বিস্ময়কর কুরআন ও তার প্রতি অবিচার
লিখেছেন লিখেছেন ওসমান গনি ১১ জুলাই, ২০১৫, ১১:১৮:৩৭ সকাল
রমজান মাসে বিদ্যুৎ গতিতে তারাবী পড়ার মাধ্যমে কি অর্জিত হচ্ছে জানি না। অথচ প্রকৃত কুরআন চর্চা নেই কোথাও ।এভাবে কুরআনকে নিয়ে যতসব লকোচুরি। জাতি, তাদের নেতৃবৃন্দ তথাকথিত আলেম সমাজসহ সবাই মিলে নিজেদের কোটারী স্বার্থের বিনিময়ে মানব জাতির রক্ষাকবচ এই মহিমান্বিত কিতাবকে বিদঘুটে যতসব ব্যবহারের মাধ্যমে লুকিয়ে রাখতে চায়! এটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কুরআনের বিষয়বস্তুকে জানার গরজ বোধ করছি না। আর এভাবেই কুরআন নাজিলের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করছি ।
আল্লাহর বাণীর সাথে এ রকম আচরণ বেয়াদবির নামান্তর,এটি সত্যিই লজ্জাজনক, অনভিপ্রেত ও করুণ। আজ আমরা সবাই মিলে-মিশে কুরআনকে দেশ রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে নির্বাসনে পাঠিয়েছি। এটি কি আমাদের কম কৃতিত্ব? বলতে গেলে আল্লাহর কালামের নিরব কান্না মুসলিম মিল্লাতকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
সত্যি কথা বলতে কী বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে পাক কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব, বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ও গ্রহণযোগ্যতা মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সকল মানুষের নিকট দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ পর্যন্ত কুরআনের কোন বক্তব্য যুগের সাথে কিংবা বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক কেউ প্রমাণ করতে পারে নি। ড. মরিস বুকাইলি তার Science, Quran & Bible গ্রন্থে বলেন, “বাইবেলে ৫০ হাজার errors আছে। অথচ কুরআনে একটি বাক্য, একটি শব্দও আমি পাইনি যা আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।” মিল্লাতে ইসলামিয়ার জন্য এর চেয়ে আর কী সৌভাগ্যের বিষয় হতে পারে।
খৃষ্টান যাজক ডা. সেলতাই বলেন, “কুরআনের মত অনন্য সাধারণ গ্রন্থ কোন মানুষ রচনা করতে পারে না, এটি একটি জীবন্ত মোজেজা। যে মোজেজা মৃতকে জীবিত করার চাইতেও বিস্ময়কর।” প্রখ্যাত ইংরেজ লেখক গীবন বলেন, ‘জীবনের প্রতিটি শাখার কার্যকরী বিষয় কুরআনে মওজুদ রয়েছে।’ আনন্দের কথা এমন একটি বিস্ময়কর সত্য কিতাব ও বিধানের অনুসারী আমরা। কিন্তু আমরা কি ঐশী গ্রন্থের মান মর্যাদা রক্ষা করতে পেরেছি? বর্তমানে পৃথিবীতে মুসলমানদের অবস্থা কী নাজুক ও ক্ষয়িষ্ণু নয়? কিন্তু কেন এমন বেহাল অবস্থা আমাদের? এর জন্য দায়ি কে? হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের কথা বাদই দিলাম। কেন না এ ধর্মগ্রন্থগুলো মানব সৃষ্ট ও এর বক্তব্যগুলো পুরোহিতরা লিখে নিয়েছে নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী এ রকম অভিযোগ ভুরি ভুরি। আহলে কিতাবধারী ইহুদী-খৃষ্টানরাও তাদের নবীর অবর্তমানে তাদের ধর্মীয় কিতাবকে বিকৃত, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন, সংশোধন ও পরিমার্জন করে আসল কিতাবের কিছুই বাকি রাখে নি বলে অভিযোগ আছে। অথচ এ সব বিকৃত ধর্মগ্রন্থ ও জীবনাদর্শের জন্য মানুষ জীবনপণ লড়াই করছে, এমনকি সেসব ধর্মের মান মর্যাদা বৃদ্ধি ও প্রচার-প্রসারের জন্য নিরলসভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে দুনিয়াব্যাপী।
দূর্ভাগ্যের বিষয় আল্লাহর কালামকে পরিত্যাগের কারণে মিল্লাতের অপমান, লাঞ্চনা,গঞ্জনা আর শয়তানি শক্তির কাছে অবনত মস্তকের মহড়া সত্যিই অবাক হওয়ার মতই। এর থেকে পরিত্রাণের পথ কি জানি না ! হয়তো আল্লাহই ভাল জানেন। তবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি এটা নিঃসংকোচে বলা যায়। তার পরও আমরা হতাশ হতে চাই না। আল্লাহ বলেন”তোমরা হতাশ হয়ো না ,তোমরা নিরাশ হয়ো না,তোমরাই হবে বিজয়ী যদি তোমরা হও মোমেন ”। আসুন অধঃপতনের ফিরিস্তি লম্বা না করে এই দূর্দিনে সকলে মিলে জিন্দাদিল সে সব মানুষের কাতারে সামিল হই,যারা শয়তানী শক্তির রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্য বলা থেকে বিরত হয় নি এক মূহুর্তের জন্যও আর আল্লাহর পথে লোকদের ডাকা কোনো কিছুর বিনিময়ে থামিয়ে দেয় নি কখনও। আসুন শেষমেষ আল্লাহর আলোকে আবার প্রজ্বলিত করি ,তার রজ্জুকে ঐক্যবদ্ধভাবে ধারণ করি আর এভাবে এগিয়ে যাই । আমরা তাঁরই কাছে সাহায্য চাই। ব্যর্থতার গ্লানি মুছে দাওগো প্রভু। দূর্দশার ক্লান্তি না আসুক আর। ক্ষমা করো মোদের বারবার।
বিষয়: বিবিধ
১০৫০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন