আকাশ থেকে 'গরু-বৃষ্টি' বর্ষণ করে করবানী পশুর চাহিদা মিটাতে পারবেন কি আল্লা???
লিখেছেন লিখেছেন অপি বাইদান ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:১২:৩৫ সকাল
আসছে কোরবানীর ঈদ। আল্লার মুমিনরা 'আল্লাহু আকবর' চিৎকার দিয়ে গরুর গলায় ছুরি চালাবেন। যন্ত্রনা কাতর পশুর ফিনকি দেয়া রক্ত দেখে "দয়াল-আল্লা" খুশি হবেন। মুমিনের হার্ড-ডিস্ক গরুর পশমের সমপরিমান লক্ষ/কোটি নেকিতে পূর্ণ হবে। এটাই কোরবানীর ধর্ম কথা।
কিন্তু বলা নেই, কওয়া নাই, হটাৎ করে মুমিনের মুমিনী নিয়তে পানি ঢেলে দিল প্রতিবেশী ভারত। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলাদেশে গরু পাঠানো বন্ধ করতে বিএসএফকে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন। হায় হোসেন কারবাল!! বাংলাদেশে সে পরিমান গরু নেই যা কচুকাটা করে আল্লাকে খুশি করা যায়। উপায় কি! এতবড় কোরবানির ঈদে আল্লা কি গোমরা মুখ করে বসে থাকবেন??
এ বিষয়ে মর্দে মুমিনরা অক্ষম ক্রধে এখন ব্লগ, ফেসবুকে জ্বালাময়ী কথাবার্তা শুরু করেছেন, তা অনেকটা নিন্মরুপ-
১। ভারত গরু দেয়নি তো বয়েই গেল? আমরা প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, মায়ানমার থেকে গরু আমদানি করে কোরবানীর নিয়ত পুরন করবই, ইনশাআল্লা।
২। প্রয়োজনে নিজেরা গোয়ালঘরে ঘুমিয়ে বসত বাড়ীতে গরু প্রজনন খামার গড়ে তুলব। তবুও ভারতের কাছে নতি স্বীকার নয়।
৩। আমরাও দেখে নিব- ভারত কত দিন গরু রফতানি বন্ধ করে থাকতে পারে। ভারতের অর্থনীতিতে কোটি/কোটি টাকার লোকশান গুনতে হবে। তখন বুঝবে বাছাধন।
ইত্যাদি, ইত্যাদি........ এমন অনেক কথা। কথার কথা। কিন্তু কেউই আসল কথা বলে না। মুমিনরা সম্ভবত আল্লার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
ভারতের দান/দক্ষিনার দরকার কি? আল্লা কি পাথর-বৃষ্টির মত 'গরু-বৃষ্টি' বর্ষন করে বাঙালি মুমিনের গরুর চাহিদা পুরন করে দিতে পারেন্না? নাকি???????
বিষয়: বিবিধ
১৮৬৯ বার পঠিত, ৪৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার প্রতি একটি বিশেষ অনুরোধ। আপনি কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতে পারেন, নাও পারেন। এটা আপনার সম্পুর্ণ ব্যক্তিস্বাধীনতা। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে সে অধিকার দিয়েছেন। তবে দয়া করে কোনো র্ধম সম্পর্কে বিদ্রুপাত্বক মন্তব্য করবেন না। আপনি ধর্মে বিশ্বাসী না হলেও আপনি কারো ধর্মে আক্রমন করতে পারেন না। আর ধর্মে বিশ্বাসী হলে, নিশ্চয় আপনার ধর্মে কেউ আঘাত দিক-এটা আপনিও সহ্য করতে পারবেন না। সুতরাং ধর্ম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকাটা একটি শান্তিপুর্ণ সমাজের জন্য মঙ্গলজনক।
তবে ধর্ম সম্পর্কে কোনো কারণে আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতা থাকলে, আমাকে লিখতে পারেন। আমি আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবো। ভালো থাকুন।
না, আপনি ঠিকি বলেছেন। ধর্মে বিশ্বাস করা, না করা ব্যক্তিস্বাধীনতা। নিরীহ সাদাসিধে কথা। শুনতে ভাল লাগে। ধন্যবাদ আবারো।
কিন্তু ভায়া আপনার ইসলাম ধর্মে জন্মগ্রহন করে কেউ যদি ইসলামকে বাজে ধর্ম জ্ঞান করে তা বর্জন করে সে ক্ষেত্রে ইসলাম তার ব্যক্তিস্বাধীনতাকে কতটুকু মুল্য দিবে? নাকি মুর্তাদ হিসেবে কল্লা কেটে দিবে?? যদি কল্লা কেটে দেয় তাহলে তো সেই বর্বর ধর্মকে ছাড় দেয়া যায় না। সেই ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে, পদেপদে অপদস্থ করা হবে, ব্যঙ্গ করা হবে। যেমন করা হয়ে থাকে সাহিত্য, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা বা অন্যান্য যাবতীয় বিষয়কে। এতে আপনার ধর্ম অনুভুতি আঘাত পেয়ে জর্জরিত হলেও কিছু করার নেই। দুঃখিত।
শুধু লতিফ, তসলিমাদের পরিণতির দিকে তাকালেই হবে।
মুখরোচক কচকচা কিছু পর্ণ লেখার কারণ রহস্যজনক। হয়তবা বেশ্যাবৃত্তি আর পর্ণব্যাবসা করে মৌলবাদের কাঁধে বন্দুক রেখে বিদেশে পাড়ি জমানোই মূল উদ্দেশ্য?
বাকি ইসলামবিদ্বেষী ইতরেরও হয়ত একি কুমতলব।
বরং যে লোকেরা রাতের আঁধারে তাদের দেকতা মা গরুকে সীমান্তের এপারে এনে বলি দেয় টাকার জন্য - আবার সেই দেবতা গরুমতার চামড়া কিনে নিয়ে পায়ের জুতা বানায় তাদেরকেই দোষ দেওয়া উচিৎ বেরি পাহ্-নি !
আল্লাহ তার বান্দাদের এই কাজের জন্য ব্যবস্থা বন্ধ রাখবেন না ।
হয়ত এই কাজটা বাংলাদেশের জন্য শাপে বর হয়ে আসবে আর ভারতের জন্য হিতে বিপরীত ।
ঠিক তদ্রূপ আল্লাহ তা'লা যদি 'গরু বৃষ্টি' দিয়ে গরু পাঠিয়েই দেন তাহলে তখন তোমার মত ইসলাম বিদ্ধেষীরাই আগে গরুর জন্য সিরিয়ালে দাঁড়াতে।।
আর আরেকটি কথা মনে রেখো, কোরনানের জন্য গরু শর্ত নয়।
যেহেতু কোরবানের সময় এখনো দেরী তো অপেক্ষা করো, ইন্ডিয়ান ডান্ডিরা গরু না দিয়ে কই যাবে? যাদের সারা বছর শ্রম দিয়ে নিজেদের মা মণিকে বড় করে তুলছে, সেই মা মণিকে তারাই আবার চুরি করে এই বাংগালি মুছলমানদের হাতে তুলে দিবে। তখন তাদের মায়ের অংশ = মাংশ আমরাই খাবো। আর তাদের কাছে থাকা পরিত্যক্ত ও দৃষ্টিকটু তাদের মায়ের পশ্রাব খেয়ে তারা ধর্ম পালন করবে।।
সঠিক সময়ের অপেক্ষায় থাকো।
আপনার আল্লা নাকি পাথর বৃষ্টি নামিয়ে লুত আমলে অসংখ্য মানুষ খুন করেছেন। তো, এই আমলে একটু গরু বৃষ্টি দিয়ে মুমিনের কোরবানীর সাধ পুরন করেন্না কেন!!!
আর যার মাথা তার ব্যথা হওয়ার কথা কিন্তু কোরবানি নিয়ে মালাউনদের এতো চিন্তা কেন?
কিভাবে আমরা কোরবাব দেই সেটা দেখো।।।
মালাউনেরা বসে বসে তাদের গরু মায়ের গর্ভ থেকে থেকে একবার বাহির হোক বা আবার ডুকুক সেটা জানার দরকার নেই।
আপনি যে দেশে বসবাস করেন সেই দেশের কিছু আইন-কানুন আছে। আপনি ওই দেশে বসবাস করতে হলে আপনাকে সেইসব আইন-কানুন মেনে চলতে হবে। অন্যথায় আইন অমান্য করার কারণে আপনার জেল-জরিমানা তো হবেই, এমনকি ফাঁসিও হতে পারে।
তেমনি প্রতিটি ধর্মের কিছু রীতি-নীতি আছে। ধর্মে বিশ্বাসী হলে সেগুলো মেনে চলতে হয়। শুধু ইসলাম ধর্মেই নয়, হিন্দু, শিক, মর্মেন খ্রিষ্টান, অর্থডস্ক ইহুদীসহ অধিকাংশ ধর্মের আইন কানুনের দিকে তাকান, দেখবেন সেখানে মুরতাদ বা ধর্মান্তির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
কিন্তু ভায়া- হিন্দু, শিক, মর্মেন খ্রিষ্টান, অর্থডস্ক ইহুদী......... সহ সবই কিন্তু মিথ্যা/ভ্রান্ত/অভিষপ্ত/বিপদগামী ধর্ম। তো, এসব মিথ্যা ধর্মের সাথে আপনার আল্লার একমাত্র সত্য! ধর্ম! ইসলামের এত মিল কেন? নাকি মিথ্যা ধর্ম থেকে চুরি, চামারি করেই বর্বর ইসলাম ধর্মের গজাখিচুড়ি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়টি আগে ক্লিয়ার করেন, তারপর মূল প্রসঙ্গে আসা যাবে। ধন্যবাদ।
আপনি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন, আমি একজন মুসলিম (প্রাউড টু বি এ গুড মুসলিম)। এরপরও একটি গঠনমুলক আলোচনায় আপনি ইসলামকে আত্রমণ করে লিখছেন 'বর্বর ইসলাম'। আমি জানিনা, আপনার সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারবো কিনা।
সে যাক আপনার প্রশ্নের জবাবে বলতে চাই- পৃথিবীতে লক্ষাধিক নবী ও রাসুল (দূত) এসেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, এমন কোনো জাতি নেই যাদের কাছে আমি কোনো নবী প্রেরণ করিনি। সুতরাংবুঝা যায়, এই লক্ষাধিক নবীর কেউ কেউ নতুন ধর্ম নিয়ে এসেছেন। আবার কেউ কেউ পুরাতন ধর্ম প্রচার করেছেন।
এসব ধর্মে বা ধর্মগ্রন্থে পরবর্তীতে মানুষ তাদের সুবিধার্থে মনগড়া অনেক বিধি বিধাল ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পরিবর্তন ও পরবির্ধন করে ধর্মকে ভ্রান্ত করে ফেলা হয়েছে।
যেমন খি্রষ্টানরা ইসা (আ কে নবী হিসেবে বিশ্বাস করে কিন্তু তারা মনে করে তিনি আল্লাহর পুত্র। আবার ইয়াহুদীরা মনে করে উজাইর (আ আল্লাহর পুত্র। এভাবেই সত্য ধর্মকে বিকৃত করা হয়েছে। মূল ধর্ম সত্য।
ইসলাম ধর্মের বিধি বিধান অন্য ধর্ম থেকে নেওয়া হয়েছে কি-না আপনার এ প্রশ্নটির জবাব হচ্ছে-সকল সত্য ধর্মের মূলমন্ত্র একটি। সময়ে সময়ে যুগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন ধর্ম এসেছে। কিন্তু আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তা একজন-এই ম্যাসেজ সমান। সুতরাং ইসলামেও অন্য ধর্মের সাথে মিল থাকবে-এটা স্বাভাবিক। তবে ইসলাম হচ্ছে শেষ ধর্ম। পরিপুর্ণ জীবন ব্যবস্থা এরপর আর কোনো ধর্ম নেই।
আপনার প্রতি একটি পরামর্শ, বিশ্বাস অর্জনের জন্য নয়; বরং জ্ঞানার্জনের জন্য ধর্ম সস্পর্কে পড়াশোনা করুন। অনেক বিভ্রান্তি কেটে যেতে পারে।
আর গঠনমুলক আলোচনার জন্য আপনাকে সবসময়ই স্বাগত জানাই। তবে শালিনতাহীন আলোচনা কন্টিনিউ করতে আমার আগ্রহ নেই।
ভালো থাকুন।
আপনি প্রথমে বল্লেন- "আপনি কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতে পারেন, নাও পারেন। এটা আপনার সম্পুর্ণ ব্যক্তিস্বাধীনতা।" তারপর সে অবস্থান থেকে সরে এসে U-TURN নিয়ে বল্লেন- "ধর্মান্তির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।" আর সবশেষে এখন আপনি ইসলাম ধর্মের গন্ড বদ্ধমূল ধারনা দিয়ে সবাই কে ম্যানেজ করার চেষ্টা করলেন!! আসলে এতটা হাস্যকর ভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উন্মক্ত একটি ব্লগে ইসলামের বৈতরণি পার হওয়া যাবে না। এটি শফী হুজের মাদ্রাসা না যে আপনি যা বুঝাবেন তাতেই আমিন আমিন??
এবার মূলপ্রসঙ্গ :
১। আপনি বলেছেব- "আপনার বিশ্বাস পরবর্তন হতে পারে। কিন্তু গালি দেয়ার কোনো অধিকার নেই।"
গালি কি এমনি এমনি দেয়? ধর্মবিশ্বাস পরিবর্তনের কারনে যে ধর্ম মানুষের গলা কেটে দেয় সেই বর্বর ধর্মকে শুধু গালি না, বরংচ সভ্য জগৎ থেকে নির্মুল করা সবার মনবিক দায়িত্ব।
২। আপনি বলেছেন- "আপনি যে দেশে বসবাস করেন সেই দেশের কিছু আইন-কানুন আছে। আপনি ওই দেশে বসবাস করতে হলে আপনাকে সেইসব আইন-কানুন মেনে চলতে হবে। অন্যথায় আইন অমান্য করার কারণে আপনার জেল-জরিমানা তো হবেই, এমনকি ফাঁসিও হতে পারে।"
আপনার এ কথার সাথে শতভাগ সহমত। সভ্য দেশের সভ্য সমাজে বসবাস করে কেউ যদি চুরি/ডাকাতি করে, ঘুষখায়, ধর্ষন করে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আপনি এসে বলবেন- ৬০০ ডানার এক জিবরাইল দৈত্য গর্ত/গহব্বরে নেমে এসে অমুকের কাছে আসমানি ফরমান দিয়ে গেছে তা সবাই বিশ্বাস করতেই হবে। এটাই আইন। না করলে কল্লাফতে করা হবে! কিন্তু ভাই, মুসলিমের ঘরে জন্ম নিয়েছে বলেই সবার বিবেক, বুদ্ধি এবং বিজ্ঞানমনস্কতা তো মরে যায়নি যে সিন্দাবাদ দৈত্যের গল্প বিশ্বাস করবে। আপনি বলবেন অমুক ব্যাক্তি গাধা আকৃতির প্রানির পিঠে চড়ে মহাশুন্য ভ্রমন করেছেন, তাহলে তো মানুষ হাসাহাসি করেবেই। তবে হাঁ, এসব আজেবাজে কল্পকথা আপনি বিশ্বাস করতেই পারেন, তাতে কোন আপত্যি নেই। কিন্তু আপনার অদ্ভুত বিশ্বাস আন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার অবকাশ নেই।
৩। তারপর আপনি বাচালের মত অনেক কথাই বলেছেন, যেমন-
ক) "পৃথিবীতে লক্ষাধিক নবী ও রাসুল (দূত) এসেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, এমন কোনো জাতি নেই যাদের কাছে আমি কোনো নবী প্রেরণ করিনি...........
খ) "এসব ধর্মে বা ধর্মগ্রন্থে পরবর্তীতে মানুষ তাদের সুবিধার্থে মনগড়া অনেক বিধি বিধাল ঢুকিয়ে দিয়েছে.........."
গ) "তবে ইসলাম হচ্ছে শেষ ধর্ম। পরিপুর্ণ জীবন ব্যবস্থা এরপর আর কোনো ধর্ম নেই.."
দেখুন আপনার এবং আপনার আল্লার এসব খিস্তি খেউড়ে কথা অন্য ধর্মের লোকেরা বিশ্বাস করবে কোন দুঃখে? তাদের ধর্ম, দর্শন, শিক্ষা, আদর্শ, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, সংবিধান..... মরে গেছে নাকি?
বিষয়টি উল্টো ভাবেও দেখা যেতে পারে। ওরা যদি বলে আপনার আল্লা/টল্লা বলে কিছু নেই। সব বানোয়াট। ভন্ডামি। ধূর্ত নবী মোহাম্মদ নিজের উচ্চাভিলাস, যৌনতা এবং নারীলোভ পুরন করার জন্য কাল্পনিক আল্লা ভাইরাস পয়দা করেছেন। মূলত অন্য ধর্ম থেকে চুরি, চামারি, ধাপ্পাবাজি করে ইসলাম মানক জগাখিচুড়ির জন্ম।
তখন আপনি কি বলবেন??
আপনার গ্রামের একজন নিরক্ষর লোক, যে কোনো দিন স্কুলের বারান্দাও দেখেনি, তাকে যদি বলেন তুমি একটি বই রচনা করো, সেকি লিখতে পারবে? সে যতই বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী হোক-অক্ষরজ্ঞান ছাড়া কি সে বই লিখতে পারবে?
আপাতত: এই প্রশ্নটির জবাব আপনার কাছ থেকে চাই। এরপর অন্য আলোচনায় আসবো।
'লোক সাহিত্য" বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডারের নেয়ামক শক্তি। বাংলা সাহিত্যকে এই লোক সাহিত্য ব্যাপ্তি প্রদান করেছে, করেছে সমৃদ্ধ। 'লোক সাহিত্য' বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অথচ এর সৃষ্টি ঘটেছে অশিক্ষিত জনগোষ্ঠির মাধ্যমে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রসার ঘটেছে মৌখিকভাবে।
লোক সাহিত্য মূলত মৌখিক সাহিত্য। ফলে এধরণের সাহিত্য স্মৃতিসহায়ক কৌশল, ভাষার গঠনকাঠামো এবং শৈলীর উপরও নির্ভর করে। এদেশের লোক সাহিত্য সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ করছে। এগুলো হচ্ছে মহাকাব্য, কবিতা ও নাটক, লোক গল্প, প্রবাদ বাক্য, গীতি কাব্য প্রভৃতি।
লোক সাহিত্যের ব্যাপ্তি বিশাল বিস্তৃত। প্রেম, ধর্ম, দর্শন, ভক্তি, কর্ম ও পরিশ্রম, পেশা ও জীবিকা, ব্যাঙ্গ ও কৌতুক এবং এসবের মিশ্রণ। আছে গানের শাখা- বাউল, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, গম্ভীরা, কবিগান, জারিগান, সারিগান, ঘাটু,যাত্রা ,ঝুমুর গান এবং জাগের গান।
বাংলা লোক সাহিত্যের অন্যতম কর্ণধার মরমী কবি লালন শাই। তিনি স্কুল তো দুরে কথা, স্কুলের বারান্দাও দেখিন্নি। অক্ষর জ্ঞানহীন লালন যে সাহিত্য রচনা করেছেন তা "পিএইচডি" ক্লাসের ছাত্ররা অধ্যয়ন করেন।
কবি নজরুলও প্রাইমারী স্কুলের বারান্দা পার হতে পারেন্নি। বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ৯ বছর বয়সে তিনি স্কুল জীবনের ইতি টানেন। শুরু হয় কর্ম জীবন।
এমন উদাহরন শতশত আছে। বিখ্যাত 'ময়মনসিংহ গীতিকা' র নাম শুনেছেন? বলেন তো এর রচয়িতা কারা???
'কলা রুয়ে না কেট পাত, তাতেই কাপর তাতেই ভাত'
‘খনা বলে চাষার পো,/ শরতের শেষে সরিষা রো।’
‘ষোল চাষে মূলা, তার অর্ধেক তুলা,/ তার অর্ধেক ধান, বিনা চাষে পান।/ খনার বচন, মিথ্যা হয় না কদাচন।’
ধানের গাছে শামুক পা,/ বন বিড়ালী করে রা।/ গাছে গাছে আগুন জ্বলে,/ বৃষ্টি হবে খনায় বলে।’
যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজার পূর্ণ দেশ'
‘কচু বনে ছড়ালে ছাই,/ খনা বলে তার সংখ্যা নাই।’
ক্ষন জন্মা 'খনার এ ধরনের শত সহশ্র বচন সংগ্রহ করে ডঃ দীনেস চন্দ্র সেন খনার বিশাল সাহিত্য সমগ্র সংকলন করেছেন। যা এখন বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি।
বিঃ দ্রঃ- অক্ষর জ্ঞানহীন খনা বা ক্ষণা কথিত আছে তার আসল নাম লীলাবতী জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারীর যিনি বচন রচনার জন্যেই বেশি সমাদৃত, মূলত খনার ভবিষ্যতবাণীগুলোই খনার বচন নামে বহুল পরিচিত। মনে করা হয় ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার আবির্ভাব হয়েছিল। কিংবদন্তি অনুসারে তিনি বাস করতেন পশ্চিমবঙ্গের চব্বিস পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলিয়া গ্রামে।
রবী ঠাকুর মেট্রিকুলেশন পর্যন্ত পড়েছেন। অন্যান্য যাদের কথা বলেছেন, তারা কেউই নিরক্ষর ছিলেন না।
সেযাক, আপনি লোক সাহিত্যের কথা বলেছেন। নিরক্ষর লোকেরা লোক সাহিত্য রচনা করতে পারেন। কারণ এখানে
ভাষাগত দিক খুব বিবেচ্য নয়। মুল বিষয়বস্তু ঠিক থাকলেই হলো। কিছু ছন্দ আর ভাবার্থ থাকলেই হলো।
এবার আপনার কাছ থেকে একজন নিরক্ষর লোকের নাম জানতে চাই যিনি রবী ঠাকুর, কবি নজরুল, সৈয়দ মুজবতা আলী, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন আহমদ, আহমদ শরীফ মানের গ্রন্থ রচনা করেছেন।
তাহলে আপনার কাছে আমার প্রশ্ন-আজ থেকে চৌদ্দশ বছর আগে আরবে জন্মনেয়া মেষপালক এক নিরক্ষর রাখাল ব্যক্তির পক্ষে পবিত্র কুরআনের মতো উচুমানের একটি গ্রন্থ রচনা করা কীভাবে সম্ভব হবে? তখনকার সময়েও তো আপনার মতো অনেকেই বলেছিলেন, ওটা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) রচিত একখানী গ্রন্থ ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু ঐ গ্রন্থেই তো আল্লাহ তায়ালা চ্যালেঞ্জ করে বসেছিলেন, ক্ষমতা থাকলে কুরআনের সবচেয়ে ছোট বাক্যের মতো একটি বাক্য রচনা করে নিয়ে আসো। সেদিন সকলের মুখ চুপসে গিয়েছিলো। আরবে তখন অনেক উঁচুমানের কবি ও সাহিত্যিকরা ছিলেন। কিন্তু কোথায়, কেউতো একটি লাইনও রচনা করতে পারেননি। কুরআন পড়তে আপনাকে বলবো না। কারণ আপনার বিশ্বাস, ওটা মাবরচিত। আরবের ইতিহাস পড়ুন । এসব ঘটনা জানতে পারবেন।
আর আপনাকে সেই সুযোগটা দেওয়া হলো, চেষ্টা করে দেখুন পবিত্র কুরআনের আদলে দুই এক লাইন রচনা করতে পারেন কি-না?
দেখুন, কোরাণের পুথি অত্যন্ত নিচু মানের। এর কোন সাহিত্যমান নেই। আপনি কখনো হোমার, ওডেসি, চর্যাপদ এসবের নাম শুনেছেন? শুনেন্নি, শুনেছেন শুধু কোরাণের কিচ্ছা কাহিনী। হোমার, ওডেসি, চর্যাপদ.....র নাম উচ্চারণ করতে গেলে নবী মোহাম্মদের দাঁত ভেংগে যাবে।
কোরাণের স্বর্গীয় পুঠি রচনা করতে বলেছেন, তাহলে শুনুন।
"কুল আউযুবিরাব্বিল নাস,
মালেকিন নাস,
ইলাহিন নাস"
"সবাই বল গাধা খায় ঘাষ,
ছাগু খায় ঘাষ,
গরু খায় ঘাষ"
কি? অবিকল আল্লার কোরাণের মত উন্নত মানের হয়েছে এবার? তো্ এসব পুথির চ্যালেঞ্জ দিয়ে এত বড়াই???????
পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারায় একটি আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "আল্লাহ ওদের অন্তরসমুহ ও শ্রবনশক্তির ওপর মোহর মেরে দিয়েছেন এবং চুক্ষুর ওপর ফেলে দিয়েছেন আবরন, আর তাদের জন্য রেখেছেন কঠোর শাস্তি".
আমার বিশ্বাস ওই 'ওদের' দলে আপনি পড়বেন না। যেহেতু আপনার জ্ঞান-বুদ্ধি আছে। একসময় আপনি ইসলামের বাণীতে মুগ্ধ হয়েই যাবেন।
ভালো থাকুন। প্রকৃত অর্থে কিছু জানার আগ্রহ থাকলে যোগাযোগ করবেন। বন্ধুর মতোই আপনাকে সহযোগিতার চেষ্টা করবো। আপাতত এ পর্যন্তই।
কিন্তু দেখুন আল্লা যাদের অন্তরে সীল মেরে শাস্তির ভয় দেখান সেই তাদের দেশে পিপিলিকার মত ছুটে চলছে আপনার মত অন্তর খোলা আল্লার মুমিনরা। আল্লার লাজ স্মরমের বলাই একটুকুও নেই? লজ্জা, লজ্জা....
আর ব্রিটেনসহ ইউরোপের দেশগুলো এতো সমৃদ্ধ কেন? জানতে চান এই প্রশ্নের জবাব? ওরা যে ভালো কাজ করে। এই যে আপনিই বললেন, সিরিয়ার শরনার্থীদের তারা আশ্রয় দিচ্ছে-তারা তো এর প্রতিদান পাওয়া উচিৎ। হ্যা, প্রতিদান তাদের নগদে দিয়ে দেন আল্লাহ তায়ালা। এজন্যই তারা দুনিয়ার জীবনে ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের বাসিন্দা। পরকালে তাদের জন্য কিছু নেই।
সেযাক। আপনাকে কুরআন হাদীসের প্রমাণ দিয়ে আর কোনো কিছু লিখতে চাইনা। ওগুলো আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য হবেনা। কারণ আপনি তো কোনো ধর্মেই বিশ্বাস করেন না? বরং বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে কথা বলতে পারেন।
আমি আগেই জানতে চেয়েছিলেন, কুরআনের মতো গ্রন্থ কিভাবে মুহাম্মদ (সাঃ) এর মতো একজন নিরক্ষর মেষ পালকের পক্ষে রচনা করা সম্ভব হলো বলে আপনি মনে করেন? বিশ্লেষন করলে খুশি হবো। আর একটি বিনীত অনুরোধ, আমি আল্লাহ ও রাসুলের (আঃ) ওপর বিশ্বাসী। আপনি যদি আল্লাহ ও রাসুলকে (সা.) আঘাত করে কিছু বলেন তাহলে আমাকে আক্রমন করবেন। তাই কোনো ধরনের আক্রমন না করে শালিনভাবে কথা বলুন।
আপনি অনেক জ্ঞানী। আমার সামান্য জ্ঞান দিয়ে আপনার সাথে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
আমার অনেক সহকর্মী আছেন, যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী নয়। কিন্তু তারা কোনো দিনও কারো বিশ্বাসের প্রতি আঘাত দিয়ে কথা বলেননি। বরং সবসময় সম্মান দেখিয়েই তারা কথা বলেন। ধন্যবাদ।
নাস্তিকরা না মানে ধর্ম,আইন,যুক্তি আর না মানে সমাজের কোন রীতিনীতি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন