আল্লাহর অস্থিত্ব এর বিরূধিতা /// এম ওসমান গনি
লিখেছেন লিখেছেন ওসমান গনি ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১২:৫১:০৩ দুপুর
মানুষ একটি মশকের কাছে পর্যন্ত অসহায় । একটি ক্ষুদ্র মশা কিংবা একটি মাছি একজন মানুষকে তিক্ত-বিরক্ত ও অস্থির করে তুলতে পারে। একটি সদ্য প্রসুত ছারপোকার বাচ্চা কোনো মানুষের আরামের ঘুমকে হারাম করে দিতে পারে। চোখে একটি ক্ষুদ্র ধুলি-কনা কিংবা বালি কণা পড়লে কচলাতে কচলাতে চোখের কি দশা হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুটো চোখের সামনে একটি হাত রেখে দিলেই দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যায়। দেয়ালের ওপাশে কি আছে দেখা যায়না কিংবা বুঝতে পারা যায়না কিছুই । মানুষ অতীত ভুলে যায়,ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আন্দাজ অনুমানের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয় ও অনেক সময় ভুল করে এবং বর্তমান নিয়েও সিদ্ধান্তহীনতা কিংবা বিবিধ জটিলতায় নিপতিত। এ রকম হাজারো সীমাবদ্ধতা নিয়েই তো মানুষ। তাহলে ধরাকে সরা জ্ঞান করে এত বাহাদুরি কিসের? এতো হানাহানি ও এতো বাড়াবাড়ি চলছে কেনো সারা দুনিয়ায়? এ সময়ে মানুষ এভাবে স্বেচ্ছাচরিতায় আকন্ঠ নিমজ্জিত হলো কেনো চিন্তার বিষয় নয় কি?
একটি মানব শিশু জন্ম নেয়ার পর কত অসহায় তা কি বলার অপেক্ষা রাখে? শিশুর কোনো হুঁশ জ্ঞান থাকেনা ।প্রশ্রাব খাইয়ে দিলে খেয়ে নেয়,পায়খানা মুখে গেলে নির্বিঘ্নে চুষতে থাকে। এভাবে একটি নবজাতকের অসহায়ত্ব কি বিস্মিত হওয়ার মত নয়? আবার সে শিশুটি যখন ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে ও পরিপূর্ণ মানুষে পরিণত হয় তখন সে তার জন্মকালীন অসহায়ত্বের কথা বেমালুম ভুলে যায়। অথচ মৃত্যুকালীন সময় যখন উপস্থিত হয় তখন একটু চিন্তা করে দেখুন,কত অসহায় অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে? বিচিত্র ব্যাপার হলো অসহায় হয়ে জন্ম নেয়া এ শিশুটি যখন মহান সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট শস্য,ফল-ফলাদি খেয়ে খেয়ে রিষ্টপুষ্ট হয়ে আর তার দুনিয়ার আলো বাতাস পেয়ে পেয়ে যখন তরু তাজা হয়ে উঠলো তখন এদের মধ্যে কিছু অকৃতজ্ঞ অপরিণামদর্শী বলে উঠলো কে আবার সৃষ্টিকর্তা? এসব বুঝি না,মানি না । যা দেখি না তা মানি না। কি চমৎকার যুক্তি! যা দেখি না তা মানবো কেন?
মানুষ আয়নার সাহায্য ছাড়া তার কপালটি কিংবা চোখ দুটোও তো দেখতে পায় না। পুরুষ মানুষের চুল মেয়েলোকের মত লম্বা না হলে তাও আয়নার সাহায্য ছাড়া দেখতে পাওয়া যায় না । তাই বলে কি চোখ,কপাল ও চুলের অস্তিত্ব মানুষের মধ্যে নেই? বাতাস কি আমরা দেখি? তবে বাতাসের অস্তিত্ব কি বুঝতে পারি না অনায়াসেই? গোলাপ ফুলের মন মাতানো সৌরভ কি দেখতে পাওয়া যায় ? তবে তার মাতিয়ে তোলা সুগন্ধ গোলাপের অস্তিত্বের জন্য যথেষ্ট নয় কি? তাহলে ওরা অহেতুক আল্লাহর অস্থিত্ব নিয়ে কুতর্ক করছে কেন? বিশ্ব জাহানের বিশালত্ব ও চমৎকার সৃষ্টি শৈলী দেখে কি মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর অস্বিত্ব অনুধাবন করা যায়না?
বর্তমান সময়ে ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রেরিত মহাপুরুষদের নিয়ে যার যা ইচ্ছা তাই আজে বাজে লিখছে ও বলে যাচ্ছে।এটা কি আদৌ ঠিক? ওরা এর মাধ্যমে সমাজে একটি পেনিক সিসোয়েশন তৈরি করছে না? সারা দুনিয়ায় এ রকম লোকের সংখ্যা তত বেশী না হলেও এদের উপদ্রব চোখে পড়ার মত। তাদের লম্ফ ঝম্ফ ও হাম্বি তম্বি ধার্মিক মানুষদের হতবাক করে দিচ্ছে। সুরা বাকারার ১৮ নং আয়াতে আল্লাহ সঠিক কথাটি বলেছেন “ওরা কালা ওরা বোবা ও ওরা অন্ধ। এরা আর কখনও ফিরে আসবে ন “। বস্তুত: ওরা সত্যকে দেখেও মিথা প্রতিপন্ন করে। ওরা সত্য জানার পরও সত্যের পক্ষে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় । আর ওরা সত্য শুনেও না শুনার ভান করে।
আসল কথা হলো বিশ্বাসীদের খাতায় নাম লেখিয়ে যারা এসব অবিশ্বাসী লোকদের দিব্বি সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে তারা কি প্রকারান্তরে তাদের সহযোগি হিসেবে নিজেদের চিত্রিত ও পরিচিহ্নিত করছে না? তিনি যেই হোন,যেই তার পদবি হোক না কেনো কিছু মানুষ তাদের লুকানো মনোবৃত্তি নিয়ে গণ্ডগোল পাকাচ্ছে। এটি কি বুঝা যায়না? সুতরাং কৃত্রিমতা ত্যাগ করে প্রত্যেকের অবস্থান পরিস্কার করা উচিত। অবাক ব্যাপার মৃত্যুর ভয় কিংবা পরকালীন শাস্তির ভয় কি এদের এতটুকু বিচলিত করছে না? আমরা জানি সত্য এক ও অভিন্ন আর মহাসত্য হলো আল্লাহর অস্তিত্ব ও মানুষ তারই সৃষ্টি । মনে রাখতে হবে মৃত্যু অবধারিত । আল্লাহ বলেন” আমি ভাল মন্দের জররা জররা হিসাব নেব “। সতরাং সকলের ছলচাতুরি ও অসম্মানজনক কথা বলা কিংবা বক্র পথে লেখালেখি করে সমাজে উত্তেজনা সৃষ্টির প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। এদেরকে সময় থাকতে সঠিক পথে ফিরে আসার জন্য আমরা উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। আল্লাহ বলেন সত্য সমাগত মিথ্যা হোক অপসৃত বস্তুত মিথ্যা অপসৃত হবেই।
বিষয়: বিবিধ
১৩৬১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন