‘মুসলিম শাসকরা ধর্মান্তরে বাধ্য করালে ভারতে হিন্দুই থাকত না’

লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ২৮ মার্চ, ২০১৬, ০২:৪৬:৫১ দুপুর

যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী ও ভাষাতাত্ত্বিক অধ্যাপক শেলডন পোলক বলেছেন, মুসলমান শাসকরা জোর করে ধর্মান্তর করালে ভারতে একজনও হিন্দু থাকত না। কারণ, মুসলমান শাসকরা ভারতে প্রায় বারোশো বছর রাজত্ব করেছিলেন।

পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকায় বুধবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নিজেকে ‘ইহুদি ব্রাহ্মণ’ বলেন পরিচয় দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণ এশিয়া চর্চার অধ্যাপক শেলডন পোলক। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মূর্তি ক্লাসিকাল লাইব্রেরি ইন্ডিয়া প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক তিনি। সম্প্রতি জয়পুর লিটারারি ফেস্টিভ্যালে এসেছিলেন পোলক।

পোলককে প্রশ্ন করা হয় যে ‘অনেকে বলেন, ইসলামি আক্রমণের পর সংস্কৃতের পতন হল, শাসকের দাপটে সবাই উর্দু, ফার্সি শিখতে ছুটল

জবাবে তিনি বলেন, ‘বাজে কথা। তোমাদের বাংলার নবদ্বীপ বা মিথিলা সংস্কৃত ন্যায়চর্চার কেন্দ্র হয়েছিল সুলতানি আমলে। দারাশিকো বেদান্ত পড়ছেন বারাণসীর পণ্ডিতদের কাছে। মুসলমান শাসকরা এ দেশে প্রায় বারোশো বছর রাজত্ব করেছিলেন। তারা জোর করে ধর্মান্তর করালে এ দেশে একজনও হিন্দু থাকত না। তাদের উৎসাহ না থাকলে সংস্কৃতও টিকে থাকত না। ধর্মের সঙ্গে ভাষার উত্থানপতন গুলিয়ে তাই লাভ নেই।’

সংস্কৃত এবং ধ্রুপদী সাহিত্য চর্চায় ভারত কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে জানতে চাইলে সমসাময়িক বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি ভাষার এই পণ্ডিত বলেন, চাই মুক্ত, বহু স্বরকে সম্মান করার মতো পরিবেশ। সংস্কৃতকে কোনো নির্দিষ্ট বর্ণের মানুষ সংরক্ষণ করেনি, সমাজের সব অংশের সেখানে ভূমিকা রয়েছে। কোনো ডিভাইসিভ, এক্সক্লুশনারি, মেজরিটারিয়ান রাজনীতি তাই সংস্কৃতের অন্তরায়। দরকার সকলকে নিয়ে মুক্ত আনন্দের সৃষ্টিশীল পরিবেশ। পরাজিতের বিষণ্ণতাবোধ থেকে সংস্কৃত পড়া যায় না, দরকার বহু স্বরের বহু স্তরের আনন্দের উপলব্ধি।’

তিনি বলেন, প্রথমেই রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থান নামে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানটির খোলনলচে বদলাতে হবে। ব্রাহ্মণ, অব্রাহ্মণ, মুসলিম, দলিত সব মিলিয়ে ভারতে কত জন সংস্কৃত পড়ে? কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবু আমার ধারণা, সাড়ে সাত কোটি। সংখ্যাটা তিন কোটি হতে পারে, দশ কোটিও! এই সাড়ে সাত কোটি ছাত্র কী শেখে, কতটুকুই বা শেখে? কিচ্ছু না। তাদের দোষ নেই, শেখানোর লোক কোথায়? ফলে প্রথমেই দরকার আন্তর্জাতিক মানের একটি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ক্লাসিকাল স্টাডিজ। এ দেশে এত আইআইটি, আইআইএম! সবাই ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং আর ম্যানেজমেন্ট পড়তে ছুটছে। কিন্তু ধ্রুপদী সাহিত্যচর্চার একটা কেন্দ্র নেই? সেখানে মেধার চর্চা হবে, সেরা লোকেরা পড়াবেন ও গবেষণা করবেন। তখনই দ্বিতীয় প্রজন্মের স্কলারেরা তৈরি হবেন। এটাই সবচেয়ে জরুরি।’

লিংক-

http://www.rtnn.net/bangla//newsdetail/detail/8/8/101308#.Vvjus-J97IV

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

363908
২৮ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০৩:৫২
কুয়েত থেকে লিখেছেন : লেখাটি ভালো লাগলো আপনাকে ধন্যবাদ
২৯ মার্চ ২০১৬ সকাল ০৯:২৮
301888
মুসলমান লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
363909
২৮ মার্চ ২০১৬ বিকাল ০৫:৪১
তট রেখা লিখেছেন : সত্য সবসময় স্ব-মহিমায় ভাস্বর থাকে।
২৯ মার্চ ২০১৬ সকাল ০৯:২৯
301889
মুসলমান লিখেছেন : কেউ স্বীকার করুক বা না করুক।
363979
২৯ মার্চ ২০১৬ দুপুর ১২:২২
হতভাগা লিখেছেন : মুসলিম শাসকদের ভারতীয়রা ভাল চোখেই দেখে যতটা না দেখে বৃটিশদের ।

বৃটিশদের নীতিই ছিল Divide and rule

আর মুসলিম শাসকেরা সব ধর্মের মানুষদের নিয়ে শান্তিতে বসবাস করে গেছেন ।

এরা এ উপমহাদেশে এসে এখানেই বসতি গড়েছেন , থেকেছেন । আর বৃটিশরা এখানকার উৎপাদিত ক্রিম নিজেদের দেশে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল।

হিন্দুদের মধ্যে জাত পাত নিয়ে খুব কাহিনী চলে । হিসাব করলে দেখা যাবে যে মুসলিম শাসকেরা আসার পর যারা মুসলমান হয়েছে তাদের বেশীর ভাগেরই কারণ ছিল এসব জাত পাত থেকে রেহাই পাওয়া ।
০৩ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১০:১৬
302356
মুসলমান লিখেছেন : এসব কারণে এখন হচ্ছে থেমে নেই তাদের জাতপাতের কারণে দ্বন্দ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File