সৌদি-তুরস্ক-পাকিস্তানের নেতৃত্বে সামরিক জোট:
লিখেছেন লিখেছেন ওসমান গনি ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০১:২১:২৬ দুপুর
শুধু সামরিক জোট দিয়ে শেষ রক্ষা হবেনা। অর্থ দিবেন ওদের পেটে আর শুধু সামরিক জোট করবেন এতে হবেনা। বস্তুত মুসলিম বিশ্বে সামরিক-অর্থনৈতিক জোট হওয়া অনেক আগেই দরকার ছিল। তবে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের মত দেশসমুহ সব সময় ভারত ইঙ্গ-মার্কিন জায়নবাদীদের লেজুরবৃত্তি করার কারণে এটি হয়ে উঠেনি বলে আমাদের বিশ্বাস। অথচ বিশ্ব রাজনৈতিক, সামরিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইসলাম বিরোধীদের পোলারাইজেশন হচ্ছে। ওরা শক্তি সঞ্চয় করছে ও মুসলিম জাতিসমুহে বিবেধ সৃষ্টি করছে। দূর্ভাগ্যক্রমে আমাদের শাসকবর্গ ওদের ফাঁদে পা দিচ্ছে।
আমাদের শেখ শাসিত ঐসব রাজা বাদশাহদের এখনও হুশ হয়নি। এখনও ওরা ইসলাম বিরোধীদের বুকে টেনে নিচ্ছে। আর্থিকভাবে উপকার করছে আর আপন ভাইদের দুরে ঠেলে দিচ্ছে। এ কদিন আগে আরব আমিরাত আর ভারত বলেছে তাদের ব্যবসা ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। বিরোধীদের এভাবে পেট ভরিয়ে সাদ্দাম-গাদ্দাফীদের যে শেষ রক্ষা হয়নি সেটাও তাদের চোখে পড়েনা। আবার এখন তারাই বলছে জোট হবে। ভালো কথা তবে আপনারা বিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছেন প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের অনেক দেশে, ভালো কথা কিন্তু শেষ রক্ষা হবে কিনা ভেবে দেখবেন। আপনাদের টাকা বিপদকালীন সময়ে যে মার খাবেনা কিভাবে নিশ্চিত হতে পারলেন? ইরান ইরাকের দিকে তাকান কি নাকানি চুবানি খাওয়ানো হয়েছে তাদের । সুতরাং দোষ না খুজে গরিব মুসলিম দেশে বিনিয়োগ করুন। এদেরকে এগিয়ে নিন। বিপদের সময় এরাই কাজে লাগবে।
আমি বলবো জোট দরকার। অনেক আগেই হওয়া উচিৎ ছিল। । একতার অভাবের পরিণাম মুসলিম জাতি হাঁড়ে হাঁড়ে টের পাচ্ছে। বিশেষত: দরিদ্র মুসলিম জাতিসমুহ। তবে শেষ ভালো হলেও শেষ রক্ষা হবে এটি কম কি? এ জোটের টার্মস অব রেফারেন্স ঠিক হওয়াও দরকার। এটি ঐক্যের স্বার্থে দরকার। যেমন ১) নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে অবস্থান নেয়া। ২) পারস্পরিক সামরিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি ও দৃঢ় করা। ৩) শত্রু মিত্র চিহ্নিত করা। ৪) প্রকৃত শত্রুদের ছাড় না দেয়া তথা দহরম-মহরম বন্ধ করা। ৫) এক সদস্য দেশের উপর বিপদ-আক্রমন কিংবা যুদ্ধ সকলের উপর মনে করা।
৬) শিয়া-সুন্নি বিভক্ত না করে শিয়াদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেয়া ও একত্রে কাজ করা সকলের বৃহত্তর স্বার্থে, ঐক্যের স্বার্থে তথা মিল্লাতের স্বার্থে দরকার আর যদি এরা তা করতে না চায় তাহলেও দুরে ঠেলে দেবেন না। ৭) নিজেদের মধ্যে ব্যবসা বানিজ্যে অগ্রাধিকার দেয়া। ৮) ধীরে ধীরে ইসলাম বিরোধী শক্তির হাত থেকে নিজেদের ব্যবসা বানিজ্য গুটিয়ে নেয়া। ৯) মিডিয়া সৃষ্টি ও বৃদ্ধিতে কাজ করা আর মিডিয়ার অপপ্রচারে বন্ধু রাষ্ট্রের প্রতি বিরূপ না হওয়া। ১০) নিজ দেশে কর্মী নিয়োগে বন্ধু রাষ্ট্রের প্রতি অগ্রাধিকার দেয়া। ১১) নিজেদের মধ্যে সব ধরণের যেমন নৌ,বিমান ও স্থল বাহিনীর উপযুক্ত অস্ত্র তৈরিতে পারঙ্গম হওয়া ও পরস্পরকে সহযোগিতা করা। একবিংশ শতাব্দীর উপযুক্ত অস্ত্র তৈরি করা।
১২) বন্ধু, জোট রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীন সন্ত্রাস দমনে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানো ও নির্মুল করা। ১৩) সদস্য রাষ্ট্রসমুহে বাধ্যতামূলকভাবে ইসলামী জীবন বিধান ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকা। ১৪) অর্থের নামে ও আধুনিকতার নামে বেহায়াপনা ছড়িয়ে না দেয়া ও নিজ দেশে বাধ্যতামূলকভাবে বন্ধ করা। ১৫) রাষ্ট্রসমুহে অত্যাচারী শাসকগোষ্টিকে শুধরে দেয়া, অত্যাচার বন্ধ করতে বাধ্য করা নচেৎ বয়কট করা। ১৬) সকল উস্কানীর মুখে ঐক্যবদ্ধ থাকা ও কুশলী ও সাহসী হওয়া। ১৭) আমাদের মনে হয়েছে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ মুসলমানদের ঘিরে শুরু হবে আর এটি মাথায় রেখে কাল বিলম্ব না করে প্রস্তুতি গ্রহণ করা। ১৮) শতাব্দীর সকল চ্যালেন্জ মোকাবেলায় বৈজ্ঞানিক সামরিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ। ১৯) সর্বশেষ কোনো অবস্থাতেই আল্লাহর কালাম ও রাসুলের (সা) হাদিস থেকে বিচ্যুত না হওয়া ও মুসলিম ভাইদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা।
মনে রাখতে হবে আজকের সে সব সুবিধাবাদী মিত্র শক্তি আদর্শিক কারণে বিপদকালীন ও বৃহত্তর যুদ্ধকালীন সময়ে কখনও আপনার পাশে দাঁড়াবেনা। এ সত্য উপলব্ধিতে যেন কার্পণ্য না করি। আশা রাখি সকলে বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হবেন। আর উপরোল্লিখিত উপায়ে যদি মুসলিম বিশ্ব একতাবদ্ধ হয় ও সামরিক-অর্থনৈতিক জোট করে, জোট দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখে ও এগিয়ে যায় তাহলে মুসলিম জাতিকে কেউ দমিয়ে রাখতে কিংবা অপদস্ত করতে পারবেনা। এটিই বাস্তবতা। কেননা ১৮০ কোটি মুসলমানের বিশাল জন শক্তি চাট্টিখানি কথা নয়।
বিষয়: বিবিধ
১৬৯২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
আসলে এই জোট খুবই সাময়িক উদ্দেশ্য নিয়ে গড়া হয়েছে।
কিন্তু এরা এসব টাকা ব্যয় করে নাইট ক্লাবে নর্তকীর পেছনে , বিশাল সব অট্টালিকা বানাতে , নতুন মডেলের গাড়ি এবং ফুটবল ক্লাব কিনতে ।
এসব টাকা যদি তারা পাশের গরীব মুসলমানদের জন্য ব্যয় করতো , নিজেদের মধ্যে যে অহেতুক বিভেদ চলছে তা সমাধানে এগিয়ে আসতো এবং বিশ্বের বিষফোঁড়া ইসরায়েলকে সাইজ করতো - তাহলে মুসলমানদেরকে কেউ প্রতারিত করতে পারতো না ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন