখানেও ইসলাম প্রিয় তরুণ-যুবকরা হাজী তিতুমীর ও ব্রেলভীর চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জীবন দিয়ে সেই ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়িয়েছে। ভারতের ভেতরে বিশ কোটি আর এখানের ১৫ কোটিকে হিসেবে নিয়েই এগুতে হবে। পশ্চিমা সূত্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আমেরিকা এবং জার্মানিতে এখন সবচেয়ে বেশি মুসলিমের বসবাস। ব্রিটেন, ফ্রান্সেও মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে, তবু এ সংখ্যাই অনেক বড় এবং দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে। Cordoba-র অদ্ভুত সুন্দর সেই পুরনো মসজিদের কাছেই, আবার মুয়াজ্জিনের আজান শোনা যাচ্ছে। স্পেনের মাটি থেকে শেষ মুসলিমটিকে বিতাড়িত করার পাঁচশ’ বছর পর এই ঘটনা বড়ই আশার আলো ছড়াচ্ছে।

মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা বিবেচনা করে চ্যা›েসলর এঙ্গেলা মার্কেল মন্তব্য করেছেন- “জার্মানি একদিন ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হবে এবং ডয়েসল্যান্ডে ইসলামের সবুজ অর্ধচন্দ্র পতাকা উড়বে। জার্মানি শিগগির ইসলামের একটি শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হবে। আমেরিকায় ৩০ বছরের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যা ইহুদিদের ছাড়িয়ে যাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল। আঠারো বছর আগে আমেরিকার ম্যাসাচুসেট্স বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সি¤েপাজিয়ামে বলা হয়েছে-স্থানীয়ভাবে মুসলমানদের গ্রহণযোগ্যতা ও মুসলমানদের প্রতি ধর্মীয় সহনশীলতাও বাড়ছে। পাবলিক স্কুলসমূহে সাপ্তাহিক ছুটির ¯¦ীকৃতি এবং ক্যাফেটেরিয়ায় শূকরের মাংস পরিবেশন বন্ধ করা হয়েছে। মুসলিম ছাত্রীরা আলাদা কাসে সাঁতার শিখতে পারে ও জিমনেসিয়ামে পা সমান লম্বা স্লাক্স পরতে পারে। এই সবই হচ্ছে -৯/১১ ঘটনার এক বছরের মধ্যেই অমেরিকাতে মুসলমানদের সংখ্যা ৩০ হাজার এবং ইউরোপে বিশ হাজারেরও অধিক বৃদ্ধির ফল। বিশ্ব এখন পশ্চিমাবলয়ের বাইরের পানে ছুটে চলেছে। ধর্মীয় ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো তার স্থান দখল করে চলেছে।

তারুণ্যের চেতনায় উজ্জীবিত সতের সাওয়ারী নিয়ে লক্ষণ সেনের বাংলায় মজলুম মানুষের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি। যুবক বাবর পেরেছিল বিশাল ভারতবর্ষে নতুন ইতিহাস রচনা করতে। মাত্র সতের বছর বয়সে সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী তার লেখনী, চিন্তা আর আন্দোলন সংগঠন গড়ে তুলে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করেন। সাইয়েদ কুতুব, হাসান আল বান্নার মতো জগৎ সেরা ব্যক্তিরা তরুণ-যুবক হিসেবেই তাদের চিন্তা, লেখনী, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে যুগের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করেছেন অত্যন্ত দৃঢতা, বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে। ইসলাম যুবকদের অনেক মর্যাদা দিয়েছে। যৌবনের ইবাদতই আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। কাল কিয়ামতের দিন আরশের ছায়ার নিচে ুসৎ চরিত্রশুুুীল যুবকদের জন্যই আসন হবে। সুতরাং আজকের তরুণ-যুবকরা যেভাবে ইসলামকে নিজের জীবনাদর্শ হিসেবে গ্রহণ করছে তাতে একথা সত্য আগামীর পৃথিবী হবে ইসলামের পৃথিবী। আজকের পৃথিবীর অবস্থা যেন রাসূল (সা.) এর ভবিষ্যৎ বাণীরই প্রতিচ্ছবি

বিষয়: বিবিধ

৯৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File