”পুলিশের আচরণে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক নেতারা (?)”
লিখেছেন লিখেছেন সাইয়েদ ইকরাম শাফী ২৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৪:২৪:১৫ বিকাল
সুন্দরবন বাঁচানোর দাবিতে জাতীয় কমিটির ডাকা বৃহস্পতিবারের হরতালে দুইজন সাংবাদিকের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুই সাংবাদিক নেতা। তারা এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, এভাবে সাংবাদিক পেটানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। এই হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তারা তদন্ত করছেন। আমরা এ বিষয়ে দৃষ্টি রাখছি।
‘পেশাজীবী সাংবাদিকদের পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ যে তদন্ত কমিটি করেছে তাদের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি। তদন্ত প্রতিবেদন দেখে আমরা পেশাজীবী সাংবাদিকদের সংগঠনের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’ বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর 'সাংবাদিকদের পেটানো হয়নি, ধাক্কাধাক্কি হয়েছে' এ বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বুলবুল বলেন, এ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ারে বসলে তারা যেন বেফাঁস মন্তব্যের জন্য বসে থাকেন। মানুষ তাদের সেভাবেই চিহ্নিত করেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের একজন আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, আল্লাহর মাল আল্লায় নিয়ে গেছে। আরেকজন লুৎফুজ্জামান বাবর বলেছিলেন, উই আর লুকিং ফর শত্রুজ, সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার পর সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। আর রানা প্লাজা ধসের পর মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছিলেন, বিরোধীদলের ধাক্কায় ভবন ধসে গেছে। এসব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মানুষের কাছে চিহ্নিত হয়ে আছেন। কিন্তু আমাদের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল একজন স্বল্পভাষী মানুষ। তার কাছে আমরা এমন কথা আশা করি না।
সূত্র: বিডি টুডে।
সরকার সমর্থক সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা মি. মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ধান ভানতে শিবের গীত গেয়েছেন। তার দৃষ্টিতে বর্তমান সরকারকে চালায় ফেরেশতারা। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা কেন এ ধরণের কথা বলবেন? বিগত আট বছর যাবৎ সরকারের হুকুমে একশ্রেণীর পুলিশ সদস্য কর্তৃক বিরোধী নেতা-কর্মী হত্যাকান্ড, গুম, অপহরণ, পায়ে গুলি করে বিরোধী নেতা-কর্মীদের পঙ্গু করা, কারণে-অকারণে বিরোধী নেতা-কর্মীদের উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়াসহ হাজারো অনিয়ম-অপকর্মের ব্যাপারে মি. বুলবুলরা কখনো একটা শব্দ করেছেন? রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবতি হয়ে সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদকে বার বার নির্যাতন ও কারান্তরীণ করা, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন কয়েদ করে রাখা, সাজানো মামলায় বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক শফিক রেহমানকে কয়েদ করে রাখা এবং দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করার পর তো এরা টু শব্দ করেছে বলে শুনিনি। অবৈধ সরকারের দালাল ও অন্ধ সমর্থক এবং চর দখলের মতো জাতীয় প্রেসক্লাব দখলকারী সাংবাদিক ইউনিয়নের কথিত নেতারা এখন ক্ষুব্ধ কেন? এরা আসলে সাংবাদিক নয়-সাংবাদিক নামধারী আওয়ামী লীগের কট্টর এ্যাকটিভিস্ট। এদের কারণেই বাংলাদেশে একচোখা সাংবাদিকতার জন্ম হয়েছে। এদের কারণেই দেশে সাংবাদিকতার মান দিন-দিন অধোঃপতনের দিকে যাচ্ছে। বাহিরের দুনিয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা। এরাই দেশের বেশিরভাগ মিডিয়াকে শিল্পপতি নামধারী ভূমিদস্যু, ডাকাত, শেয়ার মার্কেট লুটকারী ও ঋণখেলাপীদের হাতে তুলে দিয়েছে। শিল্পপতি নামধারী এসব দুর্বৃত্তরাই দেশের মিডিয়া সাম্রাজ্য দখলে নিয়ে এক দিকে অবৈধ সরকারের সব অপকর্মের মদদ দিচ্ছে-অন্য দিকে নিজেদের হাজারো অপকর্ম হালাল করে নিচ্ছে। এরা আসলে সাংবাদিকও নয়-সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাও নয়। এরা অপশক্তির সব অপকর্মের সহযোগী এবং স্বাধীন সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার দুশমন। মানবতার দুশমন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, স্বাধীন স্বত্বা ও সমৃদ্ধির দুশমন।
বিষয়: বিবিধ
৮৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন