ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর বর্ণবাদী ও মুসলিম বিদ্বেষী নীতি, উত্তপ্ত সারা দুনিয়া এবং ইন্ডিয়ান হাইকমিশনারের ঔদ্ধত্য

লিখেছেন লিখেছেন সাইয়েদ ইকরাম শাফী ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৫:৩০:৫৫ বিকাল



নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর নির্বাহী আদেশের পর গত 28 জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে বিমানবন্দর গুলোতে নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিও তৈরি হয়। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা সাতটি মুসলিম প্রধান দেশের ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়। তবে তাদেরকে ফেরত না পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন একটি আদালত। উল্লেখ্য যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট 7টি মুসলিম দেশ যথাক্রমে: ইরান, ইরাক, সুদান, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন ও লিবিয়া নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এক নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এ বিষয়টি নিয়ে সারা দুনিয়া ব্যাপী তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেক বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশঙ্কা করেছিলেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মার্কিন সামাজিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধ ও রীতি-নীতিকে পদদলিত করবেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী নোয়াম চমস্কি রিপাবলিকান পার্টিকে দুনিয়ার সবচেয়ে অসভ্য পার্টি হিসাবে অভিহিত করেছিলেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো’র মানবিকতা:

7টি মুসলিম দেশের অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির পর সারা দুনিয়ায় এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে জোড়ালো প্রতিবাদী ভূমিকা রেখেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। একটি ইংরেজী দৈনিকের রিপোর্টে বলা হয়েছে:

Canadian Prime Minister Justin Trudeau has a message for refugees rejected by Donald Trump: Canada will welcome you. He said that he also intended to talk to Trump about the success of Canada's refugee policy. Trudeau reacted to Trump's visa ban for people from seven Muslim-majority countries by tweeting on Saturday, "To those fleeing persecution, terror & war, Canadians will welcome you, regardless of your faith. Diversity is our strength (hash) Welcome to Canada."

Trudeau also posted a picture of him greeting a Syrian child at Toronto's airport in 2015. Trudeau oversaw the arrival of more than 39,000 Syrian refugees soon after he was elected as prime minister.

A spokeswoman for Trudeau, Kate Purchase said, "The Prime Minister is looking forward to discussing the successes of Canada's immigration and refugee policy with the President when they next speak." Trudeau is expected to the visit the White House soon.

The PM has refrained from criticizing Trump to avoid offending the new president. Canada wants to avoid becoming a target like Mexico has. More than 75% of Canada's exports go to the US. Brad Wall, the conservative premier of the Canadian province of Saskatchewan, offered his support to Trudeau.

Toronto mayor John Tory also weighed in, noting that the city was the most diverse in the world. "We understand that as Canadians we are almost all immigrants, and that no one should be excluded on the basis of their ethnicity or nationality."

White House national security adviser Michael Flynn told Canada's national security adviser that holders of Canadian passports, including dual citizens, would not be affected. Earlier US said that Canadians with dual citizenship from Iran, Iraq, Sudan, Somalia, Syria, Yemen and Libya would be denied entry for 90 days. Trudeau later posted the statement on Twitter with hash tag "A Canadian Is a Canadian". On Saturday, Canadian airline West Jet said it would reimburse passengers prevented from traveling to the United States under the new policy.

Source: The Times of India 30/01/2017

বাংলা তরজমা:

“যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কয়েকটি মুসলিম দেশের শরণার্থী বা অভিবাসীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শরণার্থীদের পক্ষে কথা বলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। শরণার্থীদের নিজ দেশে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। টুইটারে জাস্টিন ট্রুডো লিখেছেন "ধর্ম বিশ্বাস যাই হোক না কেন নির্যাতন, সন্ত্রাস ও যুদ্ধপীড়িত অঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা কানাডায় স্বাগতম।বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি"। সাতটি মুসলিম দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর গতকাল শনিবার এক টুইট বার্তায় শরণার্থীদের কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আপনাদের জন্য কানাডার দরজা খোলা।'তিনি এ জন্য হ্যাশট্যাগ "ওয়েলকাম টু কানাডা" চালু করেন। ওয়াশিংটনের সঙ্গে কথা বলার পর কানাডার কর্মকর্তারা জানান, "যাঁদের কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে, তাঁরা ট্রাম্পের ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন না"। "কানাডার পাসপোর্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে"। অভিবাসন নীতি নিয়ে ট্রাম্পের অব্যাহত সমালোচনার মধ্যেই আরও একটি টুইট করেন জাস্টিন ট্রুডো। সেখানে তিনি একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ২০১৫ সালের এই ছবিতে তাকে কানাডার বিমানবন্দরে একজন সিরিয়ান শরণার্থীকে স্বাগত জানাতে দেখা যাচ্ছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো’র মুখপাত্র ক্যাট পারচেজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কানাডার অভিবাসী ও শরনার্থী পলিসি নিয়ে মি. প্রেসিডেন্ট-এর সাথে কথা বলবেন। তিনি শীঘ্রই হোয়াইট হাউজ সফরের প্রত্যাশা করছেন। প্রধানমন্ত্রী নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প-এর নতুন আইনের সমালোচনা করেন এবং এটা পরিহার করার আহবান জানান। কানাডা প্রত্যাশা করছে, মেক্সিকোর সাথে বাণিজ্যের ব্যাপারে যে টার্গেট করা হয়েছে আমাদের সাথে তা করা হবে না। 75% কানাডিয়ান পণ্য রপ্তানী হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। কানাডার সাসকাটওয়ান প্রদেশের কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী ব্রাড ওয়াল প্রধানমন্ত্রী ট্রডোকে সমর্থনের কথা বলেছেন। টরেন্টোর মেয়র জন টরি গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, এটা কোনো ব্যাপার নয় যে, দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত নানারকমের মানুষ এই নগরীতে বসবাস করছে। আমরা জানি যে, কানাডায় আমরা সবাই অভিবাসী এবং কেউ তাদের নৃ-জাতিত্ব ও জাতীয়তা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিচেল ফ্লিন কানাডিয়ান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বলেন, কানাডিয়ান পাসপোর্টধারী ও দ্বৈত পাসপোর্টধারী এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এর আগে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছিলেন, ইরান, ইরাক, সুদান, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন ও লিবিয়া থেকে আগত কানাডিয়ান দ্বৈত পাসপোর্টধারীরা 90 দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না। এরপর কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো টুইটার পোস্টে এক বিবৃতিতে বলেছেন, একজন কানাডিয়ানই কানাডার নাগরিক। 28 জানুয়ারি কানাডিয়ান এয়ারলাইন্স ওয়েস্ট জেট বলেছে, নতুন পলিসি’র কারণে যেসব যাত্রী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না তাদের টাকা ফেরৎ দেয়া হবে”

শাহবাগী ফরিদ উদ্দিন মাসুদ-এর মোনাফেকি:

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর চরম বর্ণবাদী পলিসি’র সমালোচনায় সারা দুনিয়া এখন মুখর। অন্য দিকে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পদলেহনকারী আলেম নামধারী মোনাফেক শাহবাগী (?) ফরিদ উদ্দিন মাসুদ ট্রাম্প-এর নীতির জন্য মুসলমানদের দায়ী করেছেন। বাংলাদেশ কন্সুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক কর্তৃক আয়োজিত সন্ত্রাসবাদ বিরোধী এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশের ফরিদ উদ্দিন মাসউদ প্রশ্নোত্তর পর্বে এ মন্তব্য করেন। প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় তিনি বলেন, ট্রাম্প মুসলমান সম্পর্কে যা বলেছেন বা যা করছেন তা গুটি কয়েক বিপথগামী সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ডের কারণেই বলছেন বা করছেন। যার জন্য আমরা মুসলমানরাই দায়ী। গত শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭ সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে এন্ট্রি টেরোজিজম এওয়ারন্যাস ইউনিট প্রধান ইমাম কাজী কায়্যূম ও বদরপুর দরবার শরীফের পীরে তরীকত আল্লামা ড: সায়্যিদ মুতাওয়াক্কিল বিল্লাহ রাব্বানীও উপস্থিত ছিলেন। কনসাল জেনারেল শামীম আহসানের উপস্থাপনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ইসলামের নামে সন্ত্রাস চালিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যার পর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া জাতির জন্য মঙ্গল এনে দিতে পারে না। সূত্র: এন্ট্রি টেরোজিজম এওয়ারন্যাস ইউনিট প্রধান ইমাম কাজী কায়্যূম-এর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া। যিনি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদে আগুন, কানাডায় গুলি করে মুসল্লী হত্যা:

আমরা দেখছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চরম বর্ণবাদী মুসলিম বিদ্বেষী পলিসি’র কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মুসলিম অভিবাসী ও শরনার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্ট্রিন ট্রুডো। জাস্টিন ট্রুডো’র এ মানবিক ঘোষণার পর কানাডার স্থানীয় সময় রোববার রাতে নামাজের সময় কুইবেক সিটি ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে বন্দুকধারীরা নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে নামাজরত অবস্থায় ছয়জন মুসলিম নিহত ও আটজন আহত হন। মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ইয়ানগুই তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, কুইবেক সিটি ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের ভেতরে থাকা অন্তত ৪০ জন মানুষের ওপর জনা তিনেক বন্দুকধারী নির্বিচারে গুলি চালায়। কুইবেক প্রাদেশিক পুলিশ বলেছে, গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে হবে। এ ছাড়া আটজন আহত হয়েছেন। ৩৯ জন অক্ষত। হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি। এ ছাড়া হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও কোনো তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশ। কানাডার কুইবেকে মসজিদে ছোড়া গুলিতে হতাহত হওয়ার ঘটনাকে মুসলমানদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এক বিবৃতিতে তিনি এর নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এটি একটি গভীর শোক, দুঃখ ও ক্রোধ সৃষ্টিকারী ঘটনা।’তিনি আরো বলেন, ‘মুসলিম-কানাডিয়ানরা আমাদের জাতিগত কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ ধরনের অবিবেচক কাজ আমাদের সমাজ, শহর, দেশ- কোথাও স্থান পাবে না।’ এ নিবন্ধ লেখার সময় খবর পেলাম কানাডায় মসজিদে হামলার ঘটনায় একজন ফরাসী ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মসজিদে গুলি করে ৬ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে| বিবিসি জানিয়েছে, আলেকসন্দ বিশোনেত নামের ওই ছাত্র প্রথম শ্রেণির ছয়টি খুনের ও পাঁচটি খুনের চেষ্টার অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছেন। সোমবার ২৭ বছর বয়সী বিশোনেতকে মসজিদে হামলার ঘটনায় কুইবেক সিটি আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার পরনে ছিল সাদা রঙয়ের কারা পোশাক এবং তার হাতেপায়ে শিকল পরানো ছিল। রোববার এশার নামাজের সময় কুইবেক ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের মসজিদে হামলার ওই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সময় রাত ৮টার একটু আগে গুলিবর্ষণের সময় মসজিদে প্রায় ৫০ জন লোক ছিল। এদের মধ্যে ছয়জন নিহত ও ১৯ জন আহত হন।

আহত পাঁচজন এখনো হাসপাতালে আছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সঙ্কটজনক। হামলার পর মরোক্কান বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ কাদির নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাকে এখন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এ ঘটনাটিকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

কানাডার চরমপন্থী খৃষ্টানরা ম্যাসেজ দিয়েছে যে, মুসলিম উদ্বাস্তু ও শরনার্থীদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো যতোই মানবিক হোক না কেন আমরা তাদের কানাডায় থাকতে দেবো না। এর আগে গত 27 জানুয়ারি শুক্রবার সাতটি মুসলিম দেশের শরণার্থীদের প্রবেশ ও নাগরিকদের ভ্রমণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে আদেশ জারি করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় দক্ষিণ-পূর্ব টেক্সাসের ‘ভিক্টোরিয়া ইসলামিক সেন্টার’ নামের মসজিদটি পুড়িয়ে দেয়া হয়। ‘বাইবেল প্রধান’ নামে পরিচিত উগ্র খ্রিস্টান অধ্যূষিত এলাকাটিতে ২০০০ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এর এক বছর পরেই টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনার ঘটে। এদিকে মসজিদে আগুন লাগার কারণ এখনও জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে ভিক্টোরিয়া আগুন নির্বাপক দফতর। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) ভিক্টোরিয়া পুলিশ, আগুন নির্বাপক দফতর, অ্যালকোহল, টোব্যাকো ও আগ্নেয়াস্ত্র বিভাগ একসাথে কাজ করছে।

এখানে একটা বিষয় অবশ্যই বিবেচ্য যে, সারা দুনিয়ার কোথাও কোনো সন্ত্রাসী হামলা বা হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলেই মুসলিম সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের দায়ী করে রিপোর্ট প্রকাশ করে পশ্চিমা মিডিয়া। কিন্তু আশ্চর্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডার ও মিয়ানমারের সন্ত্রাসী হামলা, হত্যাকান্ড ও আগুন লাগানোর ঘটনাকে এসব মিডিয়া খ্রিষ্টান বা বৌদ্ধ সন্ত্রাসী বা জঙ্গী বলে প্রচার করেনি। তবে আশার কথা যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুড়িয়ে দেয়ার পরপরই মসজিদটি আবারও নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন মুসলমানরা। মসজিদটি নির্মাণের জন্য সাড়ে আট লাখ ডলার তহবিল চেয়ে আবেদন জানানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ছয় লাখ ডলারেরও বেশি অর্থ যোগাড় হয়েছে। অনলাইনে গণচাঁদার মাধ্যমে এ অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে মুসলমানদের পাশাপাশি ইহুদি, খ্রিস্টান ও নাস্তিকদেরও অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। খবর আলজাজিরা’র। তবে এ মসজিদে আগুনের ঘটনায় ভিক্টোরিয়া শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার তৈরি হয়েছে। মসজিদটির কমকর্তাদের সহানুভূতি জানিয়েছেন অন্য ধর্মের সাধারণ মানুষ এবং ইহুদি ও খ্রিস্টানদের উপাসনালয়ের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও মুসলমানরাও মসজিদটির সামনে ছুটে আসেন। এরমধ্যে ভিক্টোরিয়া থেকে চার ঘণ্টা দূরত্বের হাস্টন ও ডালাসে বসবাসকারী মুসলমানরাও ছিলেন। আগুন দেয়ার ঘটনায় জনসাধারণের কাছ থেকে ব্যাপক সহানুভূতি পাওয়ার পর মসজিদটি পুনঃনির্মাণের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। এ জন্য তহবিলের আবেদন জানালে অনলাইনে ‘গোফান্ডমি’ নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দ্রুত সাড়া পাওয়া যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছয় লাখ ডলার গণচাঁদা পাওয়া যায়। গোফান্ডমির পেইজে গিয়ে দেখা গেছে, চাঁদাদাতাদের মধ্যে মুসলমানদের পাশপাশি অনেক ইহুদি, খ্রিস্টান ও নাস্তিক ব্যক্তিও রয়েছেন। ইউরোপ থেকে শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আগত ইহুদিদের বংশধর বেঞ্জামিন টাম্বার রোজেনাউ মসজিদটি নির্মাণে ১০০ ডলার দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, আমরা ইহুদিরা যেমন ইউরোপে আক্রান্ত হয়েছিলাম তেমনি আমেরিকাতে আরেকটি সম্প্রদায়কে (মুসলমান) ভিত্তিহীন ঘৃণার শিকার হতে দেখছি। এই কাজে আমাদের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ সরকারের বড় অংশ সহযোগিতা করছে। মার্টিন ওয়াগনার নামে আরেকজন চাঁদাদাতা বলেছেন, আমি একজন খ্রিস্টান। আপনাদের (মুসলমানদের) সঙ্গে যা হয়েছে তাতে আমি কষ্ট পেয়েছি এবং হতাশ হয়েছি। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং নির্যাতন থেকে মুক্তির স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ‘ভিক্টোরিয়া ইসলামিক সেন্টারের প্রেসিডেন্ট শহীদ হাশমি আল জাজিরাকে বলেন, শনিবার সকালে মসজিদটি পুড়তে দেখে আমরা শোকাহত হয়ে পড়ি। তবে জনগণের কাছ থেকে সহানুভূতি এবং সহযোগিতা পেয়ে অভিভূত হাশমি। তিনি বলেন, যেভাবে হ্রদয়গ্রাহী সাড়া পাচ্ছি তা অবিশ্বাস্য। আমরা খুবই কৃতজ্ঞ। চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ মসজিদটি পুনঃনির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সাড়ে আট লাখ ডলার তহবিল যোগাড় হয়ে যাবে বলেও জানান হাশমি। যার ভবনে মসজিদটি স্থাপন করা হয়েছে এরই মধ্যে তার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। ভবন মালিক মসজিদ পুনঃনির্মাণে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। এখন ধ্বংসাবশেষ সরানো এবং ভবন পুনঃনির্মাণের অনুমতি লাভ বাকি আছে। এরপরই মসজিদটি নির্মাণ শুরু হয়ে যাবে। হাশমি বলছেন, ইনশাহ্ আল্লাহ আগামী রমজান আমরা নতুন মসজিদেই পালন করব।

মিয়ানমার (বার্মায়) মুসলিম আইনজীবী হত্যা:

এদিকে 29 জানুয়ারি ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশে ফেরার পর ইয়াঙ্গুন এয়ারপোর্টের কার পার্কিং-এর কাছে এক বন্দুকধারী এনএলডি আইন উপদেষ্টা মুসলিম আইনজীবী কো নি কে গুলি করে হত্যা করে। এ বন্দুকধারীর নাম কাই লিন। এ সময় কো নি কে রক্ষায় এগিয়ে এলে এক ট্যাক্সি চালককেও হত্যা করা হয়। মিয়ানমারের তথ্যমন্ত্রী পি মিন্টের নেতৃত্বে 21 সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে কো নি ইন্দোনেশিয়া সফরে যান। ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে জাতীয়তা ও নৃ-গোষ্ঠী সংক্রান্ত বিরোধ নিরসনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে সরকারি কর্মকর্তা ও মুসলিম প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসাবে কো নি ইন্দোনেশিয়া সফরে যান বলে সরকারী সূত্রে বলা হয়। মিয়ানমারের জাতীয়তা ও নৃ-গোষ্ঠী বিরোধ নিরসনের জন্য সংবিধান সংশোধনের জোড়ালো সমর্থক ছিলেন মি. কো নি। এ নিয়ে অং সান সুচির সাথে তার বিরোধ তৈরী হয় বলে জানায় আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো। কো নি’র হত্যার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের জাতিগত ও নৃ-গোষ্ঠী বিরোধ ও সংথ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম নির্যাতন-নিপীড়ন নিরসনের পথ অনেকটাই রুদ্ধ হয়ে গেল বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি এক টুইট বার্তায় কো নি হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন। দেশটির বিখ্যাত ও সম্মানিত মুসলিম আইনজীবী হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন তিনি। এএফপি, বিবিসি।

দেখা যাচ্ছে উত্তর-দক্ষিণ, পুর্ব-পশ্চিম, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়া মহাদেশসহ দুনিয়ার কোন সভ্য বা অসভ্য কোনো দেশেই মুসলমানরা নিরাপদ নয়।

ইন্ডিয়ান হাইকমিশনারের ঔদ্ধত্য:

অনেকগুলো আলোচিত আন্তর্জাতিক ঘটনাবলীর মধ্যে বাংলাদেশের একটি অনুষ্ঠানের ঘটনা অনেকের চোঁখকে হয়তো ফাঁকি দিয়ে ফেলেছে। বাংলাদেশপন্থী চিন্তাবিদদের জন্য এটা আরো একটি উদ্বেগের বিষয় বটে। ঢাকায় নিযুক্ত ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ‘হিন্দুদের সুরক্ষায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে ইন্ডিয়া’ ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের হিন্দুদের যেসব মন্দিরের ক্ষতিসাধন করেছে সে সব মন্দিরের পুনঃনির্মাণ ও হিন্দুদের সুরক্ষায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে ইন্ডিয়ান সরকার। অতীতে যেমন ভাবে ইন্ডিয়া সরকার বাংলাদেশের পাশে ছিল সেভাবে ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে।’মহারাণী ভবানী প্রতিষ্ঠিত নাটোর লালবাজারস্থ শ্রী শ্রী জয়কালী মন্দির পুনঃনির্মাণে ইন্ডিয়া সরকারের উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির প্রথম কিস্তির চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সোমবার দুপুরে এসব কথা বলেন তিনি। ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে যে সুসর্ম্পক স্থাপিত হয়েছিল তা বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বজায় রয়েছে।’শ্রী শ্রী জয়কালী মন্দির সংস্কার কমিটির সভাপতি খগেন্দ্র নাথ সাহার সভাপতিত্বে আয়োজিত চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, রাজশাহীস্থ ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনার শ্রী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। মহারাণী ভবানী প্রতিষ্ঠিত নাটোর লালবাজারস্থ শ্রী শ্রী জয়কালী মন্দির পুনঃনির্মাণেেইন্ডিয়া সরকারের উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির আওতায় ৯৭ লাখ ৩ হাজার ৩৭৫ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে প্রথম কিস্তিতে ১৯ লাখ ৪০ হাজার ৬৭৫ টাকার চেক হস্তান্তর করা হলো।

সূত্র: পরিবর্তন, 30-01-2017.

রাষ্ট্রদূত দায়িত্ব, কর্তৃব্য ও মর্যাদার বিষয়ে The Vienna Convention on Diplomatic এ বলা হয়েছে: The Vienna Convention on Diplomatic Relations of 1961 is an international treaty that defines a framework for diplomatic relations between independent countries. It specifies the privileges of a diplomatic mission that enable diplomats to perform their function without fear of coercion or harassment by the host country. This forms the legal basis for diplomatic immunity. Its articles are considered a cornerstone of modern international relations. As of April 2014, it has been ratified by 190 states. Throughout the history of sovereign states, diplomats have enjoyed a special status. Their function to negotiate agreements between states demands certain special privileges. An envoy from another nation is traditionally treated as a guest, their communications with their home nation treated as confidential, and their freedom from coercion and subjugation by the host nation treated as essential.

The first attempt to codify diplomatic immunity into diplomatic law occurred with the Congress of Vienna in 1815. This was followed much later by the Convention regarding Diplomatic Officers (Havana, 1928).

The present treaty on the treatment of diplomats was the outcome of a draft by the International Law Commission. The treaty was adopted on 18 April 1961, by the United Nations Conference on Diplomatic Intercourse and Immunities held in Vienna, Austria, and first implemented on 24 April 1964. The same Conference also adopted the Optional Protocol concerning Acquisition of Nationality, the Optional Protocol concerning the Compulsory Settlement of Disputes, the Final Act and four resolutions annexed to that Act.

Two years later, the United Nations adopted a closely related treaty, the Vienna Convention on Consular Relations.

কিন্তু বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্ডিয়ার হাইকমশিনাররা ভিয়েনা কনভেনশনকে একেবারেই পরোয়া করছেন না। বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষায় বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়া একযোগে কাজ করবে। এ কথা বলার মাধ্যমে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার আবারো প্রমাণ করেছেন যে, ইন্ডিয়া আদৌ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ নয়-চরম হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক দেশ। ব্রিটিশ-এর কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এ পর্যন্ত ইন্ডিয়ায় কয়েক হাজার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। এসব দাঙ্গায় 50 হাজারের বেশি সংখ্যালঘু মুসলমান প্রাণ হারিয়েছেন। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইন্ডিয়ার নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। 1992 সালে উগ্রপন্থী হিন্দুরা ইন্ডিয়ার উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় চার শত বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে। অথচ বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনেক সুন্দর, চমৎকার ও ঐতিহাসিক। যা সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত বিষয়। পাকিস্তানের 24 বছরের ইতিহাসে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের 45 বছরের ইতিহাসে কখনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। বাংলাদেশে কোথাও কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে মুসলমানই হিন্দুদের পাহারা দিয়ে রক্ষা করে। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা’র এ বক্তব্য শুধু চরম ঔদ্ধত্য নয়-এর অনেকগুলো ম্যাসেজ ও হুমকি আছে। ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার এ হুমকিটা দিয়েছেন বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে। অর্থাৎ ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার বুঝাতে চেয়েছেন যে, আমাদের কথা মতো না চললে তোমাদের খবর আছে! বৃটিশ আমলে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের চরম অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ইন্ডিয়া মনে হয় বাংলাদেশকে আবার 47 আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে চায়। অর্থাৎ বাংলাদেশে নামধারী মুসলমান থাকবে-তবে মুসলমানদের ঈমান, আকিদা বলতে কিছুই থাকবে না। হিন্দুরাই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করবে এবং ইন্ডিয়া এদের সবরকম মদদ ও ইন্ধন দেবে। যেটা হতো 1947 সালের আগে। 2007 সালে ফখরুদ্দিন-মইন উদ্দিন-এর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্ডিয়ান হাইকমিশনাররা খুবই ইম্পোর্ট্যান্ট ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন। তাদের ইম্পোর্ট্যান্সিটা একজন রাষ্ট্রদূতের পর্যায়ে নেই। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারকের চেয়ে বেশি ইম্পোর্ট্যান্ট ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন। আপত্তি এখানেই। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, ব্রিটিশ আমলে ইন্ডিয়া সাব কন্টিনেন্ট-এ একজন লর্ড/ভাইসরয় দায়িত্ব পালন করতেন। বর্তমান ইন্ডিয়ান হাইকমিশনারও ব্রিটিশ আমলের লর্ড/ভাইসরয় সাহেবদের মতো আচরণ করছেন। এর আগেও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর তত্বাবধানে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদূতরা সাধারণতঃ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা প্রকল্প সংক্রান্ত বিষয়ক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকেন। এটাই রাষ্ট্রদূতদের এখতিয়ার। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা কি নোবেল বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক পর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন? সত্যি যদি তিনি সে ধরণের কোনো পুরস্কার পান তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে সম্বর্ধনা দেওয়ার কথা ইন্ডিয়ান সরকারের। বাংলাদেশের কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা একজন রাষ্ট্রদূতকে কেন সম্বর্ধনা ও এতো গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সেটা স্পষ্ট। অনেকে এটাতোও বলছেন যে, ইন্ডিয়ান হাইকমিশনারদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও আচরণের জন্য দায়ী আমরা এবং বর্তমান জনসমর্থন, জনপ্রতিনিধিত্ব, মেরুদন্ডহীন ও অবৈধ সরকার। সরকার ইন্ডিয়া তোষণ-পদলেহন ও ইন্ডিয়ার কাছে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে দেয়ার বিনিময়ে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। ইন্ডিয়াও সুযোগ বুঝে বাংলাদেশকে যেভাবে শোষণ ও লুটপাট করা যায় ঠিক সেভাবে করে যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান হাইকমিশনাররাও বাংলাদেশে বসে যা ইচ্ছা বলে যাচ্ছেন। তবে ইন্ডিয়া ও সে দেশের হাইকমিশনারদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, বাংলাদেশের মানুষ 47 আগের অবস্থায় আর ফিরে যাবে না।

লেখক:

সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও মানবাধিকার সংগঠক

E-mail:

বিষয়: রাজনীতি

১০৭৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

381641
০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:৪৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অধিনস্ত দের কেই বা পরোয়া করে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File